E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৭ বর্ষ ৪১ ও ৪২ সংখ্যা / ১৯ জুন ২০২০ / ৪ আষাঢ় ১৪২৭

করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই ব্যর্থ

মানুষের পাশে বামপন্থী সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছা সংগঠন


শিল্পীঃ রবীন দত্ত

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রের সরকারের সীমাহীন অজ্ঞতা, উদাসীনতার ফলে একদিকে যেমন আক্রান্তের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবার অভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তেমনি অপরিকল্পিত লকডাউন ঘোষণার ফলে দেশের গরিব সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিদারুণ দুর্দশা মারাত্মক আকার নিয়েছে। প্রসঙ্গত, দেশের মধ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ে কেরালায় গত ৩০ জানুয়ারি। চীনের ইউহান থেকে ফেরা এক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রীর দেহে সংক্রমণের চিহ্ন ধরা পড়ে। সেই মুহূর্ত থেকে কেরালার বাম গণতান্ত্রিক সরকার একেবারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই সংক্রমণের প্রতিরোধে যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়েই এই ভয়াবহ সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি মিলিয়ে ২ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিয়ে এই কোবিড-১৯ চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলা, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা, চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা, করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র, বিভিন্ন এলাকায় এজন্য বুথ, কিয়স্ক ইত্যাদি সহ কোয়ারান্টিন সেন্টার গড়ে তোলা হয়। এ সমস্ত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে কোবিড-১৯-এর অতিমারী রুখতে আশাতীত সাফল্য অর্জন করে কেরালা।

অথচ কেন্দ্রের সরকারের তখন পর্যন্ত কোনো হুঁশ ছিল না। কেন্দ্রের সরকার ও শাসকদল তখন মত্ত ছিল সিএএ-এনআরপি বিরোধী দেশব্যাপী গড়ে ওঠা প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে অগণতান্ত্রিক কায়দায় দমন করতে। এরপর তারা ব্যস্ত থাকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজকীয় সংবর্ধনা জানাতে। নরেন্দ্র মোদী নিজের রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ শীর্ষক এই মেগা কর্মসূচিতে কোটি কোটি টাকা জলের মতো খরচ করে মার্কিন প্রভুর প্রতি আনুগত্য প্রমাণ করতে সচেষ্ট থাকেন। এরপর মোদী বাহিনীকে দেখা যায়‌ মধ্যপ্রদেশে নির্বাচিত কংগ্রেস সরকারকে অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিকভাবে ফেলে দিয়ে বিজেপি সরকার কায়েমের কুৎসিত অপচেষ্টায়। একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সরকার ও শাসকদল এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে স্বাভাবিকভাবে অবহেলিত হয় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের উদ্যোগ এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ। তাই এই সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে থাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

অবশেষে বেগতিক বুঝে প্রধানমন্ত্রী মোদী ২২ মার্চ সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউর ডাক দেন। এরপর তিনি ২৪ মার্চ দেশজুড়ে প্রথম দফার লকডাউন ঘোষণা করেন। অত্যন্ত অপরিকল্পিতভাবে তড়িঘড়ি লকডাউন ঘোষণার ফলে গরিব সাধারণ মানুষ বি‍‌শেষত প্রায় ২০ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক নিদারুণ দুর্দশার কবলে পড়েন। কেন্দ্র আগাম সতর্কতা ও বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই মাত্র ৪ ঘণ্টার নোটিশে লকডাউন ঘোষণা করায় মুহূর্তের মধ্যেই নিজেদের জীবনের সব নিশ্চয়তা হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। এই বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর কোনো উদ্যোগই প্রাথমিকভাবে নেয়নি কেন্দ্রের সরকার। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সহ অনেক রাজ্যই নিজেদের রাজ্যের অসহায় মানুষদের ফিরিয়ে আনতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। ফলে তাঁরা দিশেহারা হয়ে হেঁটেই নিজের নিজের রাজ্যে ফেরার উদ্যোগ নেন।

এদিকে করোনায় মারাত্মক সংক্রমণের আতঙ্কে গোটা বিশ্ব যখন দিশেহারা, বিপর্যস্ত, তখনও মোদী তার ভয়াবহতা ও গুরুত্ব হয় বুঝতে পারেননি, না হলে অবজ্ঞা করেছেন। তখন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে তা প্রকট হয়েছে। দেশে করোনা সংক্রমণের আবহে সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি ছিল সরকারের। প্রথমে উচিত ছিল চিকিৎসা পরিকাঠামোকে উপযুক্ত মানে উন্নীত করা। প্রয়োজন ছিল চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষা প্রদান। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম, হাসপাতালের শয্যা বাড়ানো, সর্বোপরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। এছাড়াও জরুরি ছিল দেশের বিজ্ঞান ও গবেষণা কেন্দ্র এবং পরীক্ষাগারগুলির সাথে সমন্বয় বাড়িয়ে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে দেশকে তৈরি করা। এরই পাশাপাশি সরকারের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হওয়া উচিত ছিল লকডাউনের পরিস্থিতিতে গরিব সাধারণ মানুষ, লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক যাদের রুটি রুজির সংস্থান আকস্মিকভাবে স্তব্ধ হয়ে গেছে, কোটি কোটি নিরন্ন, দুস্থ মানুষ যাঁদের আহারের সংস্থান নেই, তাঁদের খাদ্য সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা। এছাড়া গরিব সাধারণ মানুষ, বস্তিবাসী, গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া জরুরি ছিল।

কিন্তু এসবের দিকে বিন্দুমাত্র নজর না দিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী এই সময়ে অপবিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রসূত কর্মসূচি পালনের নিদান দিয়ে দেশবাসীকে পরোক্ষে গৈরিকবাহিনীর হিন্দুত্বের ভাবাদর্শে আচ্ছন্ন করতে চাইলেন। ২২ মার্চ জনতা কারফিউর দিন তিনি বিকেলে দরজা, জানলার কাছে দাঁড়িয়ে জনগণকে হাততালি দিতে ও থালা-বাসন বাজাতে বললেন। এর পিছনে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, যে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী কোবিড-১৯ চিকিৎসায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহায্য করছেন, তাঁদের উৎসাহিত করা। কিন্তু দেখা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে মোদী ভক্তদের বিপুল উৎসাহে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্বকে অবজ্ঞা করে কাঁসর ঘণ্টা, ঢাক-ঢোল নিয়ে রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস দেখাতে। যেন করোনাকে দূর করতে সম্মিলিত বাদ্যযন্ত্রের শব্দই একমাত্র প্রতিষেধক! দেখা গেল, উত্তর প্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে প্রশাসনের স্থানীয় আধিকারিকরা মানুষের এই ‘উৎসব’ ও ‘মিছিল’-এ নেতৃত্ব দিতে! এই কর্মসূচির পর ৫ এপ্রিল তিনি নিদান দিলেন — বাড়ি-ঘরের আলো নিভিয়ে বারান্দায়, ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাতে হবে। মোদীর ঘোষণার পরই তাঁর ভক্তকুল অবৈজ্ঞানিক-অযৌক্তিক-হাস্যকর প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মোদী বলেছিলেন, অন্ধকার ঘুচিয়ে দেশকে আলোর পথে নিয়ে যাবেন এভাবেই।

এই দুঃসহকালে দেশের মানুষ আশা করেছিলেন আতঙ্কিত দেশবাসীকে কিছুটা আশ্বস্ত করবেন, বিপন্ন মানুষকে রুটি-রুজির সংস্থান দেবেন। কিন্তু উলটে তাঁর মুখে শোনা গেল হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের অনুসরণে চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন কর্মসূচি পালনের বার্তা। এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের অনুসরণে বিভিন্ন সামাজিক প্রচারমাধ্যমে, পেটোয়া সংবাদমাধ্যমে অদ্ভুত, যুক্তিহীন, হাস্যকর প্রচার চলতে থাকে মোদী বাহিনীর। এদিন তারা বিপুল উৎসাহে রাজপথে নেমে সমস্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিকে নস্যাৎ করে আতশবাজি পুড়িয়ে উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্রের সাহায্যে অকাল দেওয়ালি উৎসব পালন করে। মারণ ভাইরাস করোনার বিধ্বংসী সংক্রমণে বিপর্যস্ত বিশ্ববাসী বিস্ময়ের চোখে ভারতের অবিমৃশ্যকারী রাষ্ট্র শক্তির মদতে এমন ‘উৎসব’ পালনের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন। স্বাভাবিকভাবেই মূল যে গুরুত্বের দিক — করোনার মোকাবিলায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ, তা উপেক্ষিতই থেকে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাহীন লকডাউন ঘোষণার ফলে হঠাৎ করে বিপন্ন হয়ে পড়া হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক কোনো উপায়ান্তর না দেখে নিজের নিজের রাজ্যে ফেরার জন্য অন্তহীন পথ চলা শুরু করেন। রোদে, জলে, বৃষ্টিতে, অন্ধকারে, দুর্গম পথে তাঁরা হাঁটা শুরু করেন। জীবনের নিরাপত্তা হারানো এই লাখো-অযুত পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে যেমন ছিলেন মহিলা, পুরুষ, শিশু, কিশোর অন্তঃসত্ত্বা সকলেই। ক্ষুধার জ্বালায় নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে তাঁদের পথ চলা অব্যাহত থাকে। ঘণ্টা-দিন-মাস পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সরকার বা প্রশাসনকে দেখা যায় স্থবির-নীরব দর্শক হিসেবেই। এদিকে এই কঠিন চলার পথে ট্রেনের চাকায় ছিন্নভিন্ন হয়ে, ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে, গাড়ি দুর্ঘটনায় এবং ক্ষুধা-তৃষ্ণায় শরীর বিকল হয়ে একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন ঝরে পড়ে। এভাবে প্রায় ৪০০ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

এভাবে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের অবর্ণনীয় দুর্দশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ফেরার দিকে অবশেষে দেশের শীর্ষ আদালত দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আদালত তাদের জন্য পরিবহণ, খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে ব্যবস্থা নেবার জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্দেশ দেয়। এর আগে অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, কে হাঁটছে, কে হাঁটছে না তা দেখবে কী করে আদালত? যাই হোক, সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ নির্দেশে অবশেষে ট্রেনে-বাসে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজ নিজ রাজ্যে ফেরানোর উদ্যোগ শুরু হয়।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, করোনা পরিস্থিতির এই ভয়াবহতার মধ্যে বারেবারেই প্রধানমন্ত্রীর নাটকীয় ভাষণ শোনার অভিজ্ঞতা হয়েছে দেশবাসীর। তিনি এই অতিমারী প্রতিরোধে ও মানুষের দুর্দশা মোকাবিলায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। এরপর পাঁচদিন পর পর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্যাকেজের ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু দেখা যায় মহামারীর নামে প্যাকেজ, অথচ প্যাকেজে মহামারী মোকাবিলায় কোনো বরাদ্দ নেই। দেশের দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের সুরাহার জন্য কিছুই নেই। বরং ধান্দার ধনতন্ত্রের আরও মুনাফার ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন এই প্যাকেজে অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১০ শতাংশ বরাদ্দ হবে। আর অর্থমন্ত্রী এক ধাপ এগিয়ে বলেন, বরাদ্দ হয়েছে ১০ শতাংশের উপর। কিন্তু দেখা যায় বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ০.৮ শতাংশের বেশি নয়।

অন্যদিকে এই প্যাকেজে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য উন্মোচিত করে দেওয়া হয় প্রায় সমস্ত ক্ষেত্র। ঢালাও বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে প্রায় অর্থনীতির সমস্ত ক্ষেত্রে। প্রতিরক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৭৪ শতাংশ। নতুন করে ৬টি বিমানবন্দর বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কয়লা উৎপাদনেও বেসরকারি ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমনকি মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও বেসরকারি ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কৃষি পণ্যের বাজারকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অথচ কৃষি ঋণ মকুব করার প্রস্তাব নেই। আগের তুলনায় আরও বেশি জমি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই অবস্থায় সিপিআই(এম) সহ বামপন্থীরা আয়করদাতা নয় এমন পরিবারগুলিকে ৬ মাস ৭৫০০ টাকা করে দেওয়া, বিনামূল্যে ৬ মাস জনপ্রতি প্রতি মাসে ১০ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া, রেগায় ২০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি ইত্যাদির দাবি জানায়। বামপন্থীরা সীমিত সাধ্য নিয়েই বিভিন্ন রাজ্যে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গেও অসহায় মানুষদের কাছে রান্না করা খাবার, প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী তুলে দিয়েছেন। তখন শাসকদলের স্থানীয় মাতব্বররা গরিব মানুষের রেশনের চাল দেদার লুঠ করেছে। আবার ত্রাণের কাজে যুক্ত সিপিআই(এম) এবং বামপন্থী কর্মীদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। এমনই নিষ্ঠুরতার চিত্র প্রত্যক্ষ করেছেন রাজ্যবাসী। পশ্চিমবঙ্গের সরকার করোনা মোকাবিলায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে, অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপনের দামামা বাজিয়ে গেছে। ফলে বিপন্ন হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, চিকিৎসক-স্বাস্থ্য কর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় টেস্টের ব্যবস্থা সহ রাজ্যের বিপন্ন মানুষদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, কর্মহীনদের জন্য কাজ, ত্রাণ ও চিকিৎসার দাবি জানিয়ে সিপিআই(এম) সহ ১৬টি বামপন্থী ও সহযোগী দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে। এবারের এই ভয়ংকর সঙ্কটকালেও মানুষ বুঝেছেন মানুষের প্রকৃত সাথি একমাত্র বামপন্থীরাই।