৫৮ বর্ষ ২য় সংখ্যা / ২১ আগস্ট ২০২০ / ৪ ভাদ্র ১৪২৭
ফেসবুকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জেপিসি তদন্ত চাইল সিপিআই(এম)
অভিযোগ উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের ঘৃণা ও বিদ্বেষ উদ্রেককারী বক্তব্য সম্পর্কে আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে নীরব ও উদাসীন থাকার নীতি নিয়ে চলার পক্ষপাতী সামাজিক গণমাধ্যমের বৃহত্তম সংস্থা ফেসবুক। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখতেই তাদের এই সাম্প্রদায়িক পৃষ্ঠপোষকতা - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উঠে এসেছে এই গুরুতর প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে ফেসবুকের সঙ্গে আরএসএস-বিজেপি’র আঁতাত এবং সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানোর ক্ষেত্রে এই মঞ্চগুলির ব্যবহার নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত চাইল সিপিআই(এম)।ভারতে ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরে নজরে এসেছে ফেসবুকের অন্য দুই মাধ্যম - হোয়াটস অ্যাপ, ইনস্টাগ্রামও।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই প্রতিবেদনে ভারতে কর্মরত সংস্থার কিছু কর্মীর নাম প্রকাশ না করে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ফেসবুকে বিজেপি এবং তার সমর্থকদের ঘৃণার ও বিদ্বেষ ছড়ানো প্রচার করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে সংস্থার নিজের নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়েও। ‘ব্যবসার ও শাসক পক্ষের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতি হবে’, এই অজুহাতে অনুমোদন করা হয়েছে একের পর এক সাম্প্রদায়িক পোস্টকেও। ফেসবুকের নিয়ম অনুযায়ী যে পোস্ট ঘৃণা ছড়াচ্ছে তা প্রকাশ করা যায় না। এই বিষয়ে নজরদারি করার জন্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট টিমের তরফ থেকে আপত্তি ওঠা সত্ত্বেও ভারতে ফেসবুকের অন্যতম শীর্ষ কর্ত্রী আঁখি দাস আপত্তিকর পোস্ট মুছতে অনুমোদন দেননি। ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আপত্তিকর প্রচারের জন্য মঞ্চ খুলে দেওয়া ও তার বিনিময়ে মুনাফা ঘরে তোলার।
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো ১৭ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ফেসবুক নিজের নিয়মও না মেনে সাম্প্রদায়িক প্রচার চালাতে দিচ্ছে। সামগ্রিকভাবে যে আশঙ্কা ছিল তা-ই প্রমাণিত হচ্ছে। ২০১৮-তে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনেও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল খরচ করছে, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ ছড়াতে তাকে ব্যবহার করছে। ফেসবুক সম্প্রতি রিলায়েন্সে বিপুল বিনিয়োগ করেছে, তাতে একচেটিয়া আধিপত্যের আশঙ্কা আরও বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার অভ্যন্তরীণ নজরদারির কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বিজেপি’র হাতে বিপুল অর্থ, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনী বন্ডের টাকা, যার কোনো স্বচ্ছতা নেই। তা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চাইছে বিজেপি। ফেসবু্ক, হোয়াটস অ্যাপ, ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে বিজেপি’র আঁতাতের জরুরি এবং বিশদ তদন্ত দাবি করে পলিট ব্যুরো বলেছে, দায়বদ্ধতা স্থির করতে হবে, সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে এই তদন্ত করাতে হবে। যতক্ষণ এই তদন্ত শেষ না হচ্ছে ততক্ষণ কোনো সরকারি কাজ এবং নির্বাচন কমিশনের কাজে ফেসবুকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কংগ্রেসের তরফ থেকেও এদিন জেপিসি তদন্ত দাবি করা হয়েছে।