E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৩ জুন, ২০২৩ / ৭ আষাঢ়, ১৪৩০

পঞ্চায়েত নির্বাচন ও শ্রমিকশ্রেণির ভূমিকা

দীপক দাশগুপ্ত


১৯৭৭ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের প্রতিষ্ঠা এ রাজ্যে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকারের এক উন্নত পর্বের সূচনা করেছিল। বামফ্রন্ট সরকার তৃণমূলস্তরে গণতন্ত্রকে ও নাগরিক স্বাধিকারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে জনগণকে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিল।

১৯৭৭ থেকে ২০১১ - সুদীর্ঘ ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের শাসনের কালপর্ব ছিল গরিব-গুর্বো, খেটে খাওয়া মেহনতকারি শ্রমজীবী মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের, গ্রামোন্নয়নের ও নগরায়ণের কাল।

জমিদার, জোতদার ও কংগ্রেস সরকারের পুলিসের শোষণ, আক্রমণ ও শোষক-শাসক শ্রেণির অমানবিক কাজগুলির অনেকখানি অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে গ্রামোন্নয়ন ঘটিয়েছিল সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, বুদ্ধিজীবীরা এক হয়ে নির্ভয়ে সীমাবদ্ধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এগিয়ে গিয়েছিলেন উন্নয়নের পথে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ১২ লক্ষের বেশি খাসজমি বামফ্রন্ট সরকারের পক্ষ থেকে গরিব কৃষক, ভূমিহীন খেতমজুরদের মধ্যে বণ্টিত করা, বর্গা অপারেশনের মাধ্যমে বর্গা রেকর্ড করা প্রভৃতি কাজগুলি সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের কাজের সাফল্য তুঙ্গে উঠেছিল। গ্রামের কৃষি কাজেও সাফল্য সারা দেশে রেকর্ড সৃষ্টি করে। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস শাসনে কৃষি উৎপাদনে অসাফল্যের কারণে ঘাটতি রাজ্য থেকে বামফ্রন্ট শাসনে উদ্বৃত্ত রাজ্যে পরিণত হওয়া, খাদ্যের অভাব দূর হওয়া, সকল মানুষের দু’বেলা পেটভরে খাওয়ার ব্যবস্থা করা, গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সাক্ষরতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রভৃতি জনগণের মৌলিক প্রয়োজনীয়গুলির ন্যূনতম ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছিল। গ্রামের মানুষের কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে রোজগারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল; ফলশ্রুতিতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার দরুন গ্রামের অর্থনীতি অনেকটা উন্নত হয়েছিল।

।। দুই ।।

২০১১ সালে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতাসীন হওয়ার কারণে এরাজ্যে গণতন্ত্র যা বামফ্রন্ট শাসনে একেবারে তৃণমূল স্তরে পৌঁছেছিল, তা আজ বিপর্যস্ত ও কার্যত পঞ্চায়েত ব্যবস্থা জনবিরোধী ও প্রতিক্রিয়ার দুর্গে পরিণত হয়েছে।

বামফ্রন্টের দ্বারা পরিচালিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ছিল জনমুখী, গণতান্ত্রিক ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে তা তৃণমূলস্তরে পৌঁছে দিয়েছিল।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মানুষজন ক্রমশ এই সংস্থাকে “গ্রামের সরকার” হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। বর্তমানে এরাজ্যে পঞ্চায়েতকে তৃণমূল দল গুন্ডা, মস্তান ও পুলিসকে ব্যবহার করে দখল করে নিয়েছে। স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে যে, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ নির্বাচন, যা অবাধ নির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু ২০১১ সালের পরে রাজ্যে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রকৃতপক্ষে গুন্ডা, মস্তান ও পুলিসের আক্রমণে প্রহসনে পরিণত হয়েছিল, জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়নি।

তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত পরিচালনার কর্তৃত্বে থাকায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পরেছে। এগুলি এখন শাসকশ্রেণি ও শোষক পার্টির তথা কায়েমি স্বার্থের রক্ষক ও তাদের প্রতিভূ হিসাবে কাজ করছে। তৃণমূল সরকারের শাসনে এরাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আর গ্রামের সরকার হিসাবে সাধারণ গ্রামবাসীদের কাছে বিবেচিত হয় না। বর্তমান তৃণমূলী পঞ্চায়েত সাধারণ গ্রামবাসীদের কাছে লুটেরা, ঠ্যাঙাড়ে, দুর্নীতিপরায়ণ ও ফেরেববাজদের পঞ্চায়েত হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।

।। তিন ।।

জনগণের সক্রিয় ও সচেতন অংশ হিসাবে শ্রমিকশ্রেণির তথা সমগ্র শ্রমজীবী মানুষের দেশ ও সংগঠনে ভুমিকা সর্বাধিক। পরিস্থিতি দাবি করছে শ্রমিকশ্রেণিকে রাজ্যের উন্নয়নে তা করতে হবে।

শ্রমিকশ্রেণি, কৃষক, খেতমজুর অর্থাৎ দেশের তিনটি উৎপাদক শ্রেণি সমাজ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে অনিবার্যভাবে।

১৯৭৮ সালে এরাজ্যে শ্রমিকশ্রেণি সহ সমগ্র জনগণ বিপুল উৎসাহ নিয়ে উদ্দীপনা ও আস্থার সঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। রাজ্যের বামপন্থী ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি এই রাজ্যে বামফ্রন্টকে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এরাজ্যের শ্রমিক, কৃষক সহ সমগ্র শ্রমজীবী মানুষ এ ব্যাপারে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছিলেন। এটা ইতিহাস। এই ইতিহাসের বাস্তবতা অনস্বীকার্য। এরপর দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হিসাবে বামপন্থীরা ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা পরিচালনা করে সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

এরাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার সদর্থক ও জনপ্রিয় ভূমিকা কেবলমাত্র রাজ্যের জনগণের দ্বারা প্রশংসিত হয়নি, উপরন্তু দেশ বিদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা পশ্চিমবঙ্গের বামশাসিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার প্রশংসা করেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী নিজে এরাজ্যের পঞ্চায়েত সম্পর্কে প্রশংসা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাম সরকারের প্রতিষ্ঠার উৎস ছিল শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, যুব, মহিলা, কর্মচারী প্রভৃতি বিভিন্ন অংশের জনগণের নিরবছিন্ন আন্দোলন ও শ্রেণিসংগ্রাম। এটাও আমাদের খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে, শ্রমিকশ্রেণির বর্তমান চেহারা বামফ্রন্ট সরকারের প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ভিন্ন। শ্রমিকশ্রেণি বলতে বোঝা যেত কলকারখানার সংগঠিত শ্রমিক। বর্তমানে অসংগঠিত শ্রমিকরা, যারা বেশি সংখ্যায় গ্রামে বসবাস করেন, তারা শ্রমিক, কৃষক ও খেতমজুরদের পক্ষ থেকে ধনিকশ্রেণি জমিদার ও জোতদারদের স্বার্থরক্ষাবাহী কেন্দ্রের ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে এক বড়ো শক্তি হিসাবে সামনে এসেছে। এই শ্রমিকদের বড়ো অংশ সকলেই অসংগঠিত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থেকে জনগণের দৈনন্দিন বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করে চলেছে। সুতরাং, আজকের অসংগঠিত শিল্পে যুক্ত শ্রমিকদের সঙ্গে জনগণের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। অধিকাংশ শ্রমিক গ্রামে বসবাস করার ফলে তারা তৃণমূলী পঞ্চায়েতগুলির ধান্দাবাজি, দুর্নীতি, ফেরেববাজি জানেন, তাই তারা শ্রমিকদের মধ্যে তৃণমূলের অসভ্যতা, ফেরেববাজি, দুর্নীতির যত প্রচার করবেন, তত শাসকদলকে জনবিছিন্ন করতে পারবেন। বর্তমানে এটা প্রয়োজনীয়। শ্রমিকদের তা করা প্রয়োজন। যদি শ্রমিকশ্রেণির মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তোলা যায়, তাহলে তা এক বিরাট রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করা যাবে।

।। চার ।।

এরাজ্যের পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা তথা ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে কলুষমুক্ত করা ও তা পুনরায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করা এক বিশাল রাজনৈতিক সংগ্রাম। এই সংগ্রাম শ্রমিকশ্রেণি পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখে। নয়া উদারবাদী নীতি প্রয়োগের বিরুদ্ধে ভারত সহ বিশ্বের দেশে দেশে সংগ্রাম পরিচালনা করে চলেছে শ্রমিকশ্রেণি। এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস সহ পশ্চিমি দুনিয়ার পুঁজিবাদী দেশগুলির শ্রমজীবী মানুষ নিজ নিজ দেশে ধর্মঘটের জোয়ার সৃষ্টি করে এগিয়ে চলেছে। এটা অনস্বীকার্য, নয়া উদারনীতি প্রত্যাহারের দাবিতে সংগ্রাম; শ্রমজীবী মানুষের এই সংগ্রামের দরুন সংশ্লিষ্ট দেশগুলির শাসকদল অনেকক্ষেত্রে থমকে দাঁড়াচ্ছে; জনবিরোধী নীতি কোথাও কোথাও পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। আমাদের দেশে স্বাধীনতার জন্য শ্রমিকশ্রেণির সংগ্রাম ছিল এক উন্নত মানের দেশপ্রেমিক সংগ্রাম। শ্রমিকশ্রেণির স্বাধীনতার সংগ্রামে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীদের ভূমিকা ছিল দৃষ্টান্তমূলক। সারা দেশকে তা অনুপ্রাণিত করেছে।

আমাদের বোঝাপড়ায় থাকা প্রয়োজন শ্রমিকশ্রেণি দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে থাকে। দেশে সমানাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম গড়ে তুলতে পারে বলেই শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবে নেতৃত্ব দান করে থাকে। এর সঙ্গে সঙ্গে এটাও আমাদের বোঝাপড়ায় থাকা প্রয়োজন স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএস ব্রিটিশের দালালি করেছে।

।। পাঁচ ।।

১৯৭৮ সালে এরাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা বামফ্রন্ট গড়ে তুলেছিল গ্রামোন্নয়ন ও গরিব সাধারণ কৃষক, খেতমজুর, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মানুষের অগ্রগতির স্বার্থে। সমগ্র রাজ্য ও রাজ্যের শ্রমিক কৃষক সহ সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার দ্বারা উপকৃত হয়েছিল।

২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর সরকারের সাহায্যে রিগিং ছাপ্পা ও জালি ভোটের মাধ্যমে বামপন্থীদের পরাস্ত করে গ্রামীণ জনপ্রিয় ও জনস্বার্থবাহী ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা জবর দখল করে গ্রামের জোতদার, ধনী কৃষক, কায়েমি স্বার্থের পক্ষে ব্যবহার করে গরিব জনগণের সর্বনাশ করে চলেছে।

তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সরকার ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা দখল করে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছে। এই দলের নেতা, এমএলএ, এমপি, মন্ত্রীরা কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করে কামাচ্ছে। ফলে কালো টাকায় রাজ্যটাকে ছেয়ে ফেলেছে।

টিএমসি পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন হয়ে সম্পদ লুট করে পিএম টু ডিএম ব্যবস্থা চালু করেছে। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে শাসকদলের প্রতিনিধিরা পুকুরচুরি করে চলেছে। গ্রামের গরিব মানুষ ঘর পায় না, অথচ শাসকদলের পাকাবাড়ির মালিকের জন্য একাধিক ঘর বরাদ্দ হয়ে থাকে।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ে চলছে সুদের কারবার। বামফ্রন্ট সরকারের সময় তৈরি হওয়া ১০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী এখন অধিকাংশ মাইক্রোফিনান্সের হাতে চলে গেছে। গ্রাম সংসদ সভা হয় না বললেই চলে, ভূমিহীনদের বামফ্রন্ট যে জমির পাট্টা দিয়েছিল তার অধিকাংশ জমিই শাসকদলের মদতে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ অরাজক ও বিশৃঙ্খল অবস্থা রাজ্যে আজ বিরাজ করছে। দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিভূ তৃণমূল কংগ্রেস ও তার মদতদাতা বিজেপি, আরএসএস হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি।

বিভেদকামী শক্তি ও বিছিন্নতাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবাদী শক্তি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও সংগ্রামী জনগণের শক্তিশালী ভিত পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট।

শ্রমিকশ্রেণিকে উদ্ভূত এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করা ও এক সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য সংগ্রাম গড়ে তোলার কাজে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমাদের স্মরণে আছে, সত্তর দশকের কংগ্রেস পার্টি কর্তৃক সৃষ্ট আধাফ্যাসিস্ট সন্ত্রাস প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে শ্রমিকশ্রেণি নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পালন করেছিল। সুতরাং, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বিশাল রাজনৈতিক সংগ্রামে পরিণত করে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি’কে পরাস্ত করতে শ্রমিকশ্রেণিকে নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পালন অত্যন্ত প্রয়োজন।

এরাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূলের গণ আন্দোলন বিরোধী ভূমিকা পালনের বিরুদ্ধে ও তাদের উভয়েরই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণির ধর্মনিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে এরাজ্যকে অনেকটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যবদ্ধ রাখা সহজ হয়েছে। শ্রমিকশ্রেণির একাজে আরও দৃঢ়তা প্রয়োজন। পশ্চিমবাংলার সংগ্রামী ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বের ভূমিকা প্রত্যাশিত।

গ্রামের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য এই নির্বাচনে বামপন্থী গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে জয়লাভ করতে হবে।

শ্রমিকশ্রেণি ও সমগ্র মেহনতি মানুষের উল্লিখিত রাজনৈতিক সংগ্রামে জয়লাভকে সুনিশ্চিত করেই বাংলার হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনা ও সংগ্রামী, স্বচ্ছ ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য রক্ষা করা প্রয়োজন। তাই রাজ্যের সমগ্র শ্রমজীবী মানুষকে এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী কাজে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।