৫৯ বর্ষ ৩১ সংখ্যা / ১৮ মার্চ, ২০২২ / ৩ চৈত্র, ১৪২৮
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর বিবৃতি
হিন্দুত্ব কর্পোরেট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হিন্দুত্ব কর্পোরেট শাসনের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদী ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই আরও জোরদার করার জন্য সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তির কাছে আহ্বান জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। ১২-১৩ মার্চ পলিট ব্যুরোর বৈঠকের পরে রবিবার এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরে যেখানে তাদের সরকার ছিল বিজেপি আবার জয়ী হয়েছে। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তীব্রতর করে, মিডিয়ার বিরাট অংশের ওপরে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে, বিপুল অর্থশক্তির বলে বিজেপি উত্তর প্রদেশে সরকার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের গরিষ্ঠতা কমেছে। পাঞ্জাবে বরাবরের দুই দল কংগ্রেস ও আকালিদের প্রত্যাখ্যান করে মানুষ আম আদমি পার্টিকে ভোট দিয়েছেন। আপ বিরাট বিজয় পেয়েছে, কেননা মানুষ নির্ণায়ক পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
পলিট ব্যুরো বলেছে, এই ফলাফল দক্ষিণপন্থী রাজনীতির আধিপত্যের ধারাকেই প্রমাণ করছে। হিন্দুত্ব কর্পোরেট শাসন, তার নীতিসমূহ, ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচার, এবং ফ্যাসিবাদী ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে সমস্ত বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের লড়াইকে আরও জোরদার করতে হবে।
পলিট ব্যুরো বলেছে, বিধানসভা নির্বাচনের পরেই ত্রিপুরায় বিজেপি সিপিআই(এম) কর্মীদের বিরুদ্ধে বর্বর ফ্যাসিবাদী ধাঁচের আক্রমণ শুরু করেছে। রাজ্যজুড়ে নির্বিচারে সিপিআই(এম)’র দপ্তরে আক্রমণ করা হয়েছে। এই সন্ত্রাসের রাজনীতির তীব্র নিন্দা করে পলিট ব্যুরো বলেছে, সিপিআই(এম)’র বিরুদ্ধে বিজেপি অতীতেও ধারাবাহিকভাবে এই সন্ত্রাস চালিয়ে গেছে কিন্তু পার্টি ও তার কর্মীদের ভয় দেখাতে এবারও তারা ব্যর্থ হবে।
পলিট ব্যুরো বলেছে, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই ইপিএফ’র সুদের হার ৮.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮.১ শতাংশ করা হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের ওপরে আবারও আক্রমণ চালানো হয়েছে। যখন দেশে কাজ হারানোর সংখ্যা বাড়ছে, জিনিসের দাম লাফিয়ে বাড়ছে তখন এই আক্রমণ আরও নির্দয়। জনগণের জীবনজীবিকার ওপরে আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি নিতে সিপিআই(এম) আহ্বান জানিয়েছে।
পলিট ব্যুরো বলেছে, অত্যন্ত বিপজ্জনক ঘটনা হলো নির্বাচনের পরপরই প্রকাশিত আরএসএস’র ২০২২-র বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘সংবিধান ও ধর্মীয় স্বাধীনতার’ নামে দেশে ‘ধর্মীয় উগ্রতা বাড়ছে’। বলা হয়েছে, এ হলো ‘একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সরকারের প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের বিশদ পরিকল্পনা’। আরএসএস বলেছে, ‘এই বিপদকে পরাস্ত করতে’ ‘সংগঠিত শক্তি নিয়ে সমস্ত প্রয়াস’ নিতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরে আক্রমণের লক্ষ্যে এ হলো আরেকটি মারাত্মক পরিকল্পনা। সাংবিধানিক গ্যারান্টি ও আইনের শাসনকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে সাম্প্রদায়িক হিংসাকে প্রতিহত করা এবং ভারতের ঐক্য ও সংহতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করতে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে পলিট ব্যুরো।
পলিট ব্যুরোর বৈঠকে আসন্ন ২৩তম কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২৫-২৭ মার্চ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে তা পেশ করা হবে। কেরালার কান্নুরে ৬-১০ এপ্রিল পার্টির ২৩তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে।