৫৮ বর্ষ ২৩শ সংখ্যা / ২২ জানুয়ারি ২০২১ / ৮ মাঘ ১৪২৭
আন্দোলনের বিপুল ঢেউ - নেচে উঠবে সমাবেশে
অলকেশ দাস
তিন সমাবেশ
পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চ, পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ, পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ও লোকশিল্পী সঙ্ঘর যৌথ উদ্যোগে সারারাজ্যে তিনটি কেন্দ্রীয় সমাবেশ হচ্ছে। তপশিলি, আদিবাসী, অন্যান্য পিছিয়ে-পড়া জাতিভুক্ত মানুষ এবং লোকশিল্পীদের দীর্ঘ উপেক্ষিত এবং তাৎক্ষণিক দাবিসমূহ নিয়ে কলকাতা মুখর হবে ২৮ জানুয়ারি। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি অংশগ্রহণ করবে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ,কোচবিহার, দার্জিলিঙ জেলার কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে ৫ ফেব্রুয়ারি ধূপগুড়িতে। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর,দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে মালদহের গাজলে ৭ ফেব্রুয়ারি।
সমাবেশে জেলাগুলির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির ছাপ থাকবে বৈচিত্র্যমূলক কর্মসূচিতে। নাচ, গান, বৈশিষ্ট্যমূলক সাংস্কৃতিক কর্মসূচির প্রকাশের পাশাপাশি থাকবে এই অংশের মানুষের জীবনযন্ত্রণার কথন।
বিজেপি’র এনআরসি’র ঘর-এনপিআর-এর দরজা খুলছে তৃণমূল
সিএএ-এনআরসি দিয়ে আইনি পথে মুসলিম বর্জিত ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ হবে। এইভাবে আরএসএস-বিজেপি ধর্মীয় পরিচয়ভিত্তিক ফ্যাসিবাদী ভাবী হিন্দুরাষ্ট্রের বিজ্ঞাপনে হিন্দুকে প্রলুব্ধ করছে। তা যে সত্যি নয় আসামেই বোঝা গেছে। এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকায় যারা বাদ পরলেন তার সিংহভাগ হিন্দু, আদিবাসী। হিন্দুদের মধ্যে আবার সিংহভাগ দরিদ্র তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষ। এ রাজ্যে বাংলাদেশ সীমান্তছোঁয়া এলাকা আসামের নয় গুণ। ফলে রাজ্যে উদ্বাস্তু সংখ্যা বিশাল। এ রাজ্যে এনআরসি’র প্রয়োগ হলে অনাগরিক বা বেনাগরিক যে কত হবে তা সহজেই অনুমেয়। বিজেপি সিএএ-তে নিদান দিয়েছে সত্তর বছর আগের এদেশে থাকার প্রমাণপত্রর কাগজ দাখিল করতে হবে। লেখাপড়া জানা মানুষগুলো কাগজ হারিয়ে ‘ডুপ্লিকেট’-এর সন্ধান করে। আর লেখাপড়া না-জানা, মাথার ওপর ছাদ না থাকা, এখানে ওখানে যারা মরিয়া হয়ে কাজের সন্ধানে ভেসে বেড়াচ্ছে, যাদের ঘর ভাঙে চিরকাল, শূন্য থেকে শুরু করতে হয় জীবন, বন্যা, ফেনি, আইলা, আমফান যাদের চিরসঙ্গী - কোথায় পাবে কাগজ তারা? এদের বেশিরভাগ তপশিলি, আদিবাসী। যারা ভোট দেয়-সংবিধান বলেছে তারা নাগরিক। এখন বেশিরভাগের হাতেই আধার কার্ড। তাহলে যে নাগরিক, তাকে এনআরসি দিয়ে বেনাগরিক করার চেষ্টা হচ্ছে কেন? সংবিধানের ১০নং ধারা অনুযায়ী তা অসাংবিধানিক। একে নিয়েও চলছে মিথ্যাচার। রাজবংশীকে বোঝানো হচ্ছে এনআরসি দিয়ে ভাটিয়া মানে নমঃশূদ্রদের তাড়ানো হবে। নমঃশূদ্রদের বলা হচ্ছে এনআরসি দিয়ে তারা নাগরিকত্ব পাবে। তপশিলি উদ্বাস্তুদের বলা হচ্ছে এতে মুসলমান ভাগবে, হিন্দুরাষ্ট্র হবে। মুসলমানদের বলা হচ্ছে এনআরসি-তে তাদের কোনো ভয় নেই আসল ঘুষপেটিয়া হচ্ছে বাংলাদেশিরা। বরের ঘরের মাসি, কনের ঘরের পিসির এই নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে সমাবেশ। দাবি উঠবে শর্ত দিয়ে বাঁধা নয়, নিঃশর্ত নাগরিকত্বের।
মনে মোর এনপিআর
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এনআরসি নয়, এনপিআর চাই। মুখে ঘরে না ঢোকার স্লোগান, অথচ সেই ঘরের দরজা হাট করে খুলে দেওয়া। সেই জন্যই ছিল বনগাঁ আর রাজারহাটে ডিটেনশন ক্যাম্পের প্রস্তুতি গড়ে তোলার প্রয়াস - যা জনগণ রুদ্ধ করেছেন। ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’। মুখ্যমন্ত্রীর চেনা অতিপরিচিত ছক। এরই মুখোশ খুলবে সমাবেশ। টেনে বার করবে তপশিলি, আদিবাসী বিরোধী রাজ্য সরকারের মুখ।
অধিকার হরণের পর্ব চলছে
দেশ এবং রাজ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশিরভাগের জীবনযাত্রা জঙ্গল আর বনের ওপর নির্ভরশীল। আদিবাসীরা লড়াই করেছিল ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের প্রতিবাদে। সাঁওতাল বিদ্রোহ ,মুন্ডা বিদ্রোহ ,চুয়াড় বিদ্রোহ, খেরওয়ার বিদ্রোহ। অধিকার হরণের পর্ব চলছে এখনো। স্বাধীনতার পরের চল্লিশ বছরে কর্পোরেট হাঙরদের লোভের গ্রাসে খনি, জঙ্গলের বসবাস থেকে উৎখাত হয়েছে পঁচাশি লক্ষরও বেশি আদিবাসী। ভূমিহীন আদিবাসীর সংখ্যা গত সিকি শতকে বেড়েছে ১২ শতাংশ। আদিবাসীদের মধ্যে কৃষিজীবীর সংখ্যা গত দশ বছরে কমেছে দশ শতাংশ। জমিহারা কৃষিশ্রমিক বেড়েছে ৯ শতাংশ। সংস্কৃতির সমাবেশে হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার আওয়াজ উঠবে।
নেতিবাচক হিন্দুত্বের তথাকথিত অভ্যুত্থানে আদিবাসীদের শামিল করানোর প্রয়াস
তৃণমূল সরকারের সময়ে আদিবাসীরা সংবাদের শিরোনামে। ধর্ষণ,অত্যাচার, খুনের সংবাদে। রাজগঞ্জ থেকে নাদনঘাট, ধূপগুড়ি থেকে শালবনি। বেশিরভাগক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা রাজ্যের শাসকদলের । রাজ্যে আদিবাসী ছাত্রছাত্রী হোস্টেল বন্ধ, স্টাইপেন্ড অনিয়মিত, সংরক্ষণও অকার্যকরী। রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক স্কুল, একলব্য মড়েল স্কুল সরকারি অনুদান থেকে বঞ্চিত, সাঁওতালি স্কুল বন্ধ, স্কুল থাকলেও শিক্ষক নেই, বই নেই। কেন্দুপাতার সরকারি দাম নেই। সরকারি কিছু সুবিধা দিয়ে আদিবাসীদের অধিকারবোধের পরিবর্তে তাঁদের ভিক্ষুকে রূপান্তরিত করতে চাইছে। ব্রাহ্মণ্যবাদের অত্যাচারে আদিবাসীদের একসময়ে অন্য ধর্মে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। ‘ঘর ওয়াপসি’তে জোর করে ধর্মান্তরণ করে তাদের হিন্দুত্বের বন্ধনে সংযুক্ত করার অভিযানে মত্ত সংঘ পরিবার। চলছে অঢেল গৈরিকীকরণের পর্ব।প্রগতিবিরোধী নেতিবাচক হিন্দুত্বের তথাকথিত অভ্যুত্থানে আদিবাসীদের শামিল করানোর লাগাতার প্রয়াসের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পাচ্ছে।
নয়া-উদার অর্থনীতিতে পিছোচ্ছে পিছিয়ে-থাকা মানুষ
বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকে যাওয়া নয়া-উদার অর্থনীতির এদেশে তিন দশক। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সমাজের পিছিয়ে-থাকা অংশ। উদারনীতির সীমাহীন বাণিজ্যিকীকরণে তপশিলিদের ৩৭ শতাংশ দারিদ্র্য সীমার নিচে, অপুষ্টির শিকার ৫৪ শতাংশ, নিরক্ষর ৪৫ শতাংশ। ২০১১ সালের জনগণনায় দেখা যায়, তার আগের দশ বছরের তুলনায় ৫.২ শতাংশ তপশিলি মানুষ ভূমিহীন হয়েছেন।দশম শ্রেণি পর্যন্ত তপশিলি ছাত্রদের মধ্যে ড্রপ আউটের হার ৫৬ শতাংশ। প্রতি পাঁচজনের একজন বস্তিবাসী তপশিলি জাতিভুক্ত। সংখ্যাটা আরও বাড়ছে। ব্যাপক বাণিজ্যিকীকরণে সরকারি ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে। কমে যাচ্ছে শিক্ষা ও কাজে সংরক্ষণের প্রয়োগের সুযোগ। কমে যাচ্ছে তপশিলি, আদিবাসী,অন্যান্য পিছিয়ে-পড়া জাতিভুক্ত মানুষের সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার সুযোগ।
সংরক্ষণের প্রয়োগ এবং লড়িয়ে দেওয়া
সংবিধানে আম্বেদকরের তপশিলি জাতি, আদিবাসীদের সরকারি ক্ষেত্রে শিক্ষা এবং কাজে সংরক্ষণের প্রস্তাবনা প্রয়োগে একেবারে তলানিতে ঠেকেছে শাসকদলের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে। জীবনযাত্রার মানের উত্তরণের পরিবর্তে এদের জীবনযাত্রার মানের অবনয়ন ঘটেছে। একদিকে ব্যাপক বেসরকারিকরণ অন্যদিকে চূড়ান্ত শিক্ষা ও কাজের সংকোচন, দুর্নীতি, সংরক্ষণ প্রয়োগে অনিচ্ছার মধ্যে তপশিলি আদিবাসীরা সেই তিমিরেই পড়ে আছে। পঁয়তাল্লিশ বছরের সেরা বেকারি। যুবকের কাজ নেই। অথচ তাকে বোঝানো হচ্ছে তোমার চাকরি, কাজ সব সংরক্ষণে তপশিলি-আদিবাসীরা নিয়ে নিচ্ছে। এইভাবেই লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তপশিলি আদিবাসী ও অন্যান্য পিছিয়ে-পড়া জাতিভুক্ত মানুষের সঙ্গে অন্যান্যদের। সুচারুভাবে এই কাজ সম্পাদন করছে সংঘ বাহিনী। কাজ বাড়াও, সংরক্ষণ প্রয়োগ করো, বেসরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ লাগু হোক - এই দাবি করবে বর্ণময় সমাবেশ।
কৃষি আইন,শ্রমআইন - মরবে শ্রমিক কৃষক
শ্রমের ক্ষেত্রের একাত্তর ভাগ তপশিলি জাতি এবং আদিবাসীরা। কৃষিআইন, শ্রমআইনের সংস্কারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে সমাজের পিছিয়ে থাকা অংশের এই মানুষ। অতিমারীতেও আক্রমণের অভিঘাত এই অংশের উপর সবচেয়ে বেশি। সমাবেশ সোচ্চার হবে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে, শ্রমআইন সংস্কারের বিরুদ্ধে গান-বাজনা স্লোগানে মুখরিত হবে সমাবেশ।
একশো নয়, দু’শো দিনের কাজ চাই
গ্রামের ১০০ দিনের কাজে তপশিলি জাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে-পড়া জাতিভুক্ত মানুষের অংশগ্রহণই বেশি। সরকার এটাকে তুলে দিতে চাইছে। আমরা চাইছি দু’শো দিনের কাজ। মজুরি বৃদ্ধি। দুর্নীতি দূরীকরণ। বলা হবে সেই কথা সমাবেশে।
‘হিন্দু রাষ্ট্রে’ তপশিলি আদিবাসী অন্যান্য পিছিয়ে-পড়া জাতিভুক্ত মানুষের স্বার্থ নেই
সংঘ পরিবার এবং তার দ্বারা চালিত বিজেপি’র তৈরি করা হিন্দুরাষ্ট্রের ফাঁদের দিকে টেনে আনতে চাইছে তপশিলি আদিবাসীদের। মুসলমান ভাগানোর জিঘাংসা তৈরি করছে। অথচ সংঘ পরিবার তপশিলি আদিবাসীদের হিন্দু বলে মানে না। সংসদীয় রাজনীতির ক্ষমতা দখলের প্রয়োজনে ‘বৃহত্তর হিন্দুত্বে’ শামিল করেছে এদের। যে ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ এরা তৈরি করবে তাতে সংবিধান পাল্টানো হবে। সংবিধান হবে ‘মনুসংহিতা’। যাতে তপশিলি ,আদিবাসীদের শিক্ষার, সম্পত্তির অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে অন্যদের দাসত্ব করা ছাড়া আর কিছু না। রাজনীতির এই সমীকরণের কথাই ব্যাখ্যা করা হবে দক্ষিণবঙ্গ আর উত্তরবঙ্গের সমাবেশে।
ভোটের আগে কুমীরের কান্না
রাজ্য নামছে নিচের দিকে। পিছিয়ে বাংলা। আকণ্ঠ ঋণগ্রস্ত। বামেদের দেওয়া পিছিয়ে-পড়া অংশের হাতের চাষের জমি ক্রমশ বেহাত হচ্ছে গত দশ বছরে। কাজ নেই, শিক্ষা নেই, অধিকার নেই, শাসকের রক্তচক্ষু আর পরিব্যাপ্ত দুর্নীতি। তার মধ্যেই চলছে ভোটের আগে দেদার প্রতিশ্রুতি বিলি । অসম্ভব প্রতিশ্রুতি। অবাস্তব। ভোট কেনার জন্য। মতুয়া, রাজবংশী বাউড়ি, বাগদি, মাঝি... এদের জন্য সরকারের চোখের জল এখন আর বাঁধ মানছে না। ১০ বছরে ঘোষণা হয়েছে কাজ হয়নি। একদিকে বিশ টাকার পাউচে চোলাই দিয়ে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র অন্যদিকে একাড়েমি, উন্নয়ন পর্ষদ, বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার ছল। এই ভোটমুখী অবাস্তবতা চিনিয়ে দেবে ধামসা মাদলের সমাবেশ।
রস-রুপ-মন্ত্রদ্রষ্টাদের অবস্থা
রাজ্যের লোকশিল্পীদের অবস্থা ভয়াবহ। সরকারি তালিকার বাইরে এখনো রয়েছেন বহু লোকশিল্পী। করোনা পরিস্থিতিতে এদের দুঃসহ অবস্থা অবসানে সরকার পাশে দাঁড়ায়নি। ব্যক্তি পিছু দশ কেজি চাল এবং পরিবার পিছু মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা এদেরও দাবি। পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের টালবাহানা অনেক। লোকপ্রসার প্রকল্পের নামে লোকশিল্পীদের দিয়ে সরকার দলীয় গান গাইয়ে নিতে চায়। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে যে স্বীকৃতি লোকশিল্পীরা পেয়েছিলেন সেই স্বীকৃতি প্রদান এখন বন্ধ। লালন পুরস্কার, সুধী প্রধান পুরস্কার,লাল শুক্রা ওঁরাও পুরস্কার পুনরায় চালু করার দাবি করেছে লোকশিল্পীরা। ভাতা বা অনুষ্ঠান বাবদ প্রাপ্য অর্থ দিনের পর দিন ফেলে রেখেছে রাজ্য সরকার। নেই লোকশিল্পীদের জন্য কর্মশালা, সামাজিক সুরক্ষা। আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকশিল্পীরা পায়নি কিছু। নাচ, গান আর কথার মধ্যে দিয়েই ক্ষোভের আগুন ঝরাবে লোকশিল্পীরা সমাবেশে।
অস্পৃশ্যতার আগুন নেভাও
সাড়ে তিন হাজার বছরেও জাতের নামে বজ্জাতি ঘুচছে না। চতুর্বর্ণের অন্ধকার এখনো গ্রাস করে আছে আমাদের। দেশে এখনও ৩৯ শতাংশ সরকারি স্কুলে দলিতদের পৃথকভাবে মিড ড়ে মিলের খাবার খেতে হয়। এখনও ৪৮ শতাংশ গ্রামে দলিতদের একসঙ্গে জল নেওয়া অস্বীকৃত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিবেদনে ভারতে ২৭ শতাংশ মানুষ অস্পৃশ্যতার শিকার।
আসুন ব্যতিক্রমী বর্ণময় সমাবেশে
দাবি অনেক। তপশিলি আদিবাসীদের সাবপ্ল্যান এই অংশের মানুষের জনসংখ্যা অনুযায়ী করা এবং অর্থ বরাদ্দ করা। স্টাটুটরি স্ট্যাটাস দেওয়া। এসসি, এসটি প্রিভেনশন অফ অ্যাটরোসিটি অ্যাক্টকে প্রকৃত কার্যকরী করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য রুখতে রোহিত আইন চালু করা। সংরক্ষিত শূন্যপদ পূরণ করো। গণবণ্টন ব্যবস্থাকে সর্বজনীন করো। সংসদীয় গণতন্ত্রের সকল স্তম্ভকে উজ্জীবিত করো। আদিবাসীদের সম্মান, অধিকার ফিরিয়ে দাও। লোকশিল্পীদের বিকশিত করার কার্যক্রম গ্রহণ করো। এইসব দাবি নিয়েই আছড়ে পড়বে মানুষ কলকাতায়, ধূপগুড়িতে, গাজোলে। বুকের মাঝে বিশ্বলোকের সাড়া পেতে আসুন সমাবেশে - সপরিবারে।