E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৩ জুন, ২০২৩ / ৭ আষাঢ়, ১৪৩০

মতাদর্শের চর্চা

ভারতীয় দর্শন প্রসঙ্গে (ষোলো)

শ্রীদীপ ভট্টাচার্য


● পুরাণ ঈশ্বরবিশ্বাসীদের দুঃখ ভুলে আশাবাদী হতে সাহায্য করে। একইসময়ে, পুরাণগুলি ঈশ্বরে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে প্রেরণা দেয় এবং ভাগ্য, কর্মফল, অদৃষ্ট, পুনর্জন্ম, স্বর্গ, নরক, পাপ, পুণ্য ইত্যাদিতে বিশ্বাসী করে তোলে। তারা মানুষকে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে না বলে ধৈর্যশীল হয়ে ঈশ্বরের অবতারের আবির্ভাবের জন্য অপেক্ষা করতে বলে, যিনি মর্ত্যধামকে পাপমুক্ত, বিপদমুক্ত করতে পারেন। এই সমস্ত প্রেরণাদায়ী, আদর্শবাদী গল্পকথা আসলে শোষণভিত্তিক সমাজে শাসকশ্রেণির স্বার্থরক্ষা করে। ঠিক এই কারণেই, আজকের দিনে আসল উড়োজাহাজ দেখেও মানুষ চালকহীন, জ্বালানিহীন পুষ্পক রথের কথা বিশ্বাস করে। আবির্ভাব, অন্তর্ধান, উড়ন্ত যান বা কল্প বৃক্ষের মতো অলীক কল্পনাগু‍‌লিও বিশ্বাস করে।‍‌ পৌরাণিক গল্প কাহিনিগু‍‌লি ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানে অনুমোদিত ও পরিবেশিত হয়ে চলার ফলে বংশপরম্পরায় এক বিশ্বাস‍‌যোগ্যতা অর্জন করে। এভাবেই প্রায় চারশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এক প্রাচীন কাঠামো ধ্বংস করেও সঙ্ঘ পরিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচার এড়িয়ে যেতে পারে। এমনকী সুপ্রিম কোর্টও দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা বলেছিল।

● একটি বিষয় বিশেষভাবে স্মরণে রাখা প্রয়োজন, বেদের উপজীব্য যজ্ঞীয় কর্মকাণ্ড ক্রমান্বয়ে ব্যয়বহুল হওয়ার পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের ধারক-বাহক যজমান পুরোহিত ব্রাহ্মণদের জীবিকার সংকট দেখা দেওয়ার প্রেক্ষিতে এই ধর্মসংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য স্মৃতি, পুরাণ প্রভৃতি শাস্ত্র বেদবাক্যের তাৎপর্য নির্ধারণে সচেষ্ট হয়। যদিও এই প্রচেষ্টাও প্রবল সংকটকে কাটিয়ে উঠতে পারে না। জৈমি‍‌নির মীমাংসা সূত্র (যা পূর্বেই আ‍‌লোচিত হয়েছে) এই লক্ষ্যেই রচিত হয়েছিল।

● হিন্দু ধর্মে প্রধান তিনটি পুরাণ হলো - রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত। বুদ্ধের জাতকের গল্পও পৌরাণিক কাহিনি। হিন্দু ধর্মে সব মিলিয়ে ১৮টি প্রধান পুরাণ ছাড়াও প্রায় প্রতিটি খ্যাতনামা বড়ো মন্দিরকে নিয়ে এক একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে।

● সাধারণ মানুষের উপর শাসকশ্রেণির সাংস্কৃতিক আধিপত্য অর্জনের জন্যই নয় পৌরাণিক দেবতারা আদিম উপজাতিগুলির দেব-দেবীদেরও পূজার্চনায় ক্ষতি করেছিল। প্রায় সব গ্রাম্য দেবতাই নারী, যা দৈব, শাক্ত বা বৈষ্ণব ইত্যাদি শ্রেণিতে পড়ে না। পুরাণই শিব, বিষ্ণু দেবতাদের সারা ভারতের দেবতা হিসাবে তুলে ধরে, গ্রাম্য দেবীদের আদিশক্তি বা পার্বতী এবং শিবের ঘরণী হিসাবে বর্ণনা করে, স্বাধীন গ্রাম দেবতার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে এটা করা হয়। এভাবেই এক ধরনের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক ধারণা স্থানীয় চেতনার ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যারাই বৈদিক সংস্কৃতি ও বর্ণব্যবস্থার বিরোধিতা করেছিল তারা শয়তানের প্রতীক দৈত্য বা রাক্ষস। বৈদিক সংস্কৃতির রক্ষকেরা দেবতা। আর্যদের সাথে লড়াই করে যারা পরাজিত তারাই দস্যু।‍‌ যে আদিম উপজাতি বৈদিক আর্যদের সহযোগিতা করেছিল তারা বানর বা হনুমান।

● আজকের দিনেও নৈতিক আদর্শ ও মূল্যবোধের নিরিখে পৌরাণিক চরিত্রগুলিকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো হয়। যেমন রামায়ণের পুরুষোত্তম রাম আদর্শ মানুষের প্রতীক। অথচ, এই রাম তার সহধর্মিনীর সতীত্ব প্রমাণ করতে তাকে আগুনে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করেছিল। প্রকৃতপক্ষে পৌরাণিক কাহিনিগুলি বর্ণব্যবস্থা, পুরুষ আধিপত্য ও সামন্ততান্ত্রিক মূল্যবোধকেই প্রচার করে। যাইহোক, পুরাণ যে সময়ে লেখা হয়েছিল সেই সময়েরই প্রতিফলন তাতে ঘটেছে। তাই, প্রাচীন ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চার কিছু উপাদান পুরাণে পাওয়া গেলেও তা গৌণ। পুরাণের আখ্যানগুলির বেশ কয়েকটি জনগণের মধ্যে আমাদের ধারণার প্রসারে সহায়ক হতে পারে।

● পুরাণ সা‍‌হিত্যকে বিশ্বকোষের সাথে তুলনা করা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। সৃষ্টিতত্ত্ব (Cos-mogony), মহাবিশ্বতত্ত্ব (Cosmology), ঈশ্বর-ঈশ্বরীদের পরম্পরা, রাজা-নায়ক-সাধুও ঈশ্বরসম (Demigod), লোককাহিনি, তীর্থস্থান ও তীর্থযাত্রা, ম‍‌ন্দির, ঔষধ, জ্যোতির্বিদ্যা, ব্যাকরণ, খনিজবিদ্যা, হাস্যকৌতুক, প্রেমকাহিনি, ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন প্রভৃতির আলোচনা নিয়েই পুরাণগুলি রচিত হয়েছে। পুরাণের অন্তর্বস্তু খুবই অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আবার একই পুরাণের বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি রয়েছে, যাদের মধ্যে সামঞ্জস্য প্রায় নেই। মহাভারত বা মহাপুরাণকে অনেকে মনে করেন ‘ব্যাস’-এর রচনা, ‍‌কিন্তু গবেষকরা মনে করেন কয়েক শত বছর ধরে বহু লেখকের প্রয়াসের ফলশ্রুতি মহাপুরাণ (মহাভারত)। তবে জৈন পুরাণ সম্পর্কে বলা যায়, তাদের রচনার সময় ও লেখকও নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়েছে। তবে বেদ ও পুরাণের সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। অনেকে মনে করেন, এই দুইয়ের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। আবার অনেকে মনে করেন বেদ ও পুরাণ অভিন্ন।

● এটা সঠিক, ভারতে হিন্দুধর্মীয় জাতীয় ও আঞ্চলিক উৎসবের উৎস হলো পুরাণ। পুরাণের অন্তর্বস্তু নিয়ে দার্শনিক বিবাদও রয়েছে - দ্বৈতবাদ না অদ্বৈতবাদ? পৌরাণিক সাহিত্যর অবদানের কথা অনেকে বলেন পরবর্তীকালের ‘ভক্তি আন্দোলন’ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে।

● হিন্দুত্ববাদী শক্তি সাম্প্রদায়িকতার বার্তা প্রসারিত করতে পুরাণকে ব্যবহার করে। এই কারণেই তারা পুরাণকে দিয়ে ইতিহাসকে প্রতিস্থাপিত করে। পুরাণকে তারা ইতিহাস বলে গণ্য করতে চায়। শুধু বৈজ্ঞানিক বিচারেই নয়, সাধারণ জ্ঞানের নিরিখেও এই ভাবনা গ্রহণযোগ্য নয়। (হাতি মাথা ধারণ করে ভগবান গণেশ সামান্য ইঁদুরের পিঠে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে কল্পনা করুন। কল্পনা করুন, ঈগলের পিঠে ভগবান বিষ্ণু)। সঙ্ঘ পরিবার, গণেশের মাথা ভারতীয় প্রাচীন শল্য চিকিৎসার গৌরবগাথা হিসেবে প্রকাশ করে। হাতির মাথা মানুষের শরীরের সাথে যুক্ত করেছিল প্রাচীন ভারতীয় শল্য চিকিৎসা - এটাই সঙ্ঘ পরিবারের দাবি। ইতিহাস নয়, পুরাণকেই তারা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমাদের কাজ হলো সঠিক ঐতিহাসিক চেতনায় পুরাণকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া যাতে শাসকশ্রেণির অসৎ উদ্দেশ্য উন্মোচিত হয়। কল্পনা ও বাস্তবতার পার্থক্যও আমাদের তুলে ধরা প্রয়োজন।

অদ্বৈত

● ইংরেজি ৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে কেরালার কালাভি গ্রামে শঙ্করের জন্ম হয়। খুব অল্প বয়সে তিনি বেদ, বেদান্ত সূত্রগুলির উপর কর্তৃত্ব অর্জন করেন। তিনি এগুলিকে ব্রহ্মসূত্র নাম দিয়ে সহজবোধ্য ভাষায় সংকলিত করেন। একইভাবে তিনি ভাগবত গীতা ও এগারোটি উপনিষদের ভাষ্য (ব্যাখ্যা) রচনা করেন। এছাড়াও তিনি সৌন্দর্য্যলহরী, বিবেকচূড়ামণি, দক্ষিণমূর্তি স্তোত্র ইত্যাদি রচনা করেন যা পরে অদ্বৈতবাদ নামে খ্যাতি লাভ করে।

● অদ্বৈত বেদান্তবাদীদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়। প্রায় তিন শতটি রচনার তিনি স্রষ্টা। দশটি উপনিষদের ক্ষেত্রে তার ব্যাখ্যাকেই সর্বাধিক প্রামাণ্য বলে বিবেচনা করা হয়।

● অদ্বৈতবাদ হলো ব্রহ্ম ও আত্মার ধারণা এবং উভয়ের আন্তঃসম্পর্কের বিস্তারিত ব্যাখ্যা। অদ্বৈত শব্দের অর্থ পৃথক সত্তা নয়, একক সত্তা অর্থাৎ ব্রহ্ম ও আত্মা আলাদা নয়, প্রকৃতপক্ষে একীভূত সত্তা (অ-দ্বৈত)। প্রতিটি জীবই ব্রহ্মের মূর্ত রূপ - অহ্‌ম ব্রহ্মামি (আমিই ব্রহ্ম)। ততক্ষণ আত্মা ব্যতিরেকে এই পৃথিবীর কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই। সমস্ত কিছুর মধ্যে একটিই সত্য - তা হলো আত্মা/নিজের আত্মাকে চরম সত্য বলে জানাই হলো সর্বোচ্চ জ্ঞান। যতক্ষণ না মন শান্ত হচ্ছে, সমস্ত আবেগ ও চাহিদা থেকে মুক্ত হচ্ছে, ততক্ষণ আত্মা সত্যকে অনুধাবন করতে পারে না। আত্মা চূড়ান্ত সত্য সম্পর্কে সর্বোচ্চ জ্ঞানের মধ্য দিয়ে যখন নিজেই সত্যে উপনীত হয়, কোনো দ্বৈততা, বৈচিত্র্যের অস্তিত্ব আর থাকে না। আত্মা তখন ঝলমল করে সত্য, ব্রাহ্মণ হিসাবে।

● এই বিশ্ব বাস্তব নয়, এটা অলীক - অদ্বৈতবাদের এটাও বক্তব্য। সবই মায়া। তাই অদ্বৈতবাদকে মায়াবাদও বলা হয়। শঙ্করের ব্যাখ্যা হলো - স্বপ্নে মানুষ বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। জেগে উঠলে তার আর কোনো অস্তিত্ব থাকে না। মানব জীবনও তেমন। বাস্তব মনে হলেও আসলে স্বপ্নের একটি পর্যায়। একবার এই পার্থিব শরীর ত্যাগ করলেই স্বপ্ন থেকে জেগে ওঠার মতো সবটাই হারিয়ে যাবে। একমাত্র ব্রহ্মই অবশিষ্ট থাকবে। ব্রহ্মই সত্য, জগৎ মিথ্যা। শঙ্কর যুক্তিবাদী চিন্তা ভাবনার ঘোর বিরোধী ছিলেন। অদ্বৈতবাদের মধ্য দিয়ে তিনি বললেন - বিশ্ব, বিশ্বের চেহারা ভ্রান্তি, মায়া। একমাত্র ব্রাহ্মণই সত্য - এটাই সকলকে মেনে নিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই এতে যুক্তিবাদিতার কোনো স্থান নেই। শঙ্কর তাঁর চিন্তাভাবনার স্বপক্ষে জানিয়েছেন যে, উপনিষদে যেমন বলা আছে, প্রশ্নাতীতভাবে তাই মেনে নিতে হবে। পার্থিব বিষয়ে কাজ করার প্রসঙ্গে তিনি ‘ব্যবহারিক সত্য’-এর ধারণা প্রচার করেন। বাস্তবে মায়াবাদের সংশয় ও দ্বন্দ্ব সমাধানে তিনি বলেছিলেন - স্বপ্নে থাকা মানুষ যেমন স্বপ্নকেই বাস্তব ভাবে, বেঁচে থাকা মানুষের জগৎও সেইরকম বাস্তব। শঙ্করের সময়কালের কথা বিবেচনা করলেই ভারতীয় দর্শনে তাঁর অবদানের তাৎপর্য বোঝা যাবে। এটি এমন এক সময় ছিল যখন মীমাংসকেরা ব্রহ্মের ধারণাকে বাদ দিয়ে বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানে গুরুত্ব দিয়েছিল। আবার বেদান্তবাদীরা বাস্তব জগৎ উপেক্ষা করে আত্মা ও ব্রহ্মের বিমূর্ত ধারণায় সীমাবদ্ধ রেখেছিল। শৈব ও বৈষ্ণবদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছিল। অন্যদিকে কাপালিক ও তান্ত্রিক সংস্কারের সর্বত্র অনুশীলন চালু হয়েছিল। এই সময়কালে বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রভাবে এবং বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের বিকাশের ফলে ভাববাদী দর্শনের ধারা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। সেই সময়ে ভাববাদী দর্শন প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

● শঙ্কর ভাববাদী দর্শনের ভিত্তি শক্তিশালী করতে, বেদ-এর কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করতে এবং একইসাথে জনসাধারণের মধ্যে সেই চেতনার প্রসার ঘটাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। এই কাজের লক্ষ্যেই শঙ্কর (আদি শঙ্করাচার্য নামে বেশি পরিচিত) উত্তরে বদ্রীনাথ, পূর্বে পুরী, দক্ষিণে শৃঙ্গেরী ও পশ্চিমে দ্বারকা এই চারটি ধর্মকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন।

● শঙ্করের বিশাল রচনাবলীর মধ্যে ব্রহ্মসূত্রের ভাষ্যই সবচেয়ে বিখ্যাত। অদ্বৈতবাদেও শঙ্করের নাম জড়িয়ে রয়েছে। আবার বিশিষ্টাদ্বৈত সম্প্রদায়ের সর্বাধিক বিখ্যাত দার্শনিক রামানুজ। তাঁর জন্মকাল একাদশ দশকের প্রথম ভাগ।

● এটাও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন যে, এই বিশ্ব সম্পর্কে শঙ্করের অভিমত ও তার শিষ্যদের প্রচার সমসাময়িক এবং পূর্ববর্তী সমস্ত বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানকে অর্থহীন করে তুলেছিল। বিশিষ্ট ভারতীয় বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মতে ভারতের জ্ঞানচর্চায় এটি চরম ক্ষতির কারণ। ই এম এস নাম্বুদিরিপাদের মতে (ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের এক অসাধারণ নেতা), ‘‘শঙ্করের বিজয়ের অর্থ হলো অবশিষ্ট ভারতীয় সমাজের উপর ব্রাহ্মণ ও উচ্চবর্ণের বিজয়। অদ্বৈতবাদ, হিন্দু পুরাণ, উপনিষদ ও হিন্দু পুনর্জাগরণ মতাদর্শের অনিবার্য পরাজয় ছাড়া একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক ভারত গড়ে তোলা কঠিন।

(ক্রমশ)