৫৮ বর্ষ ২৩শ সংখ্যা / ২২ জানুয়ারি ২০২১ / ৮ মাঘ ১৪২৭
বিজেপি’র খুন সন্ত্রাস দুর্নীতি গণতন্ত্ররোধে দমবন্ধ করা অবস্থা ত্রিপুরায়
হারাধন দেবনাথ
শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবস্থান।
২০১৮ সাল। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে সরগরম রাজ্য। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, বিজেপি’র সর্বভারতীয় নেতৃত্ব প্রচারে। ‘ভিশন ডকুমেন্ট’-র প্রচারে আকাশ-বাতাস উত্তাল। কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন পাবেন, সামাজিক ভাতা হবে ২ হাজার টাকা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা বলা হয়। ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরে ৫০হাজার সরকারি চাকরি, ঘর ঘর রোজগার ইত্যাদি আরও কতরকমের মনভোলানো প্রতিশ্রুতি! হীরা যুগে কাজ করবে কেন্দ্র ও রাজ্যের ডাবল ইঞ্জিন সরকার। বিরাট অংশের মানুষ তাদের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করেছিলেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ বিরাট অঙ্কের বেতন পাবার প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩৪ মাসের অভিজ্ঞতা কী? একটি প্রতিশ্রুতিও আলোর মুখ দেখেনি। কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন পাননি। দু’হাজার টাকা ভাতা দেবার পরিবর্তে সামাজিক ভাতা পাবার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের। এখন নিয়োগের পরিবর্তে পদ অবলুপ্ত করা হচ্ছে। খবর লেখা পর্যন্ত ১০,৩২৩ শিক্ষকদের লাগাতার ধরনা চলছে। বামফ্রন্ট সরকার তাদের বিকল্প চাকরির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নিয়েছিল এবং ১৩০০০ অশিক্ষক পদে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল। শুধু নিয়োগপত্র দেওয়া ছাড়া বাকি সব হয়ে গিয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচন এসে যাওয়ায় এবং আদালতে মামলা হওয়ায় সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। বর্তমান জোট শাসনে একটিও নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি জনস্বার্থে। পুরনো প্রকল্পে নতুন রং দিয়ে, অথবা পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময় শুরু হওয়া নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে বলা হচ্ছে - বামফ্রন্ট সরকার কিছুই করেনি।
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বামপন্থীরা বলেছিল বিজেপি’র প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। ওরা প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে না। ৩৪ মাসের শাসন দেখে মানুষ বলছেন - বামপন্থীদের কথা শুনলে সর্বনাশ হতো না। এতোটা বিবর্ণ সময়ের মুখোমুখি হতে হতো না রাজ্যবাসীকে। কাজ-খাদ্য-পানীয় জলের সঙ্কটে দিশেহারা জনজীবন। মানুষের অভাব অনটন দূর করার পরিবর্তে কথা বলার অধিকারই কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্র নিধন যজ্ঞ চলছে। কার্যত একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে পার্বতি ত্রিপুরায় - এটাই আজকের অভিজ্ঞতা।
১০,৩২৩ শিক্ষকদের গণঅবস্থান চলাকালে গত প্রায় দুই সপ্তাহে চারজন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। সাব্রুমে আন্দোলনরত শিক্ষিকার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুশোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি আন্দোলনরত চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা। অশ্রুসজল চোখে সকলের মুখে মুখে একই কথা ‘এত মৃত্যু শোক রাখবো কোথায়! মৃত্যু মিছিল আর কত লম্বা দেখতে চায় সরকার? অনেক হয়েছে। মৃত্যুমন্ত্রী, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন।’
৮২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মৃত্যু ছাড়াও ১০,৩২৩ জন শিক্ষক পরিবারের পরিজনকে হারানোর ক্ষত বুকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আন্দোলন। চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে তাঁরা নারাজ। বরং শীতের রাতে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করছেন অদম্য জেদ নিয়ে। ৪৫ দিন পেরিয়ে আসা ‘জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ১০,৩২৩’-এর ডাকে আগরতলায় সিটি সেন্টারের সামনে গণঅবস্থান ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন অংশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সহানুভূতি পেয়েছে। সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন নানা পেশার মানুষ।
মিছিলে মানিক সরকার সহ বামফ্রন্ট বিধায়করা।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি খেলাপ, ১০,৩২৩ ইস্যুতে দাম্ভিক সরকারের একগুঁয়েমিতে ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে। ধরনায় স্লোগান উঠেছে, ‘সরকার তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করো। নইলে আমাদের আন্দোলন থামবে না।’
গণধরনা বামফ্রন্ট বিধায়কদের
২০ জানুয়ারি ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় গণধরনা সংগঠিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলের সদস্যরা। সাংবিধানিক আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারের ওপর আক্রমণ বন্ধ করার দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল এবং গণধরনা সংঘটিত করে বামফ্রন্ট পরিষদীয় দল। এই লড়াইয়ের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে লালঝান্ডা হাতে নিয়ে নানা অংশের মানুষও মিছিলে পা মেলান। আওয়াজ তোলেন নো পসারান। আওয়াজ উঠেছে আক্রমণ প্রতিহত করে শাসকের চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের ব্যারিকেড হবে আরও সুদৃঢ়। ২০ জানুয়ারির আকাশ ছিল মেঘলা। এই শীতের দুপুরের মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। মেলার মাঠ থেকে শুরু হওয়া মিছিল ব্যস্ততম চৌমুহনিগুলো পেছনে ফেলে ওরিয়েন্ট চৌমুহনিতে মিলিত হয়। এখানে বিরোধী দলনেতা সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মানিক সরকার সহ অন্য বামফ্রন্ট বিধায়করা বক্তব্য রাখেন।
সন্ত্রাস হিংসার পথেই শাসকদল
বিরোধী দলের বিধায়করা নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না। এদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের মানুষের অভিজ্ঞতায় রয়েছে ঋষ্যমুখ কেন্দ্রের বিধায়ক বাদল চৌধুরীকে কম করে ১১বার বাধা দেওয়া হয়েছে। রতন ভৌমিক ৯ বার আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ বার। সুধন দাস ১১-১২ বার আক্রান্ত হয়েছেন। ইসলাম উদ্দিন ৩ বার আক্রান্ত হয়েছেন। ভানুলাল সাহা শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন নগর পঞ্চায়েতের ভোটের সময়। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বিশ্রামগঞ্জেও আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। বিরোধী দলের নেতা আগাম জানিয়েও অনাহার মৃত্যু এলাকার মানুষের সাথে কথা বলা ও তথ্য সংগ্রহ করা, খুন হয়ে যাওয়া পরিবারের সাথে দেখা করতে গিয়ে ১৫-১৬ বার বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর বিরোধী দলের ১৭-১৮ জন নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। শতশত মানুষ আক্রান্ত। আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভয়ভীতি উপেক্ষা করে কেউ মামলা করলেও তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন রাস্তায় বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া যাচ্ছে। খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তদন্তের কোনো কিনারা হচ্ছে না। দুষ্কৃতীদের ঠেকাতে গিয়ে ২-৩ জন পুলিশকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। কোনো কুলকিনারা হচ্ছে না। শিশু থেকে বৃদ্ধা-মহিলাদের কেউই নিরাপদ না। ডাক্তার, নার্স, আইনজীবী, সাংবাদিক আক্রান্ত হচ্ছেন।
অবিলম্বে সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে ডিজি-র অফিসে মূল ফটকের সামনে তুমূল বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতা-কর্মীরা।
মাথাচাড়া দিচ্ছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ
বহু রক্তের বিনিময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে রাজ্যে সমাধান হয়ছিল সন্ত্রাসবাদী সমস্যার। নিস্তেজ এনএলএফটি’র কয়েকজন রয়ে যায় বাংলাদেশের ঘাঁটিতে। সন্ত্রাসবাদের বিষদাঁত তৎকালীন সময়ে ভেঙে দেওয়ায় ওরা আর তৎপর হবার সাহসই দেখাতে পারেনি। সন্ত্রাসবাদী সমস্যা সমাধানের জন্য তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের কাছে এখনও প্রশংসিত। ২০১৮ সালে রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর গ্রাম-পাহাড়ে দেখা দেয় তীব্র কাজ-খাদ্যের সঙ্কট। যা নতুন সরকার আসীন হওয়ায় প্রায় ৩৪ মাস পর এখনও বর্তমান। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এনএলএফটি ফের সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। রাজ্য পুলিশ এবং বিএসএফ’র একটি সূত্রের মতে রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সন্ত্রাসবাদীরা কেন্দ্রীয় সরকারের প্যাকেজের সুবিধা সঠিকভাবে পাচ্ছে না। আর এদেরই কাজে লাগাচ্ছে এনএলএফটি’র গুটিকয়েক নেতা।
সম্প্রতি আমবাসার গঙ্গানগর থেকে এনএলএফটি সন্ত্রাসবাদীদের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন চারজন। অর্থের জন্যই এই অপহরণ হয়েছিল বলে সন্ত্রাসবাদীদের কবলমুক্ত হয়ে জানান অপহৃতরা। অপহৃত অপর একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।
হাইকোর্টে ধাক্কা সরকারের, অবিলম্বে নির্বাচন করতে হবে এডিসি’র
হাইকোর্টে আবারও জোর ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার। আগামী ১৭ মে-র মধ্যে এডিসি নির্বাচনের সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে - নির্দেশ দিয়েছে ত্রিপুরা হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি এ এ কুরেশি এবং বিচারপতি এসজি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। উচ্চ আদালত আরও বলেছে এডিসি-তে প্রশাসকের মেয়াদ ১৭ মে-র পর আর বাড়ানো যাবে না।
ত্রিপুরার উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের (এডিসি)-র নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত বছর ১৭ মে। কিন্তু এ সময়ে কোভিড পরিস্থিতি এবং লকডাউন থাকায় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়। এডিসি-র দায়িত্ব বর্তায় রাজ্যপালের উপর। এডিসি-তে প্রাক্তন মুখ্যসচিব জি কামেশ্বর রাওকে প্রশাসক বসানো হয়। কিন্তু আনলক শুরু হলেও রাজ্য সরকার নির্বাচন এড়িয়ে যায়। ইতিমধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশন আনলক পর্বে কীভাবে নির্বাচন করতে হবে তার গাইডলাইনও প্রকাশ করে। সেই গাইডলাইন মেনে বিহারে নির্বাচন হয়, মধ্যপ্রদেশে অনেকগুলো বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হয়, বোড়োল্যান্ডে নির্বাচন হয়। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্য সরকার কোভিড পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে নির্বাচন এড়িয়ে যায়। রাজ্যপালের শাসনের মেয়াদ ১৭ নভেম্বর শেষ হলে পুনরায় ছয় মাসের জন্য প্রশাসকের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। নতুন করে ছয় মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় ১৭ মে পর্যন্ত। রাজ্যে পুর ও নগর সংস্থাগুলোর নির্বাচিত কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। এখানেও নির্বাচন এড়িয়ে প্রশাসক বসানো হয় কোভিডের দোহাই দিয়ে। মানুষের রায় নিতে বিজেপি’র অনীহাই ফুটে উঠেছে এই সব ঘটনায়। বিজেপি-আইপিএফটি’র শাসনে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কিভাবে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল তাও মানুষের অভিজ্ঞতায় রয়েছে। এখন পঞ্চায়েতে চলছে দুর্নীতি-ভ্রষ্টাচার।
রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কে নজিরবিহীন দুর্নীতি
ত্রিপুরা রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ককে লাটে তুলে দিতে নজিরবিহীন কাণ্ড চলছে তথাকথিত স্বচ্ছ, সবকা সাথ সবকা বিকাশ-এর স্লোগানধারী হীরক জমানায়। বাঙ্কের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এক দুই কোটি নয়, একলপ্তে ৯৫ কোটি টাকা বেসরকারি আর্থিক সংস্থায় লগ্নি করেছে।
২০০৭-২০০৮ অর্থবছর থেকে টানা ২০১৮ সাল পর্যন্ত লাভে চলছিল রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক। পেয়ে যায় শিডিউল্ড ব্যাঙ্কের মর্যাদা। কিন্তু ২০১৮ সালের মার্চের পর অর্থাৎ ডাবল ইঞ্জিনের সরকার কায়েম হবার পর একটি কায়েমিচক্র নিজেদের আখের গোছাতে শুরু করে। তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও জেনারেল ম্যানেজারকে অপদস্থ করে অপসারিত করা হয়। প্রায় ২ বছর নতুন এমডিজিএম নিয়োগ করা হয়নি ও নতুন পরিচালন কমিটিও গড়া হয়নি।
বছর খানেক আগে নতুন পরিচালন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে একজনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি রাখা হয়নি। চেয়ারম্যান যাকে করা হয়েছে তিনিও জনপ্রতিনিধি নন। সম্প্রতি জানা গেছে, ব্যাঙ্ক পরিচালন কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কের বিনিয়োগ নীতির ৩৫(এ) ধারাকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করে ৯৫ কোটি টাকা নর্থ ইস্টার্ন ফিনান্সিয়াল কর্পোরেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থায় স্থানান্তর করেছে। শুধ ৯৫কোটি টাকার অবৈধ বিনিয়োগই নয়, ব্যাঙ্কের আর্থিক বিশৃঙ্খলার দুটি ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, ২০১৯-২০ সালে ব্যাঙ্কের অডিট রিপোর্টে ধরা পড়েছে, ৯ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার ঘাটতি। এই বিশাল ঘাটতি পূরণ করার বিন্দুমাত্র উদ্যোগ দেখা যায়নি ব্যাঙ্ক পরিচালন কর্তৃপক্ষের।
এছাড়া আরও ৯ কোটি ১০ লক্ষ টাকার হিসাব নেই সমবায় ব্যাঙ্কের। জানা গেছে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখার মধ্যে অর্থ লেনদেন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে লেনদেনকালে ৯ কোটি ১০ লক্ষ টাকার হদিশ মিলছে না। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১১৩ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার বিশাল আর্থিক কেলেঙ্কারির নজির সৃষ্টি হলো রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কে। এ ধরনের ঘটনা রাজ্যে আর কখনও ঘটেনি।