৫৯ বর্ষ ১৯ সংখ্যা / ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ / ৮ পৌষ, ১৪২৮
কলঙ্কিত দিন ১৯ ডিসেম্বর
সারাদিন কলকাতা দেখল ভোট লুট ও সন্ত্রাসের নির্লজ্জ বেহায়াপনা
তৃণমূলের ভোট লুটে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে বাঘাযতীনে সিপিআই(এম) প্রার্থীদের পথ অবরোধ।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কলকাতার নির্বাচনী ইতিহাসে ১৯ ডিসেম্বর চিহ্নিত হয়ে গেল কালো দিন হিসেবে। পুর নির্বাচনে ভোট লুটের যাবতীয় কায়দা প্রয়োগ করে রাজ্যে কোমায় থাকা গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করার প্রক্রিয়া এদিন সম্পূর্ণ করল তৃণমূল। পুর বোর্ড দখল করতে হিংসা আর নৃশংসতার ক্ষেত্রে নিজেদের সমস্ত কুনজিরকে টপকে গোটা দিন জুড়ে দেশে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতম ঐতিহ্যবাহী শহরের যাবতীয় গরিমাকে দলে-পিষে দিল মমতা ব্যানার্জির দল। না, এদিন পুলিশ নিস্ক্রিয় ছিল না। হাইকোর্টের যাবতীয় নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতার পুলিশ দলদাসের ভুমিকায়ও নয়, এদিন তাদের অনেকেই তৃণমূল কর্মী হিসেবে বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়ে সেরেছে তাদের প্রশাসনিক দায়। তবে হয়েছে পাল্টা প্রতিরোধও। আগের দিন রাতে টিএমসি’র গুণ্ডাদের দেওয়া খুনের হুমকি সত্বেও শুধু বামপন্থীরাই নন, রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কহীন সাধারণ মানুষও এদিন উত্তর-দক্ষিণ-মধ্য-পূর্ব-পশ্চিম - যেখানে যেমন পেরেছেন ভোট জালিয়াতি রুখতে কলকাতা জুড়ে নেমেছেন পথে, প্রয়োগ করেছেন ভোটাধিকার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূলের জড়ো করা সমাজবিরোধীদের সঙ্গে অসম লড়াইয়ে বামফ্রন্ট কর্মীরা রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। আর মমতাপোষিত সংবাদমাধ্যম নির্লজ্জ চাটুকারিতার লালাসিক্ত বাচন-বয়ানে জানিয়েছে ভোট প্রায় শান্তিপূর্ণ। দিনভর অশান্তি সত্ত্বেও সবচেয়ে হাস্যকর ভূমিকায় নিজেদের নামিয়ে এনে তথ্য প্রকাশ করে কমিশন দাবি করেছে, কিছু বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া কলকাতা পৌরসভার ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবে। আর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে কমিশনের বয়ানকে ব্যঙ্গ করে লেখা হয়েছে, ‘বিক্ষিপ্ত শান্তির কয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সম্পূর্ণ সন্ত্রাসপূর্ণ হয়েছে’!
ভোটগ্রহণের আগের দিন, অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর রাত্রি থেকেই কলকাতার এলাকায় এলাকায় হুমকি দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল বেছে বেছে বামপন্থী সমর্থক এবং তাদের পরিবারগুলিকে। বলা হয়েছিল ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে না। গেলে ফল বিষময় হবে। আর যে তৃণমূলীরা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারেনা তারা হুমকি হামলার আগাম ঘোষণাগুলি মিলিয়ে দিয়েছিল ১৯ তারিখ সকাল থেকেই। উত্তর কলকাতাই হোক বা কসবা বা যাদবপুর বা বেলেঘাটা বা খিদিরপুর সর্বত্রই হুমকির ভাষা বয়ান একই।
উত্তর কলকাতার বিকে পাল এভিনিউ সংলগ্ন কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট প্রার্থী অজিত চৌধুরী এবং তাঁর পরিবারকে ভোট দেওয়ার থেকে বিরত রাখতে তাঁর বাড়ির দরজা আটকে তৃণমূলের বুথক্যাম্প করা হয়েছিল। তার ৮০ বছর বয়সি কাকা রথীন্দ্রনাথ চৌধুরীকেও বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। ভোট দিতে যেতে পারেননি তিনি। অজিত চৌধুরী সহ বামপন্থী সহ সাধারণ বহু পরিবারের অনেক সদস্যকে ভোট দিতে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে ওই এলাকায়। এদিন বাগবাজার হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোটারদের বুথ স্লিপ না দেখে বুথে ঢোকানোর প্রতিবাদ করায় সিপিআই(এম) নেত্রী পেশায় শিক্ষক সোমা গুপ্তর শাড়ি খুলে দেয় তৃণমূলী গুণ্ডারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে ওই এলাকা থেকে সরানো যায় নি, বন্ধ করা যায় নি তাঁর প্রতিবাদ।
উত্তর কলকাতার ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ড সহ শ্যামপুকুর এলাকার বহু মানুষ রাস্তা থেকে ফিরে যান তৃণমূলীদের দৌরাত্ম্যে। পুলিশকে ফোন করলে বা নির্বাচন কমিশনকে জানালেও কোনো ফল হয়নি। দিনভর এই পরিস্থিতি চলার পরই বামকর্মী সমর্থকরা বড়তলা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান।
আবার বেলেঘাটার বাসিন্দা বয়সে প্রবীণ সুভাষ দাস তিনি বলেছেন, এত বছর ধরে ভোট দিচ্ছি, কিন্তু আজ যা ঘটলো কোনদিন হয়নি তা। বুথে গিয়ে দেখি আমার ভোট পড়ে গেছে। শুধু সুভাষ দাসই নন, ওই এলাকার বহু মানুষের অভিজ্ঞতা একই রকম।
কসবার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মহিলা আন্দোলনের নেত্রী দীপু দাসের পরিবারের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই ঘটনা। তাঁর পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারেননি কারণ আগেই তাঁদের ভোট পড়ে গিয়েছিল।
৬৭ নম্বর এবং কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার তৃণমূল ভোট লুটের ক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিল কতটা। কোনো সমালোচনা বা নিন্দার ধার ধারেনি তারা। তাই বেছে বেছে প্রার্থীদের পরিবারগুলিকে টার্গেট করেছিল আতঙ্ক ছড়াতে।
ভাঙড়, ডায়মন্ডহারবার এবং গঙ্গা পেরিয়ে হাওড়া, হুগলি থেকে এসেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনী। তাদের যা খুশি করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকেও। তারা এই বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করা তো দূরের কথা উল্টে সহায়তা করে বুথ কেন্দ্রের দরজা খুলে দিয়ে তাদের অভ্যর্থনা করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। বহু মৃত মানুষের ভোট এদিন পড়েছে। এভাবেই এদিন কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৪ শতাংশ।
গোটা কলকাতার মধ্যে কসবা বা যাদবপুরের ওয়ার্ডগুলিতে বিধানসভার নিরিখে এগিয়ে থাকলেও বামপন্থী কাউন্সিলররা যে যথেষ্ট এগিয়ে আছেন তা বুঝেই সেখানে বুথ পিছু দেড়শ বা দু’শ জনে ভাগ হয়ে মমতা ব্যানার্জির দলবল চড়াও হয়। না, সেখানে স্থানীয় তৃণমূলীদের উপর কোনো ভরসা ছিল না অভিষেক ব্যানার্জিদের। সশস্ত্র এই দুষ্কৃতীরা কোনোকিছুর পরোয়া না করেই গণতন্ত্রের সমস্ত লক্ষণ মুছে ফেলতে তৎপর ছিল এদিন।
যাদবপুরের ১০১,১০২, ১০৯, এবং ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের শাসকের দুর্বৃত্তরা সকাল থেকেই দাপিয়ে বেড়ায়। পোলিং এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি বুথের মধ্যে শ্লীলতাহানি করা হয় মহিলা পোলিং এজেন্টদের। একাধিক বুথে ইভিএম মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে ভোটারকে কোথায় ভোট দিতে হবে তাও বলে দিতে দেখা যায় তৃণমূলের পোলিং এজেন্টদের। অধিকাংশ জায়গাতেই বিরোধীদের এজেন্টকে ভোট শুরু হওয়ার আগেই মেরে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামগ্রিকভাবে ভোট চলাকালীন কয়েক হাজার বুথকে বিরোধীশূন্য করা হয়েছে। বিরোধীদের এই হেনস্তা দেখে বহু সাধারণ ভোটার সারাদিন আর বুথ মুখো হননি। বিভিন্ন জায়গায় জটলায় দাঁড়িয়ে তারা নিন্দা করেছেন প্রশাসনের।
টালিগঞ্জে একের পর এক ওয়ার্ড তৃণমূলের সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায় সকাল থেকেই। ১০০, ৯৮, ৯৭, ৯৫, ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুথ খোলার আগেই মধ্যরাতে আশেপাশে জড়ো হওয়া দুষ্কৃতীরা হাজির হয়ে সকালবেলায় পোলিং এজেন্টদের তাড়িয়ে দেয়। তাদের ফাইল কেড়ে নেয়। পরে এজেন্টরা বুথে গেলেও তাদের অস্ত্র দেখিয়ে বার করে দেওয়া হয়।
৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা দখল করে নেয় খানপুর হাই স্কুলের ২৮ থেকে ৩৭ নম্বর পর্যন্ত সবকটি বুথ।
৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২৯টি বুথের মধ্যে ১৪টি বুথ থেকে বিরোধী এজেন্টদের হটিয়ে দেওয়া হয় বেলা গড়াতে না গড়াতেই।
এইভাবে বেলা একটার কিছুক্ষণ পর থেকেই গোটা কলকাতার বুথগুলি দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যায়। যাদবপুরের বেশকিছু ওয়ার্ডে সকাল থেকেই ছাপ্পা ভোট চলে। ফল বের হলে দেখা যায় বহু বুথে সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্ট প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কমবেশি দশের নিচে।
ভোটের নামে প্রহসনের প্রতিবাদে যাদবপুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বামফ্রন্ট প্রার্থী এবং নেতাকর্মীরা বাঘাযতীন মোড় অবরোধ করে অবস্থান করেছেন। বাঘাযতীন মোড়ের অবরোধে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী। শাসকের এই ভোট লুটকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, তৃণমূল ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে। জেলাশাসকের কাছে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই ওয়ার্ডগুলিতে আমাদের পক্ষ থেকে পুনর্নির্বাচনের দাবি করছি।
রাজ্যের বিধানসভার হিসেবে বিরোধী দল বিজেপি-কে এইসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।
ভোটের দিন তাণ্ডবের সাক্ষী থেকেছে বেহালা ১২৭ এবং ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ। তাঁরা দেখেছেন সকাল থেকেই সেখানে দাপিয়ে বেড়িয়েছে বহিরাগত বাইক বাহিনী। এখানে ভোটার না হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জিকে বাহিনী নিয়ে টহল দিতে দেখা যায়। নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ করেও তাঁর প্রতিকার হয় নি। ওই এলাকার কাকলি স্কুলের দু’টি বুথ, বাগপোতা প্রাইমারি স্কুলের দু’টি বুথ, সরসুনা গার্লস হাইস্কুলের পাঁচটি, সরশুনা প্রাইমারি স্কুলের দু’টি বুথ এবং শিবরামপুরের একটি বুথ দখল করে নেয় তৃণমূল। বুথের মধ্যে কর্তব্যরত নির্বাচনী আধিকারিককে শাসকদলের বাহিনীর হয়ে কাজ করতে দেখা যায়। ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এই প্রথম তাদের নির্বাচন কেন্দ্রে বহিরাগতদের দাপাদাপি প্রত্যক্ষ করলেন। এই ওয়ার্ডের শ্যামসুন্দর পল্লী রাধাকৃষ্ণ এবং গঙ্গারামপুর এলাকার ৫, ৬, ৮, ৩৩, ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বেহালার পূর্ব বিধানসভার বুথগুলিতে সারাদিনই চোরাগোপ্তা ছাপ্পা ভোট পড়েছে শাসকদলের তরফে।
পূর্ব কলকাতার বেলেঘাটার এন্টালিতে তপসিয়া, তিলজলার বিস্তীর্ণ এলাকায় তৃণমূল ভোট লুট করেছে। বেশিরভাগ বুথে বামপন্থী পোলিং এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি। বাধা হুমকি উপেক্ষা করে বসে থাকা বাম এজেন্টদের অকথ্য গালিগালাজ করা হয়েছে এবং পরে বারোটার সময় অস্ত্র দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটেছে শারীরিক প্রতিবন্ধীকেও তৃণমূলীদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা। সেখানে তপসিয়ার বাসিন্দা ৭০ বছর বয়স্ক পেশায় ওস্তাগর আনোয়ার হোসেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বেশ কষ্ট করে ভোট দিতে গিয়েছিলেন। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুথ দখল করে থাকা তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাকে বলে আপনি এখনই বাড়ি চলে যান। নইলে পস্তাবেন।
বেলেঘাটার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপক বোমাবাজি করেছে তৃণমূল। খান্না স্কুলে নির্বিঘ্নে ভোট পর্ব চলার সময়ে তারা এলাকাকে সন্ত্রস্ত করতে স্কুলের সামনে বোমা ফেলে। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে সকাল থেকে বোমা পড়তে থাকে। শিয়ালদহের সামনে টাকি বয়েজ স্কুলের ভোট লুটে সুবিধা করতে না পেরে উল্টোদিকের পাটোয়ার বাগানের গলি থেকে দুটি বোমা ফেলে দুষ্কৃতীরা। ওই বোমায় জখম হন দুই ব্যক্তি।
অন্যদিকে কাঁকুড়গাছির বিস্তীর্ণ এলাকায় আগের ভোটে বিজেপি’র ক্যাম্প থাকলেও এবারে শুধুই বামপন্থীরা ছিলেন। এখানে কাঁকুড়গাছি সহ মানিকতলার বেশ কয়েকটি বুথ থেকে বামপন্থী পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয় তৃণমূলীরা।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কেএমসিপি স্কুলের ২৫ এবং ২৬ নম্বর বুথের বামফ্রন্টের দুই এজেন্ট অপর্ণা বিশ্বাস, অপু বিশ্বাসকে তৃণমূলীরা মারধোর করে। ফাটিয়ে দেওয়া হয় পূরবী বিশ্বাসের মুখ।
কলকাতা জুড়েই সিপিআইএম-এর পোলিং এজেন্টদের এবং সাধারণ ভোটারকে তৃণমূলের প্রতীকে বোতাম টিপতে চাপ সৃষ্টি করা হয় তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের পক্ষ থেকে।
খিদিরপুর এলাকার ওয়াটগঞ্জ মুন্সিগঞ্জ মেরিন হাউসসহ একের পর এক এলাকা থেকে ছাপ্পা ভোট বুথ দখলের অভিযোগ আসছিল। মেরিন হাউসের বুথে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম) প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খান গেলে তাঁকে কয়েকশো বহিরাগত দুষ্কৃতী ঘিরে ফেলে মারতে আরম্ভ করে। তাঁর গাড়ির চালকের তৎপরতায় আহত অবস্থায় তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর খিদিরপুর মোড় অবরোধ করা হয়। সেখানে অবস্থান করেন সিপিআই(এম) প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খান। ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাশাপাশি ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজ এবং লাগোয়া এলাকায় সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক বহিরাগতদের জমায়েত ছিল। পাশের ১৩৬ নম্বর ওয়ার্ডেও একই চেহারা। বস্তুত ১৩৬ থেকে ১৩৯ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের ভয়াবহ দৌরাত্ম্যের ছবি দেখা গেছে দিনভর। তবে মানুষের বিভিন্ন মাত্রায় প্রতিবাদে স্পষ্ট তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যানের সুযোগ খুঁজছেন মানুষ।