৫৮ বর্ষ ১৯শ সংখ্যা / ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ / ৯ পৌষ ১৪২৭
আন্দোলনের চাপে কলকাতা থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান সরানোর সিদ্ধান্ত রদ করতে বাধ্য হলো কেন্দ্রীয় সরকার
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্রতিবন্ধী মানুষের নাছোড় আন্দোলনের চাপে ২২ ডিসেম্বর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দু’টি ইউনিট বন্ধ করার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। গত ১৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয় ২৪ ডিসেম্বর থেকে এনআইইপিভিডি’র কলকাতা এবং সেকেন্দ্রাবাদ ইউনিট তুলে দেওয়া হবে। সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন দপ্তরের অধীন এই দু’টি ইউনিট বন্ধ করে দেওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ হন মানুষ। এর প্রতিবাদে রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী এবং এনপিআরডি’র পক্ষ থেকে ২১ ডিসেম্বর কলকাতার বনহুগলীতে বিক্ষোভ জমায়েত করা হয়। দু’টি ইউনিট বন্ধ করার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষকে। তার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিরেক্টরের তরফ থেকে একটি ই-মেইল মারফত নির্দেশিকা পাঠানো হয় কলকাতার সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন দপ্তরে। ঐ মেইলে বলা হয় ১৫ ডিসেম্বরের নির্দেশ বাতিল করার কথা। জানানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কলকাতা ও সেকেন্দ্রাবাদ ইউনিট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে।
আন্দোলনের এই জয়ে আপ্লুত হন প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষ। সংস্থার চিকিৎসক ও কর্মচারীরা বলেন, আন্দোলনের ফলেই এই জয় সম্ভব হয়েছে। কিন্তু নতুন নির্দেশিকায় আরও লেখা আছে, এই ইউনিট দু’টি অন্য বিভাগের সঙ্গে মিশিয়ে দেবার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটি বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে। এই মিশিয়ে দেবার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
প্রাথমিক জয়ের পর অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আশা দৃষ্টিহীন সহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের সমাবেশকে অভিনন্দন জানান এনআইইপিভিডি-এর সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গাঙ্গুলি। সমাবেশে তিনি বলেন, কোনো দয়া ভিক্ষা নয়। দিল্লি অভিযানে অবস্থানরত কৃষকদের মতো অদম্য সাহস ও হিম্মত নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করতে হবে। ত্রিপুরা ও আসাম সহ অন্যান্য রাজ্যে এনআইইপিভিডি’র দপ্তর প্রসারিত করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের একুশটি বিভাগ অন্যান্য সংগঠনগুলির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ভারতের প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা কমপক্ষে ১৫ কোটি, তাদের পরিবার পরিজনদের মিলিয়ে বিশাল সংখ্যক মানুষকে সংগ্রামের সাথে যুক্ত করে জবাব দিতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের এই প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে এদিন বিভিন্ন জেলা থেকে এসে শিশু-কিশোর-মহিলা-যুবতী-প্রবীণ মিলিয়ে প্রায় ১০০০ প্রতিবন্ধী অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন। কলকাতার ইউনিটটি সম্প্রসারিত করার দাবি পেশ করা হয় কর্তৃপক্ষের কাছে।