E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ১৪ সংখ্যা / ১৯ নভেম্বর, ২০২১ / ১ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮

হাসান আজিজুল হক প্রয়াত


বাংলা ভাষার অন্যতম সেরা গদ্যকার হাসান আজিজুল হকের জীবনাবসান হয়েছে ১৫ নভেম্বর, সোমবার রাতে বাংলাদেশের রাজশাহীতে নিজের বাসভবনেই তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮২। আগস্ট মাসে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অসুস্থতা বাড়লে তাঁকে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করা হয়েছিল। পরে রাজশাহীতে নিজের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু একটানাই অসুস্থ ছিলেন।

হাসান আজিজুল হকের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার যবগ্রামে। দেশভাগের পরে তাঁর পরিবার খুলনায় চলে আসেন। পরে রাজশাহীতে তাঁর পড়াশোনা। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত এখানেই তিনি অধ্যাপনা করেন।

ঔপন্যাসিক ও ছোটোগল্প উভয়ই লিখলেও হাসান আজিজুল হকের গল্পই পাঠকের মন কেড়েছে বেশি। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত এই বই বাংলা সাহিত্যে উজ্জ্বল স্থান নিয়ে নেয়। তাঁর অন্যান্য গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘নামহীন গোত্রহীন’, ‘পাতালে হাসপাতালে’। তাঁর গল্পে দু’পার বাংলাই এসেছে বারবার। তাঁর উপন্যাস ‘আগুনপাখি’ প্রাক্‌-দেশভাগ রাঢ় বাংলাকেই তুলে ধরেছে। দেশভাগের যন্ত্রণাকে প্রতিফলিত করেছে। চরিত্র নির্মাণ, গদ্যের বুননে তিনি অগ্রণী লেখকদের অন্যতম। তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শকুন’, ‘তৃষ্ণা’, ‘উত্তরবসন্তে’, ‘বিমর্ষ রাত্রি’, ‘প্রথম প্রহর', 'পরবাসী', ‘খাঁচা’, ‘ভূষণের একদিন’, ‘মন তার শঙ্খিনী’, ‘মাটির তলার মাটি’, ‘শোণিত সেতু’, ‘ঘরগেরস্থি’, ‘সরল হিংসা’, ‘খনন’।

মুক্তিযুদ্ধের জোরালো সওয়ালকারী হাসান আজিজুল পেয়েছেন বাংলা আকাদেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, আনন্দ পুরস্কার। বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর রচনা।