E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৭ সংখ্যা / ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ৬ আশ্বিন, ১৪২৯

যৌবনের প্রাণময়তায় কল্লোলিত নগর কলকাতা

চাই ইনসাফ


কলকাতার ধর্মতলায় ইনসাফ সভার ঐতিহাসিক জমায়েত।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২০ সেপ্টেম্বর কলকাতার ধর্মতলায় এসএফআই-ডিওয়াইএফআই’র ডাকে ইনসাফ সভার ঐতিহাসিক জমায়েত প্রমাণ করল শহিদের অনন্ত জান। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপের ছাত্র-যুবমানসের প্রতিনিধিদের ফুঁসে ওঠা কূল ছাপানো ঢেউয়ের মতো মিছিল পুলিসের ঘেরাটোপ ভাসিয়ে দখল নিল ধর্মতলার। কাজের দাবি, শিক্ষার দাবি, শহিদের রক্ত পিপাসু হায়েনাদের শাস্তির দাবি আর পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই সভা হুঁশিয়ারি দিল। আর শাসকদের মনে করিয়ে দিল জরুরি কথা, জবাবদিহির সময় এসে গেছে। মনে করিয়ে দিল শহিদিবরণের মুহূর্ত থেকেই শুরু হয় শহিদিরাজ। তাঁদের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য।

এদিন মমতা ব্যানার্জির পুলিশ ধর্মতলার লেনিন মূর্তির পেছনে ওয়াই চ্যানেলের সংকীর্ণ পরিসরে সীমাবদ্ধ করতে চেয়েছিল ছাত্র-যুবদের লড়াইয়ের জেদকে। সভা শুরুর আগেই হালকা বৃষ্টি উপেক্ষা করে মঞ্চের সামনে এবং পাশে উত্তাপ বাড়ছিল স্লোগানে। সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া সভার প্রথমে ওই মঞ্চেই গণসঙ্গীত পরিবেশন করছিলেন শিল্পীরা। সভাস্থল ঘিরে বাড়ছিল ভিড়। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং কলকাতার মিছিল উত্তাল ঢেউয়ের মতো সমাবেশ স্থলে ইনসাফ চাইতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই লেনিন সরণি-জওহরলাল নেহরু রোড-সিধু কানু ডহর সংযোগস্থল সাদা পতাকা হাতে কালো চুলের মাথাদের দৃপ্ত পদচারণায় ঢাকা পড়ে যায়। ভিড়ের চাপে আর ক্রমাগত বাড়তে থাকা বহরে যুব নেতৃত্ব মানুষের দাবিতে সায় দিয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেন সভা মঞ্চ পরিবর্তনের। ম্যাটাডোর-এর উপর অস্থায়ী মঞ্চ দ্রুত তৈরি হয় ধর্মতলার চারমাথার মোড়ে। ভিক্টোরিয়া হাউস-এর প্রায় সামনে থেকে রানি রাসমণি রোডের ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত সভার পরিধি ছড়িয়ে পড়ে। ধর্মতলার চত্বরে তৃণমূল ছাড়া আর কেউ সভা করতে পারবে না - এই অলিখিত ফরমান কুটি কুটি করে ছিড়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেয় শৃঙ্খলাবদ্ধ ভিড়। সেই মেজাজের কাছে কার্যত আত্মসমর্পণ করেছে লাঠি-ঢাল নিয়ে প্ররোচনা দিতে অভ্যস্ত পুলিশ। আর ভিড়ের সঙ্গে তাল রাখতে গিয়ে প্রচার মাধ্যমের হুড়োহুড়ি করে অস্থায়ী মঞ্চের সামনে পৌঁছানোর তাগিদ এদিন পরোক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপি-তৃণমূলের ছদ্ম লড়াইয়ের বাইনারির মেয়াদ চেষ্টা করলেও আর বেশিদিন টিকিয়ে রাখা মুশকিল।

উত্তর ২৪ পরগনার ধর্মতলামুখী মিছিল।


ছাত্র-যুবদের ইনসাফ সভামুখী হাওড়ার মিছিল।


ইনসাফ ছিনিয়ে আনার ঐক্যবদ্ধ শপথ।


শানিত ব্যঙ্গে প্রতিবাদ ইনসাফ সভায়।

ইনসাফ সভার প্রস্তুতি হিসেবে গোটা রাজ্য জুড়ে ছাত্র-যুবদের ২১৮টি সভা হয়েছে। প্রতিটি জেলাতেই সভাগুলি উপচে পড়েছে প্রতিবাদী মানুষের ভিড়ে। ছাত্র-যুবরা তৃণমূলের যাবতীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কী বলছেন তা শুনতে এসেছেন তিতিবিরক্ত মানুষ। ছাত্র-যুব থেকে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সেই অংশগ্রহণেই ইঙ্গিত ছিল কলকাতার মূল সভায় জনপ্লাবনের। কিন্তু রাজ্যের নবান্ন অনুপ্রেরিত প্রশাসন এই দেওয়াল লিখন পড়তে পারেনি। তারা তাদের স্বৈরাচারী মনোভাব বজায় রেখে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অসহযোগিতা চালিয়ে গেছে। সংবিধান যেখানে মত প্রকাশের অধিকার এবং সভা সমাবেশ করার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে ঔপনিবেশিক মানসিকতা সর্বস্ব কলকাতা পুলিশ চোখ রাঙানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু সুবিধে হয়নি। তাই বেলা যত বেড়েছে কালো মেঘ সরে বৃষ্টি থেমে গিয়ে বেড়েছে সূর্যের উত্তাপ।

ইনসাফ সভায় এদিন সভাপতিত্ব করেন ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা। সমাবেশে এদিন এসেছিলেন শহিদ বরুণ বিশ্বাসের দিদি প্রমীলা রায় বিশ্বাস, এসেছিলেন ২০১৮ সালে কাকদ্বীপে খুন হওয়া পার্টিকর্মী উষা দাস এবং দেবু দাসের ছেলে দীপঙ্কর দাস, তৃণমূলের দলদাস পুলিশের হাতে ছাত্রনেতা আনিস খানের খুনের ন্যায্য বিচার চাইতে শুধুই আনিসের বাবা সালেম খান নন, মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে ইনসাফ সভায় এসেছিলেন তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আক্রমণের শিকার আনিসের ভাই সালমান খানও। এসেছিলেন আনিসের কাকা জালেম খান, আনিসের দাদা সাবির খান, ভাগনি মুসকান। ছাত্র-যুবদের সঙ্গে ইনসাফ চাইতে ধর্মতলায় এসেছিলেন শহিদ বিদ্যুৎ মণ্ডলের মা অমলা মণ্ডল প্রমুখ।

ধর্মতলা মুখী উত্তর ২৪ পরগনার মিছিল।

তৃণমূল বিজেপি’র বাইনারি ভাঙা স্লোগান এদিন শোনা গেছে সমাবেশে। যেখানে মানুষের চামড়া দিয়ে জুতো বানানোর সামন্ত মেজাজে হুমকি দেওয়া সৌগত রায়ের উদ্দেশে উচ্চারিত শ্লেষে ভরা স্লোগান, ‘তথাগতর ভাইটা/চোর চোর চোটটা’। স্লোগানের লক্ষ্য থেকে বরাবরের মতো তীক্ষ্ণ বিদ্রূপ থেকে নিস্তার পায়নি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আওয়াজ উঠেছে, ‘নবান্নের চোদ্দ তলা/চোরেদের পাঠশালা’। আওয়াজ উঠেছে, ‘চোর চোর চোর চোর চোর ধরো/ পিসি-ভাইপো দুটোকেই জেলে ভরো জেলে ভরো’ ইত্যাদি।

প্রবীণ যাঁরা এদিনের মিছিলে এসেছিলেন তাঁরা সংখ্যায় কম হলেও উপলব্ধি করেছেন বামপন্থীদের মুক্তি সংগ্রামের ব্যাটন হাতে নিয়ে আগামীর যে তরুণরা দৌড়াচ্ছেন তারা যথার্থই চে-ভগৎ সিংয়ের উত্তরাধিকারী। তাই এদিনের জমায়েত হয়ে উঠেছিল প্রকৃত অর্থেই এসএফআই-ডিওয়াইএফআই’র প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রজন্মের ঐক্যবদ্ধ শপথের সমাবেশ।

কারা এসেছিলেন এই ইনসাফের সমাবেশে? কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলি থেকে সংগঠিতভাবে আসার বরাবরের ধারা যেমন বজায় ছিল, তেমনি দূরবর্তী জেলা থেকে প্রবল বৃষ্টিকে তুচ্ছ করে ভোর বেলায় স্টেশনে পৌঁছে ট্রেন ধরে হাওড়ার মিছিলে শামিল হওয়ার তাগিদে সকালের জলখাবারটুকু না খেয়েও এসেছেন অনেকেই। পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর বা বর্ধমানের নবগ্রাম, বীরভূমের সাঁইথিয়া, মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা - শহিদের রক্তের দাগ ধরে পৌঁছে গিয়েছেন ধর্মতলায়। খোলা পতাকা হাতে বুক টান করেই এসেছেন ওরা। সেটা বলছিলেনও। কারণ লুকিয়ে পতাকা আনার আতঙ্কের দিন সংখ্যা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে জানালেন সেটাও। তারা শুনলেন আগামীর লড়াই আন্দোলনের দিকনির্দেশ।

সমাবেশে বক্তা মহম্মদ সেলিম।

এদিনের সমাবেশে ডিওয়াইএফআই’র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, এই সমাবেশ জানিয়ে দিচ্ছে বাংলার রাজনীতির বর্ণমালা পালটে গেছে। এখন নতুন বর্ণমালা অ-এ অনির্বাণ, আ-এ আনিস খান, আভাস রায়চৌধুরী। এখন আর অ-এ অভিষেক, আ-এ আদানি নয়। পুলিশ বলেছিল, ভিক্টোরিয়া হাউস-এর সামনে মিছিল মিটিং করা যাবে না। আজকের জমায়েত প্রমাণ করে দিচ্ছে ওই চত্বরটা ডাকাত রানির অধর্মতলা আর এই জমায়েত স্থল হলো ধর্মতলা। মুখ্যমন্ত্রী জিভ কেটে নেওয়ার কথা বলবেন, ভাইপো কপালে গুলি করতে বলবেন। আর আনিস খানের মতো প্রতিবাদীদের খুন করার পরে থানায় এফআইআর পর্যন্ত নেবে না। পুলিশ বামপন্থীদের সভা আটকাবে আর তৃণমূলের সভার জন্য রাস্তা আটকে মঞ্চ বেঁধে দেবে। এসব আর চলবে না। পুলিশকে আইন শিখিয়ে দিতে হবে।

সিপিআই(এম)’র ‘পাহারায় পাবলিক’র পরে এখন ‘নজরে পঞ্চায়েত’ কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগের পাহাড় জমা হচ্ছে জানিয়ে সেলিম বলেন, ইনসাফ আদায় করতে হয়। সব অত্যাচার আর লুটের হিসাব লিখে রাখা হচ্ছে, মেশিনে পিষে আখ থেকে রস নিংড়ে বের করার মতো নিংড়ে বের করা হবে। মহম্মদ সেলিম বলেন, তৃণমূলের ঘাড়ে ভর করে এরাজ্যে ঢুকেছে আরএসএস-বিজেপি। গোড়া থেকে ঘাস কেটে তৃণমূল এবং বিজেপি’র জঞ্জাল সাফ করে দিন। তবে মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়া যাবে।

শিক্ষকদের অবস্থান আন্দোলন সহ ইনসাফ আদায়ের আন্দোলনের জন্য সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, লুট জোচ্চুরি অব্যাহত রাখতে ওরা মানুষকে হিন্দু মুসলমানে ভাগ করার চেষ্টা করছে, সমুদ্রের জলরাশিকে কি আর ভাগ করে রাখা যায়? এই বাংলা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজদের জন্য নয়। এখন মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আরএসএস খারাপ নয়, মোদিকে তিনি সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। এদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে পারে কেবল লাল ঝান্ডাই।

বক্তব্য রাখছেন আভাস রায়চৌধুরী।

সভায় ডিওয়াইএফঅাই’র প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক। আভাস রায়চৌধুরি বলেন, বর্ধমান সেন্ট্রাল জেল আর পুলিশের দয়ায় আজ আমি আপনাদের মাঝখানে। আমি আপনাদের আগামীর লড়াইয়ে সবাইকে তৈরি থাকতে বলছি। ছাত্র-যুবদের বলছি তোমরা বলেছিলে ধর্মতলায় সভা করবে সেই কথা রেখেছো তাই তোমাদের কুর্নিশ। আজ পশ্চিমবাংলায় কেউ ভালো নেই। খেতমজুরের কাজ নেই, ১০০ দিনের কাজের মজুরি নেই, বেকারের কাজ নেই, শিক্ষার মাজা ভেঙে দিয়েছে এই সরকার, সরকারি কর্মীরা বঞ্চিত। গোটা রাজ্য জুড়ে এখন পুকুর নয়, সাগর চুরি হচ্ছে। ৩১ আগস্ট বর্ধমানের আইন অমান্য আন্দোলনের ওপর পুলিশ বিনা প্ররোচনায় ঝাপিয়ে পড়েছিল হিংস্রভাবে। এটা পুলিশের নতুন আক্রমণাত্মক মডিউল। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এর মোকাবিলা করতে হবে এ রাজ্যের তৃণমূল এবং বিজেপি এবং তাদের মাসতুতো পিসতুতো ভাই-বোন যারা আছেন তাদের বলছি, বাংলার রাজনীতির দেওয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করে দিচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে এই ছাত্র যুবরা অগ্রণী ভূমিকা নেবে।

নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, যখন দেশের শ্রমজীবী মানুষের উপর সবরকম আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে, বেকারি বাড়ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে ক্ষুধার তালিকায় আমরা গোটা পৃথিবীর মধ্যে নিচের দিকে তখন চিতাবাঘ নিয়ে আসার তামাশা করা হচ্ছে। ’১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা নিয়ে আসবে। একটা টাকাও আসেনি। আর নোটবন্দি করে মানুষের ব্যবসা জীবন-জীবিকায় নষ্ট করেছেন। আপনার যদি ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতি হয়ে থাকে তাহলে আফ্রিকা থেকে চিতাবাঘ না এনে আমেরিকা-লন্ডন থেকে নিরব মোদি বিজয় মালিয়া যারা দেশের টাকা লুট করে পালিয়ে গেছে তাদের ধরে আনুন।

ভরা জনস্রোতে আনিস খানের বাবা সালেম খান যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন, ঠিক তখনই জনসমুদ্র গর্জে ওঠে ‘‘শত শহিদের রক্ত, হবে নাকো ব্যর্থ’’। মঞ্চে দাঁড়িয়ে সালেম খান বলেন, ‘‘আমি এসেছি আপনাদের সঙ্গে ইনসাফ চাইতে। এই সরকার ইনসাফ দেবে বিশ্বাস করি না। আপনারা জোর করে ইনসাফ আদায় করে ছাড়বেন, এটাই আমার বিশ্বাস।’’ সালেম খান বলেন, ‘‘আপনাদের জন্য আমার আশীর্বাদ রইল। আমার একটা আনিস চলে গেছে, কিন্তু আজ আমার হাজার-লাখো আনিস আছে। যে পুলিশ আনিসকে খুন করেছে তারাই আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর সিট কী করছে? আমার ভাইপো এই খুনের প্রধান সাক্ষী, তাকেও খুন করার চেষ্টা করেছে। আমার পরিবারে আর একজন আসছিল, তাকেও পৃথিবীর আলো দেখতে দেয়নি। এই সরকারের কাছ থেকে আর কিছু আশা করার নেই।’’

ডিওয়াইএফআই’র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য বলেন, ছাত্র-যুবদের জেদের শক্তি দেখে নিক নবান্নের চোদ্দতলা। আনিস ওদের জন্য কবরে শুয়ে আছে, কিন্তু লক্ষ আনিস আজ রাস্তায় নেমেছে।

ইনসাফ সভায় বলছেন মীনাক্ষী মুখার্জি।

সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, আমাদের লড়াই দীর্ঘ লড়াই। সবাই মিলে লড়তে হবে। লড়াই করে আজ ধর্মতলার দখল নিয়েছি আমরা, কাল অন্য কিছুর দখল নিয়ে নিতে পারি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে। তৃণমূলের যে নেতারা সমালোচকদের চামড়া দিয়ে জুতো বানানোর কথা বলেছিলেন তাঁদের বলছি, আসুন এই সমাবেশে, এখানে এসে চামড়া পছন্দ করে যান। ‘যো হিটলার কি চাল চালেগা, ও হিটলার কি মওত মরেগা’। পুলিশ প্রশাসনে যাঁরা চাকরি করেন তাঁরা ঠিক করে ফেলুন, তৃণমূলের চোর নেতাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে জনগণের কাছে আপনারা শত্রু হবেন কি না। মাইনেটা আপনাদের জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় হয়, দিদিমণির পয়সায় নয়।

ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, দিদিমণির পুলিশকে বলেছিলাম ধর্মতলাতেই সভা করবো, পিছন থেকে লাঠি গুলি না মেরে পারলে সামনাসামনি এসে আটকান। তৃণমূলের মতোই ওরাও আজ লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৈরি হোন, বুথে বুথে প্রতিরোধ করতে হবে।

সমাবেশে এসএফআই’র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ছাত্রদের শিক্ষান্তে কাজ দেওয়ার বদলে মুখ্যমন্ত্রী চপ ভাজতে বলছেন! বাংলার ছাত্র-যুবরা এই বিদ্রুপ মেনে নেবে না। এসএফআই’র রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ভাইপো আর দলের নেতামন্ত্রীদের যদি মুখ্যমন্ত্রী এভাবে চপ ভাজা, চা বিক্রি শেখাতেন তাহলে তাদের সিবিআই-ইডি’র জেরায় পড়তে হতো না। তৃণমূল আর বিজেপি মিলে শিক্ষার বারোটা বাজিয়েছে, ড্রপ আউট বাড়ছে। শিক্ষাকে বাঁচাতে হলে দুই সরকারকে ড্রপ আউট করাতে হবে। চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্বাচন হোক, এখনই এসএফআই ছেয়ে যাবে। এসএফআই’র রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান বলেন, বাংলার ছাত্র-যুবদের ভয় ভেঙে গেছে, আমরা তৃণমূলকে একদিনও শান্তিতে থাকতে দেব না। পুলিশ যদি আনিস হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা না করে তাহলে খোলা আকাশের নিচে জনতা বিচার করবে তাদের।