৬১ বর্ষ ৭ সংখ্যা / ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ৪ আশ্বিন, ১৪৩০
জনজীবনের মূল সমস্যাগুলি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে ৭ জানুয়ারি যুবদের ব্রিগেড সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জনজীবনের মূল সমস্যাগুলিকে সামনে তুলে এনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি কলকাতায় ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সমাবেশ করবে ডিওয়াইএফআই। এই কর্মসূচিকে সফল করতে সংগঠনের উদ্যোগে ৩ নভেম্বর থেকে দু’মাস ধরে রাজ্যজুড়ে পদযাত্রা সংগঠিত হবে। ১১ সেপ্টেম্বর ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য দপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘোষণা করেছেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। তিনি বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে কাজিয়া, জাতি ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ানো, লুট, দুর্নীতি এসব অনেক হয়েছে। কিন্তু কাজ কোথায় - এই মূল প্রশ্নের উত্তর চাই। সেটাকে আর চাপা দেওয়া যাবে না। সেজন্যই দু’মাস ধরে পদযাত্রা করে ব্রিগেড সমাবেশ করা হবে।
এদিন যুব নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, ৩ নভেম্বর ডিওয়াইএফআই’র প্রতিষ্ঠা দিবস। ওই দিন থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হবে পদযাত্রা। এটা ‘ইনসাফ যাত্রা’। অধিকার বুঝে নেবার লড়াই। কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দু’মাসব্যাপী পদযাত্রার কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি একাধিক প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত হবে জেলায় জেলায়। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাওয়া ও তাদের ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই আন্দোলনের তীব্রতাকে আরও জোরালো করা হবে। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ গোটা রাজ্যে দু’মাস আমরা রাস্তায় থাকব। তারপর দুর্নীতি, বিভাজন-বিদ্বেষের রাজনীতির বিরুদ্ধে, কর্মসংস্থানের দাবিতে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ করব।
মীনাক্ষীর মুখার্জি এদিন বলেছেন, রুটি-রুজি, কর্মসংস্থান সহ কৃষিতে, শিল্পে আঘাত নেমে এসেছে। কারখানা বন্ধ, রাজ্যে কোনো কাজের সুযোগ নেই, গ্রাম উজাড় করে যুবরা কাজের খোঁজে গিয়ে মারা যাচ্ছে। তাদের কাজ দেওয়া নিয়ে কোনো কথা নেই। কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে প্রতিদিন সাজানো তরজা চলছে। গ্রামে একশো দিনের কাজ নেই, সেটা নিয়ে কোনো কথা নেই। জাতিতে জাতিতে হিংসা বাধাতে ধর্ম নিয়ে, ভাষা নিয়ে প্রচার হচ্ছে। তিনি বলেন, যেগুলো মূল বিষয়, দুর্নীতি, শিক্ষার অব্যবস্থা, বেকারি, বস্তি উচ্ছেদ সেগুলো নিয়ে কোনো কথা নেই। মানুষের জীবনের মূল বিষয় নিয়ে, আসল অ্যাজেন্ডা নিয়ে, রোজগারের অ্যাজেন্ডা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লড়াই চালাচ্ছে ডিওয়াইএফআই। এই মূল বিষয়গুলি আরও একবার মানুষের কাছে নিয়ে যেতে আগামী দু’মাস আমাদের প্রচার চলবে।
অতীতেও ডিওয়াইএফআই বেশ কয়েকবার ব্রিগেড সমাবেশ করেছে। তৃণমূল জমানায় এই প্রথম। এবারের ব্রিগেড সমাবেশ ব্যাপক আকার নেবে বলে প্রত্যাশা করে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ভুল অ্যাজেন্ডা নিয়ে মূল অ্যাজেন্ডা আড়াল করা চলবে না। মানুষের কাছে আমরা মূল অ্যাজেন্ডা তুলে ধরবো। ইনসাফ চাইব। আমরা আশাবাদী মানুষ এই লড়াইকে সমর্থন করে রাস্তায় নামবেন। ব্রিগেডে আসবেন।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা প্রমুখ। কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারকে মানুষের দুর্দশার জন্য দায়ী করে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সকলের জন্য শিক্ষার অধিকারকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, পয়সা যার শিক্ষা তার - এই নীতি কার্যকর করা হচ্ছে, বেকারি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠছে না। দেশের মানুষের ঘামে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলিকে বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। রুজিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে এক এক করে খর্ব করা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনের মূল সমস্যাগুলোকে আড়াল করে কিছু ভুল অ্যাজেন্ডার দামামা বাজিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে ষড়যন্ত্র চলছে তার বিরুদ্ধে আরও জোরালো লড়াই চালিয়ে যাবে ডিওয়াইএফআই।