৫৯ বর্ষ ৪০ সংখ্যা / ২০ মে, ২০২২ / ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯
কমরেড জীতেন নন্দীর স্মরণসভা
২০১১ সালে পরিবর্তনের জমানা শুরুর প্রথম দিনেই গড়বেতায় তৃণমূলী দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন গড়বেতার পার্টিনেতা কমরেড জীতেন নন্দী। তখন গড়বেতা সহ সংলগ্ন অঞ্চলে ভয়াবহ সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন পুলিশ সুপার সহ গড়বেতা থানাকে কবজা করে সিপিআই (এম)’র ওপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ, পার্টিকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া, এলাকা ছাড়া করা, সমস্ত পার্টি কার্যালয় দখল ইত্যাদি নানা ধরনের হিংস্রাশ্রয়ী কার্যকলাপ সীমাহীনভাবে চলেছে। তখন পার্টিকর্মীদের রক্ষা করতে জীবন দেন কমরেড জীতেন নন্দী। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে এখানে খুন হয়েছিলেন পার্টির ১৯ জন নেতা-কর্মী এবং সরকারে আসার পর খুন হন সাত জন।
দীর্ঘ এগারো বছর পর ১৪ মে ফতেসিংপুর পার্টি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয় কমরেড জীতেন নন্দীর স্মরণসভা। এদিন অসংখ্য মানুষ, বিশেষ করে মহিলারা রান্না বন্ধ রেখে গ্রাম থেকে লালঝান্ডা নিয়ে মিছিল করে আসেন স্মরণসভায়। এদিন বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে স্মরণসভা সমাবেশের আকার নেয়।
স্মরণসভায় পার্টির জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, কমরেড জীতেন নন্দীর হাত ধরেই উন্নয়নের মাপকাঠিতে পঞ্চায়েতের প্রধান হিসাবে প্রথম স্থান অধিকার সহ রাজ্য সরকারের পুরস্কার এনে দিয়েছিলেন গড়বেতার মাটিতে। তিনি এখানে সেই সময়ের উন্নয়নের নানা দিকের বর্ণনা করে বলেন, পরিবর্তনের পর গবেতার মাটিতে জীতেন নন্দীর পর খুন হন আরও ছয় জন - কমরেড সইদুল ভুঁইয়া, লক্ষ্মীকান্ত সর্দার, চিত্ত রক্ষিত, গণেশ দুলে, শীতল মাইতি, ইমান আলি খান। আর বালি, মোরাম আর জঙ্গলের কাঠ লুঠের বখরা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে খুন হয় তৃণমূলেরই ৬ জন।
সুশান্ত ঘোষ বলেন, এতকিছু করেও লালঝাণ্ডাকে স্তব্ধ করা যায়নি। তিনি মানুষের ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
এদিনের স্মরণসভায় পার্টির বর্ষীয়ান নেতা দীপক সরকার বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে গড়বেতায় সিপিআই (এম)-র ভোট বেড়েছে। মানুষ ঝ লালঝাণ্ডার দিকে মুখিয়ে রয়েছেন। আত্মসন্তুষ্টি নয়, পরিকল্পনা করেই গ্রামে গ্রামে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে, তাঁদের কথা ধৈর্য ধরে শুনতে হবে। সেইসঙ্গে এলাকার জ্বলন্ত সমস্যাগুলি নির্দিষ্ট করে তার প্রতিকারের কর্মসূচি রূপায়ণে পার্টি নেতা-কর্মীদের উদ্যোগী হতে হবে।
এছাড়াও এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টিনেতা তাপস সিনহা, দিবাকর ভুঁইয়া, তপন ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন পার্টির এরিায়া কমিটির সম্পাদক সামেদ গায়েন। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলার পার্টি নেতা ষড়ানন পান্ডে এবং হুগলি জেলার নেতা অভয় ঘোষ।