৬০ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৩ জুন, ২০২৩ / ৭ আষাঢ়, ১৪৩০
বিপন্ন বাংলাকে বাঁচাতে বামফ্রন্টের আহ্বান -
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয়ী করুন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্য সরকারের সামগ্রিক জনস্বার্থবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে,বাংলার গ্রামের নির্বাচিত সরকার গড়ে তুলতে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন - রাজ্যে আসন্ন দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যবাসীর কাছে এই আহবান জানিয়েছে বামফ্রন্ট। গত ২১ জুন এক সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্টের আবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে ৯ দফা বিকল্প কর্মসূচি রূপায়ণের ঘোষণা সহ বামফ্রন্ট রাজ্যবাসীর কাছে আহবান জানিয়েছে -
● বাংলাকে দুর্নীতিগ্রস্তদের দখল থেকে মুক্ত করুন।
● দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংসকারী,সাম্প্রদায়িক বিজেপি'কে জনবিচ্ছিন্ন করুন।
● দিকে দিকে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয়ী করুন।
● রাজ্যে জনগণের পঞ্চায়েত গড়ে তুলুন।
এই আবেদনে বামফ্রন্ট ‘এই অপশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান’ শিরোনামে বলেছে -
‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রের অপশাসন,অসহিষ্ণুতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। বিষবৃক্ষকে শিকড়সমেত উচ্ছেদ করতে হবে। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৫ জন নেতা-মন্ত্রী-কর্মকর্তা-দালাল জেলে গেছেন।সরকারি মদতে রাজ্যে দুর্নীতির যে চেহারা সাধারণ মানুষ দেখছেন সেটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। বিপন্ন রাজ্যকে বাঁচাতে হলে এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। তৃণমূল ও বিজেপি'কে হঠাতে মানুষের ঐক্য চাই। আগামীর লড়াই হবে গ্রামে গ্রামে, লড়াই হবে বিপন্ন বাংলাকে বাঁচাতে, লড়াই হবে লুট-দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লড়াই হবে দেশের ঐক্য ও সম্প্রীতি রক্ষার্থে। এই লড়াইয়ে আপনিও আসুন। গভীর প্রত্যাশা নিয়ে আমরা আপনাদের প্রতীক্ষায় রইলাম।’’
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, ১৯৭৭ সালের ২১ জুন প্রথম বামফ্রন্ট সরকার শপথ গ্রহণ করে। সেইদিনই মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ঘোষণা করেছিলেন, আমাদের সরকার শুধু রাইটার্স থকে পরিচালিত হবে না। পঞ্চায়েত, পৌরসভা সহ সমস্ত স্বশাসিত সংস্থার মাধ্যমে মানুষের সাথে জীবন্ত সম্পর্ক গড়ে সরকার পরিচালিত হবে। ১৯৭৮ সালে যখন এরাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তখন অন্যান্য রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ছিলনা। পশ্চিমবঙ্গের এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা দেখে ৭৩ তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে গোটা দেশে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থা চালু হয়।
তিনি বলেন,বামফ্রন্ট সরকার চলে যাবার পর এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থার ধারা আর চালু নেই। পঞ্চায়েত এখন লুটের আখরায় পরিণত হয়েছে। এই লুট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপি’র বিভেদের রাজনীতিকে রুখতে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এই লক্ষ্যেই জেলায় জেলায় বামফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছে। তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী সমস্ত শক্তির সঙ্গে আঞ্চলিক স্তরে বোঝাপড়া গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র, সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, আরএসপি’র রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়, আর সিপিআই নেতা সুভাষ রায়, এমএফবি নেতা আশিস চক্রবর্তী, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা শিবনাথ সিনহা, বলশেভিক পার্টি নেতা প্রবীর ঘোষ, সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, পার্টি নেতা সুখেন্দু পাণিগ্রাহী।