৫৮ বর্ষ ১৪শ সংখ্যা / ২০ নভেম্বর ২০২০ / ৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৭
ভূতের গল্পে উপসংহার হয় না
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
।। এক ।।
সব বিষয় নিয়ে লেখা বা মন্তব্য করা ঠিক নয়। কিছু কিছু জিনিস এড়িয়ে গেলেও বিশেষ কিছু যায় আসে না। তবু আমাদের চারপাশে মাঝে মাঝেই এমন কিছু ঘটে যাকে এড়াতে চাইলেও সে ব্যাটা পিছু ছাড়ে না। দুঃস্বপ্নের মতো পেছন পেছন দৌড়োতেই থাকে। ভবম হাজাকেও তো গাছের কাছে গিয়ে রাজার মাথায় দুটো শিং-এর কথা বলতে হয়েছিলো। ভবম কি তখন জানতো সেই গাছের কাঠ দিয়ে ঢোল তৈরি হয়ে পরে বিপত্তি ঘটবে?
শহর কলকাতা শোকযাত্রা বড়ো কম দেখেনি। বহু খ্যাতিমান মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা বিষাদে মৌন হয়ে পথ হেঁটেছে। সেখানে পথ বা রথ কখনোই নিজেকে দেব ভাবেনি। অন্তর্যামীকেও মুখ লুকিয়ে হাসতে হয়নি। গভীর শোকাচ্ছন্ন অবস্থায় অবিরাম হাত নাড়ার কোনো প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়নি। যা হলো গত ১৫ নভেম্বর প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ যাত্রায়। ‘হাত থাকিলেই নাড়িতে হইবে’ এরকম কোনো নিদান কোথাও দেওয়া আছে কিনা জানা নেই। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহুদিন আগে লিখে গেছিলেন - ‘দৈন্য জিনিসটা জটিল মিশ্র জিনিস। আর, এ জিনিসটার উৎপত্তির কারণ আছে আমাদের জ্ঞানের অভাবে, বুদ্ধির ত্রুটিতে, প্রথার দোষে, চরিত্রের দুর্বলতায়। মানুষের সমস্ত জীবনযাত্রাকে এক করে ধরে তবে ভিতরে বাহিরে এর প্রতিকার করা যেতে পারে।’
সৌমিত্রবাবু বামপন্থী ছিলেন, ছিলেন না সে বিতর্ক অর্থহীন। তার পরিচয় তিনি রেখে গেছেন তাঁর বর্ণময় জীবনে, তাঁর ফেলে যাওয়া কাজে। যিনি লিখে গেছেন - ‘‘ভাবলে অবাক লাগে, যাঁর আমলে ২০০২ সালে গুজরাটে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা হলো, সেই তিনিই আজ ভারতবর্ষের মসনদে। ভারতবর্ষের মানুষ এদের সহ্য করছেন। তাঁদেরই ভোট দিয়ে আবার জেতাচ্ছেন।... মহামারীতে এত মানুষ আক্রান্ত, এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, এককথায় দুঃসহনীয়। তার মধ্যেও রামের নামে রাজনীতি চলছে।’’ যিনি বিশ্বাস করতেন - ‘‘গোঁড়ামি তৈরি করতেই চালাকি করে ধর্ম ও রাজনীতিকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কে রামকে ভালবাসল, কে রহিমকে - তা কোনও ব্যাপারই হতে পারে না। তাই বার বার মনে হয়, এসবের বিকল্প হতে পারে একমাত্র বামপন্থাই।’’ ২০১৩ সালে তাঁকে ও মৃণাল সেনকেই তো বাদ দেওয়া হয়েছিলো কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কমিটি থেকে। হাত নেড়ে ইতিহাস মোছা যায় নাকি?
।। দুই ।।
লালা এক তরল ও পিচ্ছিল পদার্থ, যা আমাদের খাদ্যবস্তু গিলতে সাহায্য করে। প্রাথমিক বিজ্ঞান অনুসারে লালা হলো মুখের পেছনে থাকা লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একপ্রকার বর্ণহীন, তরল, পিচ্ছিল পদার্থ। ঘাবড়ে যাবেন না। জীবন বিজ্ঞানের ক্লাস এটা নয়। এমনিই বললাম। আসলে লালা যে রকমেরই হোক না কেন তা সবসময়েই খাদ্যবস্তু গিলতে সাহায্য করে। খাদ্যবস্তুরও তো রকমফের থাকে নাকি। সুকান্ত ভট্টাচার্য-এর ধনপতি পাল তিনি জমিদার মস্ত তো আমরা সকলেই পড়েছি। ‘খাদ্যে অরুচি তার সব লাগে তিক্ত, খাওয়া ফেলে ধমকান শেষে অতিরিক্ত, দিনরাত চিৎকার আরও বেশি টাকা চাই, আরও কিছু তহবিলে জমা হয়ে থাকা চাই।’ সেটাও তো খাদ্য নাকি! কাব্য চর্চা থাক।
চিট ফান্ড জালিয়াতদের ধরতে কোনো এক সময় নব্বই দিন সময় চেয়েছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঠিক যেমন নোটবাতিলের সময় প্রধানমন্ত্রী পঞ্চাশ দিন সময় চেয়েছিলেন। তা সে পঞ্চাশ দিন হোক আর নব্বই দিন – সময় পেরিয়ে গেছে বহুদিন। ভারতবাসী যেহেতু নিতান্তই মাটির মানুষ, এখনও কেউ কেউ ঘোর বুরে দিনেও কল্পিত ‘আচ্ছে দিন’-এর গল্পে আস্থা রাখেন, তাই প্রধানমন্ত্রী পঞ্চাশ দিন বাদে যা করতে বলেছিলেন সেটা করে দেখায়নি। তবে কুমীর ছানা দেখানোর মতো মাঝে মাঝেই চিট ফান্ড বেরোয়, নারদ বেরোয়। বিভিন্ন ঘটনায় খানা তল্লাশি হয়। নড়েচড়ে বসে ইডি মিডি। তারপর আবার পুনর্মূষিক ভবঃ না কী একটা বলে তাই হয়ে যায়।
এই এবারও যেমন গত ৬ নভেম্বর রাজ্যের ৩০ জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর দপ্তর। যেখান থেকে নাকি জানা গেছে রাজ্যে কোনো একজন প্রভাবশালীর স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কয়লা পাচারের টাকা ঢুকেছে। বাজারে জোর খবর প্রতি মাসে নাকি ২৭ থেকে ৩০ কোটি টাকার লেনদেন। পুরুলিয়ার বাসিন্দা জনৈক কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝি ওরফে ‘লালা’ নাকি কীসব লিখিত বিবৃতি টিবৃতিও দিয়েছেন। প্রতি মাসে নাকি একাধিক ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে ‘প্রভাবশালী’ ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে। এসব খবরে আপনার আমার বুকে শেল বিঁধলেও আয়কর দপ্তর নাকি জানিয়েছে এরকম ‘শেল কোম্পানি’র সংখ্যা ১৬০। আমরা যদিও লকডাউনে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া মানুষজন, তাই প্রভাবশালীর জাহাজের খোঁজ রাখি না। তবে ঘটনাচক্রে ওই সময়ই রাজ্য সফরে ছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সেই সময়েই নাকি দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলেকে ফোন করে তাঁর বাবার শারীরিক বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। সবটাই কাকতালীয় হলেই ভালো। কিন্তু ওই বাঙলা প্রবাদগুলো খুব জ্বালাতন করে। খালি মনে পড়ে দুরাত্মার ছলের অভাব হয়না।
।। তিন ।।
সবুরে মেওয়া ফলে - কথাটা বিহারের সদ্য নিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী নীতীশকুমারের দলের মেওয়ালাল চৌধুরী জানতেন কিনা জানা নেই। তবে বিরোধী মহাজোটের সঙ্গে মাত্র ০.০৩% ভোটের ফারাকে সরকার গড়ার পর ঘটনাটা অনেকটা সেরকমই দাঁড়িয়েছে।
২০১৭ সালে মেওয়ালাল চৌধুরীর গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছিল বিহারের তৎকালীন বিরোধী দল বিজেপি। এমনকি রাজ্যরপালের দ্বারস্থও হয়েছিলেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। ভাগলপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকার সময় মেওয়ালাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে - ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিধি বহির্ভূতভাবে সহকারি অধ্যাপক এবং জুনিয়র বিজ্ঞানী নিয়োগের। ভবন নির্মাণেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও ২০১৭ আর ২০২০ এক নয়। রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে গেলে মুকুল কখন আম হয়ে পেকে টুসটুস করে ধরাছোঁয়ার বাইরে গিয়ে ঝুলতে থাকে ধরতেই পারা যায়না। যাক সে কথা।
এই নিয়োগ প্রসঙ্গে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেছেন - “ক্ষমতা ব্যবহার করে অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে... মেওয়ালাল চৌধুরীকে নিয়োগ করে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার তাঁর লুটপাট ও ডাকাতিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন... মুখ্যমন্ত্রী নিজের চেয়ার বাঁচাতে অপরাধ, দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে ভাষণ চালিয়ে যাবেন অথচ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকেই তিনি মন্ত্রী করবেন না।’’ যদিও সত্যি কথাটা বলেছেন মেওয়ালাল চৌধুরী নিজেই - ‘‘অনেক বিধায়কের বিরুদ্ধেই এরকম মামলা রয়েছে।’’ কাজেই কারোর কিছু বলার থাকতে পারেনা।
যদিও অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা এডিআর জানিয়েছে - নীতীশকুমারের নতুন মন্ত্রীসভার ১৪ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৮ জনের বিরুদ্ধেই একাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী - বিহারের নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে বিজেপির ৪ জন, জেডিইউ’র ২ জন, হিন্দুস্তান আওয়ামি মোর্চার ১ জন এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টির ১ বিধায়কের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বেশি সমালোচনা করা ঠিক নয়। আইটি সেল তো তৈরিই আছে। কে জানে কখন কার গায়ে দেশদ্রোহীর তকমা সেঁটে যাবে। তখন ভারভারা রাওয়ের মতো দু’বছর ধরে বিনা বিচারে জেলে আটকে থাকতে হবে। অসুস্থ হলেও চিকিৎসা পাওয়া যাবেনা। যদিও মহামান্য আদালত গত ১৮ নভেম্বর অশীতিপর শয্যাশায়ী ভারভারা রাওকে জামিন নয়, ১৫ দিনের জন্য তিলোজা জেল থেকে নানাবতী হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান, ৮২ বছর বয়সী সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর কথা বলছি না। স্ট্যান স্বামী আর ‘গো’ স্বামীতে চিরকালই পার্থক্য থাকে। তাইতো শিলং টাইমসের সম্পাদক প্যাট্রিসিয়া মুকিমকে এডিটরস গিল্ড থেকে গিল্ডের পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে পদত্যাগ করতে হয়।
।। চার ।।
মাত্র চার ঘণ্টার নোটিশে ঘোষিত অপরিকল্পিত লকডাউনে দেশে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১৪ কোটির বেশি মানুষ। সীতারাম ইয়েচুরি সহ বিভিন্ন বিরোধী নেতৃত্ব একাধিকবার একথা জানিয়েছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দাবি, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। একবার নয়। একাধিকবার। সেটা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে অথবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে হচ্ছে কিনা তা জানা নেই। তবে জিডিপি ফিডিপি কীসব আছে - তার হিসেব সেরকম বলছে না। আর এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিস জানাচ্ছে - সেপ্টেম্বরে নথিবদ্ধ সংস্থার সংখ্যা ছিল ৫,৩৪,৮৬৯। যা অক্টোবরে হয়েছে ৫,০৪,০৪৪। অর্থাৎ এক মাসে কমেছে ৩০,৮২৫ সংস্থা। গত সেপ্টেম্বরে ওই সংস্থায় প্রভিডেন্ট ফান্ড জমা পড়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লক্ষ ৮০ হাজার কর্মীর। যা অক্টোবরে কমে হয়েছে ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার। অর্থাৎ গত এক মাসে শুধুমাত্র প্রভিডেন্ট ফান্ড জমা দেন এরকম কর্মী সংখ্যা কমেছে ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার প্রায়। যদিও এই পরিসংখ্যান নিয়ে পাল্টা যুক্তিতে এখনও সরকারের তরফে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অর্থনীতির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আরও একটা কথা বোধহয় বলা যেতেই পারে। গত ১৭ নভেম্বর আরও এক ব্যাঙ্ক লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কে কেন্দ্রীয় সরকার মোরাটোরিয়াম জারি করেছে। আগামী একমাস এই ব্যাঙ্কের কোনো গ্রাহক ২৫ হাজার টাকার বেশি তুলতে পারবেন না।
।। পাঁচ ।।
আগামী ২৬ তারিখ আবারও একটা ‘কর্মনাশা ধর্মঘট’। না আমি বলছি না। একশ্রেণির মিডিয়া বলছে। বামপন্থীরা মানুষের দাবিতে কোনো ধর্মঘটের ডাক দিলেই যাকে ‘কর্মনাশা’ দাগিয়ে তথাকথিত সেই মিডিয়ার কুমীরের কান্না শুরু হয়ে যায়। দেশের মানুষই যেখানে কর্মহীন, সেখানে ধর্মঘট কর্মনাশা হয় কীভাবে সেই প্রশ্ন মিডিয়াকে ঘুরিয়ে করা যেতেই পারে। অথচ মিডিয়ার বড়ো অংশই অপরিকল্পিত লকডাউন নিয়ে চুপ থাকে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ নিয়ে চুপ থাকে। দুর্নীতি প্রসঙ্গে চুপ থাকে। শ্রমআইন লঘু করার চেষ্টা নিয়ে চুপ থাকে। মানুষের রুটি রুজির লড়াই নিয়ে চুপ থাকে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। প্রচার শুরু হয়ে গেছে ধর্মঘটের জন্য কত মানুষের ক্ষতি হবে, একদিনের রোজগার নষ্ট হবে তাই নিয়ে। যে মিডিয়া টানা লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকা নিয়ে চুপ থেকেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে চুপ থেকেছে। ১৪ কোটি মানুষের বেকারত্ব নিয়ে চুপ থেকেছে। মানুষের কর্মহীন হওয়া নিয়ে চুপ থাকা মিডিয়াই এখন একদিনের ধর্মঘটের বিরোধিতায় সরব।
যদিও এই ধর্মঘটের দাবি মানুষেরই দাবি। যার মধ্যে আছে - আয়কর দেন না এমন সমস্ত পরিবারকে মাসে ৭৫০০ টাকা করে দেবার দাবি। সব অভাবী মানুষকে প্রতি মাসে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে রেশনের দাবি। গ্রামাঞ্চলে ২০০ দিনের কাজের দাবি ও বর্ধিত মজুরির দাবি। সমস্ত কৃষক বিরোধী আইন এবং শ্রমিক বিরোধী শ্রম কোড বাতিল করার দাবি। আর্থিকক্ষেত্র সহ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ বন্ধ করার দাবি। রেল, অর্ডন্যান্স কারখানা, বন্দর ইত্যাদির মতো সরকার পরিচালিত উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রগুলির বেসরকারিকরণ বন্ধ করার দাবি। সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের কর্মচারীদের গা-জোয়ারি আগাম অবসর সংক্রান্ত কঠোর বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার দাবি। সকলের পেনশনের দাবি, ন্যাশনাল পেনশন স্কিম (এনপিএস) বাতিল করা এবং আগের পেনশন বজায় রাখার দাবি। জনবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আম জনতার দাবি। কর্মনাশা নয়, ধর্মঘট মানুষের হাতে কাজের দাবিতেই।
।। একশো ।।
সব ভালো তার শেষ ভালো যার। এতক্ষণ এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ করে যা যা লিখে গেছি আপাতদৃষ্টিতে তা সবটাই ছেঁড়া ছেঁড়া। বিচ্ছিন্ন। যদিও সম্পর্কহীন নয় মোটেই। ‘হাত নাড়া’ থেকে ‘কর্মনাশা’ - দেখতে আলাদা আলাদা হলেও সবই গভীরভাবে যুক্ত। সেখানে কেন্দ্র রাজ্যে কোনো প্রভেদ নেই। দিল্লি বাংলায় কোনো প্রভেদ নেই। বিজেপি তৃণমূলে কোনো প্রভেদ নেই। আর এ সবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল, আছে, থাকবে মানুষের জোট। যে প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি খুব স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, তৃণমূলই বিজেপি-কে বাংলায় প্রবেশের রাস্তা করে দিয়েছে। তৃণমূলই বিজেপি’র সঙ্গে আঁতাত করেছিল। বিজেপি’র বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে শূন্য।… কেউ যদি বলেন বিজেপি’কে পরাস্ত করতে তৃণমূল সহ সকলকে নিয়ে চলতে হবে তা হবে আত্মঘাতী।