৫৯ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৪ জুন, ২০২২ / ৯ আষাঢ়, ১৪২৯
অগ্নিবীরদের সামনে এবার অগ্নিপথ
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
“সওয়াল জিস জবান মে কিয়া যায়ে, জবাব উসি জবান মে দেনা চাহিয়ে” - অর্থাৎ প্রশ্ন যে ভাষায় করা হবে উত্তর সেই ভাষাতেই দেওয়া উচিত। ১৯৯০-এর এক চলচ্চিত্রের সংলাপ। নাম অগ্নিপথ। রূপোলি পর্দা আর বাস্তব যেহেতু এক নয়, তাই চলচ্চিত্রে যা শুনে বা দেখে তাৎক্ষণিক উত্তেজিত হয়ে পড়া যায়, তক্ষুণি একটা হেস্তনেস্ত করে ফেলার উদগ্র বাসনা ছড়িয়ে পড়ে শিরায় শিরায়, বাস্তবে আদৌ সেরকমটা ঘটে না। চলচ্চিত্রের আড়াই তিন ঘণ্টার টানাপোড়েন আর বাস্তবের দাঁতে দাঁত চেপে জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই এক নয়। তবু চলচ্চিত্রের কোনো কোনো সংলাপ মনে দাগ কেটে যায়। দীর্ঘদিন পরেও মাঝে মাঝে আওড়াতে ইচ্ছে করে। অবচেতন বলে এরকমটাই হওয়া উচিত বা এরকম হলে বেশ হতো।
গত কয়েক দিনে অগ্নিপথ, অগ্নিবীর নিয়ে দেশজুড়ে চলা আন্দোলন বিক্ষোভ এখন অনেকটাই স্তিমিত। যদিও আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। যে পথে এই আন্দোলন সংগঠিত এবং সংঘটিত হয়েছে সেই পথ ঠিক না ভুল তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খাপ বসিয়ে লাভ নেই। কারণ সেখানে মতৈক্য-র চেয়ে মতানৈক্যই বেশি চোখে পড়বে। সকলেই যেহেতু বলে যান, তাই মীমাংসা সূত্র খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় কোনও ক্ষেত্রেই। ভাগ্যিস সোশ্যাল মিডিয়া ছিল। তাই তো মানুষ এত কথা বলতে পারছেন। প্রচারকে কতটা ঘৃণ্য স্তরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে তা জানতে এবং বুঝতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আড়ি পাতাও তাই জরুরি। এমনি একটা আলোচনা করা যেতেই পারে বোধহয়।
বিজেপি'র অনেক জাতীয় সাধারণ সম্পাদক-এর একজন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যিনি একসময় ইন্দোরের মেয়র ছিলেন। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সিদ্ধমুখ। তবে অগ্নিপথ বিতর্কে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য বোধহয় সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তবে সকলেরই যে এরকমটা মনে হয়েছে তা নয়। কেউ কেউ মনে করেছেন কৈলাসের বক্তব্য আপত্তিকর। তা কতটা আপত্তির বুঝতে গেলে বা অগ্নিপথ বা অগ্নিবীর নিয়ে দেশের বর্তমান শাসকদলের আগামী মনোবাঞ্ছা ঠিক কী তা জানতে গেলে কৈলাসের বক্তব্যটা একবার জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
গত ১৯ জুন প্রথম এই ভিডিয়ো ট্যুইট করে নিউজ-২৪ নামের এক সংবাদমাধ্যম। যে ভিডিয়োতে কৈলাস নামক বিজেপি নেতাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমাকে বিজেপি অফিসে সিকিউরিটি গার্ড রাখতে হলে আমি অগ্নিবীর-দেরই প্রথম সুযোগ দেব’। ইন্দোরের বিজেপি অফিসে বসে বলা কৈলাসের এই বক্তব্যের ঠিক ভুল বিচার করতে বসিনি। প্রশ্নটা দেশের শাসকদলের চিন্তাভাবনার, সেনাবাহিনীতে বেসরকারিকরণের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া দেশের শাসকদলের মনোভাব নিয়ে। যে বক্তব্য প্রসঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এক ট্যুইট বার্তায় জানান, ‘বিজেপি'র রাষ্ট্রীয় মহাসচিব কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বক্তব্য শুনুন। চার বছর পরে ইনি অগ্নিবীরদের বিজেপি অফিসের বাইরে চৌকিদার করে দাঁড় করিয়ে রাখতে চান। বিজেপি'র অহংকার এখন সব সীমা পার করে গেছে।’ কৈলাসের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন বিজেপি-রই সাংসদ বরুণ গান্ধী সহ একাধিক বিরোধী নেতা। যদিও এই বক্তব্যের পরেও ভারতবাসীর বড়ো অংশের কোনো হেলদোল নেই। না। সেভাবে কোনো প্রতিবাদ আন্দোলনও সংগঠিত হয়নি। অতএব...
১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী দেশের যুবকদের জন্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগের নতুন প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’ ঘোষণা করলেন। কী ছিল সেই ঘোষণায়? ১৭ বছর ৫ মাস থেকে ২১ বছর বয়সিদের চার বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হবে (পড়ুন চুক্তি নিয়োগ)। এদের ছ’মাসের ট্রেনিং দেওয়া হবে। তারপর পোস্টিং। এবং চার বছর পর এদের ৭৫ শতাংশ শতাংশর কাজ থাকবে না। ২৫ শতাংশ শতাংশকে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হবে। পরবর্তীতে চাপের মুখে পড়ে এই বয়স বাড়িয়ে করা হয় ২৩ বছর। কীসের ভিত্তিতে এই ২৫ শতাংশকে রেখে দেওয়া হবে বা ৭৫ শতাংশকে ছেঁটে ফেলা হবে তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। আর বলা হয়েছে, অগ্নিপথে নিযুক্ত ‘অগ্নিবীর’দের প্রতি বছরের ভাতার কথা। যে ভাতা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়া হবে এবং সরকার সমমূল্যের অর্থ দেবে। যা চারবছর পর ফিরিয়ে দেওয়া হবে অগ্নিবীরদের। থাকছে না কোনও পেনশন, গ্র্যাচুইটি বা অন্য কোনও সুবিধা। যে প্রকল্প প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বি এস ধানোওয়া জানিয়েছেন, স্রেফ খরচ বাঁচানোর জন্য এমন সিদ্ধান্ত। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সতবীর সিং জানিয়েছেন, এই প্রকল্প মোটেই সামরিক বাহিনীর ঐতিহ্য, নীতি, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না। আর সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সেনাবাহিনীর কাজ করতে হলে, সীমান্তে কাজ করতে হলে কমপক্ষে ৮ বছর লাগে সবকিছু বুঝে উঠতে। চার বছরে তা কী করে সম্ভব? এই প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর ট্যুইটারে লেখেন, ‘‘পেশাদার সেনা বাড়ানোর বদলে পেনশনের টাকা বাঁচাতে চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগের প্রস্তাব দিল মোদি সরকার। প্রশিক্ষিত চুক্তিভিত্তিক সেনাদের ৩ থেকে ৫ বছর পর বেসরকারি সেনা বাহিনীতে নাম লেখানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এই দেশবিরোধী প্রকল্প বাতিল করুন।’’
অগ্নিপথ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘অগ্নিপথ প্রকল্প ভারতের জাতীয় স্বার্থের গুরুতর ক্ষতি করবে। সেই কারণেই সিপিআই(এম)-র পলিটব্যুরো জোরের সাথে এই প্রকল্প বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। চার বছরের ঠিকা বন্দোবস্তে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করে পেশাদার সশস্ত্রবাহিনী নির্মাণ করা যায় না।’’ ‘‘খরচ বাঁচাতে এই প্রকল্পে পেনশনের কোনো সুবিধাই নেই, আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর গুণমান ও পেশাদারিত্বের প্রসঙ্গে এমন প্রকল্প এক নির্লজ্জ আপস ছাড়া আর কিছুই নয়। গত দু’বছরে সেনাবাহিনীতে কোনো নিয়োগ হয়নি। স্থায়ী নিয়োগের পরিবর্তে এধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে ভবিষ্যতে জওয়ানদের কোনোরকম কাজে যুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা ছাড়াই সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী নিয়োগ করতে চাইছে সরকার।’’ এর পাশাপাশি আরও বলা হয়, ‘‘চার বছর পরে এই সেনা জওয়ানদের বিভিন্ন গোষ্ঠীনিয়ন্ত্রিত অথবা ব্যাক্তিগত মিলিশিয়া বাহিনীতে যুক্ত করার মতো ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের দেশের বর্তমান সামাজিক বিন্যাসে ইতিমধ্যেই বহুবিধ অনভিপ্রেত শোষণ, নিপীড়নের সুযোগ রয়েছে, এধরনের প্রকল্পে সেই বিন্যাস আরও জটিল আকার নেবে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অগ্নিপথ প্রকল্প থেকে ফেরার কোনো প্রশ্নই নেই। যদিও ২১ জুন ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে ‘জনস্বার্থ’ মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী হর্ষ অজয় সিং। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি এবং এম এল শর্মা। মামলাকারীদের দাবি, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প খতিয়ে দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হোক। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই মামলায় ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়েছে। অগ্নিপথ বিরোধিতায় বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘ভরতি দো ইয়া আরতি দো’। অর্থাৎ হয় চাকরি দিন অথবা আমাদের মেরে ফেলুন। তারা আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রায় দেড় লক্ষ শূন্যপদ আছে। তা পূরণ না করে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার তাদের ভবিষ্যত নিয়ে ছেলেখেলা করছে। কঙ্গনা রানাওয়াতের মত ছদ্ম রাজনীতিকদের কারোর কারোর মনে হয়েছে ‘পাবজি খেলার থেকে আর্মি জয়েন বেটার’, কিন্তু দেশের চাকরিপ্রার্থী যুবকদের বড়ো অংশের সেই বক্তব্য যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। তারা তাদের মতো করে বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন। আন্দোলন করেছেন। দিল্লিতে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই-এর অগ্নিপথ বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল থেকে সাংসদ এ আর রহিম, ডিওয়াইএফআই'র সাধারণ সম্পাদক হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য, এসএফআই'র সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, ডিওয়াইএফআই দিল্লি সম্পাদক আমন সাইনি, এসএফআই সম্পাদক প্রীতিশ মেনন এবং জেএনইউএসইউ সভাপতি ঐশী ঘোষকে আটক করা হয়।
এসব কথা থাক। কোনো অপরিকল্পিত আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে না। এটা বাস্তব। সেই নিয়ম মেনেই অগ্নিপথ বিরোধী বিক্ষোভ প্রথম কয়েকদিন যে তেজে হয়েছিল এখন তা স্তিমিত। আবারও এই আন্দোলন দানা বাঁধবে কিনা তা সময় বলবে। যদিও অগ্নিপথ প্রকল্প যে প্রশ্ন প্রবল ভাবে তুলে এনেছে প্রায় ক্লোজড চ্যাপ্টারে পরিণত এক পুরোনো প্রতিশ্রুতি। যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী হবার আগে। ২০১৩ সালে এক সভায়। যেখানে তিনি জানিয়েছিলেন বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থানের। অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণার পরেই প্রশ্ন উঠেছে ৮ বছরে ১৬ কোটির মধ্যে কত কর্মসংস্থান হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে নাহয় চপ, পেঁয়াজি ভেজে সবাই তিনতলা বাড়ি করে ফেলেছেন। আর কোনও বেকার সমস্যা নেই। কিন্তু দেশেও কি এখন সকলেই পকোড়া ভাজতে শুরু করেছেন? ২২ মাস পরে লোকসভা ভোটের আগে হঠাৎ ‘মিশন মোড’-এ ১৮ মাসে ১০ লক্ষ নিয়োগের নির্দেশ কেন? গত ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ট্যুইটারে জানানো হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমস্ত বিভাগ এবং মন্ত্রকগুলিতে মানব সম্পদের অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন এবং নির্দেশ দিয়েছেন যে সরকার আগামী ১.৫ বছরে ‘ইন মিশন মোডে’ ১০ লক্ষ লোক নিয়োগ করবে।’’ যে ঘোষণা প্রসঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, ‘‘২০১৪ সালে প্রতি বছর ২ কোটি নতুন চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদি। সেই হিসেব অনুযায়ী এখন তা হওয়ার কথা ১৬ কোটি। তা পূরণের বদলে দেশে বেকারত্ব বেড়েছে। এখন দেড় বছরে ১০ লাখ চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আরও একটি প্রতারণা। আগে ৮ লক্ষ ৭২ হাজার ২৪৩ কেন্দ্রীয় সরকারি শূন্যপদ পূরণ করুন! মোদির নতুন জুমলা।’’ আর রাহুল গান্ধী বলেছেন, ৮ বছর আগে বছরে ২ কোটি কর্ম সংস্থানের কথা বলা হয়েছিল। এখন তা ১০ লক্ষে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী কাজ তৈরিতে দক্ষ নন, তবে কাজ নিয়ে ‘খবর’ তৈরিতে দক্ষ।
যদিও এসব কথায় দেশের শাসকদের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। তাই অগ্নিপথ নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদের মাঝেও নিঃশব্দে চলেছে সরকার পালটানোর খেলা। মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটকের পর সেই চেনা ছকে এবার লক্ষ্য মহারাষ্ট্র। এই লেখা যখন ছেপে বেরোবে ততক্ষণে হয়তো মহারাষ্ট্রের মহাবিকাশ আঘাদি জোট সরকারের পতন ঘটে যাবে। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি উদ্ধব ঠাকরের সামনে ইস্তফা দেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে মহারাষ্ট্রে সরকার ফেলে দেবার বিজেপি'র ছক বাস্তবায়িত হবে। ট্রাজেডি বোধহয় এখানেই, মহারাষ্ট্রের শিবসেনা বিধায়করা সুরাট ঘুরে এখন ঘাঁটি গেড়েছেন আসামে। র্যাডিসন ব্লু হোটেলে রাখা হয়েছে রাজার হালে। তাদের দেখভাল করছেন তেজপুরের সাংসদ পল্লবলোচন দাস আর থাওড়া কেন্দ্রের বিধায়ক সুশান্ত বরগোহাই। আর সেই আসামেরই বড়ো অংশ এখন বন্যার কবলে। তেজপুর অথবা থাওড়া তার থেকে বাদ নেই। বিধায়ক সুশান্ত বরগোহাই-এর কেন্দ্র থাওড়া-তে ভয়াবহ বন্যা। আসাম ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির বুলেটিন অনুসারে রাজ্যের ৩২ জেলার ৫.৪৫ লক্ষ মানুষ বন্যার কবলে। যাদের অধিকাংশের কাছেই এখনও পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায়নি। রিলিফ ক্যাম্পে আছেন ২.৭ লাখ। এখনও পর্যন্ত এই বছরে বন্যায় মৃত্যু প্রায় ১০০ জনের।
রাজনীতিতে কি যেন তেন প্রকারেণ ক্ষমতা দখলই শেষ কথা? বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যকলাপে এই প্রশ্নটা বারবার ঘুরে ফিরে আসছে। উত্তর মেলেনি। যেভাবে প্রতিদিন নীতিহীন, মূল্যবোধহীন রাজনীতির গ্রাসে প্রতিদিন একটু একটু গ্রস্ত হয়ে পড়ছি আমরা তাতে এই প্রশ্নের উত্তর অদূর ভবিষ্যতে মিলবে বলেও মনে হয় না। তবু আশা জাগায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দানা বাঁধা বিক্ষোভ, আন্দোলন। তখন আরও একবার বহু চর্চিত চলচ্চিত্রের প্রভাবেই মনে মনে বলতে ইচ্ছে করে - ‘হাওয়া তেজ চলতা হ্যায় দীনকর রাও, টোপি সামালো, উড় যায়েগা...’