৫৯ বর্ষ ৩১ সংখ্যা / ১৮ মার্চ, ২০২২ / ৩ চৈত্র, ১৪২৮
সিপিআই(এম) কেরালা রাজ্য ২৩তম সম্মেলনের আহ্বান
পার্টির স্বাধীন শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ১ থেকে ৪ মার্চ কোচিতে পার্টির স্বাধীন শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম ও মতাদর্শ চর্চার মধ্যদিয়ে দক্ষিণপন্থী শক্তির সম্মিলিত চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠিত হলো চারদিনব্যাপী সিপিআই(এম) কেরালা রাজ্য ২৩তম সম্মেলন।
সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠানস্থল মেরিন ড্রাইভ-এর নামকরণ করা হয় কমরেড বি রাঘবন নগর। সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইপি জয়রাজন। রক্ত পতাকা উত্তোলন করেন প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আনাথালাভাত্তম আনন্দন।
সম্মেলন থেকে সর্বসম্মতিতে আটজন নতুন সদস্য সহ মোট ৮৯ সদস্যের রাজ্য কমিটি নির্বাচিত হয়। রাজ্য কমিটির প্রথম সভা থেকে ১৭ সদস্যের সম্পাদকমণ্ডলী নির্বাচিত হয় এবং রাজ্য সম্পাদক পদে পুনর্নিবাচিত হয়েছেন কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণান। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিট ব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত, এস রামচন্দ্র পিল্লাই, এম এ বেবি, বৃন্দা কারাত এবং জি রামকৃষ্ণান।
প্রতিনিধি অধিবেশন পর্বের শুরুতে প্রেসিডিয়াম গঠিত হয়। অভ্যর্থনা কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত ভাষণ দেন পি রাজীব। রাজ্য সম্মেলনের উদ্বোধন করে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, বিজেপি’র হাতে একমাত্র নির্বাচনী অস্ত্র হলো সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকে তীক্ষ্ণ করা। কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য আরএসএস’র ফ্যাসিবাদী অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বিজেপি’র সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলির প্রচারও এই কর্মসুচিকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়, যা হিজাব ইত্যাদি বিতর্ক সৃষ্টি করে জনগণের সমর্থন আদায় করতে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা জারি রেখে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকে তীব্র করে চলেছেন, যা সামাজিক সম্প্রীতিকে দুর্বল করবে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে ধ্বংস করবে। বিজেপি-আরএসএস হিন্দু রাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই বিপজ্জনক দিকে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। জনগণের সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকার সামাজিক বিভাজনের এই অস্ত্র ব্যবহার করছে।
সীতারাম ইয়েচুরি আরও বলেন, আমাদের দেশের সংবিধান এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা করতে এবং দেশের সামাজিক সম্প্রীতি এবং ঐক্য ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের উদ্দেশ্য বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বিকল্প কর্মসুচি এবং নীতিগুলি জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি-কে বিচ্ছিন্ন এবং পরাজিত করা আবশ্যক।
সম্মেলনে খসড়া রিপোর্ট পেশ করেন রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণন। রাজনৈতিক-সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্টে চারটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগে পার্টি সংগঠন সংক্রান্ত প্রতিবেদন, দ্বিতীয় ভাগ নতুন কেরালা গড়ার উদ্যোগ সংক্রান্ত, তৃতীয় ভাগে শ্রেণি এবং গণসংগঠনগুলির সংক্রান্ত রিপোর্ট এবং চতুর্থ ভাগে বিভিন্ন নথি এবং রিপোর্ট সংকলিত করে প্রতিনিধিদের আলোচনার ও মতামতের জন্য পেশ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরএসএস, রাজনৈতিক ইসলামপন্থী এবং অন্যান্য শক্তি যাদের সাথে ইউডিএফ খোলাখুলিভাবে সহযোগিতা করছে, তাদের সাথে দক্ষিণপন্থী শক্তির সম্মিলিত চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিকে একত্রিত করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পার্টির স্বাধীন শক্তি বাড়ানোর জন্য দক্ষিণপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে মতাদর্শগত লড়াই, সর্বাত্মক প্রচার, যুক্তিবাদী চিন্তা, বৈজ্ঞানিক মনন এবং ঐতিহাসিক চেতনার প্রসারের মধ্যদিয়েই এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে কেরালায় পার্টির সদস্য সংখ্যা এখন ৫ লক্ষ ২৭হাজার ২৮৯। পার্টিতে নারী, ছাত্র ও যুবকদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কলকাতা প্লেনামের নির্দেশ কার্যকর করার প্রতিফলন হিসেবে মহিলা সদস্য সংখ্যা ২৫ শতাংশে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দু’টি জেলায় লক্ষ্য সম্পূর্ণ অর্জিত হয়েছে এবং আরও কয়েকটি জেলা এই লক্ষ্য পূরণের পথে। শ্রেণি ও গণসংগঠনের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একত্রে এক কোটিরও বেশি। সদস্যদের বড়ো অংশই মৌলিক শ্রেণিগুলি থেকে আসা।
কোচিতে রাজ্য সম্মেলনে যোগ দেওয়া নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে ২৩ শতাংশের বয়স ত্রিশের কম। সর্বকনিষ্ঠ প্রতিনিধি একজন মহিলা যার বয়স কুড়ি বছর। প্রতিনিধিদের মধ্যে যুবক, ছাত্র, সংখ্যালঘু, দলিত এবং আদিবাসীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে এই সম্মেলনে। মোট ৪০০ প্রতিনিধি এবং ২২ জন পর্যবেক্ষক যোগ দিয়েছেন রাজ্য সম্মেলনে। প্রসঙ্গত, কেরালায় পার্টির বিভিন্ন স্তরের শাখা কমিটিতে ১,৯৯১ জন মহিলা শাখা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে কয়েক দশক ধরে পার্টিকে যে উপদলীয় কার্যকলাপ বিপর্যস্ত করেছিল তা পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা গেছে। রাজ্য নেতৃত্ব এখন সম্পূর্ণরূপে ঐক্যবদ্ধ, এবং অধিকাংশ জেলা ও লোকাল কমিটিতেও তা করা গেছে। পার্টির মধ্যে কিছু কমরেড রয়েছেন যারা পুরানো দলাদলির চিহ্ন বহন করে এবং কয়েকটি বিচ্ছিন্ন এলাকা কমিটিতে তাদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে, কিন্তু তারা জেলায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে সকল জেলা কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়।
প্রতিবেদনে প্রার্থী বাছাই এবং মন্ত্রী নিয়োগের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই এবং মন্ত্রী নিয়োগের বিষয়ে দল যে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছিল তার দ্বারা পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রক্রিয়াটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে। পার্টির মধ্যে সংসদীয় ঝোঁক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পার্টি অবস্থান নেয় যে, পরপর দু’বারের মেয়াদে নির্বাচিত কোনো বিধায়ক, তিনি পার্টির মধ্যে যে পদেই থাকুক না কেন তাকে পুনরায় মনোনীত করা হবে না। এই প্রেক্ষিতেই, মহিলা সহ বেশ কয়েকজন তরুণ পার্টি সদস্যকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই অবস্থান নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কিছু আলোচনা হলেও, পার্টি সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণ বিষয়টিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। যাদের কাছে এই অবস্থান সম্পূর্ণরূপে গ্রহণযোগ্য ছিল না, ব্যাপক সমর্থনের পরিস্থিতিতে তারা সম্মত হতে বাধ্য হয়। মন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একই নিয়ম অব্যাহত ছিল এবং মন্ত্রীসভার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বাদ দিলে এক ঝাঁক নতুন মুখ মন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করে।
প্রতিবেদনে উদ্বেগের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে কিছু দুর্বলতা এবং ত্রুটির কথা, যা পার্টিতে সৃষ্টি হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল সংসদীয় সুবিধাবাদ, যা বিধানসভা এবং স্থানীয় স্তরের নির্বাচনের সময় মাথা তুলেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা এবং দলীয় সিদ্ধান্ত অন্যের পক্ষে গেলে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করার বিভ্রান্তিকর ঘটনা আগে ঘটেছে। প্রতিবেদনে এই ধরনের অস্বস্তিকর উপাদানগুলির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং কঠোর নজরদারির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবেদনে অ্যালকোহল, মাদকদ্রব্য এবং মহিলাদের প্রতি অশালীন আচরণের কয়েকটি বিচ্ছিন্ন সংবেদনশীলতার ঘটনার বিষয়ের উল্লেখ করে এই ধরনের বিচ্যুতি সম্পর্কে অত্যন্ত কঠোর সতর্কতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে ২০১৩ সালে পালাক্কাদে রাজ্য প্লেনামে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে যেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খ সংশোধন প্রক্রিয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল।
পার্টি শিক্ষা সম্পর্কে খসড়া রিপোর্টে ২০১৫ সালের কলকাতা প্লেনাম-এর গৃহীত সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, পার্টির সর্বস্তরে দলীয় শিক্ষার একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়ার প্রাসঙ্গিকতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল কলকাতা প্লেনাম। যা কার্যকর করতে রিপোর্টে পার্টির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মতাদর্শগত শিক্ষার অসংখ্য সুযোগ-সুবিধার প্রসঙ্গ তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়েছে একেজি সেন্টার ফর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ, ইএমএস একাডেমি, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত নয়নার মেমোরিয়াল একাডেমি এবং জেলাভিত্তিক অধ্যয়ন কেন্দ্রগুলির কথা। রিপোর্টে সব স্তরে পার্টি স্কুল ও ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমে দলীয় শিক্ষায় অগ্রগতি সহ অনলাইন সুবিধা ব্যবহার করে মহামারীর কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও পার্টির প্রায় ১.৫ লক্ষ সদস্যকে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পার্টি শিক্ষায় শিক্ষিত করার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
সম্মেলনে উপস্থাপিত নতুন কেরালা গড়ার উদ্যোগের দৃষ্টিভঙ্গি সংক্রান্ত নথিটি চারটি অংশ নিয়ে গঠিত। প্রথমটি কেরালা রাজ্যের গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৬ সালে পার্টির ত্রিচুর সম্মেলন দ্বারা গৃহীত কেরালার উন্নয়নের প্রথম রেজোলিউশন থেকে ২০১৬ সালের পূর্ববর্তী কার্যকলাপের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেছে। দ্বিতীয় অংশে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বে এলডিএফ সরকারের কার্যক্রম এবং আগামী পরিকল্পনার পর্যালোচনা করা হয়েছে।
কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রিপোর্টে খাদ্য নিরাপত্তা এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য গৃহীত বিভিন্ন কর্মসুচি এবং পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদিও রাজ্যে ভূমি সংস্কার বাস্তবায়িত হয়েছে, তবে তা প্রয়োজনীয় কৃষি সংস্কারের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। কেরালায় কৃষি উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে অর্থকরী ফসলের উপর। বলা হয়েছে, রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং বাইরে সম্প্রসারিত বাজারের বিকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট জলজ চাষ এবং উদ্যানপালন অপরিহার্য উপাদান। কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া-উদারবাদী সংস্কারগুলি এই এলাকার উন্নয়নেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। জৈব-প্রযুক্তি সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নত রূপ ব্যবহার করে সর্বাত্মক কৃষি উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে এলডিএফ সরকারের দৃষ্টান্তমূলক সাফল্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরে জোর দেওয়া হয়েছে শিক্ষাকে সমস্ত স্তরেই সর্বজনীন গণমুখী করে তোলার।
শিল্প স্থাপন এবং কর্ম সংস্থানের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত শিল্প সম্প্রসারণ শুধুমাত্র মোট দেশজ উৎপাদনকে জোরদার করার উপায় হিসেবে নয়, রাজ্যের দ্রুত বর্ধনশীল চাকরিপ্রার্থীদের কর্মসংস্থানের উপায় হিসেবেও অপরিহার্য। এলডিএফ সরকার ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২০ লক্ষ চাকরি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে কাজু, তাঁত, আইটি, পর্যটন, এমএসএমই, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং কয়ারের মতো ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলির পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে। এছাড়াও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বিভিন্ন ধরনের উৎপাদনশীল খাতে, সমবায় উদ্যোগে, কুদুম্বশ্রীর মতো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে, এবং বেসরকারি ও সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে। পরিকাঠামো উন্নয়ন ক্ষেত্রে কোচিন থেকে পালাক্কাদ পর্যন্ত একটি বড়ো আকারের শিল্প করিডোর তৈরির কাজ চলছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির পর পুনর্গঠন পর্বে কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা যথেষ্ট ছিল না। কোভিড মহামারীর সময়ও এলডিএফ সরকার তার মজবুত স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সাহায্যে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে সাফল্যের সঙ্গেই। কেন্দ্রে আরএসএস-বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার নয়া উদারনীতির বাস্তবায়ন করছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী নানা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ও হিন্দুত্ববাদী পদক্ষেপের মধ্যদিয়ে। তার নীতিগত বিরোধিতা করলেও প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলির প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য রাষ্ট্রের কাছে এবং বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই বাস্তবতার প্রেক্ষিতেই পূর্ববর্তী এলডিএফ সরকার কেআইআইএফবি-কে (কেরালা ইন ফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বোর্ড) পুনরুজ্জীবিত করেছিল। এখন কেরালার বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়নের সিংহভাগ কেআইআইএফবি-র মাধ্যমে হয়েছে। এর পাশাপাশি কার্যকর কর ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ এবং আরও অর্থের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।