৫৯ বর্ষ ২৭ সংখ্যা / ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ / ৫ ফাল্গুন, ১৪২৮
উলুবেড়িয়া পুরসভায় বদল চাইছেন তৃণমূল শাসনে তিতিবিরক্ত মানুষ
উলুবেড়িয়া পৌরসভায় এখন পরিষেবা বলতে প্রায় কিছুই মেলে না। অন্তত সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা সেটাই। পুর পরিষেবার খরচ বেড়েছে বিস্তর। কিন্তু মানুষের হয়রানির শেষ নেই। কি পরিস্থিতি এখন উলুবেড়িয়া পৌরসভার? কতটা বেড়েছে পরিষেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রের মূল্যমান?
একটু খোঁজ নিলেই চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। বামফ্রন্টের সময়কালে উলুবেড়িয়ার পৌর নাগরিকদের পৌরকর ছিল ১০০ টাকা। এখন তা বেড়ে ১০০০ টাকা হয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে আগে জলের গাড়ির জন্য পৌরসভাকে দিতে হত ১০০ টাকা। এখন সেটা দাঁড়িয়েছে ৭০০ টাকায়। অসুস্থ রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চাইলে আগে বাম আমলে লাগত ১০০ টাকা। এখন রোগী পিছু ন্যূনতম ২০০০ টাকা লাগছে হাসপাতলে নিয়ে যাবার জন্য। এ নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ মানুষের।
তৃণমূল কংগ্রেস কথায় কথায় উন্নয়নের ফিরিস্তি দেয়, কিন্তু বামফ্রন্টের সময়ে তৈরি রবীন্দ্রভবন যা এলাকার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র তা মেরামত পর্যন্ত করতে পারে নি এই বোর্ড। পরিবেশ দূষণ নিয়ে মমতা ব্যানার্জির ঢক্কা নিনাদ বিস্তর কিন্তু এখনো অব্দি উলুবেড়িয়ায় ইলেকট্রিক চুল্লি তৈরি হয়নি শবদাহের জন্য। যে জল প্রকল্প বামফ্রন্টের সময়কালে হয়েছিল সেই জল প্রকল্পের সম্প্রসারণ হয়নি এখনও পর্যন্ত। তার ফল ভোগ করছেন মানুষ। সুপেয় জল দূর অস্ত। কারণ পৌর এলাকায় অনেক জায়গায় এখনও পর্যন্ত পাইপলাইনের কাজ বাকি আছে।
নিকাশির ক্ষেত্রে তৃণমূলের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী এখানেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা হয়নি। দেখা যাচ্ছে ড্রেন বন্ধ করে পুকুর বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক কিন্তু পৌর প্রশাসক নীরব।
সর্বত্র তৃণমূলের পৌর প্রশাসনের ট্রেডমার্ক হলো দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ। উলুবেড়িয়া পৌরসভায়ও এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ এবং অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে এখানে ১২ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌরবোর্ড রয়েছে। কিন্তু তার সমস্ত কাজকর্ম তোলাবাজি প্রোমোটারি আর কাট মানির লেনদেনে অভ্যস্ত ওয়ার্ক কালচার অভিযোগ মানুষের।
এখানে এইচ এফ এ প্রকল্পের টাকা পড়ে রয়েছে অথচ গরিব মানুষ তার ভাঙা ঘরে ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে ত্রিপলে ঘিরে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমান পৌর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের মে মাসে। যেহেতু এখন নির্বাচিত পৌরভোট নেই তাই পৌর নাগরিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন সংগঠিত পৌর পরিষেবা থেকে। দুর্নীতিগ্রস্ত পৌরবোর্ড-এর হাত থেকে উলুবেড়িয়াকে বাঁচাতে মানুষ এখন পথে-ঘাটে সোচ্চার হয়ে অপেক্ষা করছেন ভোটদানের দিনটির জন্য। ভোট লুট না হলে উলুবেড়িয়ায় এবার বদল নিশ্চিত। বামপন্থীদের ফিরিয়ে আনার চোরাস্রোত তীব্রভাবেই রয়েছে এখানে।