৫৮ বর্ষ ৪৪ সংখ্যা / ১৮ জুন, ২০২১ / ৩ আষাঢ়, ১৪২৮
কি (খিচুড়ি)
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না)/ হয়ে গেল “হাঁসজারু” কেমনে তা জানিনা।’ সবকিছুতে ব্যাকরণ মেনে চলতেই হবে এ মাথার দিব্যি কে কবে দিয়েছে? ননসেন্স ছড়ার অন্তর্নিহিত অর্থ খুঁজতে চাইলে খুঁজতেই পারা যায়। কিন্তু যার নামের শুরুতেই ‘ননসেন্স’ - অর্থাৎ কিনা ছাইপাঁশ, নিরর্থক, আজগুবি, অর্থহীন, আজেবাজে - এর যে কোনোটাই হতে পারে, সেখানে অর্থ খোঁজা অর্থহীন। ‘খিচুড়ি’ মানুষ খায় ভালো। তার গোপন রেসিপি জেনে লাভ কী? ঠিক যেমন সুকুমার রায়কে ধার করে লেখা যেতেই পারে - বিজেপি কহে তৃণমূলে - ‘বাহবা কি ফুর্তি।/ অতি খাসা আমাদের’ বিজেমূল মূর্তি। ‘বিজেমূল’ বললে কারো কারোর প্রবল গোসা হলেও ‘রায় বাবু’ নিশ্চই রাগ করবেন না। কারণ ননসেন্স পোয়েম পড়ে মজা পাওয়াই শেষ কথা। ভেতরের কথা জানতে চাইতে নেই। পোয়েটিক জাস্টিস-এর আশাতেই নাহয় বাকি দিন কেটে যাক। তবে ‘হাঁসজারু’ হোক বা ‘বকচ্ছপ’ - খেলাটা দু’জনে মিলেই খেলে। সময়ভেদে কখনও হাঁস আর সজারু কিংবা বক আর কচ্ছপ আলাদা আলাদা হয়ে যায়। আবার কখনো এক দেহে লীন হয়ে অন্য মূর্তি ধারণ করে।
এরাজ্যে দলবদল আগে কখনোই ছিল না, সবটাই তৃণমূল আমলে হচ্ছে এরকমটা বললে ঠিক বলা হবে না। দলবদল আগেও ছিলো। সাতের দশক, আটের দশকে বহু উত্তেজনাকর দলবদলের সাক্ষী এই রাজ্য। কে কোন্ দল ছাড়বেন কোন্ দলে যাবেন তা নিয়ে বছরের একটা বিশেষ সময় রাতের ঘুম উড়ে যেত দলীয় সমর্থকদের। তবে তার সবটাই ছিল ফুটবলকেন্দ্রিক। খেলার জায়গায় খেলা ছিল। রাজনীতির জায়গায় রাজনীতি। কিন্তু রাজনীতিতেও যখন খেলা শুরু হলো তখন থেকেই দলবদলও জলভাত। বহু রাজনৈতিক নেতাই তখন গেছোদাদা। কখন কোথায় থাকবেন, কোন্ দলে থাকবেন, কখন কোথায় যাবেন তা আঁক না কষে বের করার কোনো উপায় নেই। তাঁদের আবার হাজারো ব্যারাম। কারোর দলে থেকে পেট ফেঁপে গেছে, কারোর দলে থেকে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কেউ কাজ করতে চেয়েও কাজ করতে পারছেন না, কারোর মনে হয়েছে আদর্শ-টাদর্শ বলে কিছু হয়না। আবার কেউ বা যতটা ভেবেছিলেন আঙুল ফুলে কলাগাছ হবে ততটা হয়নি। ওষুধ একটাই - দলবদল।
সেপ্টেম্বর, ২০১২-তে রাজ্যে কংগ্রেস তৃণমূলের জোট ভাঙে। কেন্দ্রেও। এরপর নভেম্বরেই দলত্যাগ করেন মালদার ইংরেজবাজার এবং রেজিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী এবং হুমায়ুন কবীর। দুজনেই তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন। দুজনেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং পরে উপনির্বাচনে কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জিতলেও হুমায়ুন কবীর হেরে যান। এরপর ২০১৩-র নভেম্বরে দলত্যাগ করেন কংগ্রেসের অজয় দে। তিনিও বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে মে ২০১৪-র উপনির্বাচনে জয়ী হন। এই পর্যন্ত যে দলবদল হয়েছে তা নিয়ে কিছু বলার নেই। কারণ রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং সংবিধান মেনে যা হবার হয়েছে। গোল বাঁধে এরপর থেকেই। যখন থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে দলবদল শুরু হয়। যেখানে কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপি-তে যোগ দেবার মতো ঘটনাও আছে। যেমন বলা যেতে পারে ২০১৬-র নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়ক দুলাল বরের কথা। যিনি ২০১৮ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। আবার ২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনের আগে যোগ দেন বিজেপি-তে।
২০১৪ সালের পর থেকে রাজ্যে কোনো দলবদলের পর কোনো বিধায়ক ইস্তফা দেননি, বলা ভালো রাজ্য প্রশাসন, সংবিধানের তোয়াক্কা করেনি। সিদ্ধান্ত নেননি বিধানসভার অধ্যক্ষও। ২০১৪ থেকে ২০১৬-র মধ্যে ১৪ জন বিধায়ক দলবদল করেন। এখানে কংগ্রেস, সিপিআই(এম), আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক - সব দলের বিধায়করাই আছেন। সংখ্যার বিচারে কংগ্রেসের ৬ জন, সিপিআই(এম)-এর ২ জন, ফরওয়ার্ড ব্লকের ৩ জন এবং আরএসপি-র ২ জন। ২০১১-র পর থেকে ধরলে সব দল মিলিয়ে দলত্যাগের সংখ্যা ৩৬ এর বেশি।
২০১৬-র নির্বাচনের পর আবারও দলবদল শুরু হয়ে যায় নতুন উদ্যমে। যেখানে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দল ছাড়েন ১ সিপিআই(এম) এবং ১ কংগ্রেস বিধায়ক। এরপর সেপ্টেম্বরে মৌখিকভাবে দল ছাড়েন কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। পাকাপাকি ইস্তফা দেন ২০১৭-র জুলাই মাসে। ২০১৮ তে দল ছাড়েন ১ কংগ্রেস এবং ১ আরএসপি বিধায়ক। এরপরের দলবদলগুলো এত দ্রুত গতিতে হয়েছে যে খেলার স্কোরাররাও বোধহয় ঠিকমতো হিসেব রাখতে পারেননি। পালে পালে নেতা এ ডাল থেকে ও ডাল, এ ফুল থেকে বি ফুলে যাওয়া আসা সেরে ফেলেছেন। মুর্শিদাবাদের আব্দুর রেজ্জাক যখন তৃণমূলে যোগ দেন - তখনকার তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন - ‘আমি সিপিএম-এর আরও একটা উইকেট ফেললাম’। অতীতে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে টুঁ শব্দ না করলেও এখন তিনি শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। আর সুজন চক্রবর্তীদের অভিযোগ - স্পিকার ২৩ বার শুনানি করলেও দলত্যাগীদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। অথচ আমরা প্রত্যেকবারই লিখিতভাবে স্পিকারকে অভিযোগ জানিয়েছি। সংবিধানের দশম তফশিলেও দলত্যাগের বিষয়ে নির্দিষ্ট ধারা আছে। যেখানে আরও বলা আছে দলত্যাগের বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং স্পিকার কতদিনে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ করা নেই।
বিষয়টা ব্যক্তিগত সন্দেহ নেই। কারোর যাওয়া আসা তো জোর করে আটকানো যায় না। ‘শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা’ নিয়েই জীবন। স্রোত বুঝে ভাসতে পারাও। সেখানে গ্রেটার থেকে লেসার - লেসার থেকে গ্রেটার - ‘পবলেম’ থাকার কথা নয়। শুধু এই যাওয়া আসার মাঝখানে পড়ে থাকা মণিমাণিক্য নিয়েই সংশয় জাগে যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল! তখন ফেসবুকীয় ভাষায় ‘ফিলিং বিস্মিত’ হওয়া ছাড়া হাতে পড়ে থাকে পেনসিল। অতএব পোয়েটিক জাস্টিসের জন্য দিন গোনা।
‘মুকুল আমাদের দলে এসেছে। মনে রাখবেন মুকুল কিন্তু ইলেকশনের সময় আমাদের দলবিরোধী একটিও কথা বলেনি’- বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৮-র ২ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার ডুমুরজলায় এক সভায় তিনি বলেছিলেন - ‘আমার নিজের ধারণা ছিল না এত বড়ো চোর’। ‘একটা দু’টো গদ্দার সব জায়গাতেই থাকে। মিরজাফরদের বিশ্বাস করবেন না। বিশ্বাসঘাতকরা চলে গেছে, দলটা বেঁচে গেছে’। আর তৎকালীন বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেছিলেন - ‘মমতা ব্যানার্জি অনেক কথা বলছেন। ...আজকে আপনি বলছেন আমি চোর। আমি যদি চোর হই আপনি তাহলে ডাকাত। আপনি তো ২০১১তে মন্ত্রী হলেন। এই ক’বছরে আপনার পরিবারের সম্পত্তি কত জানেন? ১২০০ কোটি টাকা’। এক বেসরকারি চ্যানেলের সাংবাদিককে তিনি বলেছিলেন - ‘তৃণমূল কংগ্রেসটাকে তুলে দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। রাজ্যের গণতন্ত্র ধ্বংস করছে তৃণমূল’। ফুলে ফুলে অথবা বিজেমূলে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি আলোচ্য নয়। তবু প্রসঙ্গ টানতেই হলো কারণ প্রশ্ন একটাই। সত্যি কোনটা? তৃণমূল ছাড়ার পর তৃণমূল সম্পর্কে মুকুলের অবস্থান নাকি মুকুল সম্পর্কে তৃণমূলের অবস্থান! আর পুনর্মূষিক ভবঃ-র পর গত চার বছরে দুই পক্ষের কোন্ কোন্ কথা ভুল আর কোন্ কোন্ কথা ঠিক সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। উত্তর না পাওয়া গেলেও প্রশ্ন করতে দোষ কোথায়?
গল্পটা অবশ্য এখানেই শেষ হয়ে গেছে ভেবে নেওয়ার কোনো কারণ ঘটেনি। কারণ ভোটের আগে নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখতে যারা এ দল ও দল করেছিলেন তাঁরা আরও একবার এ দল ও দল করবার জন্য ছোঁকছোঁক করছেন। এখন আবার অনেকের দম বন্ধ হয়ে আসছে, দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না, কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে মনে হতে শুরু হচ্ছে। কাজেই আগামী দিনে আরও দলবদল, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, নতুন সমীকরণ দেখার জন্য তৈরি থাকতে হবে। ‘গণতন্ত’ বলে কথা! বেচারা কৃষ্ণনগর উত্তরের ভোটাররা। বিজেপি-কে ভোট দিয়ে জিতিয়ে হাতে পেলেন তৃণমূল বিধায়ক। এক ফুল চেয়ে দুই ফুল প্রাপ্তি। সঙ্গে ‘ফুল’ হওয়াও। বিজেমূলের এরকম হাতে গরম উদাহরণ খুঁজে পেতে কোনো গ্রেটার-লেসার দ্বন্দ্বে ঢোকার দরকার নেই। সামনে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। এখন থেকেই কে কোন্ ছকে কার টিমের হয়ে মাঠে নামছে যত তাড়াতাড়ি স্পষ্ট হয় ততই মঙ্গল। তা নাহলে এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিনকার বর্জ্য আর পরিষ্কার করা যাবেনা। কিছু মানুষ তো চিরকালই মকফাইটে বিভ্রান্ত হন। আরএসএস-এর তৈরি করে দেওয়া দুর্গাকেই দেবতা ভেবে ভরসা করেন। আর তাঁদের আরও বিভ্রান্ত করতে বামশূন্য করার খেলাও সফল। এই খেলার শরিক কারা কারা তা সময় বলবে। তবে অঙ্ক যে খুব সহজ নয় তা বোঝার জন্য খুব বেশি মাথা ঘামানোর দরকার নেই। ‘নো ভোট টু বিজেপি’-র পেছনেও ছোটার দরকার নেই। ঘটনা পরম্পরায় চোখ রাখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। “ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি, চাপিল বিছার ঘাড়ে, ধড়ে মুড়ো সন্ধি!”
এতক্ষণ ধরে যে চর্বিত চর্বণ হলো তা আমাদের সকলেরই জানা। কারণ মুখরোচক এই আলোচনা বিগত কয়েক মাস, বছর ধরে সুকৌশলে আমাদের ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঠিক যেভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বামেরা শূন্য হতে চলেছে সেই তত্ত্বও। ফলে আড়ালে চলে গেছে অনেক কিছুই। গত লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে বামেদের রাস্তায় নেমে আন্দোলনের কথা চাপা পড়ে গেছে। যেমন খুব খোঁজ খবর না রাখলে এখনও জানতে পারা যায় না যে আগামী ২৬ জুন কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলন সাত মাস পূর্ণ করবে। এখনও দিল্লির বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চলে লাখে লাখে কৃষক জমায়েত হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত দুদিন আগে হরিয়ানার জিন্দ সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষক জিলে সিং আত্মঘাতী হয়েছেন। অথচ মহেন্দ্র সিং টিকায়েত ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাঁর নিজস্ব সংগঠন বিকেইউ-এর পক্ষ থেকে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা ফলাও করে প্রচার হয়েছে। যদিও এই দেখা করার সঙ্গে যে সংযুক্ত কিষান মোর্চার কোনো সম্পর্ক নেই তা একবারের জন্যেও বলা হয়নি। যে কথা এক ফেসবুক লাইভে স্পষ্ট করেছেন হান্নান মোল্লা।
পেট্রোপণ্যের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার এবং অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আগামী ১৬ জুন থেকে টানা ১৫ দিন দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সিপিআই(এম) সহ পাঁচ বামপন্থী দল। পাঁচ বামপন্থী দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত ২ মে নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর কমপক্ষে ২১ বার পেট্রোল, ডিজেলের দাম বেড়েছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে পাইকারি মূল্য সূচক গত ১১ বছরে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। বামেদের আরও অভিযোগ, রাষ্ট্রের মদতে চলছে কালোবাজারি ও মজুতদারি। গত একবছরের বেশি সময় ধরে বামেরা দাবি জানিয়ে আসছে আয়কর দেয় না এরকম পরিবারের হাতে মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা সরাসরি হস্তান্তরের। সেই দাবিও সংযুক্ত হয়েছে এবারের আন্দোলনের দাবি সনদে। এছাড়াও আছে সব ব্যক্তি পিছু প্রতি মাসে ১০ কেজি করে খাদ্যশস্য দেবার দাবি। সঙ্গে ডাল, তেল, চিনি, মশলা ইত্যাদি সরবরাহের দাবি।
রাজ্য রাজনীতি, দেশের রাজনীতি আগামী দিনে কোন্ পথে চলবে, লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমীকরণ, বোঝাপড়া কোন্ পথে এগোবে তা বুঝতে আরও কিছু সময় লাগবে। আগামী বছর পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই ছবি স্পষ্ট হবেনা। তবে একথাও ঠিক এ দল ও দল ঘুরে বেড়ানোদের সংখ্যা হয়তো আরও বাড়বে। হাঁসজারু বকচ্ছপদের সেই খোলা হাটে সঠিক বন্ধু খুঁজে নেওয়াই এখন বেশি প্রয়োজন। ব্যাকরণ না মেনে হাঁস আর সজারু মিলে হাঁসজারু হলেও মানুষের জন্য সংগ্রাম হবে লড়াইয়ের ব্যাকরণ মেনেই।
...ভোটের আগে নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখতে যারা এ দল ও দল করেছিলেন তাঁরা আরও একবার এ দল ও দল করবার জন্য ছোঁকছোঁক করছেন। এখন আবার অনেকের দম বন্ধ হয়ে আসছে, দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না, কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে মনে হতে শুরু হচ্ছে। কাজেই আগামী দিনে আরও দলবদল, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, নতুন সমীকরণ দেখার জন্য তৈরি থাকতে হবে। ‘গণতন্ত’ বলে কথা! বেচারা কৃষ্ণনগর উত্তরের ভোটাররা। বিজেপি-কে ভোট দিয়ে জিতিয়ে হাতে পেলেন তৃণমূল বিধায়ক। এক ফুল চেয়ে দুই ফুল প্রাপ্তি। সঙ্গে ‘ফুল’ হওয়াও। বিজেমূলের এরকম হাতে গরম উদাহরণ খুঁজে পেতে কোনো গ্রেটার-লেসার দ্বন্দ্বে ঢোকার দরকার নেই। সামনে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। এখন থেকেই কে কোন্ ছকে কার টিমের হয়ে মাঠে নামছে যত তাড়াতাড়ি স্পষ্ট হয় ততই মঙ্গল।...