৬০ বর্ষ ২৮ সংখ্যা / ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ / ১১ ফাল্গুন, ১৪২৯
রাজার সাজা সাজায় কে?
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
হবু রাজার গবু মন্ত্রী। এই নিয়ে কত গল্প, কত ছড়া ছোটো থেকে শুনে শুনে বেড়ে ওঠা। সবটাই যে নিছক নির্বুদ্ধিতার গপ্পো এরকম ভেবে নেওয়াটা মোটেই ঠিক নয়। বরং উলটে পালটে দেখলে বেশ অন্যরকম। সুনির্মল বসুর ‘হবুচন্দ্রের আইন’ ছড়াটা যেমন। যেখানে রাজা হবুচন্দ্র মন্ত্রী গবুচন্দ্রকে ডেকে আদেশ করেছিলেন নতুন আইন জারি করতে। যে আইন অনুসারে, “...মোর রাজ্যের ভিতর,/ হোক না ধনী, হোক না গরিব, ভদ্র কিংবা ইতর,/ কাঁদতে কেহ পারবে না কো, যতই মরুক শোকে।/ হাসবে আমার যতেক প্রজা, হাসবে যত লোকে।” রাজামশাই নিদান দিয়েছিলেন - সান্ত্রি-সেপাই-পেয়াদা-পাইকরা ছদ্মবেশে দেশে ঘুরে বেড়াবে, আর কেউ কাঁদলেই তাঁকে ধরে নিয়ে এসে শূলে চড়ানো হবে। বিষয়টা বেশ মজার সন্দেহ নেই। এরকমটা হলে একসময় লোকে আইনের ভয়েই কাঁদতে ভুলে যাবে, দুঃখ ভুলে যাবে, শোক করতে ভুলে যাবে। বলা ভালো, দেশের মানুষকে আইনের জুজু দেখিয়ে ভুলতে বাধ্য করা হবে।
আচ্ছা। হবু গবুর গল্পটা কি নিছকই গল্প? নাকি অন্য কিছু। যাক গে। এসব বড়ো বড়ো বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আমরা বরং একটু গুরুত্বহীন বিষয় নিয়ে চর্চা করি। কারণ আগামী বছরেই দেশে সাধারণ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে অনেক ভাঙাচোরা হবে। চাপান উতোর হবে। মন্দির টন্দির উদ্বোধন হয়ে যাবে। প্রতিশ্রুতির বান ডাকবে এবং আম জনতা নোটবাতিল, জিনিসের দাম বাড়া, আদানির ফুলে ফেঁপে ওঠা, চাকরি হারানো, লকডাউনে সর্বস্বান্ত হওয়ার সমস্ত শোক ভুলে হাসতে হাসতে রোদে পুড়ে ঘামে ভিজে বোতাম টিপবেন। অনেকটা সেই ২০০৪-এর নির্বাচনের আগের ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’-এর মতো। যা বিশ বছর পরে বদলে গিয়ে হয়েছে ‘সব কুছ চাঙ্গাসি’। অতএব... রাজা যখন বলে দিয়েছেন, প্রজাকে তখন দাঁত বার করে বলতেই হবে ‘জি হুজুর’। অন্য সুর গলা দিয়ে বেরোলেই তিস্তা শীতলবাদ, সিদ্দিকি কাপ্পান, সোনম ওয়াংচুক, মহম্মদ জুবেইর, নৌসাদ সিদ্দিকি অথবা নেহা সিং রাঠোর হয়ে যাবার সম্ভাবনা। নাম আরও আছে। নিলেই নেওয়া যায়। শব্দ সংখ্যা বাড়িয়ে লাভ কী? বিষয় তো একই থাকবে। কবি তো বলেই দিয়েছেন, “হবুচন্দ্রের দেশে/ মরতে যদি হয় কখনো, মরতে হবে হেসে।”
গণতন্ত্র, বাক্ স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা - এইধরনের বেশকিছু গালভরা শব্দবন্ধের সঙ্গে আমরা পরিচিত। এই প্রসঙ্গে সবথেকে ভালো এবং মনে রাখার মতো কথা ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে বলেছিলেন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী। কোট আনকোট তাঁর বক্তব্য ছিল - ‘‘আমরা যদি বাক্ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে গণতন্ত্র টিকবে না।’’ গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে, গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে এই সাধু উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। বিগত ৮ বছরে প্রায় প্রতিটি ঘটনায় যেভাবে দেশের মানুষের বাক্ স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রাণপণে রক্ষা করা হয়েছে তাও প্রশংসার। সেই কারণেই তো প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ২০১৪ সালের ১৪০ থেকে ২০২২-এ আমরা ১৫০-এ পৌঁছে গেছি। এর জন্য সাধুবাদ যাদের যাদের প্রাপ্য তাদের তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়াটাও জরুরি। কারণ মাননীয় অর্থমন্ত্রী তো আমাদের বলেই দিয়েছেন যে টাকার দাম পড়ার অর্থ টাকার দাম কমা না, ডলারের শক্তিশালী হওয়া। সুতরাং এই সূত্র ধরেই, প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সেও ভারত নিচে নামেনি, অন্যান্য দেশ ভারতের থেকে ওপরে উঠে গেছে। “যতই শোকের কারণ ঘটুক হাসতে হবে তবু,/ আদেশ দিলেন রাজাধিরাজ হবু।/ রাজার আদেশ কেউ যদি যায় ভুলে,/ চড়তে হবে শূলে।”
এই বছরের ২১ জানুয়ারি, লাদাখের বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আহ্বান জানিয়েছিলেন সোনম ওয়াংচুক। এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, ‘আপনি হস্তক্ষেপ করুন। সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিল অনুযায়ী লাদাখের প্রকৃতিকে বাঁচান।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সমস্ত মানুষ কষ্টে আছে। যেমন যুব সম্প্রদায়ের কথাই ধরা যাক। তারা চাকরি পাচ্ছে না। ১২ হাজার চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও চাকরি পেয়েছে ৮০০ জন। তাও পুলিশে। মানুষকে অবদমন করে রাখার জন্য। চারদিকে প্রতিবাদ হচ্ছে। মানুষ ভয় পাচ্ছে।’
সোনমের আক্ষেপ, ‘মানুষের এতে কোনো অংশই নেই। কোনও গণতন্ত্র নেই’। টুইটারে ভিডিয়ো পোস্ট করে সোনম বলেন, ‘লাদাখে সব ঠিকঠাক নেই! আমার সর্বশেষ ভিডিয়োতে, লাদাখের ভঙ্গুর পরিবেশকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করছি। সরকার এবং বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য, আমি ২৬ জানুয়ারি থেকে ১৮০০০ ফুট উচ্চতায় এবং -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে খারদুংলা পাসে ৫ দিনের জন্য অনশনে বসার পরিকল্পনা করেছি।' সেই ঘোষণা অনুযায়ী অনশন শুরু করার পরেই একদা প্রধানমন্ত্রী প্রশংসায় পঞ্চমুখ সোনমকে গৃহবন্দি করা হয়। সোনমের দাবি, তাঁকে আর এগোতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে, খারদুংলা এখন বরফে ঢাকা। তাই এগোতে দেওয়া যাবে না।
সোনমের কথা থাক। ‘ইউপি মে কা বা’ খ্যাত শিল্পী নেহা সিং রাঠোরের কথা তো আমরা অনেকেই জানি। বিহার, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের সময়, মোরবি সেতু ভেঙে পড়ার সময় গানের মাধ্যমে তাঁর সরকার-বিরোধী প্রশ্ন অনেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের সময় নেহা অ্যাপের মাধ্যমে বলেছিলেন, ‘করোনা সে লখন মর গইল লে, লাশো সে গঙ্গা ভর গইল রে, কাফন নোচাত কুকুর বিলার বা, এ বাবা, ইউ পি মে কা বা?’ লখিমপুর খেরির প্রসঙ্গ টেনে নেহা সিং রাঠোর গেয়ে উঠেছিলেন, ‘মন্ত্রী কে বেটুয়া বড়া রংদার বা, কিষান কে ছাতি পে রোন্ডাট মোটর কার বা, এ চৌকিদার বোলো কে জমিন্দার বা?’ সেই নেহা সিং রাঠোরকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি নোটিশ পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। প্রশাসনের বক্তব্য, নেহার কি কোনও ধারণা আছে, তাঁর গানের কতটা কুপ্রভাব পড়ছে সমাজের উপর? এ ব্যাপারে ৩ দিনের মধ্যে নেহাকে তাঁর বক্তব্য জানাতে হবে এবং সেই জবাব প্রশাসনের মন মতো না হলে মামলা করা হতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ও হ্যাঁ। এবার নেহা প্রশ্ন তুলেছিলেন যোগীরাজ্যের শাসনব্যবস্থা নিয়ে। রাজ্য প্রশাসনের বুলডোজ়ার নীতি, বেআইনি বাড়ি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত এমনকী ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়েও। এতটা সাহস দেখিয়ে ফেলা বোধহয় নেহার উচিত হয়নি। “সান্ত্রী-সেপাই, প্যায়দা, পাইক ঘুরবে ছদ্মবেশে,/ কাঁদলে কেহ, আনবে বেঁধে, শাস্তি হবে শেষে।”
লখিমপুর খেরির ঘটনার কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের হাথরসেই আরও এক ‘ছোটো ঘটনা’ ঘটেছিল। ২০২০-র ৫ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের হাথরস যাওয়ার পথে কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান সহ ৭ সাংবাদিককে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পুলিশ। ১৯ বছরের এক দলিত নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও হত্যার খবর সংগ্রহ করতে হাথরসে যাচ্ছিলেন তিনি। সেদিন থেকেই মথুরার একটি জেলে দীর্ঘ ২৮ মাস বন্দি ছিলেন কাপ্পান। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। কাপ্পানের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ ছিল - এঁরা সবাই কেরালার উগ্রবাদী সংগঠন পপুলার ফ্রন্টের সদস্য। সাম্প্রদায়িক অশান্তি করার উদ্দেশ্যে হাথরসে এসেছিলেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানায়, যে সংবাদসংস্থার পরিচয় দেখিয়েছেন তাঁরা, সেটি ২ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে সাংবাদিক সেজে অশান্তি পাকানোই তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল। এই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ছাড়া পাবার পর সিদ্দিকি কাপ্পান জানান, ‘লড়াই জারি থাকবে। আমি জামিন পাওয়া সত্ত্বেও আমাকে তারা জেলবন্দি করে রেখেছিল। ২৮ মাসের দীর্ঘ লড়াই শেষ হলো। আমি নিজেও জানিনা আমাকে জেলে রেখে কাদের কী লাভ হয়েছে! এই দু'বছর খুব কঠিন ছিল আমার কাছে। কিন্তু আমি হার মানিনি।’ তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ইউএপিএ এক রাজনৈতিক অস্ত্র, সত্যি সামনে আসবেই। “হাসছে দেশের ন্যাংলা ফ্যাচাং হ্যাংলা হাঁদা যত,/ গোমড়া উদো-নোংরা-ডেঁপো-চ্যাংরো শত শত;”
গত বছরের ২৫ জুন সমাজকর্মী তিস্তা শীতলবাদকে গ্রেপ্তার করে গুজরাট পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)। গুজরাট পুলিশের এটিএস তাঁকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৮, ১৯৪, ২১১, ২১৮ এবং ১২০বি অনুসারে গ্রেপ্তার করে। সুপ্রিম কোর্ট জাকিয়া জাফরির আনা মামলা খারিজ করে দেবার পরের দিনেই গ্রেপ্তার হন তিস্তা। তিস্তার বিরুদ্ধে বিজেপি'র অভিযোগ ছিল, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার পর রাজ্যের বিজেপি সরকারকে ফেলতে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন ধৃত সমাজকর্মীকে। শুধু টাকাই নয়, আরও নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই সময় গুজরাটের বিজেপি সরকারকে আসনচ্যুত করতে যে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ করেছিল বিরোধীরা, তারই অংশ ছিলেন তিস্তা। যেহেতু দেশের শাসকদলের অভিযোগ তাই নিশ্চয়ই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টাকে দেখা হয়। যদিও ২ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ এই মামলার পর্যবেক্ষণে জানায়, এখানে ইউএপিএ-র মতো এমন কোনো অপরাধ নেই যাতে জামিন মঞ্জুর করা যায় না। বিশেষ করে তিনি যখন একজন মহিলা। তিনি দু’মাস ধরে জেলে আছেন এবং এখনও পর্যন্ত চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। ওইদিনই তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত এবং পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বর জেলের বাইরে আসেন তিস্তা। “নিয়ম আমার কড়া/ প্রতিদিনই একটি লোকের শূলেতে চাই চড়া।/ যা হোক, আজই সাঁঝের আগে শূলে দেবার তরে/ যে করে হোক একটি মানুষ আনতে হবে ধরে।”
২০১৮ সালে একটি ট্যুইট করেছিলেন অলট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেইর। যে ট্যুইটে জুবেইর লিখেছিলেন, ‘‘২০১৪ সালের আগেঃ হানিমুন হোটেল। ২০১৪ সালের পরেঃ হনুমান হোটেল।” এফআইআর অনুসারে, অভিযুক্ত জুবেইর একটি পুরনো হিন্দি সিনেমার স্ক্রিনশট ব্যবহার করেছিলেন যাতে একটি হোটেলের ছবি দেখানো হয়েছিল এবং এর বোর্ডে ‘হানিমুন হোটেল’ এর পরিবর্তে ‘হনুমান হোটেল’ লেখা ছিল। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর, লখিমপুর খেরি, গাজিয়াবাদ, মুজফ্ফরনগর এবং হাথরস থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় জুবেইরের বিরুদ্ধে। দায়ের হয় ৬ টি মামলা। জুবেইরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ২০১ (প্রমাণ হারিয়ে যাওয়া) এবং বিদেশি অনুদান (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৩৫ ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়। গত বছরের ২৭ জুন জুবেইরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৩ দিন পর ২০ জুলাই জামিন পান মহম্মদ জুবেইর। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড় এই মামলায় জানিয়েছিলেন, মহম্মদ জুবেইরকে আর হেফাজতে রাখার কোনও যৌক্তিকতা নেই। আজই তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। সেই মতোই মুক্তি পান অলট নিউজের সহ প্রতিষ্ঠাতা। রাগটা জুবেইর-এর ওপর নাকি অলট নিউজের ওপর তা অবশ্য বিতর্কিত। “রাজা বলেন, ‘গবু,/ আমার আইন সকল প্রজার মানতে হবে তবু।”
অন্য রাজ্য অনেক হলো। এবার একটু নাহয় আমাদের রাজ্যে ফিরি। হাতিশালায় দলীয় পতাকা লাগানো নিয়ে একটা গণ্ডগোল হয় তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে। যার জেরে দলীয় প্রতিষ্ঠা দিবসে ধর্মতলায় বিক্ষোভ দেখাতে যান রাজ্য বিধানসভার একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি। যাকে অনেকেই ‘রাজ্যের একমাত্র বিরোধী বিধায়ক’ বলে থাকেন। ধর্মতলায় আইএসএফ’র অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে আইএসএফ কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। টেনে-হিঁচড়ে নওশাদ সিদ্দিকিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। ২১ জানুয়ারির সেই ঘটনার পর আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি - ১ মাসের বেশি সময় ধরে সিদ্দিকি সহ ৮৮ জন আইএসএফ কর্মী-সমর্থক জেলে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্কশাল আদালতে ঢোকার সময় নওসাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘জেল জরিমানা করে আমাকে রোখা যাবে না। মিথ্যে খুনের মামলা দিয়ে একজন বিধায়ককে আটকে রাখার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না। মানুষের জন্য লড়াই চলবে।’ নওসাদের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় এক মিছিলের পর মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘নওসাদ সিদ্দিকিকে টাকার টোপ দিয়ে এরা কিনতে চেয়েছিল। যখন পারেনি, তখনই পুলিশ হেফাজত চাইছে। যাতে ব্রেনওয়াশ করতে পারে। বিরোধী পক্ষের একমাত্র বিধায়ক উনি। ওরা তাঁকে ভয় পাচ্ছে। কারণ ওরা বিরোধী কণ্ঠস্বর ভয় পায়।’
লেখাটা আর বাড়াব না। সত্যি বলছি। তবে সুনির্মল বসুর যে ছড়াটা দিয়ে শুরু করেছিলাম তার শেষটা বেশ মজার। ওই ক’টা লাইন লেখার লোভ সামলাতে পারছিনা। যেখানে দেশের মানুষ কাঁদতে ভুলে গেছিল। এমনকী মন্ত্রীও। তখন রাজা নিজেই কেঁদে দেখান কীভাবে কাঁদতে হয়। আর এরপরেই মন্ত্রী বলেন, ‘এবার তবে রাজা/ নিজের আইন পালন করুন গ্রহণ করুন সাজা।’/ বলেন হবু, ‘আমার হুকুম নড়বে না এক চুল,/ আমার সাজা আমিই নেব তৈরি করো শূল।’ দিন কিন্তু আসবেই...