E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪৯ সংখ্যা / ২২ জুলাই, ২০২২ / ৫ শ্রাবণ, ১৪২৯

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মার্গারেট আলভা


মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন মার্গারেট আলভা। রয়েছেন রাহুল গান্ধী, শারদ পাওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি প্রমুখ।

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মার্গারেট আলভা। এই কংগ্রেস নেত্রী রাজীব গান্ধী ও নরসিমা রাওয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। একবার লোকসভা এবং চার বার রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন তিনি। পরে রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডে রাজ্যপালও ছিলেন। এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ারের বাসভবনে ১৭ জুলাই আয়োজিত এক বৈঠক থেকে ১৭টি বিরোধীদল সর্বসম্মতভাবে তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে ঠিক করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি এই বৈঠকের উপস্থিতি ছিল না। শারদ পাওয়ার জানিয়েছেন এই দুটি দলের সঙ্গে কথা হবে পরে। ভোটের অংকের যে বিন্যাসই থাকুক উপরাষ্ট্রপতি পদের লড়াইয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জমি ছাড়তে রাজি হননি বিরোধীরা।

বিরোধীদের বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ, সিপিআই(এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই নেতা ডি রাজা, বিনয় বিশ্বম, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত,ডিএমকে’র টি আর বালু, তিরুচি শিভা, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব, এমডিএমকে’র ভাইকো, টিআরএসের কে কেশব রাও, আরজেডি’র এডি সিং, আইইউএমএলএর ইটি মহম্মদ বশির, কেরালা কংগ্রেস (এম)’র জোস কে মনি, প্রমুখ। জেএমএম এবং শিবসেনা জানিয়েছে তাঁরা বিরোধী প্রার্থীকেই সমর্থন করবে।

আগামী ৬ আগস্ট উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোট নেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে । উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এদিন জানিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ৬ আগস্ট। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পেশ করার শেষ দিন ছিল ১৯ জুলাই। ২০ জুলাই মনোনয়ন পত্রগুলি খতিয়ে দেখা হয়। প্রার্থীপদ প্রত্যাহরের শেষ দিন ছিল ২২ জুলাই। ৬ অগস্ট সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সংসদেই ভোট গ্রহণ হবে। ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় ফলাফল প্রকাশিত হয়ে যাবে। বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর মেয়াদ ১০ আগস্ট শেষ হচ্ছে।

তথ্য বলছে, দেশে উপরাষ্ট্রপতি পদে এ বার ষোড়শতম নির্বাচন। এক আগে ১৫ বারের মধ্যে ১১ বারই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে স্থির হয়েছে ফলাফল। মাত্র চার বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি। দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের পাশাপাশি মহম্মদ হিদয়াতউল্লা এবং শঙ্করদয়াল শর্মা রয়েছেন এই তালিকায়।

এই পদে নতুন প্রার্থীকে বেছে নিতে একমাত্র রাজ্যসভা ও লোকসভার সদস্যরাই ভোট দেবেন। সংসদের উভয় কক্ষের ৭৮৮ জন এই ভোট দানে অংশ নিতে পারবেন। প্রত্যেক সদস্যের ভোটের মূল্য একই বলে নির্বাচন কমিশন এদিন জানিয়েছে। পাঁচ বছর আগে উপরাষ্ট্রপতি পদে জয়ী বিজেপির বেঙ্কাইয়া নাইডু। বিরোধী শিবিরের প্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গান্ধিকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

এনডিএ’র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ১৮ জুলাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তাঁর পাশে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির সর্বভারতীয় জেপি নাড্ডা, রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গড়করী সহ এনডিএ’র বিভিন্ন শরিক দলের নেতারা। বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা সেদিন ওই নাম ঘোষণার সময় তিনি জানান, ‘‘সমস্ত কিছু বিবেচনা এবং আলোচনার পর আমরা ‘কিষান পুত্র’ জগদীপ ধনকরকেই বিজেপি এবং এনডিএ’র উপ রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তৃণমূল সম্পর্কে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কটাক্ষের সুরে বলেছেন, তৃণমূল দলে এমন এমএলএ আছে, যারা বিজেপি’র কাছে জমা আছে। একইভাবে বিজেপি’তেও এমন এমএলএ ও নেতা আছে, যারা তৃণমূলের কাছে জমা আছে। এই দুই দলেরই ‘কমন মেম্বারশিপ’ আছে। আমরা সবসময়ই বলে এসেছি, তৃণমূল দলটাই তৈরি হয়েছে বিজেপি’র সহযোগী হিসাবে। তৃণমূল দল জন্ম থেকে বেশিরভাগ সময়ই বিজেপি’র সহযোগী থেকেছে। এখনও সম্ভাব্য সহযোগী। সেলিম বলেন, সংবাদমাধ্যমে বিরোধীদের মধ্যে ভাঙন দেখানো হচ্ছে সবসময়। কিন্তু তৃণমূল বিজেপি’র যে ঐক্য গড়ে উঠছে, সেটা দেখানো হচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির নির্বাচনের সময়েও মমতা ব্যানার্জি কী করেছিলেন তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে। সেজন্য ধনখড়ের এই বিষয় নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। সবটাই অস্পষ্ট।

সেলিম এদিন বলেন, এটা এখন স্পষ্ট, বিজেপি ও তৃণমূল মিলে দার্জিলিঙের বৈঠকে আলোচনা করেই ধনখড়কে প্রার্থী করেছে। আমরা যা বলেছি, সেটাই সকলের চোখের সামনে আছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ বার্তা নিয়ে এই জেলায় এসেছেন ও আড়াই ঘণ্টা ধরে কী কথা হয়েছে, সেবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন? মমতা ব্যানার্জি নাকি স্পষ্ট বক্তা? তবে এখন কেন চুপ করে রয়েছেন?