৫৯ বর্ষ ৩৬ সংখ্যা / ২২ এপ্রিল, ২০২২ / ৮ বৈশাখ, ১৪২৯
প্রতিশ্রুতি মন্দিরের - ভাতের থালা শূন্য থাক
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ঘটনাটা বছর কয়েক আগের। পরিচিত একজন আমাকে বেশ ঘটা করে বোঝাতে চেয়েছিলেন মন্দিরের উপকারিতা। একটা ভালো মন্দির করে দিতে পারলে তাকে ঘিরে কত মানুষের কর্মসংস্থান হয় তার বেশ একটা হাতেগরম হিসেব। শিল্পকে ঘিরে যেমন অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে তেমনই নাকি মন্দিরকে ঘিরে অনেক দোকান গড়ে ওঠে। ফুল, মালা, প্রসাদ সবকিছুর। মন্দিরের পরিচর্যার জন্য, ভোগ রান্নার জন্য বহু মানুষের প্রয়োজন হয়। তাতেও বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়। উদাহরণ হিসেবে তিরুপতি মন্দিরের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। তাঁর উপসংহার অনুসারে, দেশে কারখানা গড়ার বদলে আরও বেশি করে মন্দির তৈরি করা উচিত। তাতে অনেক ‘ফালতু’ ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়া যায়। শ্রমবিরোধের কোনো সম্ভাবনা থাকেনা। শান্তি বজায় থাকে এবং এতেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সুদৃঢ় হয়। বিষয়টাকে সেইসময় পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, একমাত্র আরএসএস-এর পক্ষেই এরকম ভুলভাল ভাবনা সম্ভব। আরএসএস-এর নাম তুলে ফেলায় কথা কাটাকাটিও হয়েছিল। কিন্তু আমি সত্যি তখন এই হুইসপারিং ক্যাম্পেনিং-এর গুরুত্ব বুঝিনি। ধর্ম ব্যবসার উপকারিতার গুণগানের কারণ বুঝিনি। বলতে দ্বিধা নেই, বুঝতে পারলাম আজ এক বছর পর ‘জিন্দালবাবু’র ঘোষণা শুনে। একবছর পরে বুঝলাম গোপন অ্যাজেন্ডার প্রচার কীভাবে চালিয়ে যেতে হয়। উপলব্ধি করলাম সত্যিই প্রচার কৌশলে আমরা ঠিক কতটা পিছিয়ে আছি।
চারশো একর বনাম সাতশো একর। শুধুমাত্র চারশো একর নিয়ে মেকি বিবাদ তৈরি করে রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার ভ্রূণ হত্যা করা হয়েছে। ব্যর্থ করে দেওয়া গেছে ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’ স্লোগানকে। কারখানা অথবা মন্দির - মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্নে, রুটি রুজির প্রশ্নে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা আগামীদিনে মানুষ বলবেন। তবে শালবনীর ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাম আমলের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার চেয়ে পরিবর্তনের গাঁটছড়ার জমানায় মায়াপুরে সাতশো একর জমিতে মন্দির বানালে যে লাভ বেশি হবে তা নিশ্চই দুঁদে ব্যবসায়ী জিন্দালরা ভালোই বোঝেন। আরও ভালো বোঝেন মন্দির শিল্পের জনকরা। জিন্দালবাবু তো প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের তরফেই মায়াপুরে ৭০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। সেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার। যারা বিরোধী থাকাকালীন চারশো একর নিয়ে কুমীরের কান্না কেঁদে আন্দোলনের গল্প ফেঁদেছিল। সেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার, যারা বিরোধী থাকাকালীন ‘টাটাবাবু’কে সিঙ্গুর থেকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য করেছিল। সত্যিই তো। বেকার বেকার কারখানা করে ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ কী? পিএফ, গ্র্যাচুইটি, শ্রমিকদের দাবি দাওয়া সামলানো, বাজার ধরার, পণ্য উৎপাদন করার চেয়ে ঢের ভালো মন্দির করে দেওয়া। মানুষ খেতে না পেলেও ক্ষতি নেই। বুভুক্ষু দশায় পাথরের ঝকঝকে মেঝেতে মাথা ঠুকে শান্তিতে মরতে তো পারবে! সেটাই বা কম কীসের? মানুষকে আত্মসম্মান বজায় রেখে রোজগারের অধিকার দিতেই হবে এ মাথার দিব্যি কে কোথায় দিয়েছে? ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে, পোশাকের নামে, খাদ্যের নামে মানুষকে লড়িয়ে দিতে না পারলে মানুষই তো একদিন আঙুল তুলে হিসেব চাইবে। তাইতো বাণিজ্য সামিটের নামে ধর্মের কেনাবেচার রাস্তা তৈরি করা। তাই তো এক মায়াপুরে গল্পের শেষ নয়। লিস্টিতে আছে দীঘাও এবং হয়তো আরও অনেক না জানা মন্দিরের কথা। যা ক্রমশ প্রকাশ্য। রাজ্যের এক মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, “রাজ্যে আলাদাভাবে ধর্মীয় পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তুলতে আগ্রহী রাজ্য সরকার। তারই অংশ হিসেবে দীঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।” (সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল, ২১ এপ্রিল)
পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়া এক নির্মম অধ্যায়ের সাক্ষী চারশো একর। রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়া সেই কারখানা আপাতত গুজরাটের সানন্দে। আর সিঙ্গুরে এখন কারখানার জমি প্রায় পরিত্যক্ত। সরষে বীজ ছড়িয়ে ধানের ফলন করার এক্সপেরিমেন্ট এখনও সফল হয়নি। এবার শোনা যাচ্ছে ভেড়ি হবে। এখন আর পশ্চিমবঙ্গে এবেলা ওবেলা উড়ে আসেননা মেধা পাটেকর, রাজনাথ সিং-রা। ধরনা মঞ্চে কৃষকদের বঞ্চনা(!) নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌত্যও করেন না। কী জানি কীভাবে তাঁদের চোখ এড়িয়ে যায় দেউচা পাঁচামি ! আবার আপনার আমার টাকায় বাৎসরিক বিজিবিএস উৎসব উদ্বোধনের দিন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সিঙ্গুরে গিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে ছ’মাসের মধ্যে সেখানে শিল্প গড়ে দেবেন। ওনার উদ্দেশ্যে একটা প্রশ্ন করা যেতেই পারে। রাজনাথ সিং কি এখনও আপনাদের দলেই আছেন? নাকি দলবদল করেছেন? এতই যদি শিল্প করার তাড়না, তাহলে একবার তো ওনাকে জিজ্ঞেস করলেই হয়, কেন সেদিন আরএসএস-এর ‘দুর্গার’ সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প সম্ভাবনার সর্বনাশ করেছিলেন??? বাম সরকার হটানোর চক্রান্তের অংশীদারিত্বও কি ৭৫:২৫-এ ভাগাভাগি হয়েছিল? নাকি গল্প আরও গভীরে?
এসব কূটকচালি থাক। পরনিন্দা পরচর্চা তো অনেক হলো। ‘ডহরবাবু’ বা ‘প্রীতিলতা জোয়ারদার’ নিয়ে অনেক হাসাহাসিও। কিন্তু বিগত এগারো বছরে পশ্চিমবঙ্গ কী পেল? তার একটা মূল্যায়ন হবে না? বছর বছর বাণিজ্য সম্মেলন নামের উৎসব তো গত ২০১৫ সাল থেকেই চলছে। এবার ষষ্ঠ বছর। এমনকী শিল্প শিকারে মুখ্যমন্ত্রী লন্ডন পর্যন্ত দৌড়েছেন। কিন্তু শেষ ক’বছরে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে ক'টা শিল্পের ফিতে কেটেছেন, অথবা তাঁর উন্নয়ন ও অনুপ্রেরণায় কতগুলো শিল্প হয়েছে সে হিসেব তো রাজ্যের মানুষ চাইতেই পারেন। পুজো প্যান্ডেলের ফিতে কাটা আর কারখানার ফিতে কাটা তো এক জিনিস নয়। কে জানে, ভবিষ্যতে কখনও হয়তো ‘চপ শিল্প’, ‘কাশফুল শিল্প’-র জনক বলে বসবেন, পুজোকে ঘিরেও বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়। অতএব পুজোও একটা শিল্প। তাঁর সে বাণীও হয়তো আমাদের হজম করে নিতে হবে। তিনি যাহা বলেন, তাহাই অমৃত। তাহা যতই অনৃত হউক না কেন।
এক যে আছে রাজা। যিনি সিংহাসনে বসার আগে বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলেই বছরে দু কোটি চাকরি দেবেন। আর এক যে আছেন রানি। যিনি নাকি প্রতি বছর দেড় কোটি করে চাকরি দেন। একজন মালা পাঠান, আম পাঠান, পাজামা কুর্তি পাঠান। অন্যজনও নাকি কীসব পাঠান। গাঁটছড়ার দু’প্রান্তে থাকা দু’জনের বোঝাপড়ার যে কোনও খামতি নেই তা ঘটনা পরম্পরায় মাঝে মাঝেই প্রমাণ হয়ে যায়। সেসব কথা থাক। এবারও এঁদের একজন রাজ্যের বিজিবিএস-এর মঞ্চ থেকে অতীতের মতো ঘোষণা করে দিয়েছেন আগামী বছরের মধ্যে রাজ্যে দেড় কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। পনেরো লেখার পর ছ’টা শূন্য দিলে দেড় কোটি হয়। সংখ্যা সম্পর্কে সে ধারণা আদৌ আছে কিনা জানা নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের মঞ্চ থেকে ‘আদানিবাবু’ জানিয়েছেন তিনি নাকি আগামী দশ বছরে রাজ্যে দশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবেন। এতে নাকি পঁচিশ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দশ বছরে পঁচিশ হাজারের অর্থ বছরে আড়াই হাজার কর্মসংস্থান। মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু অতীতের অভ্যেসমতো ঘোষণা করেই খালাস, তাই আগামী একবছরের মধ্যে প্রস্তাবিত দেড় কোটির বাকি এক কোটি সাতচল্লিশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কর্মসংস্থান আলাদীনের কোন আশ্চর্য প্রদীপ ঘষে হবে সেকথা জানানোর দায় অবশ্য ‘তাঁর’ নেই।
২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত হওয়া বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে বছর বছর বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে বহু। বহু মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। যদিও তার কতটা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে সেই হিসেবে বিজিবিএস ওয়েবসাইটে কোথাও দেওয়া নেই। হিসেব অনুসারে, ২০১৫ সালে প্রস্তাব এসেছিল ২.৪৩ ট্রিলিয়ন টাকার, ২০১৬ সালে ২.৫০ ট্রিলিয়ন টাকার, ২০১৭ সালে ২.৩৫ ট্রিলিয়ন টাকার, ২০১৮ সালে ২.১৯ ট্রিলিয়ন টাকার এবং ২০১৯ সালে ২.৮৪ ট্রিলিয়ন টাকার। এইসব প্রস্তাব এসেছিল বিভিন্ন বড়ো বড়ো সংস্থা থেকে। যদিও সেইসব প্রস্তাবের কত শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে, কত কর্মসংস্থান তার হিসেব দেবার কেউ নেই। না মুখ্যমন্ত্রী, না সরকারি ওয়েবসাইট - কোথাও এই বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে, ২০১৯-এর বিজিবিএস-এ সই হয়েছিল ৮৬টি মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা মৌ। যদিও সেই মৌ কে খেল? সেবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, “১২০০ বিজনেস টু বিজনেস মিটিং করা হয়েছে এবং ৪৫টা বিজনেস টু কনজিউমার মিটিং হয়েছে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ থেকে রাজ্যে আরও ৮ থেকে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। সেবারই বিজিবিএস-এ রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করেছিলেন, ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবের আনুমানিক ৪০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৯-এর বিজিবিএস-এ রিলায়েন্স প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১০ হাজার কোটি বিনিয়োগের। ফ্লিপকার্ট জানিয়েছিল ১৫০ মিলিয়ন ইউ এস ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়াও জে এস ডব্লিউ গ্রুপ ৭ হাজার কোটি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আইটিসি দিয়েছিল ১,৭০০ কোটি বিনিয়োগের প্রস্তাব (বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৯)। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রস্তাবিত বিনিয়োগগুলো গেল কোথায়? এর কত শতাংশ দিনের আলো দেখলো? রাজ্যে ক'টা কারখানা হয়েছে এই ক’বছরে? রাজ্যে কতজনের কর্মসংস্থান হয়েছে? একসময় রাজ্যে ঘটা করে শিলান্যাসের বহর দেখেছে রাজ্যবাসী। সেইসব শিলার অপমৃত্যুও। তারা এখন কে কোথায় শোভা পাচ্ছে কেউ জানেনা। যে রাজ্যে একটা সুলভ শৌচালয় তৈরি করতে গেলেও ‘অনুপ্রেরণা’ লাগে, বাইরে ঘটা করে ফলক লাগানো হয়, সেখানে অনুপ্রেরণা ছাড়া কারখানা হয়ে উদ্বোধন হয়ে যাচ্ছে, আর কেউ টের পাচ্ছেনা - ইয়ে তো না মুমকিন হ্যায়।
এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুজন চক্রবর্তী। রাজ্য সরকারের ‘স্টেট অফ এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট, ২০২১’ উদ্ধৃত করে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে বাংলায় শিল্পকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৬০,৯০০। যা এখন কমে হয়েছে ৩৯,৩৫৯। অর্থাৎ বিগত কয়েক বছরে রাজ্যে শিল্পকেন্দ্র কমেছে ২১,৫৪১। বড়ো শিল্পর সংখ্যা ১,৩৩৭ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১,০৬৬। অর্থাৎ বড়ো শিল্পকেন্দ্র কমেছে ২৭১টি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন এই রাজ্যে শ্রমদিবস নষ্ট হয়না। কিন্তু কারখানা বন্ধ হওয়া এবং কর্মচারীদের কর্মচ্যুত হওয়ার মানেও তো শ্রমদিবস নষ্ট। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এটা তো ৬ নম্বর শিল্প সম্মেলন। আগে বিধানসভাতেও আমরা বিনিয়োগ নিয়ে তথ্য চেয়েছি, শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেছি। চ্যালেঞ্জ করছি, মুখ্যমন্ত্রী ৬টা কারখানার নাম বলুন, যার ফিতে কেটেছেন!’’ আদানিরা বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে ভাগ করতে চায় বলে অভিযোগ করার পাশাপাশি তিনি জোরের সঙ্গে বলেছেন, ‘‘পরিকাঠামো যা হয়েছে, সব বাম আমলে। এখন তোলাবাজি, দুর্নীতি হচ্ছে শুধু!’’
গত সংখ্যার লেখা শেষ করেছিলাম পূর্ণেন্দু পত্রীর ‘হে সময়, অশ্বারোহী হও’ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে আরও একবার ফিরে আসুন পূর্ণেন্দু। আরও একবার তাঁর লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে আমরা বলতেই পারি - “প্রতিশ্রুতি যত্রতত্র ছড়াবার ছিটোবার কফ, থুতু, মলমূত্র নয়/ প্রতিশ্রুতি লাল নীল পতাকার ব্যতিব্যস্ত ওড়াউড়ি নয়/ প্রতিশ্রুতি প্রেসনোট, দৈববাণী, দেয়ালের লিপিচিত্র নয়।/ প্রতিশ্রুতি শীতের চাদর/ প্রতিশ্রুতি ভাঙা চালে খড়/ প্রতিশ্রুতি সাদা ভাত, ভাতে দুধ, দুধে ঘন সর/ প্রতিশ্রুতি চেতনার স্তরে স্তরে সপ্তসিন্ধু জলের মর্মর।”