৫৮ বর্ষ ১১শ সংখ্যা / ২৩ অক্টোবর ২০২০ / ৬ কার্ত্তিক ১৪২৭
পার্টির রাজ্য কমিটির আহ্বান অবিলম্বে বুথস্তরে বুথ কমিটি গড়ে তোলো
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটি বৈঠক ১৭ অক্টোবর প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠক থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে তৃণমূল হটাও, বিজেপি’কে ঠেকাও। তার জন্য বিকল্প সরকার চাই। তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সমস্ত বামপন্থী, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে নিয়েই বিকল্প গড়ে উঠবে। এর মধ্যে জাতীয় কংগ্রেসও থাকবে। বিকল্প কর্মসূচি জনগণের সামনে পেশ করতে হবে। এই বৈঠক থেকে আরও জানানো হয়েছে, প্রাথমিক সাংগঠনিক কর্তব্য হলো, আর দেরি না করে বুথ স্তরে বুথ কমিটি গঠন করা।
এদিন সভা শুরুর আগে পার্টির শতবর্ষ উপলক্ষে রক্তপতাকা উত্তোলন করেন পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু।
পার্টির রাজ্য কমিটির বৈঠকে স্থির হয়েছে, স্থানীয় ও রাজ্যস্তরেও আদায়যোগ্য দাবির ভিত্তিতে আন্দোলনে নামবে সিপিআই(এম)। এলাকায় এলাকায় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে পুনর্বাসন-পুনর্গঠনের সাহায্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হবে। গ্রাম বাংলায় ক্ষুদ্র ঋণের নামে গরিব মানুষকে বিরাট প্রতারণা করা হচ্ছে, তা প্রতিরোধ করতে হবে। রাজ্যে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ শুরু হলেও গণপরিবহণের অবস্থা শোচনীয়। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করার লড়াইয়ে যাওয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি মান্য করে কিছু পরিমাণে ট্রেন চালানোর দাবিও জানাবে সিপিআই(এম)। জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তবে, শুধুমাত্র এই উল্লিখিত দাবিই নয়, স্থানীয়, জেলা স্তরে মানুষের জরুরি সমস্যা নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের উদ্যোগ নেবে পার্টি।
রাজ্য কমিটির সদস্যদের আলোচনায় দেখা যায় সাম্প্রতিক সময়ে পার্টি ও বামপন্থীদের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে বামপন্থীরা ধারাবাহিকভাবে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষও এই উদ্যোগকে প্রভূত সাহায্য করেছেন। স্থানীয় স্তরের দাবির আন্দোলনে মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
রাজ্য কমিটির বৈঠকে ট্রেড ইউনিয়নসমূহ ও কৃষক সংগঠনগুলির ডাকে ২৬ নভেম্বর সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটকে সফল করার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এদিন রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেন, এই রাজ্যে ধর্মঘটকে সর্বাত্মক চেহারা দিতে পার্টি ও বামপন্থীরা ভূমিকা পালন করবে। ধর্মঘটকে সফল করতে স্ট্রাইক কমিটি গঠন করা হবে। আগেই স্থির হয়েছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় ১৬ দলের উদ্যোগে একই দিনে দুই প্রান্ত থেকে দুই মিছিল করা হবে। ১৭ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত ব্লকে বিক্ষোভ হবে। ২৩ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে জেলা শাসকের কাছে মানুষের দাবি নিয়ে গণডেপুটেশনের কর্মসূচি পালিত হবে।
এদিন সূর্য মিশ্র বলেন, করোনা মহামারী পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা এখনও অনিশ্চিত। এই অবস্থায় আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় বিশেষ করে গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহায্য করার জন্য পার্টি ও গণসংগঠনগুলিকে উদ্যোগ নিতে হবে।