৬০ বর্ষ ১৪ সংখ্যা / ১৮ নভেম্বর, ২০২২ / ১ অগ্রহায়ণ, ১৪২৯
বর্তমান সময়ে অক্টোবর বিপ্লবের প্রাসঙ্গিকতা
প্রকাশ কারাত
রাশিয়ায় যে সময় অক্টোবর বিপ্লব হয়েছিল সেই রোমাঞ্চকর দিনগুলি থেকে আজকের পৃথিবীকে অনেক দূরের বলে মনে হয়। আজ থেকে ১০৫ বছর আগে এই ঐতিহাসিক বিপ্লব হয়েছিল যা পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। অন্যদিকে আজ থেকে ৩১ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়েছে, যার পরে পৃথিবী জুড়ে সাম্রাজ্যবাদের উত্থান ঘটেছে।
১৯৯১ সালের পর থেকে বিগত তিন দশকে পৃথিবী জুড়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং ন্যাটোর নেতৃত্বে নতুনভাবে আগ্রাসী সামরিক হস্তক্ষেপ দেখা গিয়েছে। এরা প্রথমে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নিয়েছিল সেই সমস্ত উন্নয়নশীল দেশকে যাদের পরমাণু অস্ত্র নেই এবং সামরিক বাহিনী অপেক্ষাকৃত দুর্বল। ১৯৯৯ সালে সার্বিয়াতে বোমারু বিমান হানা,২০০১ সালে আফগানিস্তান আক্রমণ এবং দখল, ২০১১ সালে লিবিয়ায় বোমা নিক্ষেপ এবং আগ্রাসন - এই সমস্ত ঘটনা সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের দুই দশকের মধ্যেই সংগঠিত হয়েছে।
মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখবার প্রয়াস
বর্তমান শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর আগ্রাসন নতুনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।আমেরিকা এবং ন্যাটো সমর্থিত ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছে সেখানে মুখোমুখি রয়েছে রাশিয়া, পৃথিবীতে যার দ্বিতীয় বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার এবং বৃহদাকার সেনাবাহিনী রয়েছে। এর সাথে সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে সংঘাত বৃদ্ধি করছে কেননা চীনকেই তারা প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছে।
ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে লক্ষ্য করে কোয়াড (QUAD) এবং অকুস (AUKUS)-এর মতো জোট তৈরি করছে। পশ্চিম এশিয়ায় ইজরায়েলকে মধ্যমণি করে জোট তৈরি করছে এবং আফ্রিকম (AFRICOM)-এর মাধ্যমে আফ্রিকায় সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করছে।
পৃথিবী জুড়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্য বজায় রাখার এই প্রয়াস যখন চলছে তখন নয়া-উদারবাদী পুঁজিবাদের চলমান সংকট ইয়োরোপ এবং অন্যান্য অগ্রসর পুঁজিবাদী দেশের মেহনতি জনগণের উপরে ক্রমশ বাড়তি বোঝা চাপিয়ে চলেছে। কোভিড অতিমারীর জন্য এই অর্থনৈতিক সংকট গভীরতর হয়েছে এবং বিশ্বজোড়া মন্দা আসতে চলেছে। গোটা পৃথিবীতে এই সময়কালে শোষণ তীব্রতর হয়েছে এবং লুঠেরা লগ্নিপুজির দৌলতে বৃহৎ করপোরেট ও অতিধনীরা তাদের মুনাফা এবং সম্পদ তড়িৎ গতিতে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। নয়া-উদারনীতির প্রক্রিয়া ও ব্যয় সংকোচের নানা পদক্ষেপ, জাতিগত আবেগ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান - এই সব কিছু একত্রিত হয়ে বিশ্বে দক্ষিণপন্থার দিকে ঝোঁক লক্ষ করা যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সংঘাত
এই পরিবর্তনগুলিকে দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে বিবেচনা করা প্রয়োজন। মুখ্য দ্বন্দ্বগুলির জন্যই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো ঘটছে। প্রথম মুখ্য দ্বন্দ্ব হলো আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদের সাথে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের দ্বন্দ্ব, যা কিনা সাম্রাজ্যবাদের প্রতিস্পর্ধী এক ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে। চীনের সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে প্রতিহত করা এবং বিচ্ছিন্ন করার দিকে মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছে। এক্ষেত্রে চীনের অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতার ধারাবাহিক বৃদ্ধিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলকভাবে হ্রাসমান অর্থনৈতিক শক্তির বিপরীতে রাখা দরকার। এর সাথে বিশ্বশক্তি হিসেবে আমেরিকা যে সামরিক উৎকর্ষতার প্রমাণ দেয় তা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সাম্প্রতিককালে গৃহীত আগ্রাসী পদক্ষেপগুলির প্রধান কারণ। তারা নানাভাবে চীনের অগ্রগতিকে রুদ্ধ করতে প্রস্তুত।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি, ২০২২-এ মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেন ‘‘এক নির্ণায়ক দশকের’’ কথা বলছেন যেখানে ‘‘আমরা কার্যকরভাবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, কেননা তারাই আমাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী যাদের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নতুনভাবে সাজানোর মতো ইচ্ছে এবং ক্ষমতা আছে। এর সাথে বিপজ্জনক রাশিয়াকে আটকানোর কাজ আমাদের করে চলতে হবে।’’
চীনের সাথে এই ‘‘কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার’’ ফলে ইতিমধ্যেই সেদেশের উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর সাথে সেমিকন্ডাকটর শিল্পে চীনের উপর প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে তাদেরকে উন্নত মানের চিপ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
সিপিআই(এম)’র ২৩ তম কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সংঘাতের ফলে সাম্রাজ্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের মধ্যে প্রধান দ্বন্দ্ব তীক্ষ্ণতর হয়েছে।
পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের মুখ্য ভূমিকা নিশ্চিত করবার জন্য চেষ্টা চালিয়ে এসেছে। ঠান্ডা যুদ্ধের পরিসমাপ্তির পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রকে উন্নত করেছে এবং এক্ষেত্রে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে চেয়েছে। ২০০২ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বুশ ব্যালিস্টিক মিসাইল বিরোধী চুক্তি থেকে সরে আসেন; ২০১৯ সালে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত চুক্তি থেকে সরিয়ে আনেন। পোল্যান্ড এবং রোমানিয়াতে আমেরিকার ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থার লক্ষ্যবস্তু রাশিয়া। রাশিয়া এর পালটা হিসেবে হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ
ইউক্রেন যুদ্ধে দুই প্রধান প্রতিপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ন্যাটো এবং রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রধর হওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের কৌশলগত প্রয়োগ এবং বৃহত্তর ক্ষেত্রে পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যতম প্রধান পুঁজিবাদী শক্তি হিসেবে রাশিয়ার উত্থানকে আটকানোর জন্য ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণের ফলেই ইউক্রেনে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছে। যদিও এই যুদ্ধকে যথাযথভাবে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বের পরিণতি বলা যায় না, তবে ইউক্রেনে যে সংঘাত চলছে তা পুঁজিবাদী শক্তিগুলির পারস্পরিক দ্বন্দ্বের এবং ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের ওপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য বজায় রাখার যে প্রয়াস তার ছাপ বহন করছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলির ওপরে ক্রমবর্ধমান বোঝা
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বন্দ্ব হলো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির সাথে তুলনামূলকভাবে স্বল্পোন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলির দ্বন্দ্ব, যাদের মধ্যে সেই দেশগুলিও পড়ে যাদেরকে উদীয়মান বাজার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই সমস্ত দেশ এক বিরাট ঋণসংকটে পড়েছে। হিসেব করে দেখা গেছে যে, উদীয়মান বাজার এবং চীন বাদে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মোট ঋণ ২০২০ সালে ছিল ৮.৯ ট্রিলিয়ন ডলার। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ, রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা এবং এই দুই দেশ থেকে তেল ও খাদ্যের সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে এই দুই পণ্যের আমদানির উপর নির্ভরশীল দেশগুলির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে।
রাশিয়া এবং চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশকে সমবেত করবার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জি-সেভেন দেশগুলি যে চেষ্টা করছে তা সামগ্রিক সাফল্য পাচ্ছে না কেননা অনেক উন্নয়নশীল দেশ এবং মাঝারি মানের শক্তিধর দেশগুলি এই দুটি দেশের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গড়ে তোলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার শরিক হতে অস্বীকার করছে। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সাফল্য এবং এই সংগঠনে নতুন নতুন দেশের অন্তর্ভুক্তি বর্তমান সময়ে প্রতিস্পর্ধী উপাদানগুলির দিকে ইঙ্গিত করছে।
লাতিন আমেরিকাঃ বামপন্থীদের অগ্রগতি
আজকে ইয়োরোপে দক্ষিণপন্থী ঝোঁক লক্ষ করা গেলেও লাতিন আমেরিকায় মার্কিন আধিপত্য এবং নয়া-উদারবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের মাধ্যমে বাম শক্তির অগ্রগতি ঘটছে। সাম্প্রতিককালে লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশে বাম এবং মধ্যবাম সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এর সাম্প্রতিকতম নিদর্শন ব্রাজিলে লুলার বিজয়। চিলিতে পাঁচ দশক বাদে একজন বামমনস্ক রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন এবং কলম্বিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম একজন বামপন্থী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন। এই মুহূর্তে লাতিন আমেরিকাতে সমাজতন্ত্রের জন্য নতুন ভাবে দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণপন্থী ঝোঁকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
ইয়োরোপে দক্ষিণপন্থা এবং দক্ষিণপন্থার উত্থানের সাথে সাথে বিভিন্ন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিগুলি নয়া-উদারবাদী নীতি গ্রহণ করে পুরোপুরি দক্ষিণপন্থী হয়ে উঠেছে। দুর্বল বাম শক্তির পক্ষে এই দক্ষিণপন্থী ঝোঁক প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি। তবে ইয়োরোপের প্রধান প্রধান দেশগুলিতে জীবনযাপনের খরচ বৃদ্ধি এবং ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশে ধর্মঘট এবং বিভিন্ন গণসংগ্রামের ফলে বাম শক্তির পুনর্বিন্যাস এবং নতুন নতুন জোট তৈরি করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মোদ্দা কথা এই যে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসির বিশ্বাসঘাতকতা এবং সমঝোতাকে পরিত্যাগ করে অক্টোবর বিপ্লবের পুঁজিবাদ-বিরোধী ঐতিহ্যকে জাগরিত করতে হবে।
ভারতেও এই দক্ষিণপন্থী ঝোঁকের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা গিয়েছে হিন্দুত্ব সাম্প্রদায়িকতা এবং আগ্রাসী নয়া-উদারবাদী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে। সাম্প্রদায়িক-করপোরেট এই রাজত্ব এক স্বৈরাচারী জমানার জন্ম দিয়েছে যেখানে জনসাধারণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অধিকারকে অবদমিত করে রাখা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষাপটে ভারতের সমস্ত অংশের শ্রমজীবী মানুষ ক্রমাগত প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র রক্ষা করতে জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঐক্য লক্ষ করা যাচ্ছে।
বিশ্ব পরিবেশ সংকট
বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং পরিবেশের ব্যাপক অবক্ষয়ের ফলে পৃথিবীতে চরম পরিবেশগত বিপর্যয়ের সৃষ্টি হচ্ছে এবং পৃথিবী জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনজীবিকা, বাসস্থান এবং বিভিন্ন প্রজাতির আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিশেষকরে গরিব দেশগুলি এই পরিবেশগত বিপর্যয়ের ফলে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়নকে প্রতিহত করা এবং কার্বন নির্গমনকে হ্রাস করার ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলির সাথে উন্নয়নশীল দেশগুলির দ্বন্দ্ব লক্ষ করা গিয়েছে। পরিবেশের ধ্বংসসাধন আটকানো এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব অর্জন করা এই পুঁজিবাদী কাঠামোয় সম্ভব নয়। যারা সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেন তাদেরকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
অক্টোবর বিপ্লব ছিল বিশ্বের প্রথম সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী এবং পুঁজিবাদ-বিরোধী বিপ্লব। অক্টোবর বিপ্লব এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে মার্কসবাদী তত্ত্বের যথার্থ প্রয়োগের ফসল। একবিংশ শতকে এই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু বর্তমান সময়ের প্রধান সামাজিক দ্বন্দ্বগুলি এমন এক নতুন সন্ধিক্ষণের জন্ম দিয়েছে যেখানে অক্টোবর বিপ্লবের বৈপ্লবিক ঐতিহ্য আমাদের সমসাময়িককালে সমাজতন্ত্রের সংগ্রামকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে।
(ভাষান্তরঃ অর্ণব ভট্টাচার্য)