৫৭ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা / ২৪ জুলাই ২০২০ / ৮ শ্রাবণ ১৪২৭
দুঃসময়ের চালচিত্র - ৪
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
যদিও ভরা শ্রাবণ, তবু দেশের কেউ কেউ নাকি এখন বৈশাখের, নববর্ষের অপেক্ষায়। কারোর পৌষ। কারোর ফাগুন। আর লকডাউনে গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, ধর্মতলা, দক্ষিণাপনের চৈত্র সেলের বাজারের বারোটা বেজে বিক্রেতাদের পেটে দাউ দাউ করে আগুন। তাও নাকি দেশজুড়ে এখন চৈত্র সেলের রমরমা। গুজরাট থেকে অসম, পাহাড় থেকে সাগর, তিরুপতি থেকে বেনারস - জলের দরে বিকোচ্ছে ফলের রস। কবিগুরু রাগ করবেন না প্লিজ। এখন - আমরা দেশ বেচি আনন্দে, লিস্টি বানাই বসে বসে, সকাল থেকে সন্ধে। আমরা দেশ বেচি আনন্দে। বেচা শেষ হলেই আচ্ছে দিন। রামরাজ্য। নববর্ষ। শ্রাবণ, আশ্বিন, চৈত্র - সব নিজেদের মতো করে বদলে ‘পোষ’ মানিয়ে, বানিয়ে নেব। ৯ বছর পর উদ্ধার হওয়া কঙ্কালের অক্ষত গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া দেখে দেহ শনাক্ত করার মতো, ভারতের যে কোনো জায়গা খুঁড়ে যখন তখন বের করে ফেলব কাব্যগ্রন্থের নায়কের বাড়িঘরের ধ্বংসাবশেষ। দেশবাসীকে তো গিলিয়ে দেওয়া গেছে ‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’, ‘বাঙলার গর্ব’। কোভিড-১৯, লকডাউন - সেসব তো উপলক্ষ মাত্র। এসবের ঢালের আড়ালে লক্ষ্য তো সম্পূর্ণ অন্য।
‘সবাই বলে সমস্বরে ছেলে জোয়ান বুড়ো,/অতুল কীর্তি রাখল তবে চণ্ডীদাসের খুড়ো।’ ঠিক এখানেই শেষ করেছিলাম দুঃসময়ের চালচিত্র-৩। কিন্তু সময়টা যেহেতু অনেকখানি এবং চণ্ডীদাসের খুড়ো এবং তাঁর দলবলের কীর্তির শেষ নেই, তাই এত অল্প কথায় দুঃসময়ের কাহিনি শেষ হবার নয়। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একের পর এক ঘটনার ঘনঘটা। আর সবগুলোই যেন পাঁকাল মাছ। ধরা যায় না। আটকানো যায় না। আর চণ্ডীদাসের খুড়ো একের পর এক কীর্তি করেই চলে। না। হতাশ নয়। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চোখ কান আরও খুলছে। দৃষ্টি আরও সজাগ হচ্ছে। ক্রমশ টান টান হয়ে উঠছে ইন্দ্রিয়েরা। প্রতীক্ষায়। ‘মনোবিকাশের ছন্দ’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ যেমন লিখেছেন: “বিশ্বের কোনো ব্যাপারই একেবারে একটানা নয়। সর্বত্রই সংকোচন-সম্প্রসারণ, উত্থান-পতন, হ্রাস-বৃদ্ধি, বহির্গম-অন্তর্গম, অর্জন-বর্জন, আবির্ভাব-তিরোভাবের ছন্দ আছে। এই ছন্দ অনেক সময় আমরা চোখে দেখিতে পাই না, এবং এই ছন্দের নিয়মও আমাদের কাছে ধরা পড়ে না...”। উত্থানের পরেই পতন আসে, সংকোচনের পর প্রসারণ নিয়ম মেনেই হয়। তার ছন্দ খুঁজে নিয়ে পথ করতে হয়। রাস্তায় গোল গোল দাগ কেটে, থালা বাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে গণ-হিস্টিরিয়া তৈরি করা যায়। মিডিয়ার বদান্যতা পাওয়া যায়। করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যায় না। তার জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়।
হাজারো কীর্তিকলাপ করে, চারখান ‘মন কী বাত’, ছয়খান রাত ৮টার, বিকেল ৫টার ভাষণ দিয়ে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি তা এখন বেশ স্পষ্ট। ‘গোষ্ঠী সংক্রমণ’কে অস্বীকার করে ঢোঁক গিললেও তা যে অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে বলার অপেক্ষা রাখে না। খবরটা অনেক পুরনো। এপ্রিল মাসের। তবে এখনকার হিসেব মতো গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার করে সংক্রমণ চলতে থাকলে জুলাই মাসের শেষে এই সংক্রমণ মোটামুটি ১৫ লাখ ছুঁয়ে ফেলবে। তখন কে কার পিঠ চাপড়াবেন আর কে কার শরীরে চুল্লি বানিয়ে পুড়িয়ে দেবেন নিজেরা ঠিক করে নিন। এরকম কথা তো ভারত নোটবাতিলের সময়েও শুনেছিল। পঞ্চাশ দিনের মধ্যে সমস্যা না মিটলে ‘জিন্দা জ্বালা দেনা’ও কেউ কেউ বলেছিল। ইতিহাস ঘেঁটে লাভ কী? যুদ্ধু যুদ্ধু খেলার আড়ালে বাকি সবটুকুই নিখুঁত কার্বন কপি। করোনা সংক্রমণ কোথায় থামবে তা বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন। তিথি নক্ষত্র বিচার করে মন্দিরের গাঁথনি শুরু করে তো আর সংক্রমণ আটকানো যাবে না। মৃত্যুকেও না।
করোনা নিয়ে এর আগের তিনটে পর্বে অনেক কিছুই বলেছি। তাই কচকচি বাদ দেওয়া যাক। কারণ, বাস্তব, বিজ্ঞান যাই বলুক না কেন, ‘মুমকিন হ্যায়’ তত্ত্বে বিশ্বাসীরা তো জেনেই গেছেন যে আগামী ১৫ আগস্ট লালকেল্লা থেকে করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। মানুষ ফটাফট ভ্যাকসিন নেবে আর পটাপট করোনা পালিয়ে যাবে। বিশ্বাস আর যুক্তিতর্কের মিল তো কোনোদিনই হয় না। আর বেসুরো বামপন্থীরা তো সবসময়েই বলে ‘ডাউট এভরিথিং’। প্রশ্ন করো, প্রশ্ন। আরও প্রশ্ন। আরও। সেই প্রশ্নমালার উত্তরের পর উত্তর থেকেই তো একসময় বেরিয়ে আসবে সঠিক উত্তর। পথের দিশা। আপাতত বরং করোনার কারণে মাস্ক ঢাকা মুখের আড়ালে দেখতে না পাওয়া ক্রূর হাসির উৎস খোঁজা যাক।
করোনা আতঙ্কের মাঝেই যেমন আগামী ৩ অথবা ৫ আগস্ট তিথি নক্ষত্র বিচার করে মন্দির নির্মাণের শুভ সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী, তেমনই দেশজুড়ে করোনা আতঙ্কের মাঝেই নির্ধারিত সূচি মেনে গত ১ এপ্রিল ১০ ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ সম্পন্ন হয়ে গেছে। ১০টা ব্যাঙ্ক মিশে গিয়ে ৪টি ব্যাঙ্ক। অতীত হয়ে গেছে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক এবং কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক। গত বছরের আগস্ট মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল এবং গত ৪ মার্চ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা এই প্রক্রিয়ায় সবুজ সংকেত দেয়। তবে সেই ট্রেনের পেন বিক্রেতার মতো বলতে হয় - ‘এখানেই শেষ নয়’। এই মুহূর্তে দেশের ১২টা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবার নামিয়ে আনা হবে চার অথবা পাঁচে। গত সোমবার ২০ জুলাই জানা গেছে, এই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম ধাপে ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্কের সিংহভাগ শেয়ার বিক্রি করা হবে। ২০১৭ সালে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা ছিল ২৭। এপ্রিলে সেই সংখ্যাটা কমে ১২ তে দাঁড়িয়েছিল। এবার তা আরও কমে ৫ হতে চলেছে।
হ্যাঁ, আজ থেকে ৫১ বছর আগে ১৯ জুলাই, ১৯৬৯, দেশের ১৪টা প্রধান ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ করা হয়েছিল। ব্যাঙ্ক নিয়েই যখন এত কথা হচ্ছে তখন আরও একটা কথা বোধহয় বলাই যায়। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (AIBEA)-এর পক্ষ থেকে ২,৪২৬ জন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীর তালিকা প্রকাশ করে। ১৮ জুলাই ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীর মোট ঋণের পরিমাণ ১.৪৭ ট্রিলিয়ন টাকা। এই তালিকায় আছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘মেহুল ভাই’-এর গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেড, বিজয় মাল্যর কিংফিশার এয়ারলাইন্স, রামদেব ও বালকৃষ্ণর রুচি সোয়া ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেহুল চোকসিরই উইনসম ডায়মন্ডস অ্যান্ড জুয়েলারি লিমিটেড, নীতিন সন্দেসরার স্টারলিং বায়োটেক প্রভৃতি। আর ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীদের কত টাকা ঋণ মকুব করে দেওয়া হয়েছে তা তো আগের দুঃসময়ের চালচিত্রেই বলা আছে।
দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডের একটা অংশ যদি হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, অন্য এক অংশ অবশ্যই দেশের লাইফলাইন ভারতীয় রেল। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে বারাণসীর এক জনসভায় বলেছিলেন, রেল কখনও বেসরকারিকরণ হবে না। যারা রেল বেসরকারিকরণ হবে বলে বলছেন তাঁরা মিথ্যে বলছেন। আমাদের এরকম কোনো ইচ্ছা নেই। একইকথা একাধিকবার বলেছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। সুনীল গাঙ্গুলি বহুদিন আগে লিখে গেছেন ‘কেউ কথা রাখেনি’। সামনে বাঙলার নির্বাচন মাথায় রেখে ওনারাও নিশ্চিত সুনীল পড়ে উৎসাহিত হয়েছেন।
গত ১৯ জুলাই এক বিবৃতিতে ভারতীয় রেল জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকেই দেশে চালু হয়ে যাবে বেসরকারি উদ্যোগে রেলে যাত্রী পরিবহণ। আগামী ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই এই সংক্রান্ত টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলা হবে। ১০৯ টি রুটে ১৫১ টি অত্যাধুনিক ট্রেনের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেওয়া হবে। আগেই এই বিষয়ে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এখানেও একটা ‘এখানেই শেষ নয়’ আছে। গত ২ জুলাই রেলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত দু’বছরে রেলে যেসব পদের সৃষ্টি হয়েছিল এবং এখনও নিয়োগ হয়নি, সুরক্ষা ক্ষেত্র ছাড়া বাকি ক্ষেত্রে তার ৫০ শতাংশ পদ ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছিলেন - ‘আত্মনির্ভর’ শুধুই প্রচারে, বাস্তব হলো ‘আত্মসমর্পণ’। “ভারতীয় রেল একটি জনপরিবহণ ব্যবস্থা। যার চরিত্র বদল রেল এবং দেশ উভয়ের পক্ষেই ক্ষতিকারক। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।”
মহম্মদ সেলিম রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের পুরনো কিছু বক্তব্য তুলে ধরে বলেন - ‘আবকি বার, ঝুঠি সরকার’। ওই ট্যুইটে মহম্মদ সেলিম পীযূষ গোয়েলের যে বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন তা অনেকটা এরকম। রেল কখনোই বেসরকারিকরণ হবে না। একথা তিনি জানিয়েছিলেন ২০২০ সালের ১৭ মার্চ। ২৩ অক্টোবর ২০১৯ পীযূষ গোয়েল জানিয়েছিলেন রেলে বেসরকারিকরণ হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। একইভাবে ২৫ নভেম্বর ২০১৯ পীযূষ গোয়েল জানান - রেলে বেসরকারিকরণের কোনো পরিকল্পনা নেই।
ব্যাঙ্ক হলো, রেল হলো। এবার একটু আকাশের দিকে চোখ রাখি। গত ১৪ জুলাই, মঙ্গলবার জারি করা এক নির্দেশে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘‘বিনা বেতনে কিছু কর্মীদের ছ’মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত বাধ্য তামূলক ছুটিতে পাঠানো হবে। সময়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ বছরও করা হতে পারে। কর্মক্ষমতা, যোগ্য্তা, দক্ষতা, কাজের গুণগত মান, স্বাস্থ্য, শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে আগে ডিউটিতে অনুপস্থিত থাকার সংখ্যা্ ইত্যা দির ভিত্তিতে কর্মী বাছাই করা হবে।’’ আবার ১৭ জুলাই জানানো হয়েছে, পাইলটদের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন কেটে নেওয়া হবে।
আকাশের কথাই যখন হলো, এখানেও না-হয় আরেকটা ‘এখানেই শেষ নয়’ হয়ে যাক। দেশে লকডাউন চলাকালীনই, গত ২৫ জুন বেসরকারি সংস্থার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে ইসরো-র জন্য। এখন থেকে রকেট তৈরি, স্যাটেলাইট এবং অন্যান্য উৎক্ষেপণে সহযোগী হতে পারবে বেসরকারি সংস্থা। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যাতে এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে তা ভেবেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকারের আর্থ-সামাজিক সংস্কারের ধারা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসরো প্রধান কে শিভন আরও জানান - বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এখন থেকে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন প্রকল্পের অংশীদার হতে পারবে। তিনি আরও জানান, এর ফলে ইসরো’র গবেষণামূলক কাজ কমে যাবে এরকম ভাবার কোনো কারণ নেই। ইসরো নিজেদের মহাকাশ গবেষণামূলক কাজ চালিয়ে যাবে।
লকডাউন, করোনার জন্য দেশ স্তব্ধ হয়ে গেলেও, কয়েক কোটি মানুষ কাজ হারালেও, বহু প্রান্তিক মানুষের জীবনের ছন্দ নষ্ট হয়ে গেলেও, শ্রমজীবী মানুষকে থামিয়ে দেওয়া হলেও থেমে থাকেনি কোনো কিছুই। চক্রান্ত শব্দটা আমি ব্যবহার করতে চাইছি না সচেতনভাবেই। কারো কারো আপত্তি থাকতে পারে। বলতে পারেন, ‘বামেরা সবেতেই চক্রান্ত দেখে’। তাই এগুলো চক্রান্ত অথবা চক্রান্ত নয় সে সিদ্ধান্ত মানুষই নিক। শেষ কথা তো মানুষকেই বলতে হবে।
না। আর কিছু বলছি না। তবে অগ্রহায়ণ ১৩১৩তে এক প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ যা লিখে গেছিলেন এই সময়কে বোঝার জন্য তা বোধহয় যথেষ্ট। সেটুকুই থাক। - “আমরা কোনোদিন এমন হাটের মানুষ ছিলাম না। আজ আমরা হাটের মধ্যে বাহির হইয়া ঠেলাঠেলি ও চীৎকার করিতেছি - ইতর হইয়া উঠিয়াছি, কলহে মাতিয়াছি, পদ ও পদবী লইয়া কাড়াকাড়ি করিতেছি, বড়ো অক্ষরের ও উচ্চকণ্ঠের বিজ্ঞাপনের দ্বারা নিজেকে আর পাঁচজনের চেয়ে অগ্রসর ঘোষণা করিবার প্রাণপণ চেষ্টা চলিতেছে। অথচ ইহা একটা নকল। ইহার মধ্যে সত্য অতি অল্পই আছে...।”