৬০ বর্ষ ২৮ সংখ্যা / ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ১১ ফাল্গুন, ১৪২৯
গ্রাম শহর দু’জায়গাতেই সংকটে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা
সুপ্রতীপ রায়
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার ব্যাপক কমেছে। সম্প্রতি এই তথ্যটি অনেকেরই নজরে এসেছে। গত বছরের তুলনায় এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪ লক্ষ ১৪৭ জন পরীক্ষার্থী কম। গত বছর মোট ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষাতে বসেছিল। এবার মোট ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ৬২৬ জন মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে। নদীয়া জেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ের চিত্র উল্লেখ করলে বোঝা যাবে অবস্থাটা কোন জায়গাতে আছে। বগুলা পূর্বপাড়া হাই স্কুল (২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল ২৮৫ জন, এবছর সংখ্যাটা - ১৫৭), আনুলিয়া হাই স্কুল (২০২২ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল - ১২৮, এবছর তা দাঁড়িয়েছে - ৩২), পায়রাডাঙা ভূদেব স্মৃতি গার্লস (২০২২ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল - ২২২, ২০২৩-এ পরীক্ষার্থী - ৭৭), অঞ্জনগড় হাইস্কুল (২০২২ সালে পরীক্ষার্থী ছিল - ২২০, ২০২৩ সালে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে - ৪০)। বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক কমেছে।
কিন্তু কেন? কেউ কেউ বলবার চেষ্টা করছেন বিদ্যালয়ে ভরতির ক্ষেত্রে বয়সের বিধিনিষেধ কড়াকড়িভাবে লাগু হওয়ার জন্যই এই হ্রাস। কিন্তু এটা কতটা গ্রহণযোগ্য? এটা একটা ছোটো কারণ হলেও সমস্যা গভীর। মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এহেন পরিস্থিতির জন্য অতিমারীকে দায়ী করেছেন। অতিমারীতে অনেকেই স্কুলছুট হওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। আবার এও জানা গিয়েছে, এবার মাধ্যমিকে ২ লক্ষ ছাত্রছাত্রী রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করলেও এনরোলমেন্ট ফর্ম পূরণ করেনি। আবার এটাও দেখা গেছে, অনেক ছাত্রছাত্রী টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করেনি। পর্ষদ সভাপতি বলেছেন, যারা কোভিডের সময় অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পড়ত, তারাই এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। কোভিডের সময় স্কুলে ক্লাস হয়নি। তার প্রভাবেও এবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হতে পারে।
দেশ ও রাজ্যের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। শহর ও গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রেই সংকট ক্রমবর্ধমান। মানুষের আয় কমছে। ঝকঝকে বিজ্ঞাপন বা ‘দুয়ারে দূত’ পাঠিয়ে এই সংকট চাপা দেওয়া যাবে না।
আমাদের রাজ্যে গ্রামেই বেশিরভাগ মানুষ বাস করেন। পশ্চিমবঙ্গে গ্রামীণ আয়ের চিত্র সংকটজনক। এই সংকটের প্রভাব বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পড়ছে। যাদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাস থেকে ছিটকে যাচ্ছে। যদিও উন্নয়ন নিয়ে গল্পের গোরু গাছে তোলার প্রয়াস অব্যাহত থাকছে।
গ্রামীণ এলাকায় দৈনিক আয় নির্ণয়নের জন্য কৃষি ক্ষেত্র, নির্মাণ শিল্প ক্ষেত্র,উদ্যান পালন ক্ষেত্র ও অন্যান্য অকৃষি ক্ষেত্রকে মাপকাঠি হিসাবে ধরা হয়। ‘Handbook Of Statistics On Indian States, 2020-21’ শীর্ষক রিজার্ভ ব্যাংক প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, আমাদের রাজ্যে উদ্যানপালন ব্যতীত বাকি তিন ক্ষেত্রীয় মাপকাঠিতে গ্রাম বাংলার মানুষের দৈনিক মজুরির পরিমাণ জাতীয় গড়ের থেকে অনেক কম। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে কৃষি ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের দৈনিক মজুরির পরিমাণ ছিল ২৮৮.৬০ টাকা, যা জাতীয় গড় ৩০৯.৯০ টাকার থেকে কম। নির্মাণশিল্পের ক্ষেত্রে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে আমাদের রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষের দৈনিক মজুরি ছিল ৩০০.২০ টাকা, সেক্ষেত্রে জাতীয় গড় ছিল ৩৪০.৭০ টাকা। অন্যান্য অকৃষি ক্ষেত্রে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে গ্রামবাংলার মানুষদের দৈনিক মজুরির পরিমাণ ছিল ৩০৫.৮০ টাকা আর জাতীয় গড় ছিল ৩১৫.৩০ টাকা। পশ্চিমবঙ্গে কৃষি শ্রমিকদের দৈনিক মজুরিও কমে চলেছে। ফলে আর্থিক সংকটাপন্ন মানুষের পরিমাণ বাড়ছে।
আর্থিক সংকট এতটাই তীব্র যে, গ্রামের মানুষ দলে দলে অন্য রাজ্যে গত কয়েকবছরে পাড়ি দিয়েছেন কাজের সন্ধানে। অনেক ছাত্রের নাম বিদ্যালয়ে নথিভুক্ত থাকলেও তারা বিদ্যালয়ে আসেনা। কারণ এদের অনেকেই কাজের সন্ধানে অন্য রাজ্যে চলে গেছে, কেউ বা ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে।
একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে মায়েরা বিশেষ ভূমিকা নেন। অনেক মহিলা কিছু রোজগারের চেষ্টা করেন, ছেলে-মেয়েকে পড়াবার ব্যয় নির্বাহের জন্য। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। কিন্তু কোভিডের ধাক্কায় আমাদের রাজ্যের অনেক মহিলার কাজ গেছে এবং কাজ খোঁজাই ছেড়েছেন। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের শ্রম সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, বাংলায় কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময়ে ২০২০ সালের এপ্রিল-জুনে ১০০ জন মহিলার মধ্যে মাত্র ২১ জন হয় চাকরি করছিলেন বা কাজের সন্ধানে ছিলেন। লকডাউন প্রত্যাহৃত হওয়ার পর কর্মরত বা কাজের সন্ধানে বেরনো মহিলাদের সংখ্যা বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউন শিথিল হওয়ার পর এই সংখ্যা বাড়েনি। কর্মচ্যুতির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে গ্রাম বাংলায় মায়েরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বিষয়ে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছেন না। যদিও ধন্য ধন্য ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’।
এনিয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে, সব দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার পরিস্থিতি গভীর সংকটে। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকারে আসার পর থেকেই এই সংকট বেড়ে চলেছে। এই সংকট কমার কোনো লক্ষণ নেই। প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করার সরকারি উদ্যোগ কোথায়? শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক-বিযুক্ত কাজ বেশি বেশি করে মাননীয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের করানোর ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সিলেবাস শেষ করা এক প্রকার কষ্টকর হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও সমস্ত ছাত্রছাত্রীর সরকারি বই পেতে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ অতিক্রম করে যায়। সরকারি পোশাক বিলি, সাইকেল বিলি, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, মিড-ডে-মিল, আয়রন ট্যাবলেট দেওয়া, এমআর ভ্যাকসিন দেওয়া, নানা নামের মেধাবৃত্তির কাজ সহ প্রায় সব কাজেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যুক্ত করা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ট্যাব বা মোবাইলের টাকা ছাত্ররা পাওয়ার পর ইউসি তৈরি করার দায়িত্ব বিদ্যালয়ের। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল বা ট্যাব কেনা বাবদ দোকানের পাকা রশিদ সংগ্রহ করার দায়িত্বও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই পালন করতে হয়। আরও কাজ করতে হয়। শিক্ষাদপ্তরগুলিতে অপ্রতুল কর্মী সংখ্যার কারণ শিক্ষা দপ্তরগুলির অনেক কাজ কৌশলে বিদ্যালয়গুলিকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আজ বিদ্যালয়গুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চরিত্র হারিয়ে কার্যত পঞ্চায়েত অফিস বা বিডিও অফিসের মতো হয়ে পড়েছে।
কেবল গ্রামাঞ্চল কেন, শহরাঞ্চলেও দ্রুত বিদ্যালয় স্তরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমছে। বহু বিদ্যালয় পড়ুয়ার অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সাধারণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষা করতে গেলে রাজ্য সরকারের যে আন্তরিকতার প্রয়োজন তা নেই। সেটা বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দের দিকে নজর দিলেও পরিষ্কার হয়ে যায়। ২০২১-২২ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভিত্তিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পরিমাণ ১৫.১১ লক্ষ কোটি টাকা। ৬ শতাংশ (জিডিপি) হিসাবে শিক্ষাখাতে ব্যয় হওয়া প্রয়োজন ছিল ৯১ হাজার কোটি টাকা। ২০২১-২২ সালের সংশোধিত হিসেব অনুসারে ব্যয় হয়েছে ৩৮ হাজার কোটির মতো।
গত এগারো বছরে রাজ্যের বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন কোথায়? শিক্ষকের প্রয়োজন অনুসারে পরিকাঠামো জোগান দেওয়া, উপযুক্ত বিদ্যালয় ভবন, শ্রেণিকক্ষ, গ্রন্থাগার, প্রসাধন কক্ষ, শৌচাগার, ল্যাবরেটরি প্রভৃতি পরিকাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। এগুলির উন্নয়ন কোথায়? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন বলতে তৃণমূল বোঝে বছরের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর চকচকে ছবি সংবলিত ঝকঝকে শুভেচ্ছাবার্তা ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সহ খাতা ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া। বিদ্যালয়গুলি কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তি প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষা গোল্লায় গেলেও তৃণমূল নামক রাজনৈতিক দলটির কোনো মাথাব্যাথা নেই। কারণ অশিক্ষিত আর লুম্পেন ওদের প্রয়োজন।
তৃণমূলের হাত ধরে ঘোর দুর্যোগ নেমে এসেছে বাংলার শিক্ষায়। গোটা শিক্ষা দপ্তরই আজ জেলখানায়। তাতে মমতা দেবীর কী যায় আসে! শিক্ষার মান দ্রুত নেমে চলেছে। ক্ষমতাতে আসার পর সিবিএসই-আইসিএসই’র সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার প্রেসক্রিপশন দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষাকে এলোমেলো করে দেওয়ার এর থেকে প্রকৃষ্ট উদাহরণ আর কী হতে পারে! কোভিডকে ঢাল করে পরীক্ষা না নিয়েই পাশ করানো হয়েছিল। উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের গত বছর নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ফলে অনেক সেন্টারে তা প্রহসনে পরিণত হয়েছিল।
ভেঙে পড়েছে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার পরিকাঠামো, কমছে শিক্ষার মান, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অংশের ছেলে মেয়েদের স্কুলছুট হওয়া কমানোর কোনো উদ্যোগ নেই। উৎসশ্রী মারফত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি প্রথা চালু হওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রেই রোস্টার লঙ্ঘন করা হয়েছে। গ্রামীণ বিদ্যালয়গুলির অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি নিয়ে শহরে চলে যাচ্ছেন।গ্রামীণ এলাকার প্রচুর বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব দেখা যাচ্ছে। স্কুল ভবনগুলির নীল-সাদা রং হয়ত হয়েছে, কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ কোথায়? অনেক স্কুল চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। বছরের পর বছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণ প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা থাকার কারণে রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে সংকট আরও বাড়ছে।
বামফ্রন্ট সরকারের সময় গড়ে উঠেছিল শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র (এমএসকে)। গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলে মেয়েরা এই শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকারে আসার পর এমএসকে এবং এসএসকে-গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। গত এক দশকে কোনো পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং অবসর যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিচ্ছেন সেখানে কোনো নতুন নিয়োগ হয়নি। ফলে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বা মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে।
লকডাউনের নাম করে দিনের পর দিন যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা হয়েছিল তাতে একটা প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। লকডাউন শিথিল হলেও, লকডাউন প্রত্যাহৃত হলেও, সব চালু থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন বন্ধ ছিল। কী কারণ ছিল? সব চললেও পাঠশালা খোলেনি। দিনের পর দিন মিড-ডে মিলে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়নি। বিকল্প হিসাবে মাঝে মাঝে চাল, আলু দেওয়া হয়েছে। তাহলে ওই সময় বরাদ্দকৃত মিড-ডে মিলের বিপুল অর্থ কোথায় গেল? কোভিডকে ঢাল করে আসলে সাধারণের শিক্ষার উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে।
রাজ্যে আগামীদিনে সাধারণের শিক্ষা থাকবে কিনা এটা বড়ো প্রশ্ন আকারে দেখা দিয়েছে। কারণ তৃণমূল মোদির দেখানো পথে হাঁটছে। অর্থাৎ করপোরেটদের হাতে সব তুলে দাও। শিক্ষাকেও ওরা পুরোপুরি করপোরেটদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। সম্পূর্ণ অ্যাপ নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে। বিপুল টাকা দিয়ে অ্যাপ কিনতে পারলে শিক্ষা জীবন শেষ করা যাবে। না হলে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এটাই কি পশ্চিমবাংলার অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে? তাই এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা হ্রাস কোনো সহজ, সরল বিষয় নয়। সার্বিকভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে যে সংকট নেমে এসেছে এটা তারই একটা করুণ পরিণতি।