৫৮ বর্ষ ৪০ সংখ্যা / ২১ মে, ২০২১ / ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৮
কমরেড মৃণালকান্তি রায়ের জীবনাবসান
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সম্পাদক কমরেড মৃণালকান্তি রায়ের জীবনাবসান হয়েছে। ১৪ মে বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তিনি ফালাকাটা বিদ্যাসাগর পল্লির নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড মৃণালকান্তি রায় অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় পার্টির জেলা সম্পাদকমমণ্ডলীর সদস্য এবং সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই পুত্র বর্তমান। কমরেড মৃণালকান্তি রায়ের জীবনাবসানে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর সদস্য বিমান বসু ও পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র।
কমরেড মৃণালকান্তি রায়ের মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই ফালাকাটা সহ সমগ্র আলিপুরদুয়ার জেলার গ্রামীণ কৃষি এলাকা সহ চা বাগান বনবস্তি আলিপুরদুয়ার ফালাকাটা বীরপাড়া সহ বিভিন্ন শহর এলাকাগুলিতেও গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। বাইপাস সার্জারির পরে গত এক বছর যাবত মৃণালকান্তি রায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ও বাড়িতেই ছিলেন। ১৯৪৯ সালে তাঁর জন্ম। সত্তরের দশকের অস্থির সময়ে উত্তাল ও লড়াকু মেজাজের ছাত্র-যুব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি পার্টিতে আসেন। পরে ফালাকাটায় দুর্বার কৃষক আন্দোলন গড়ার কাজে যোগ দেন। অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি, জেলা ভাগের পরে আলিপুরদুয়ার জেলায় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি পার্টির আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তিনি কৃষক সভার রাজ্য সহ সভাপতি ছিলেন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। সারা ভারত কৃষক সভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি সঞ্জয় পুততুণ্ড ও সম্পাদক অমল হালদার তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।
কৃষক আন্দোলনের পাশাপাশি জেলায় সামাজিক আন্দোলনেও কমরেড মৃণালকান্তি রায়ের অবদান ছিল। তিনি আলিপুরদুয়ারের সুবোধ সেন ব্লাইন্ড স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং ফালাকাটায় নৃপেন মিত্র চক্ষু হাসপাতালের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কর্মকর্তা ছিলেন। জেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধেও তিনি সাহসের সঙ্গে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এদিন ফালাকাটা পার্টি অফিসে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয়, সেখানে তাঁর শরীরে রক্তপ্তাকা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় । এখানে জেলা পার্টির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কিশোর দাস সহ জেলা সম্পাদকমমণ্ডলীর সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, গণসংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাতে ফালাকাটা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।