E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৪ মার্চ, ২০২৩ / ৯ চৈত্র, ১৪২৯

তপশিলি ও আদিবাসী মানুষদের উন্নয়নে বামফ্রন্ট সরকারের ছিল বহুমুখী ভূমিকা


অনেক সীমাবদ্ধতা, দুর্বলতা ও পরিকাঠামোগত ত্রুটি সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের তপশিলি, আদিবাসী ও পিছিয়ে থাকা প্রান্তিক মানুষদের কল্যাণে বামফ্রন্ট সরকার যে সমস্ত কাজ করেছিল তা নজির সৃষ্টি করেছিল গোটা দেশে। সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দাঁড়িয়ে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ও ভূমিসংস্কারের উপর ভিত্তি করে আন্তরিকতার সঙ্গে যে বিকল্প নীতি রূপায়ণের উদ্যোগ নিয়ে চলছিল বামফ্রন্ট সরকার, তার ফলেই তপশিলি, আদিবাসী ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া মানুষেরা নানাভাবে উন্নয়নের ছোঁয়ায় অগ্রসর হবার সুযোগ পাচ্ছিলেন।

● সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই অংশের মানুষদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বাড়িয়ে করেছিল ৬৭৮ কোটি টাকা।
● ওই সময়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৪টি বিভিন্ন শিক্ষা প্রসারের প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার।
● প্রায় ২৬ লক্ষ তপশিলি জাতি ও আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীকে (পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত) রাজ্য সরকার বই কেনা ও ফি বাবদ অনুদানের ব্যবস্থা করেছিল।
● প্রায় ৬ লক্ষ তপশিলি জাতি ও আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীকে (পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি অনাবাসিক) রাজ্য সরকার রক্ষণাবেক্ষণে অনুদানের ব্যবস্থা করেছিল। ২০১০ সালে এই অনুদান ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৭৫০ টাকা।
● ২০১০ সালে তপশিলি ও আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হোস্টেল ছিল ১,৬৬০টি। তখন প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ওই হোস্টেলগুলিতে থেকেই পড়াশোনা করত।
● ২০১০ সালে সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে ৫টি একলব্য মডেল বিদ্যালয়, ৮টি পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয় ছিল। সেগুলিতে ৬ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী শুধু হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত। এছাড়া তখন ২টি একলব্য মডেল স্কুল ও ২২টি পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু নামাঙ্কিত বিদ্যালয় তৈরির কাজ চলছিল।
● বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগেই ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে, উৎপাদন কেন্দ্রে চামড়া, বয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেবার কাজ শুরু হয়।
● বামফ্রন্ট সরকার ৬০ বছর ও তার বেশি বয়স্ক আদিবাসী মানুষদের জন্য পেনশন প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছিল।
● বামফ্রন্ট সরকার পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া এই তিন জেলার বনাঞ্চলের জমিতে পাট্টা প্রদানের প্রকল্প নিয়েছিল। ২০১০ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পে ওই তিন জেলায় ১৬ হাজার ৫৭৯টি বনাঞ্চলের পাট্টা বিতরণ করা হয়েছিল। সেই পাট্টা দেওয়া জমির পরিমাণ ছিল ৬,৪১৬.৫৩ একর।
● বামফ্রন্ট সরকার ২০১০ সালে একেবারেই নিজস্ব প্রকল্প হিসেবে তপশিলি জাতি ও আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ‘আম্বেদকর মেধা পুরস্কার’ চালু করেছিল।
● আদিবাসী মহিলাদের স্বশক্তিকরণ যোজনাঃ অনগ্রসর শ্রেণি বিভাগের অধীন পশ্চিমবঙ্গ তপশিলি ও আদিবাসী উন্নয়ন বিত্ত নিগম পরিচালিত এই প্রকল্পে আদিবাসী মহিলারা সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারতেন। ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে এই প্রকল্পে ২,৫০০ জনকে প্রায় ৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল।
● লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র-র ব্যবস্থাপনায় পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত লোকসংস্কৃতি চর্চায় নিয়োজিত দুঃস্থ সংস্থাগুলিকে বাদ্যযন্ত্র প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। বাদ্যযন্ত্রগুলি কেনা হতো পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম লিমিটেডের অন্তর্গত ‘ল্যাম্পস’ এর মাধ্যমে।