E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ১৯শ সংখ্যা / ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ / ৯ পৌষ ১৪২৭

একটি সাজানো মেনুকার্ড, সাম্প্রতিক রাজনীতি ও মেইনস্ট্রিম মিডিয়া

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


নন্দীগ্রামে এক সিপিআই(এম) কর্মীর দোকান, বাড়ি প্রথম ভাঙা হয়েছিলো ২০০৭ সালের ৫ জানুয়ারি। তখনই বেশ কিছু বাম সমর্থক ঘরছাড়া। আশ্রয় নিয়েছেন তালপাটি খালের ওধারে খেজুরির ত্রাণ শিবিরে। ৬ জানুয়ারি রাতে সেই শিবিরেই চলে হামলা। ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে খুন হয়ে যান শঙ্কর সামন্ত। লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ওই বাম সমর্থকের বাড়ি। এরই মাঝে সোনাচূড়ার এক সভায় তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী জানান একটা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। বস্তাবন্দি কিছু পোড়া জিনিস দেখানো হয় মানুষকে। মুহূর্তে দাউদাউ করে উত্তেজনার আগুন জ্বলে ওঠে নন্দীগ্রাম জুড়ে। পরে যদিও ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা গেছিলো ওটা কোনো পোড়া লাশ নয়। পোড়া রাবারের অংশবিশেষ।

গুগল ম্যাপ অনুসারে নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া বাজার থেকে তালপাটি খালের দূরত্ব প্রায় ৪.২ কিলোমিটার। আর সেই সোনাচূড়া বাজার থেকে, সোনাচূড়ার বাড়ির ছাদ থেকে বসে বসেই নর্মদা শীট, তপন কুমার মণ্ডলরা ‘নিজেদের স্বচক্ষে’ দেখেছিলেন কীভাবে বাচ্চাদের পা চিরে চিরে তালপাটি খালে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এত মানুষকে মেরে মেরে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল যে পুকুরের জলের রঙ লাল হয়ে গেছিল। যদিও কোনো পরিবার থেকেই বাচ্চা নিখোঁজ হবার কোনো অভিযোগ ছিলনা। ওই সময়েই ১৪ মার্চ থেকে নিখোঁজ ৭ নম্বর জলপাই গ্রামের সুব্রত সামন্ত। তাঁর স্ত্রী ২০০৮ সালে জানিয়েছিলেন, কলকাতা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার একটা চেক পেয়েছিলেন। সেই চেক ভাঙানোর পর জমি বাঁচাও কমিটি তাঁর থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে। সময়ের গতিতে পরবর্তী সময়ে তাঁর খোঁজ কেউ না নিলেও কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের ছাপানো বইয়ের প্রচ্ছদে অনেকেই তাঁর ছবি দেখেছেন।

রাজ্য থেকে বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হবার আগের নন্দীগ্রাম পর্বের দীর্ঘ ক্যালেন্ডারে এগুলো সামান্য কিছু ঘটনা মাত্র। লিখতে গেলে আরও অনেক কথা লেখা যায়। ১৪ মার্চ ১৪ জনের মৃত্যুর কথা লেখা যায়। বারবার ঘরছাড়া মানুষদের ত্রাণশিবিরে হামলার কথা লেখা যায়। একাধিক ধর্ষণের কথা লেখা যায়। ২৯ জন বাম কর্মী, সমর্থক হত্যার কথা লেখা যায়। তখন হয়তো ধন্দে পড়তে হবে আন্দোলনটা জমি রক্ষার ছিল নাকি চক্রান্ত করে বাম হটানোর। যেখানে এক ছাতার তলায় মাথা গুঁজেছিলেন অতি দক্ষিণ, দক্ষিণ থেকে শুরু করে অতি বাম সকলেই। তাই সেসব বিতর্কিত বিষয় থাক। ওহো। একটা কথা বলতে বেমালুম ভুলে গেছি। এসবের আগেই কিন্তু সিঙ্গুরের ধর্নামঞ্চে তৎকালীন বিরোধী নেত্রীর পাশে দেখা গেছে বিজেপি নেতৃত্বকে। সেখানে ছিলেন রাজনাথ সিং থেকে আরও অনেকে।

২০২০ সালের শেষলগ্নে এসে ২০০৬-০৭-০৮ সালের কথা হঠাৎই মনে পড়লো। রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আবহে কে বড়ো প্রতিপক্ষ - বিজেপি না তৃণমূল - এরকম একটা বিতর্ক উসকে দেবার চেষ্টা চলছে। সেটা পরিকল্পিত অথবা অপরিকল্পিত - অপরিণত মস্তিস্কের চিন্তা ভাবনা নাকি কোনো উর্বর মস্তিস্কের আইপিএল তা জানা নেই। তবে একদা তৃণমূল বিধায়ক, সাংসদ, রাজ্যের মন্ত্রী বর্তমান বিজেপি’র চোখের মণি শুভেন্দু অধিকারী গত ২২ ডিসেম্বর পূর্বস্থলীর জনসভা থেকে জানিয়েছেন - ১৯৯৮ সালে বিজেপি আশ্রয় না দিলে তৃণমূল দলটাই উঠে যেত। তিনি আরও জানিয়েছেন - আমাকে যারা বিশ্বাসঘাতক বলছেন তাদের বলবো - অটল বিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আদবানী না থাকলে তৃণমূল আজ এই জায়গায় আসতে পারত না। আমি ২০০৪ সালে তমলুকে সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে এনডিএ প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলাম। অবশ্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও খোলা গলাতেই বহুদিন আগেই জানিয়েছেন, ‘বিজেপি ইজ আওয়ার ন্যাচারাল অ্যালাই।’ আর আরএসএস তো কবেই তাঁর মাঝেই ‘দুর্গা’ খুঁজে পেয়েছে। জলে দুধ অথবা দুধে জল যাই হোক না কেন - ভেজাল তো দু’টোই। আমাদের দুধ ভেবে খেয়েই সুখ।

যদিও গত ১২-১৪ বছরে তালপাটি খাল, হলদি নদী দিয়ে অনেক জল বয়েছে। রাজ্যে সরকার বদলেছে। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় বামেদের ব্রাত্য করা হয়েছে। তবে বিজেপি-তৃণমূল আঁতাতের বিষয়ে বামেদের অবস্থান একই আছে। ২৪ ডিসেম্বর আরও একবার সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। দুর্গাপুরে এক সভায় তিনি জানিয়েছেন - “এখন ছাপ্পান্ন ইঞ্চির বিজেপি চলে এসেছে। তাঁরা বলছে তৃণমূলকে উৎখাত করবে। কিন্তু কী করছে? সারদা-নারদাতে মমতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে যে শুভেন্দু অধিকারী টাকা নিচ্ছিলো, চুরি করছিলো তিনি এখন ডাকাতি করার জন্য মোদী অমিত শাহর সাইনবোর্ড লাগিয়ে বসেছেন।’’ আর প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ ও তারকা ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ ২১ ডিসেম্বর এক ট্যুইটে বলেছেন - “চার বছর আগে মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর ওপর বিজেপি সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে স্টিং অপারেশন করেছিলো। এখন দু’জনেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন এবং ওনাদের সব পাপ মুছে গেছে।” অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেবার পরেই রাতারাতি বিজেপি’র অফিসিয়াল ইউটিউব থেকে শুভেন্দু অধিকারীর নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

“ভাত, মুগের ডাল, বেগুন ভাজা, পটল ভাজা, আলুপোস্ত, পালং শাকের তরকারি, টমেটোর চাটনি, সঙ্গে নলেন গুড়ের সন্দেশ।” “স্যালাড, ভাত, রুটি, পোস্ত দিয়ে খসলা শাক, লাউ দিয়ে মুগ ডাল, শুক্তো, ঢ্যাঁড়শ, উচ্ছে এবং পটল ভাজা, ফুলকপির তরকারি, টক দই, মিষ্টি, পাঁপড় এবং চাটনি।” “মুগ ডাল, আলু পোস্ত, শুক্তো, বেগুন ভাজা, হাত রুটি, পনিরের তরকারি, সাদা ভাত, জলপাইয়ের চাটনি, নলেন গুড়ের পায়েস।” ওপরে তিনটে আলাদা আলাদা কোটেশনে তিনটে মেনুকার্ড আছে। কোনো প্রখ্যাত ক্যাটারিং সংস্থার নয়। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার মেনুকার্ড। প্রথমটা ২০ ডিসেম্বরের আনন্দবাজার ওয়েব, দ্বিতীয়টা ১৮ ডিসেম্বরের আনন্দবাজার ওয়েব এবং শেষেরটা গত ৬ নভেম্বর হিন্দুস্তান টাইমস বাঙলা ওয়েব। একটা মেদিনীপুর, একটা বোলপুর এবং শেষটা গত নভেম্বরের বাঁকুড়া। এর সবগুলোই দেশের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খাদ্যতালিকা। রাজ্য সফরে তিনি কতটা রাজনীতি করেছেন তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তিনি কী কী খেয়েছেন। আসলে মেইন্সট্রিম মিডিয়াও তো ভালো করেই জানে পাঠকের চরিত্র। পাঠক কী খেতে ভালোবাসে। কী খবর পেতে তাদের নোলা সকসকিয়ে ওঠে। সেই অনুসারেই তারা বেছে বেছে খাদ্য পরিবেশন করে এবং আমাদের খাইয়ে থাকে। সেখানে পেছনে চলে যায় ধর্মতলার মিটিং-এ বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিং-এর হুঙ্কার - ‘ভাগ মুকুল ভাগ’। পেছনে চলে যায় ৯০ দিনের মধ্যে সারদা নারদ চোর ধরার অমিত শাহ’র ঘোষণা। দিনের শেষে আমে দুধে মিশে যায় আর আম জনতা মিডিয়ার মেনুকার্ড পড়ে বিজেপি’র নেতার বাঙালিয়ানায় উচ্ছ্বসিত হয়ে ‘আচ্ছে দিন’-এর পর এখন ‘সোনার বাঙলা’র স্বপ্ন দেখে ঘুমিয়ে পড়ে। আড়ালে চলে যায় বাঙলার মননকে কব্জা করার খেলায়, বাঙলা দখলের ছকবাজিতে বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, ক্ষুদিরাম, নেতাজি, রবীন্দ্রনাথের ওপর আগ্রাসনের গল্প। অবশ্য লাখো কৃষকের টানা অবস্থানে কয়েকজন পিৎজা খেলে ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হয়, শাহিনবাগ আন্দোলনকারীদের কেউ বিরিয়ানি খাওয়ালে ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং হয়। কিন্তু এইসব মেনুকার্ড কোনো হ্যাসট্যাগ, কোনো ট্রেন্ডিং হয় না।

এতক্ষণ অনেক রাজনীতি হয়েছে। এবার খাওয়া দাওয়ার শেষে আঁচিয়ে নিয়ে পান চিবোতে চিবোতে ছোট্ট একটা ন্যাপ দেবার আগে একটু অরাজনীতির গল্প শুনে নিলে খুব একটা মন্দ হয়না। দিল্লির একাধিক সীমান্তে গত ২৯ দিন ধরে চলা লাখো কৃষকের আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত ৩৩ জন মারা গেছেন। পথ দুর্ঘটনায়, দিল্লির হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় এবং অসুস্থতায় এঁদের মৃত্যু হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর মৃত কৃষকদের স্মরণে পালিত হয়েছে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস। সারা ভারত কিষান সভা সহ বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ওইদিন দেশের প্রায় ১ লক্ষ গ্রামে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালিত হয়। ওইদিন ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই গ্রামগুলিতে মৃত কৃষকদের স্মরণসভা, কৃষি আইন সংক্রান্ত প্রচার, প্রার্থনাসভা এবং মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়। ২০ ডিসেম্বরই কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত কৃষক আন্দোলনের লাইভ চলাকালীন ব্লক করে দেওয়া হয় কিষান একতা মোর্চার ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্ট ব্লক করার সময় ওই পেজ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনের লাইভ চলছিল। ওই পেজ ‘আনপাবলিশ’ করে দিয়ে ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয় তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন করার জন্য ওই পেজ আনপাবলিশ করা হয়েছে।

কৃষক আন্দোলন চলার মাঝেই শিখ ধর্মগুরু সন্ত বাবা রাম সিং সিঙ্ঘু সীমান্ত থেকে ফিরে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে একটি চিঠি লিখে গিয়েছেন তিনি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপি এবং আরএসএস মিলে শুধু আন্দোলনরত কৃষকদের উপর অত্যাচারই চালাচ্ছে না, শিখ সম্প্রদায়কে শেষ করে দিতে চাইছে এবং আন্দোলন থেকে শিখদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি আরও লিখেছেন - 'বন্দুক থেকে ছোঁড়া গুলি একমাত্র যার দিকে ছোঁড়া হয়, তারই শুধু মৃত্যু হয়। কিন্তু অবিচারের বুলেটে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এভাবে অবিচার সহ্য করা অসহনীয়।'

তবে কৃষক আন্দোলনকে দমানো যাচ্ছে না কিছুতেই। দিল্লি সীমান্ত অঞ্চলে যে কৃষক আন্দোলন দানা বেঁধেছে তার আঁচ এবার দক্ষিণী রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। অন্ধ্র ও তেলঙ্গানার প্রায় সমস্ত জেলার ৩০০টি জায়গায় শুরু হয়েছে কৃষক বিক্ষোভ। নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের পাশাপাশি প্রস্তাবিত ইলেকট্রিসিটি (সংশোধিত) বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের তরফে এই বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশ থেকে বহু কৃষক দিল্লি সীমান্তে কৃষক আন্দোলনে যোগ দিতে আসার সময় রামপুরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে আটকে যান। যদিও কৃষকরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লির দিকে এগিয়ে যান। পিলভিট এবং শাহজাহানপুরের এই কৃষকদের বিক্ষোভের সামনে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ রাস্তা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ওইদিনই বিজেপি শাসিত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারকে কালো পতাকা দেখান আন্দোলনরত কৃষকরা। আম্বালা সিটির অগ্রসেন চক দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাবার সময় আন্দোলনরত কৃষকরা তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান। একই দিনে সিঙ্ঘু সীমান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রক্ত দিয়ে লেখা এক চিঠিতে বলা হয় - “সুপ্রভাত নরেন্দ্র মোদীজি। আমরা আমাদের রক্ত দিয়ে এই চিঠি লিখছি। আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, আমাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমাদের অনুরোধ আপনি এই তিন আইন ফিরিয়ে নিন।” মহারাষ্ট্র থেকে কৃষকরা দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে যোগ দিতে অশোক ধাওয়ালের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করেছেন নাসিক থেকে। ২৪ ডিসেম্বরই তাঁদের দিল্লি সীমান্ত অঞ্চলে পৌঁছে যাবার কথা। ২৩ ডিসেম্বর নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর ফের সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন কৃষক প্রতিনিধিরা। তাঁরা জানিয়েছেন - ‘কৃষক সংগঠনগুলিকে বদনাম করতে চাইছে কেন্দ্র। শান্তিপূর্ণভাবে যে আন্দোলন চলছে, তাকে খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে এলাকাভিত্তিক বলে দাবি করে।’ তাঁদের আরও বক্তব্য - ‘কিছু কাগুজে কৃষক সংগঠনের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনায় বসে সরকার দেখাতে চাইছে যে, কৃষকেরা এই আইনকে সমর্থন করে।’ চেষ্টা করা হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে ‘রাজনৈতিক বিভাজন’ তৈরির। ফলে বাধ্য হয়েই আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের স্পষ্ট দাবি - ‘আইন সংশোধন নয়। একমাত্র দাবি, নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার।’

জম্মু ও কাশ্মীরের ডিডিসি নির্বাচনের ফলাফল আরও একবার দেখিয়ে দিয়েছে বিজেপি’র পিছু হটা। যেখানে ২৮০ আসনের মধ্যে গুপকার জোটের দখলে এসেছে ১০৯ আসন। বিজেপি পেয়েছে ৭৪ আসন। কাশ্মীরের ১০ জেলার মধ্যে ৯টি তে জয়ী গুপকার জোট। জম্মুতে চারটি জেলার ৬টিতে জয়ী বিজেপি। ২০১৪ বিধানসভা নির্বাচনে জম্মুর ৩৭ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিলো ২৫ আসন। ডিডিসি-তে জম্মুর ১৪০ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৭১ আসনে। শতকরার হিসেব বিজেপি’র পিছু হটাই প্রমাণ করে।

মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার মেনুকার্ড রাজনীতি আর কৃষকদের বেঁচে থাকার রাজনীতি - দু’টো এক নয়। লড়াই চলছে। লড়াই দানা বাঁধছে। লড়াইয়ের শক্তিকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য সফর, দু’টো দলবদল, তিনটে মুখরোচক রগরগে খবরের ভিড়ে মানুষের লড়াইয়ের খবর যতই পেছনে ফেলার চেষ্টা হোক না কেন, আগামীতে সামনে মেনুকার্ডের ধারাবিবরণী নয় উঠে আসবে রুটি রুজির লড়াইয়ের কথাই।