৬০ বর্ষ ২৮ সংখ্যা / ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ১১ ফাল্গুন, ১৪২৯
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার এসএফআই’র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এসএফআই’র মিছিল।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ২০১৭ সাল থেকে রাজ্যজুড়ে কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখেছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। সেই সুযোগে অধিকাংশ কলেজ ক্যাম্পাস দখল করে চালাচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই কলেজ ক্যাম্পাসগুলিতে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে সোচ্চার এসএফআই। ছাত্রভোটের দাবিতে ২০ ফেব্রুয়ারি এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযানের কর্মসূচি নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীদের রাজাবাজার থেকে আসা ঐক্যবদ্ধ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে প্রবেশ করতে গেলে পুলিশ তাঁদের আটকায়। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিল পৌঁছালে বন্ধ করে দেওয়া হয় মূল ফটক। কার্যত গেট ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে এসএফআই’র মিছিল। ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসের বাইরে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকে। ছাত্র ভোট ছাড়াও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পরীক্ষার সমস্যা, সময় মতো রেজাল্ট প্রকাশের দাবি, পঠন-পাঠনের সমস্যা মেটানোর দাবি নিয়ে সোচ্চার ছিল জমায়েত। ছাত্রনেতা সৃজন ভট্টাচার্য বলেছেন, ছাত্র ভোট সরকারকে করাতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে টিএমসিপি থাকলেও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিশাল জমায়েতের মেজাজ দেখে তারা ধারে কাছে ঘেঁষেনি। অভিযানের সময় দীর্ঘক্ষণ কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস চত্বর স্তব্ধ হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এই সময়ে ভিক্টোরিয়া কলেজ, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভোটে এসএফআই জিতেছে।
এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিপুর ক্যাম্পাসে সভার ডাক দেয় এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটি। সেই সভা বানচাল করতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর চড়াও হয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ওই দুষ্কৃতীদের আক্রমণে রক্তাক্ত-আহত হন কলকাতা জেলা সম্পাদক মহম্মদ আতিফ নিসার সহ বেশ কয়েকজন এসএফআই কর্মী। এরপর জখম ছাত্রছাত্রীদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও ধাওয়া করে চড়াও হয় তৃণমূলী বাহিনী। নিস্পৃহ পুলিশের উপস্থিতিতেই আধ ঘণ্টা ধরে এসএফআই কর্মীদের মারধর করে তারা। ঘটনায় গুরুতর আহত ৭জন কর্মীকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। ওই ঘটনা সম্পর্কে এসএফআই নেতৃত্বের বক্তব্য, তৃণমূল যে গণতন্ত্র চায় না, ছাত্রভোট চায় না - এই আক্রমণ তার প্রমাণ। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নানাভাবে অস্থিরতা তৈরি করে চলেছে তৃণমূল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্বৃত্তদের আখড়া বানিয়েছে তারা। এই বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হয় অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা। ঘটনার প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের বাইরে, ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকুরিয়া মধুসূদন মঞ্চের মোড়ে এবং কলেজ স্ট্রিট মোড়ে পথ অবরোধ করে সভা করে এসএফআই সহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা।
হাসপাতালে এই হামলার সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন চিকিৎসকরাও। জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস, পশ্চিমবঙ্গ এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে।