E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ১৯ সংখ্যা / ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ / ৭ পৌষ, ১৪২৯

রাজ্যে লক্ষাধিক ঠিকাশ্রমিক বৃহত্তর আন্দোলনের পথে


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গত ১৭ ডিসেম্বর ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন হয়েছে সিআইটিইউ কলকাতা জেলা কমিটির দপ্তরে। সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড দেবাঞ্জন চক্রবর্তী।

এই সভায় কয়লা, ইস্পাত, বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস, নির্মাণ, ব্রিজ অ্যান্ড রুফ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দেবাঞ্জন চক্রবর্তী তাঁর প্রারম্ভিক বক্তব্যে জানান, কেন্দ্রের শ্রমমন্ত্রী সংসদে লিখিত প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে ২০১৯ সালে ঠিকা কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৩ লক্ষ ৬৪ হাজার, ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৪ লক্ষ ৩০ হাজার। অর্থাৎ দ্বিগুণ বেড়েছে। এই সভায় সিআইটিইউ’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু এবং সুভাষ মুখার্জি বলেন, আগামীদিনে রাজ্যে ঠিকা শ্রমিকদের নানাবিধ সমস্যার সুরাহার জন্য নিজ নিজ দাবিসনদ তৈরি করে শিল্প কারখানা, অফিসে ব্যাপক প্রচার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং একটি কেন্দ্রীয় সমাবেশের মাধ্যমে ব্যাপক জমায়েত করে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন দিতে হবে।

এই অধিবেশনে বিস্তারিত আলোচনার পর নিম্নলিখিত দাবিসমূহ এবং নিম্নলিখিত কর্মসূচি গৃহীত হয় -

১। শ্রমিক কর্মচারী স্বার্থ বিরোধী ৪টি শ্রম কোড বাতিল করো।

২। ন্যূনতম মজুরি ২৬,০০০ টাকা ঘোষণা সাপেক্ষে কেন্দ্র/রাজ্য সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি দক্ষতা অনুযায়ী দিতে হবে।

৩। স্থায়ী কাজে ঠিকাশ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে নিযুক্ত ঠিকাশ্রমিকদের স্থায়ীকরণ করতে হবে।

৪। স্থায়ীকরণ সাপেক্ষে সমকাজে সমবেতন এবং অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাদি (প্রভিডেন্ড ফান্ড, ইএসআই, গ্র্যাচুইটি, ছুটি ইত্যাদি) দিতে হবে।

৫। প্রতিটি ঠিকাশ্রমিককে নিয়োগপত্র এবং সচিত্র পরিচয়পত্র দিতে হবে।

৬। প্রতিটি শ্রমিককে ন্যূনতম পেনশন ৩০০০ টাকা দিতে হবে।

৭। ছাঁটাই কর্মচারীদের কাজে পুনর্বহাল করতে হবে (যেখানে প্রয়োজন)।

৮। শিল্পভিত্তিক/কারখানাভিত্তিক যদি বিশেষ কোনো দাবি থাকে তাও যুক্ত করতে হবে।

এছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে -

১। ১২ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর সব ঠিকাশ্রমিক ইউনিয়নসমূহকে কমিটি স্তরে সভা করে কর্মসূচি নিতে হবে।

২। ৪ জানুয়ারি ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের বর্ধিত রাজ্য কমিটির সভা সিআইটিইউ’র রাজ্য দপ্তর শ্রমিক ভবনে হবে সময়-১১টায়।

রাজ্যের ৮৮টি ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে অন্তত একজন কমরেডকে এই সভায় আসতে হবে, রাজ্য কমিটির সদস্য ছাড়া।

এই সভায় রাজ্য সিআইটিইউ’র সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকবেন।

৩। ৯ জানুয়ারি নিজ নিজ কর্তৃপক্ষের কাছে উপরিউক্ত দাবিসনদ পেশ করতে হবে বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে। এই দাবিসনদের কপি প্রতিটি জেলায় জেলা শ্রম আধিকারিকের কাছেও পাঠাতে হবে এবং একটি কপি রাজ্য ফেডারেশনকেও পাঠাতে হবে।

৪। ২৭, ২৮, ২৯ জানুয়ারি যে কোনো একদিন জেলাভিত্তিক কনভেনশন করতে হবে।

৫। ৩০ জানুয়ারি রাজ্যভিত্তিক দাবি দিবস পালন করতে হবে।

৬। ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যভিত্তিক ঠিকাকর্মীদের কেন্দ্রীয় জমায়েত হবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে। এই সমাবেশকে সফল করতে এখন থেকেই ‘কলকাতা চলো’ এই স্লোগান নিয়ে নিচুতলায় ব্যাপক প্রচার সংগঠিত করতে হবে।