E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪৯ সংখ্যা / ২২ জুলাই, ২০২২ / ৫ শ্রাবণ, ১৪২৯

খাদ্যপণ্যে চাপানো জিএসটি এখনই প্রত্যাহার করতে হবেঃ পলিট ব্যুরো


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় প্যাকেটজাত পণ্যের জিএসটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানালো সিপিআই(এম)। ২০ জুলাই এক বিবৃতিতে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো চাল, আটা, দুধের ওপর জিএসটি বসানোর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের ওপর যে নজিরবিহীন বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হলো কড়া ভাষায় তার নিন্দা করেছে। এরই সঙ্গে মানুষের জীবনের ওপর এই নিষ্ঠুর আক্রমণের বিরুদ্ধে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়েছে।

পলিট ব্যুরো বলেছে, ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকারের খাদ্যপণ্যের ওপর কর বসানো নীতি খারিজ করে দিয়েছিল স্বাধীন ভারত। স্বাধীনতার এই ৭৫ বছর ধরে চাল, আটা, ডাল ইত্যাদি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দই, পনির, মাংস, মাছ, গুড়ের মতো পণ্যের ওপর কখনও কর বসানো হয়নি। এবারে এইসব পণ্যের ওপর জিএসটি বসানো হলো আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে ভারতবাসীকে মোদি সরকারের ‘উপহার’।

যেসব পণ্যের ওপর জিএসটি চাপানো হয়েছে তার মধ্যে শেষকৃত্যের খরচ, হাসপাতালের ঘরের ভাড়া, লেখার কালি ইত্যাদি রয়েছে। এমনকী কোনও ব্যক্তি ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর সঞ্চিত অর্থ চেকের মাধ্যমে তুলতে গেলেও ১৮ শতাংশ জিএসটি গুণতে হবে।

আবার মানুষের জীবন জীবিকার ওপর এই নিষ্ঠুর আঘাত এমন সময় আনা হলো যখন এমনিতেই সমস্ত জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ভোগ্যপণ্যের মূল্য সূচক ৭ শতাংশের বেশি এবং পাইকারি মূল্য সূচক ১৫ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে, বেকারত্ব বাড়ছে, টাকার অবমূল্যায়ন ঘটছে, নজিরবিহীন বাণিজ্য ঘাটতির সঙ্গে জিডিপি বিকাশ হোঁচট খাচ্ছে। তার ওপর জিএসটি চাপানোয় মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবন জীবিকার ওপর আরও বড়ো আঘাত নামিয়ে আনবে বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে পলিট ব্যুরো।

সিপিআই(এম) ফের বলেছে, রাজস্ব বাড়াতে হলে অতি ধনীদের আয়ের ওপর কর বসানো উচিত মোদি সরকারের, সাধারণ মানুষের ঘাড়ে আরও বোঝা চাপিয়ে নয়। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম কোটি কোটিপতি বনে যাওয়া ধনীদের বসবাসের পাশাপাশি বোম্বে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির ২০২১-২২ সালে সম্মিলিত মুনাফার পরিমাণ ৯.৩ লক্ষ কোটি, যা তার আগের আর্থিক বছরের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি। এমনকী অতিমারীর আগের এক দশক অর্থাৎ ২০১০-২০ সালের মধ্যে গড় মুনাফার চেয়েও তিনগুণ বেশি। আবার ওইসব অতি ধনীদের ওপর কর বসানোর বদলে মোদি সরকার তাদের নানা ধরনের কর ছাড়ের সুবিধা কিংবা তাদের ঋণ মকুব করে দিচ্ছে। বহু বিলাসী দ্রব্য আছে যার ওপর বেশি কর বসানো যায়, কিন্তু এগুলির ক্ষেত্রে পরিমিত কর চাপানো হয়েছে। সোনা কেনার ওপর কর মাত্র ৩ শতাংশ, হীরের ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ। অথচ খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে জিএসটি ৫ শতাংশ বা তার বেশি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক এই জিএসটি বৃদ্ধির কোনোরকম বিরোধিতা করেনি বিরোধীরা বলে মোদি সরকার যে দাবি করছে তা সর্বৈব মিথ্যা। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তীব্র আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। এমনকী মোদিকে এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে ২০২১ সালের নভেম্বরে যখন কেন্দ্র এই জিএসটি বসানোর প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল।

মানুষের জীবনের ওপর এই নিষ্ঠুর আক্রমণের বিরুদ্ধে পার্টির সমস্ত শাখাকে ব্যাপক ভিত্তিতে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো।