৫৭ বর্ষ ৪১ ও ৪২ সংখ্যা / ১৯ জুন ২০২০ / ৪ আষাঢ় ১৪২৭
সাম্প্রতিক সময়ে যে নেতৃবৃন্দকে আমরা হারিয়েছি
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মারণ ভাইরাস করোনার ভয়াবহ প্রকোপের মোকাবিলায় দীর্ঘ লকডাউনের সময়পর্বে সিপিআই(এমা)’র বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দসহ গণআন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দের জীবনাবসান ঘটেছে। দেশহিতৈষী’র পাতায় সংক্ষিপ্ত পরিসরে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
কমরেড অশোক ব্যানার্জি
প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা, রাজ্য ও দেশের সমবায় আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব কমরেড অশোক ব্যানার্জি ২৯ মার্চ বর্ধমান শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সিওপিডি, সুগার, পারকিনসন প্রভৃতি রোগে ভুগছিলেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, পার্টি নেতা মদন ঘোষ, পার্টি বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন।
১৯৩৮ সালের ৬ মার্চ কমরেড অশোক ব্যানার্জি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে স্নাতক হবার পর রায়নায় শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হন। এর পাশাপাশি তিনি এই অঞ্চলে ১৯৬০-৭০ দশকে ঐতিহাসিক জমির আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৭ সালে শিক্ষকতা ছেড়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী হিসাবে যোগ দেন। ওই বছরেই তিনি কমিউনিস্ট নেতা সুবোধ চৌধুরীর সান্নিধ্যে আসেন এবং পার্টি সদস্যপদ অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি জমির আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য কংগ্রেসী দুষ্কৃতীদের দ্বারা আক্রান্ত হন এবং ওই অবস্থাতেই তিনি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান।
কমরেড অশোক ব্যানার্জি ১৯৮১ সালে পার্টির অবিভক্ত বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য হন এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন প্রাদেশিক জেলা কৃষকসভার সদস্য ছিলেন।
প্রকৃত অর্থেই তিনি ছিলেন সমবায় ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন যোদ্ধা। ১৯৮৫ সালে বর্ধমান সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত একাধিকবার রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ও ডাইরেক্টর ছিলেন। এছাড়াও তিনি ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশন ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। সমবায় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকার জন্য ভারত সরকার, আরবিআই, নাবার্ডের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। তিনি বর্ধমানের ‘নতুন চিঠি’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশনার কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর স্ত্রী গৌরী ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী এবং পার্টির পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য।
কমরেড তুষার পঞ্চানন
শিক্ষক আন্দোলন এবং অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সিপিআই(এম) নেতা কমরেড তুষার পঞ্চানন ৩ এপ্রিল ঝাড়গ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই(এমব) রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র শোকপ্রকাশ করেছেন। এছাড়া পার্টির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায়, পার্টিনেতা দীপক সরকার, এবিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন।
কমরেড তুষার পঞ্চানন খড়্গপুর উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। নয়ের দশকে তিনি নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি সর্বভারতীয় শিক্ষক সংগঠন এসটিএফআই’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় পার্টির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন আন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর স্ত্রী ও কন্যা রয়েছেন।
কমরেড শোভানাথ বসু
অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সিপিআই(এম)’র প্রবীণ নেতা কমরেড শোভানাথ বসুর জীবনাবসান হয়েছে ১৩ এপ্রিল। এদিন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্যজনিত অসুখে তিনি দীর্ঘদিন ভুগছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তাঁর প্রয়াণে পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক তরুণ রায়, পার্টিনেতা দীপক সরকার প্রমুখ শোক জানিয়েছেন।
কমরেড শোভানাথ বসুর জন্ম উত্তরবঙ্গে। ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি বামপন্থী আন্দোলনে শামিল হন। স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরির সূত্রে তিনি খড়্গপুরে বাস করতেন। ১৯৭১ সালে তিনি পার্টি সদস্যপদ অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হন। সেই সময় থেকে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে কাজ করতে থাকেন। জেলায় শ্রমিক সংগঠন, সমবায় আন্দোলন, ব্যাঙ্ক-বিমা কর্মচারী ও আধিকারিক সংগঠন গড়ে তোলায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন তিনি।
কমরেড পীযূষ নাগ
ত্রিপুরার প্রবীণ সিপিআই(এমি) এবং শ্রমিক আন্দোলনের নেতা কমরেড পীযূষ নাগ ১৭ এপ্রিল প্রয়াত হন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। মেডিক্যাল অ্যান্ড সেলস রিপ্রেজেনটেটিভ হিসাবে কাজ করার সময় ১৯৭০-এর গোড়ায় তিনি সিআইটিইউ এবং পরে সিপিআই(এমা)’র সংস্পর্শে আসেন। ১৯৭৩ সালে তিনি সিপিআই(এম)’র সদস্যপদ অর্জন করেন। তিনি দীর্ঘসময় সিআইটিইউ-র ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক এবং পরবর্তী সময়ে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সিপিআই(এমর) রাজ্য কমিটির সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন অংশের শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার আন্দোলন সহ বিভিন্ন গণআন্দোলন ও শ্রেণি আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। তাঁর জীবনাবসানে পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।
কমরেড আসরাফ জাভেদ
সিপিআই(এম) হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য কমরেড আসরাফ জাভেদ ২৬ এপ্রিল হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা হওয়া সত্ত্বেও আর সুস্থ হননি। রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে অভুক্ত গরিব মানুষ, বস্তিবাসীদের জন্য খাবার জোগাড় করার কাজে নিরলস পরিশ্রম করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি বস্তিবাসীদের স্বাস্থ্যসচেতন করা, মাস্ক বিলি, এলাকা জীবানুমুক্ত করার কাজে দিনরাত পরিশ্রমের ফলে তাঁর শরীর ভাঙতে থাকে। এর পরিণতিতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর প্রয়াণে পার্টিনেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, দীপক দাশগুপ্ত, বিপ্লব মজুমদার প্রমুখ শোকজ্ঞাপন করেছেন।
১৯৭১ সালে হাওড়ার পিএম বস্তিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শিবপুর দীনবন্ধু কলেজ থেকে স্নাতক হন তিনি। কলেজেই তিনি এসএফআই-র সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীতে এলাকায় যুব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৯২ সালে তিনি পার্টি সদস্যপদ পান। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির রাজ্য সহ-সম্পাদক। সংগঠনের প্রাক্তন জেলা সম্পাদকও ছিলেন তিনি। কমরেড আসরাফ জাভেদ ১৯৯৮, ২০০৮ ও ২০১৩ সালে হাওড়া পৌর নির্বাচনে ৩১নং ওয়ার্ড থেকে পার্টির প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি একসময়ে হাওড়া পৌরসভায় মেয়র-ইন-কাউন্সিল সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালে পৌরসভার বোর্ড সভায় বক্তব্য রাখার সময় তৃণমূল পৌর প্রতিনিধিদের হাতে আক্রান্ত হন তিনি। প্রয়াত কমরেডের মা, স্ত্রী, ভাই, বোন বর্তমান।
কমরেড ধীরেন্দ্রনাথ রায়
সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য এবং রাজগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক কমরেড ধীরেন্দ্রনাথ রায় ৩ মে প্রয়াত হন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তিনি রাজগঞ্জ বিধানসভা থেকে পরপর তিন দফায় (১৯৭৭-১৯৯১) বিধায়ক নির্বাচিত হন। এলাকায় খুবই জনপ্রিয় এই নেতা কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর জীবনাবসানে পার্টির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
কমরেড কে বরদারাজন
সিপিআই(এম)’র প্রাক্তন পলিট ব্যুরো সদস্য কে বরদারাজনের জীবনাবসান হয়েছে ১৬ মে। তামিলনাডুর কারুরে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি পার্টির প্রাক্তন পলিট ব্যুরো সদস্য এবং আমৃত্যু পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য ছিলেন। ১৯৪৬ সালের ৪ অক্টোবর এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তিনি ডিপ্লোমা পেয়েছিলেন। অল্প বয়সেই তিনি বামপন্থী আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৭০ সালে তিনি পার্টির সদস্যপদ অর্জন করেন। এই সময় থেকেই তিনি ত্রিচি জেলায় কৃষকদের সংগঠিত করতে উদ্যোগী হন এবং ১৯৭০ সালে বিভা সাইগাল সংঘম (কিষানসভা অনুমোদিত)-এর জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে তিনি পার্টির রাজ্য কমিটি এবং ১৯৮৬ সালে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৫ সালে দিল্লি পার্টি কংগ্রেস থেকে তিনি পলিট ব্যুরো সদস্য নির্বাচিত হন।
জরুরি অবস্থার সময়ে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন এবং গ্রেপ্তার হয়ে জেলেও ছিলেন। কৃষক নেতা হিসাবে তিনি জমির অধিকার, মজুরি এবং জাতপাতের অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে তিনি সারা ভারত কৃষকসভার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত কমরেড বরদারাজন কৃষকসভার সর্বভারতীয় সহসভাপতি ছিলেন।
কমরেড কে বরদারাজনের মৃত্যুতে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো, সারা ভারত কৃষকসভার পক্ষ থেকে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও শোকপ্রকাশ করেছেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিট ব্যুরো সদস্য ও রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার পক্ষ থেকেও শোকপ্রকাশ করা হয়েছে।
কমরেড শৈলেন চৌধুরী
প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আন্দোলনের প্রবীণ নেতা কমরেড শৈলেন চৌধুরীর জীবনাবসান হয়েছে ২৭ মে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি হুগলি জেলার হিন্দমোটর এলাকায় বাস করতেন। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সভাপতি এবং ন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম ফর দ্য রাইটস অব দি ডিসঅ্যাবলড-এর সহসভাপতি ছিলেন। তিনি সাতের দশকে সিপিআই(এম)’র সদস্যপদ অর্জন করেন। তিনি বর্তমান বাংলাদেশে জন্মের পর বাবা-মা’র সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। অল্প বয়সেই তিনি পিতৃহীন হন এবং চটকল শ্রমিক মা’র কাছে বড়ো হন। স্কুলে পড়াশোনার সময়েই তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। সে কারণে তাঁর প্রতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় ছেদ পড়ে। তা সত্ত্বেও গরিব প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সারাজীবন সংগ্রামে ব্রতী ছিলেন। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর নেতা হিসাবে তিনি এরাজ্যে প্রতিবন্ধীদের জন্য বহু বিশেষ ধরনের স্কুল প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি প্রতিবন্ধীদের বহু স্কুল ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর জীবনাবসানে রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর নেতা কান্তি গাঙ্গুলি, পার্টিনেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, সুদর্শন রায়চৌধুরী, দেবব্রত ঘোষ, শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শোকপ্রকাশ করেছেন।
জ্যোর্তিময় হাজরা
বিশিষ্ট লেখক এবং সিপিআই(এম )’র ঘনিষ্ঠ দরদি জ্যোর্তিময় হাজরার জীবনাবসান হয়েছে। ৯ জুন রাতে বেহালার বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি পার্টির নানা কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন। ফ্যাসিবাদের ওপর তাঁর অগাধ জ্ঞান ছিল। তাঁর লেখা ‘অপারেশন বারবারোসা’, ‘নাজিবাদ ও বারবারোসা’ এবং ‘তৃতীয় রাইখের উত্থান ও পতন’ উল্লেখযোগ্য।