৫৯ বর্ষ ১৪ সংখ্যা / ১৯ নভেম্বর, ২০২১ / ১ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮
পরিবেশ আলোচনা
কার্বন নির্গমনে ‘নেট জিরো’ নয় - আলোচনায় ফল ‘নেট জিরো’
তপন মিশ্র
গ্লাসগো সিওপি-২৬
কথা ছিল ২০৩০-র মধ্যে কার্বনের ‘নেট জিরো’ নির্গমন সুনিশ্চিত করতে সদর্থক আলোচনা হবে ইংল্যান্ডের গ্লাসগোয় ‘ইউনাইটেড নেশসনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ওন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (United Nations Framework Convention on Climate Change)-এর সদস্য দেশগুলি অর্থাৎ কনফারেন্স অফ পার্টিজ-২৬ - সিওপি-২৬-র সম্মেলনে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। তার বদলে আলোচনার ফল হলো শূন্য - ‘নেট জিরো’। ‘নেট জিরো’ নির্গমনের অর্থ হলো, কোনো একটি দেশে তার সমস্ত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে (যানবাহন, শক্তি উৎপাদন, কলকারখানা ইত্যাদি) যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন করবে ঠিক সেই পরিমাণ কার্বন বিভিন্নভাবে তারা শোষণের ব্যবস্থাও করবে।
১২ নভেম্বর সাড়ম্বরে শেষ হয়েছে গ্লাসগোর পরিবেশ রক্ষার মহাসম্মেলন। ভবিষ্যতের রোড ম্যাপ তৈরি করতে গিয়ে যেটুকু সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার অল্পকথায় বিশদ বাখ্যা হলো - ২০২২ সালে সিওপি-২৭ অর্থাৎ ২৭ তম সম্মেলন হবে মিশরের সার্ম-এল-শেখ শহরে এবং সিওপি-২৮ অর্থাৎ ২৮তম সম্মেলন হবে ২০২৩ সালে ইউনাইটেড আরব এমিরেটস (ইউএই)-এ। ১৩ দিনের ২৬ তম সম্মেলনের সিদ্ধান্ত সর্বসমক্ষে আসার পর যা বোঝা যাচ্ছে যে, এগুলি ছাড়া এই সম্মেলনে আর কোনো সদর্থক এবং দৃঢ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়নি।
একটি খসড়া চুক্তি অবশ্যই হয়েছে। সেই খসড়া চুক্তিতে যদিও বলা আছে যে, এই চুক্তি সমস্ত সদস্য দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। তবুও চুক্তিপত্রের শুরুতে যে শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে - সেগুলি হলো “Urges,” “Considers”, “Notes” (বাংলা করলে দাঁড়ায় “অনুরোধ করা হচ্ছে,” “বিবেচনা করছে”, “মন্তব্য করছে”)-এর ন্যায় কিছু নরম শব্দ। অথচ অনেক কড়া কড়া শব্দ তথাকথিত “legally binding” অর্থাৎ আইনগত বন্ধন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অরগানাইজেশন)-র বিভিন্ন চুক্তির মধ্যে বেশ জোর দিয়ে ব্যবহার করা আছে।
ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্রাকার-কাট (সিএটি) নামে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে ৩২টি দেশের কার্বন নির্গমন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি সহ জলবায়ুর বেশ কয়েকটি সূচক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। অবশ্য এর মধ্যে ভারত নেই। এই ৩২টি দেশ বর্তমানে পৃথিবীর ৮০ শতাংশ কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী। কিন্তু সম্মেলনে যে গোলা গোলা সিদ্ধান্ত হলো, তার ফলে জাতিসংঘের ২০৫০-র মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ধরে রাখার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা কোনভাবেই পূরণ সম্ভব নয়। ‘কাট’ থার্মোমিটার দেখলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে।
কার্বন নির্গমনের ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলির যে দ্বন্দ্ব অপরিহার্য ছিল, বাজার অর্থনীতির চোখরাঙানিতে তা কিছুটা প্রশমিত হলেও মাঝে মাঝে মাথাচাড়া দিচ্ছে। এই দ্বন্দ্ব যাতে দানা না বাঁধে, ধনী দেশগুলি তাদের অনুদান কম বেশি করার মধ্যদিয়ে তা আটকানোর মরিয়া চেষ্টা করছে। দ্বন্দ্বের মূল কারণ হলো, ধনী দেশগুলি তাদের পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করেনি। উষ্ণায়ন রোধে গরিব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করেনি। এক্ষেত্রে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির উচিত ছিল সংগঠিতভাবে জোরালো প্রতিবাদের মধ্যদিয়ে গ্লাসগো সম্মেলনের আলোচনায় বক্তব্য উত্থাপন করা। আমাদের দেশ সেই দায়িত্ব পালন করেনি। শিল্পবিপ্লবের পর্ব থেকে ঐতিহাসিক নির্গমনের বিচারে ধনী দেশগুলি বায়ুমণ্ডলে অনেক কার্বন ডাই-অক্সাইড ভরে রেখেছে। সেই কারণে নির্গমন রোধে সব দেশের ঘাড়ে সমান দায় চাপানো অনৈতিক।
খসড়া ঘোষণাপত্রে কী আছে?
গত ১১ নভেম্বর একটি খসড়া চুক্তি সিওপি দপ্তর থেকে প্রকাশিত হয়। খসড়া, কারণ আগামী এক বছর ধরে এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য খোলা থাকবে। সিওপি-র সভাপতি ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ আলোক শর্মা বলেন যে, এটা ‘প্রায় চূড়ান্ত’ একটি খসড়া যা সদস্য রাষ্ট্রগুলি স্বাক্ষর করবে। তাঁর ভাষায়, এই খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত হলে “will set the future for our children and grandchildren” - ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আশাপ্রদ হবে। খসড়া চুক্তিতে বলা হয়েছে -
১। প্রথমত, সদস্য দেশগুলিকে ২০২২ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন রোধে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে। ‘নেট জিরো’ নির্গমনের লক্ষ্যে এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে এই ভূমিকা জরুরি। ঘোষণাপত্রে ২০২২ সাল শেষ নাগাদ ‘নেট জিরো’ নির্গমন লক্ষ্যে দেশগুলির সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দাবি করা হচ্ছে। ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)-র বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, এখনই প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী সদস্য প্রায় ২০০টি দেশের যে অঙ্গীকার বলবৎ আছে তাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি কম করে ২.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড়ে পৌঁছাতে বাধ্য। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে কোনো সদর্থক সিদ্ধান্ত হয়নি। মনে থাকতে পারে যে, ২০১৫ সালে প্যারিস আলোচনার আগে সদস্য দেশগুলি ঠিক এভাবেই ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশনস - এনডিসি বা স্বঘোষিত নির্গমনের নথি জমা দিয়েছিল। কোনো দেশই তাদের কথা রাখেনি।
২। দ্বিতীয় যে বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা হলো, এখনই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অসুরক্ষিত এবং আপাত দুর্বল দেশগুলিকে আসন্ন বিপদের মোকাবিলার জন্য আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। এই সাহায্য দেবে ধনী দেশগুলি। প্যারিস সম্মেলন এবং পরে ঠিক হয় যে, ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে দিতে হবে। এই ব্যবস্থা কোনো দান নয়, ঐতিহাসিক নির্গমনের দায়বদ্ধতার কারণে এই ব্যবস্থার কথা বলা হয়। এই আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতির ধারেকাছেও ধনী দেশগুলি পৌঁছতে পারেনি। ট্রাম্প জমানায় আমেরিকা তাদের ঘোষিত সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়-ক্ষতি, বনাঞ্চলের ধ্বংস বন্ধ করা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য ধনী দেশগুলির এই অর্থ দেওয়ার কথা। বিজ্ঞানীদের মতে এখনই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিশ্বজোড়া প্রতি বছর ক্ষয়ক্ষতির (খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, দাবানল ইত্যাদির কারণে) পরিমাণ এক হাজার বিলিয়ন ডলারের (এক ট্রিলিয়ন ডলার) মতো। আমরা সবাই জানি যে, দূষণের উৎসগুলি (পেট্রল, ডিজেল, কয়লা) বজায় রেখে বায়ুমণ্ডলের কার্বন হ্রাস করা সম্ভব নয়। এর জন্য চাই বিকল্প শক্তির উৎসগুলির ব্যবহার এবং দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী তা বিকশিত করা।
৩। এবারের আলোচনায় প্রথম না হলেও, বেশ গুরুত্ব দিতে মিথেন (CH4) দূষণের বিপদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কৃষি, পশুপালন, খনিজ জ্বালানি ইত্যাদি থেকে এই গ্যাস নির্গত হয়। গবাদি পশুর পাচনতন্ত্র এবং ধান খেত থেকে এবং জৈব সার তৈরির প্রক্রিয়ায় যে পচন হয় সেখান থেকে সবথেকে বেশি মিথেন নির্গত হয়। শিল্পবিপ্লবের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য মিথেন দায়ী। কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুলনায় ৮০ থেকে ৯০ গুণ বেশি ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে মিথেন। দূষণের ক্ষেত্রে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পর মিথেনের স্থান। আমেরিকা, ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়ন সহ ১০০-টির বেশি দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ২০৩০-এর মধ্যে তাদের দেশে মিথেন নির্গমন ৩০ শতাংশ কমাবে। এই চুক্তিতে ভারত স্বাক্ষর করেনি।
৪। ইন্দোনেশিয়া, পোল্যান্ড, ভিয়েতনাম, এবং আরও কয়েকটি দেশ কয়লা ব্যবহারে ধীরে ধীরে ইতি টানতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই দেশগুলি ঠিক করে যে, আর কোনো নতুন কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন তারা করবে না। কিন্তু চীন এবং আমাদের দেশ এই সিদ্ধান্তে একমত হয়নি। মজার বিষয় হলো, যে দেশের বুকে এই আলোচনা হচ্ছে সেই দেশে ১৭৭৬ সালে জেমস ওয়াটের স্টিম ইঞ্জিন (Newcomen steam engine) আবিষ্কারের ফলে ব্রিটেনের উত্তর অংশে এবং স্কটল্যান্ডে ব্যাপকভাবে কয়লা খনি থেকে কয়লা তোলা শুরু হয়। শিল্পবিপ্লবের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ঘটে। ভারত, চীনের মতো দেশে কম খরচে শক্তির জন্য কয়লার ওপর নির্ভরতা বেশি। বিকল্প শক্তির ব্যবস্থা না করে কয়লার ওপর নির্ভরতা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাবে শক্তি ব্যবহারে বৈষম্য বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে এই দেশগুলিতে। এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশের কয়লা সমৃদ্ধ প্রদেশগুলি উৎপাদন গুরুতর মাত্রায় কমানোর প্রস্তাবে আপত্তি জানাচ্ছে। তাই এক্ষেত্রেও তেমন কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি।
৫। বিশ্বের ১০০টির মতো দেশের নেতারা এই সম্মেলনে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রাকৃতিক অরণ্য নিধন প্রক্রিয়াকে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই দেশগুলির মোট অরণ্যের পরিমাণ বিশ্বের অরণ্যের ৮৫শতাংশ। কিন্তু ভারত সরকার এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে। তার একটা কারণও আছে। ভারত সরকার অরণ্যের আইন এবং অরণ্য নীতি পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে অরণ্যের বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা করছে। অরণ্য অধিকার আইন খর্ব করার চেষ্টাও হচ্ছে। এর একটিই উদ্দেশ্য, প্রাকৃতিক বনভূমির সম্পদকে লুণ্ঠন করা।
সম্মেলনের সময় কয়েকটি সমান্তরাল ঘটনা ঘটেছে যার ভালমন্দ বিচার এখনই সম্ভব নয়। চীন এবং আমেরিকার মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি গত ৮ নভেম্বর স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই দুই দেশের বর্তমান সময়ে দূষণ গ্যাস নির্গমন অনেকটা বেশি হলেও এদের মধ্যে আমেরিকা ঐতিহাসিক নির্গমনের দোষে দুষ্ট। এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে হয়েছে, উভয় দেশে মিথেন নির্গমন হ্রাসের জন্য।
গ্লাসগো চুক্তি এবং আমাদের দেশ
একথা পরিষ্কার যে, বিশ্ব পরিবেশ রাজনীতির ক্ষেত্রে আমাদের দেশের যে ভূমিকা গ্রহণের কথা ছিল তা পালন করা হয়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এদেশের ‘নেট জিরো’ নির্গমনের লক্ষ্য ২০৫০ সালের বদলে ২০৭০ সাল করেছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই ২০৫০ সাল নাগাদ নেট জিরোও পৌঁছনোর কথা দিয়েছে। এই ব্যবস্থা না নিতে পারলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ধরে রাখা যাবে না। অবশ্য আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ২০৩০ সাল নাগাদ বিকল্প শক্তির উৎস ব্যবহার অনেকটা বৃদ্ধির কথা বলেছেন। পাশাপাশি আমাদের দেশ শিল্পোন্নত দেশগুলির থেকে আগামী ১০ বছরের জন্য ১০০০ বিলিয়ন ডলার দাবি করেছে।
ব্রিটেন সরকারের তথ্য হলো যে, ১৩ দিন ব্যাপী এই সাড়ম্বর আলোচনাসভা আয়োজনের জন্য প্রায় ১০২, ৫০০ টন সমতুল্য কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2 eq - সমস্ত গ্রিন হাউস গ্যাসকে কার্বন ডাই-অক্সাইডের এককে পরিবর্তিত করে) নির্গত হয়েছে। এই পরিমাণ, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ২৫ তম সিওপি সংগঠিত করতে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়েছিল তার দু’গুণেরও বেশি। এবারের নির্গমনের পরিমাণের প্রায় ৬০ শতাংশ এসেছে আন্তর্জাতিক উডানের সাহায্যে, বিশেষত, ব্যক্তিগত উডোজাহাজগুলি থেকে। যাঁরা বেসরকারি প্রতিনিধি এবং প্রতিবাদের জন্য জড়ো হয়েছিলেন তাঁদের ভীত ও সন্ত্রস্ত করার অভিযোগও এসেছে স্কটল্যান্ড পুলিশের বিরুদ্ধে।
দেশে দেশে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন এখন রাজনৈতিক লড়াইয়ের অংশ। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৯৭২ সালে স্টকহোমে যে আলোচনা শুরু হয় তার ৫০ বছর পুর্তি হচ্ছে এবছর। এই ৫০ বছরে আলোচনার অগ্রগতি তো ঘটেইনি বরং পশ্চাদ্গতি ঘটেছে। আইপিপিসি (ষষ্ঠ)-র কয়েকজন বিজ্ঞানীর একটি উক্তি এখানে তুলে ধরা দরকার। ওঁরা বলছেনঃ “...climate change is caused by industrial development, and more specifically, by the nature of social and economic development produced by the nature of capitalist society, which they therefore consider ultimately unsustainable.”। তাঁদের কথায় - জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ হলো শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থা, বিশেষকরে ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা কোনভাবেই টেকসই নয়। স্পেনের ‘সিটিএক্সটি’ (CTXT) নামে একটি অনলাইন সংবাদ সংস্থা আইপিসিসি’র দ্বিতীয় দল (The Impacts, Adaptation and Vulnerabilities Related to Climate Change)-এর প্রতিবেদনের অংশ তুলে ধরে এই উক্তি করে। প্রসঙ্গত বলা দরকার যে, প্রথম দলের প্রতিবেদন ‘ফিজিক্যাল সায়েন্স বেসিস’ (Physical Science Basis) প্রকাশিত হলেও দ্বিতীয় দলের প্রতিবেদন (আইপিসিসি’র ষষ্ঠ প্রতিবেদন) এখনও প্রকাশের অপেক্ষায়। তাই ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই, জলবায়ুর নয়।