৫৯ বর্ষ ৪৯ সংখ্যা / ২২ জুলাই, ২০২২ / ৫ শ্রাবণ, ১৪২৯
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কলকাতায় বামফ্রন্টের দুই প্রতিবাদ মিছিল
কলকাতায় বামফ্রন্টের ডাকে গড়িয়াহাট থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিল।
রয়েছেন বিমান বসু, সূর্য মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, মনোজ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে জিএসটি’র বোঝা চাপানোয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ২০ জুলাই দু’টি প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত হয়েছে কলকাতায়। কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের ডাকে গড়িয়াহাট থেকে পার্ক সার্কাস এবং শ্যামবাজার থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত দুটি মিছিলে অগণিত মানুষ অংশ নিয়ে মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত করেন।
গড়িয়াহাট থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, আরএসপি’র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী সহ বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। শ্যামবাজার থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত মিছিলে পা মেলান পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, অরএসপি নেতা অশোক ঘোষ, সিপিআই নেতা প্রবীর দেব, সিপিআই(এম) নেতা অনাদি সাহু, কনীনিকা ঘোষ সহ অন্যান্য বামপন্থী দলের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের শাসন ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই মোদি সরকার আদানি-আম্বানি সহ কর্পোরেট পুঁজির স্বার্থে কাজ করে চলেছে। দেশের জল, জঙ্গল, জমি, খনি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রকে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাদের মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একের পর এক নীতি ও আইন প্রণয়ন করে চলেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অন্যদিকে আদানি-আম্বানিদের মতো বৃহৎ কর্পোরেটদের কর ছাড় দিচ্ছে। চাল, ডাল, তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেশের জনগণকে ভয়ংকর বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধেই এদিনের দুটি মিছিল থেকে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।
এদিনের মিছিলে অংশ নিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, দেশের রেশনিং ব্যবস্থাকেই আদানি-আম্বানিদের স্বার্থে তুলে দিতে চাইছে মোদি সরকার। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকেও কর্পোরেট হাঙরদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। দেশের কৃষি, শিল্প থেকে আর্থিক বুনিয়াদের ভিত যাদের রক্ত ঘামে গড়ে উঠেছে, আজ তাদেরই ভাতে মারার ষড়যন্ত্র চলছে। এই সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ তৃণমূল-বিজেপি’র নীতিতে ফারাক নেই। তৃণমূল যেমন মানুষকে লুটেপুটে খাচ্ছে, ঠিক একই কাজ করে চলেছে মোদি সরকার। এই সখ্যের কারণেই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় না কেন্দ্রের মোদি সরকার। তিনি বলেন, মানুষের স্বার্থে প্রকৃত লড়াই করছে বামপন্থীরাই। এ লড়াই ধারাবাহিকভাবে জারি রেখে মানুষকে সংকট থেকে রক্ষা করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বামপন্থীদেরই।
মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এদিনের দু’টি মিছিলেই ব্যাপক অংশের মানুষের অংশগ্রহণ লক্ষ করা গেছে। নানা সংকটে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের ঘাড়ে জিএসটি’র বোঝা চাপিয়ে আর্থিক সংকটে জর্জরিত করার বিরুদ্ধে আন্দোলন যে আগামীদিনে আরও তীব্র হবে - এদিনের প্রতিবাদ মিছিল সেই বার্তাই দিয়েছে।