৬০ বর্ষ ৭ সংখ্যা / ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ৬ আশ্বিন, ১৪২৯
গোদারঃ এক পথিকৃৎ
সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
তখন মার্কিন বিমানবহর ভিয়েতনামের ওপর কার্পেট-বম্বিং চালাচ্ছে, ছোট্ট দেশের অসীম সাহসী মানুষেরা নিজেদের রক্ত দিয়ে নতুন ইতিহাস লিখছেন।হাজার চোখরাঙানি অস্বীকার করে আমেরিকার বুকে বহু মানুষ মার্কিন আগ্রাসনের নিন্দায় মুখর। হলিউড ছবির মহাতারকা জেন ফন্ডা ১৯৭২ সালে তাঁর কেরিয়ারকে বাজি রেখে চলে এলেন হ্যানয়ে। এর আগেও ভিয়েতনাম সহ নানা ইস্যুতে তিনি নিজ দেশের সরকারের সমালোচনা করতে পিছপা হননি। হ্যানয়তে মার্কিন আগ্রাসনের ভয়াবহতার প্রমাণ দেখার ফাঁকে দেখা হয়ে গেল কমিউনিস্ট যোদ্ধাদের সাথে। চিত্র-সাংবাদিক জোসেফ ক্রাফটের তোলা সেই মুহূর্তের ছবি ছাপা হলো ‘লাএক্সপ্রেস’ কাগজে ওই বছরের আগস্টেই। আর সেই স্থিরচিত্রের ওপর ক্যামেরা রেখে শুরু হল জ্যাঁ-লুক গোদার আর জ্যাঁ পিয়ের গোরিনের কথোপকথন। নির্মিত হলো বিশ্বচলচ্চিত্রের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি ‘লেটার টু জেন-অ্যান ইনভেস্টিগেশন অ্যাবাউট আ স্টিল’ (১৯৭২)। ৫২ মিনিটের এই ছবিতে সেই স্থিরচিত্র নানাভাবে দেখিয়ে পরিচালকদ্বয় নানান প্রশ্ন তোলেন, সেই সূত্রে উদ্ধৃতির মতো আসে জন ফোর্ড পরিচালিত ‘গ্রাপস্ অফ ওয়ার্থ’-এর (১৯৪০) মতো ছবি যাতে অভিনয় করেছিলেন জেন ফন্ডার বাবা হেনরি ফন্ডা।অরসন ওয়েলসের ‘ম্যাগনিফিসেন্ট এমবারসন’ (১৯৪২) বা স্বয়ং জেনের ‘কুলটে’ (১৯৭১)। জেনের ছবির বিনির্মাণের সূত্রে হলিউডের তারকাপ্রথা, আইকন সৃষ্টির উদ্যোগের সমালোচনার পাশাপাশি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন ‘বিপ্লবে বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা কী?’ বা একজন শিল্পীর শ্রেণিসংগ্রামে কী দায়িত্ব তা নিয়ে। পর্দায় রাজনৈতিক প্রবন্ধ রচনার সার্থক প্রয়াস হয়ে ওঠে ‘লেটার টু জেন’। ক্যামেরার পিছনে সক্রিয় রাজনৈতিক দায় পালনের লক্ষ্যেই তাঁর গোরিনের সঙ্গে জোটবাঁধা। উদ্যোগের নাম ‘জিগা ভের্তভ গ্রুপ’। সেই সোভিয়েত চলচ্চিত্রকার জিগা ভের্তভের নামে যার কাছে কাহিনিচিত্র বন্ধ্যা, কাহিনিচিত্রের বদলে নতুন সিনেমা জন্ম নেবে যা মূলত ক্যামেরাবন্দি তথ্য। গোদার বিশ্বাস করতেন ‘প্রতিটি চলচ্চিত্র যে সমাজে সেটি তৈরি হচ্ছে তারই ফল। তাই এখন আমেরিকান ছবিগুলি এত খারাপ। এগুলি অস্বাস্থ্যকর সমাজের প্রতিফলন’। তাই নতুন রাজনৈতিক সিনেমার জন্য চাই নতুন ভিত্তি। এই পর্যায়ই তা, যাকে অনেকে গোদারের সৃজনশীলতার ‘মাওবাদী পর্ব’ বলতে ভালবাসেন, মূলত সেই ১৯৬৮ থেকে ১৯৭২-এর মধ্যে ‘প্রাভদা’ (১৯৬৯), ‘ভ্লাদিমির অ্যান্ড রোসা’ (১৯৭১) সহ বেশকিছু ছবিতে সেই অনন্য সক্রিয় রাজনীতিকের দেখা মেলে।
একজন তথাকথিত রাজনৈতিক চলচ্চিত্র পরিচালক রূপে গোদারের উত্থান নিশ্চয় ১৯৬০-এর দশকের শেষলগ্নে নয়, বলা ভালো হাতে কলমে পরিচালনা শুরুর অনেক আগে থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সিনে ক্লাবে যোগদান ও এই মাধ্যমের সম্পর্কে উৎসাহ বৃদ্ধি। ১৯৫০-১৯৫২ সালের মধ্যে ‘গেজেট ডু সিনেমা’ এবং ‘কাহিয়ে দ্যু সিনেমা’ পত্রিকায় সিনেমা সম্পর্কিত প্রবন্ধ লেখেন। গোদারের যৌবনে ফরাসি নবতরঙ্গ সিনেমা যে উচ্ছ্বাস ও ভাবাবেগ সৃষ্টি করেছিল, ‘কাহিয়ে দ্যু সিনেমা’ পত্রিকার অন্যতম গোষ্ঠীসদস্য গোদার তার বাইরে ছিলেন না। সিনেমা সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি ইতিমধ্যেই কবিতা, গদ্য, প্রবন্ধ, দার্শনিক তত্ত্বের অবতারণা করেছিলেন। তৎকালীন ফরাসি চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাঁর ঘোরতর আপত্তি ছিল। ‘কাহিয়ে দ্যু সিনেমা’ গোষ্ঠীর অন্য সব সদস্যদের মতো তিনিও বিকল্প সিনেমার কথা ভাবতেন। সুইৎজারল্যান্ডে মায়ের কাছে গিয়ে গ্রান্ডে ডিক্সেন্স বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। এই বিশাল বাঁধ নির্মাণ কর্মযজ্ঞ নিয়ে গোদার তাঁর প্রথম স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘অপারেশন বেটন’ (১৯৫৪) প্রস্তত করেন। তুলনামুলকভাবে ফরাসি নবতরঙ্গের অন্য বন্ধুদের চেয়ে তিনি পরিচালনায় আসেন কিছুটা দেরিতে। ১৯৫৯ সালে তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ‘ব্রেথলেস’ পরিচালনা করতে এসে তাঁর অবস্থানের কথা দুনিয়ার সামনে হাজির করলেন।
‘ব্রেথলেস’ ছবিটি আপাতভাবে থ্রিলার। নৈরাজ্যবাদী, গাড়ি চোর মিচেল পার্কার তাকে অনুসরণ করতে আসা একজন পুলিশকে খুন করে বসে। প্যারিসে এসে তার প্রাক্তন বান্ধবী, আমেরিকান তরুণী প্যাট্রিসিয়ার সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। মিচেল তাকে রাজি করিয়ে ফেলে তার সঙ্গে ইতালিতে পালাতে। ইতিমধ্যে পুলিশ মিচেলকে চিহ্নিত করে ফেলে। প্যাট্রিসিয়া তাকে পরিত্যাগ করতে চায়, মিচেলকে ধরতে পুলিশও তাকে ব্যবহার করে। পুলিশের গুলিতে মিচেলের মৃত্যু হয়, মারা যাওয়ার সময় মিচেলকে দেখে মনে হয় সে যেন বাস্তবে মারা যাচ্ছে না, সিনেমার চরিত্ররূপে মারা যাচ্ছে। এখানে গোদার যেন তাঁর নিজস্ব ‘ওয়েস্টার্ন’ নির্মাণের কথা বলেন। মিচেল যেন ধার করা সময়ে বাঁচে, সে প্যারিসে আসে একটা চেক ভাঙাতে। যা আর্থিক সংস্থায় আটকে থাকা টাকা আর মিচেলের চুরি করা টাকার পরস্পর বিরোধী অবস্থান, সামাজিক বন্ধন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মধ্যেকার বিরোধকেই যেন সূচিত করে। মিচেলের হলিউড তারকা হামফ্রে বোগার্টের প্রতি আসক্তি, ছবির সূচনায় মনোগ্রাম কোম্পানির প্রতি ছবি উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে গোদার সিনেমাকেই যেন প্রশ্নের সামনে দাঁড় করান। মনোগ্রাম একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা যারা মূলত ওয়েস্টার্ন ঘরানার ছবি বা অন্য বি-মুভি প্রযোজনা করত। ‘ব্রেথলেস’-এ গোদার চিত্রনাট্যের গড়নে, বাস্তবিক লোকেশনের ব্যবহারে, ক্যামেরার ব্যতিক্রমী চলনে, বিকল্প সম্পাদনার রীতিতে এমনকী পাত্রপাত্রীদের বিচিত্র আচরণের মধ্যমে সিনেমার প্রথাগত গল্পবলার শৈলীকে চরম আঘাত হানেন। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘সিনেমা হলো পুঁজিবাদের বিশুদ্ধ রূপ।... একমাত্র উপায় হলো আমেরিকান সিনেমাকে পশ্চাদপ্রদর্শন’। ছবিটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিচালক গোদারের সিনেমা শিল্পে উজ্জ্বল উপস্থিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
গোদারের পরের ছবি ‘দ্য লিটল্ সোলজার’ (১৯৬০) ফরাসি সরকার তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে রাখে। ছবিতে ফরাসি উপনিবেশ আলজিরিয়ার মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে মতামত প্রকাশই এর কারণ। ছবিটি ব্রেথলেসের মতোই একটা গ্যাংস্টার ছবির ধরনে শুরু হয়, কিন্তু কার্যত বিশ্বাসঘাতকতার চিত্রে রূপান্তরিত হয়। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র ব্রুনো একজন স্বক্রিয় দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক কর্মী, ১৯৫৮ সালে আলজিরিয়ার মুক্তিসংগ্রাম চলাকালীন সে সুইৎজারল্যান্ডে আত্মগোপন করেছিল। সেখানে সে বামপন্থী কর্মী ভেরনিকার প্রেমে পরে। আলজিরিয়ার স্বাধীনতার লড়াইকে গোদার দু-তরফের পৃথক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখান। গোদারের ‘দ্য সোলজার্স/দ্য রাইফেলম্যান’ (১৯৬৩) ছবিটি যেন যুদ্ধ সম্পর্কিত গাথা। এই ছবিতে পরিচালক যুদ্ধের প্রকৃতি সম্পর্কে এমন লোকগাথার জন্ম দিন যা একাধারে ল্যুমিয়ের ভাইদের ছবির প্যারোডি আকারে তাঁদের ছবির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। তাঁর ছবিতে প্রথমবার এখানে আখ্যানের সূত্র ছিন্ন হতে হতে প্রায় লুপ্ত। বিষয়বস্তু থেকে বিযুক্ত হওয়ার ব্রেখটীয় শৈলী তাঁর করায়ত্ত। এটি তাঁর প্রথম ছবি যা একটি সমালোচনামূলক প্রবন্ধের আকার পেয়েছে। পরবর্তীকালে গোদার ক্রমশ তাঁর চলচ্চিত্রকে নিবন্ধের আকার দিয়েছেন। গোদারের ছবিতে সাম্প্রতিক সময় সবসময় ক্রিয়াশীল। এমনকী আশির দশকে ‘কিং লিয়ার’ (১৯৮৭) বা আরও পরে ‘ফোর এভার মোৎর্জাট’ (১৯৯৬), ‘সিনেমা সোশালিজম’ (২০১১)-এও সমাজ, রাজনীতি, জীবন সম্পর্কে তিনি একইরকম বিশ্লেষণমুখী ও সোচ্চার।
জ্যাঁ-লুক গোদার সিনেমায় প্রত্যক্ষ রাজনীতির প্রসঙ্গ আনলেন বা রাজনৈতিক, সামাজিক মতামত প্রকাশের লক্ষ্যে ছবির বিষয়বস্তু ও আঙ্গিকের রদবদল ঘটালেন এমন ভাবনা কার্যত তাঁর অবমূল্যায়ন। গোদার ছবি করতে আসার অনেক আগেই চলচ্চিত্র দর্শক জার্মান প্রকাশবাদ, সোভিয়েত মন্তাজ, ইতালীয় নববাস্তবতার দেখা পেয়েছে। দেখেছে চ্যাপলিন, জাঁ ভিগো, রেনোয়ার মতো স্রষ্টাদের। তাসত্ত্বেও সিনেমার ইতিহাসে গোদারের বিশিষ্টতা অন্যত্র। সত্যজিৎ রায় তার বিখ্যাত ‘অ্যান ইন্ডিয়ান নিউ ওয়েব?’ প্রবন্ধে বলছেন ‘চলচ্চিত্রের ইতিহাসে গোদার প্রথম ব্যক্তি যিনি যাকে প্লট লাইন বলে তা সম্পূর্ণত পরিত্যাগ করলেন। সঠিকভাবে বললে গোদার চলচ্চিত্রের এক সম্পূর্ণ নতুন ধরন (Genre)-এর সৃষ্টি করলেন।... এটা স্মরণে রাখা জরুরি যে গোদারের এই প্রথা বর্জন একটি চমকসৃষ্টির জন্য বা আবেগতাড়িত হয়ে নয়, বরং চলচ্চিত্র ভাষার যথার্থ ও অর্থপূর্ণ সম্প্রসারণ’। ওই প্রবন্ধেই সত্যজিৎ ‘ম্যাসকুলাইন-ফেমিনাইন’ (১৯৬৬)-এর শুরুর অংশের উদাহরণ সহযোগে আলোচনা করেছেন। যেখানে রেস্তোরাঁতে এক যুবক ও যুবতী অন্তত কুড়ি ফুট দূরত্বে আলাদা টেবিলে বসে অনেকক্ষণ কথা বলে, ক্যামেরার অবস্থান তাদের থেকে দূরে, বাইরে থেকে ব্যস্ত দিনের ট্র্যাফিকের শব্দ ভেসে আসে তাই তাদের কথা সিনেমার দর্শকের কানে পৌঁছায় না। তারপর ঘটে এক হত্যার দৃশ্য। সত্যজিৎ বলছেন, সাবেক সিনেমার দর্শকের কাছে এই দৃশ্য অর্থহীন ও অসংগত মনে হলেও এই দৃশ্য আরও বিশ্বাসযোগ্যভাবে পরিবেশিত এবং এটি জীবন ও সময় সর্ম্পকে গ্রহণযোগ্য মন্তব্যও করে। এইভাবে দেখলে বলাই যায়, সত্যজিৎ রায় বস্তুত গোদারকে অকাহিনিমূলক চিত্রভাষার জনক বলে চিহ্নিত করেছেন।
এই মূল্যায়ন আধুনিক সিনেমার বহু গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বও করেছেন। রোবিন উড মন্তব্য করেছিলেন, ‘গোদারের গুরুত্ব এখানেই যে তিনি মূলধারার চলচ্চিত্রের বিরোধিতায় একটি বিশ্বাসযোগ্য, আধুনিকতাবাদী চলচ্চিত্র সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তাঁর সৃষ্টির জন্যই আমাদের শতাব্দীতে চলচ্চিত্র নান্দনিক বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে’। সময় ও প্রযুক্তি পরিবর্তনের সাথে নিজের মাধ্যমে বদল এনেছেন, ছোটোখাটো চেহারার মৃদুভাষী মানুষটি পাবলো পিকাসোর মতোই নিজেকে প্রকাশ করেন তাঁর কাজের সূত্রে। আর তাঁর কাজের উৎস ও বিষয় তাঁর নিজস্ব পৃথিবী। গোদার একবার বলেন ‘সিনেমা সম্পর্কে ত্রুফো বলেছিল মেলিয়ে হলো দৃষ্টি আকর্ষক আর লুমিয়্যের হলো গবেষণা। আমি যদি আজ নিজেকে বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব আমি সব সময় চেয়েছি আসলে দৃষ্টি আকর্ষণীয় ঢঙে গবেষণা করতে’। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পাঠ্য বিষয় ছিল জাতিতত্ত্ব (Ethnology)। সাহিত্য, শিল্পকলা, দর্শন, রাজনীতি, সমাজনীতির একনিষ্ঠ পাঠক, সামাজিক পরিবর্তনের ধারণায় আস্থাশীল গোদার এক বিকল্প চলচ্চিত্র ভাষার জনক যা দুনিয়াজুড়ে চলচ্চিত্রকারদের প্রাণিত করেছে। তিনি যখন বলেন ‘তুমি যদি একটা তথ্যচিত্র বানাতে যাও তুমি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাহিনির কাছে যাবে এবং তুমি যদি তোমার কাহিনিচিত্রকে পুষ্ট করতে চাও তোমায় বাস্তবের কাছে ফিরে আসতে হবে’। তথ্যচিত্র কাহিনিচিত্রের সীমারেখা পেরিয়ে তাঁর ছবি। সিনেমার ইতিহাস যেমন ডেভিড রেক গ্রিফিথকে আখ্যানধর্মী চলচ্চিত্রের জনকরূপে চিহ্নিত করে, সের্গেই আইজেন্সটাইনকে এক বিকল্প চলচ্চিত্র ভাবনার পথিকৃৎ রূপে তেমনি জ্যাঁ-লুক গোদার চলচ্চিত্রকে এক পৃথক প্রকাশভঙ্গি দিয়েছেন, দিয়েছেন সম্পূর্ণ এক নতুন সিনেমা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যাঁরা সিনেমাকে দিনবদলের, সমাজ-পরিবর্তনের, প্রতিবাদের হাতিয়ার বলে মনে করেন তাঁরা গোদার সৃষ্ট পথকে নিজের রাস্তা বলে গ্রহণ করতে পিছপা হন না।
(লেখকঃ অধ্যাপক, ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়)