E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৫ জুন, ২০২১ / ১০ আষাঢ়, ১৪২৮

পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বামপন্থীদের প্রতিবাদ আন্দোলন

পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের ডাকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পথে নামলেন অগণিত মানুষ


হায়দরাবাদে বামপন্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি। ছবিঃ এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পেট্রোপণ্যের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার এবং অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র ও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবিতে পাঁচটি বামপন্থী দলের ডাকে ১৬ জুন থেকে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। সিপিআই(এম), সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই(এমএল) লিবারেশন - এই পাঁচ বামদলের আহ্বানে এই আন্দোলন চলছে। সর্বভারতীয় স্তরে পাঁচ বামপন্থী দল যে আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তার সাথে সঙ্গতি রেখে পশ্চিমবঙ্গে ২৪ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য বামফ্রন্ট। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রাজ্যের সর্বত্র এই আন্দোলন সংগঠিত করার আহ্বান জানিয়েছে বামফ্রন্ট।

মহামারীর ভয়াবহ অভিঘাতে সাধারণ মানুষ যখন বিপর্যস্ত, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমশ কমছে ও তারা রোজগার হারাচ্ছেন, তখন কেন্দ্রের মোদী সরকার ক্রমাগত পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে চলেছে। এর প্রভাবে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। গত ২ মে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর অন্তত ২২ বার পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। গত ৬ মাসে ৫২ বার বাড়ানো হয়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। অনেক রাজ্যেই পেট্রোল-ডিজেলের দাম সেঞ্চুরি অতিক্রম করেছে। এরই অনিবার্য পরিণতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর যেমন ভয়ঙ্কর সঙ্কট নেমে এসেছে, তেমনি দেশের অর্থনীতি গভীর মন্দায় নিমজ্জিত হয়েছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা দ্রুত কমার সাথে সাথে বাড়ছে বেকারি, বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্ষুধার মাত্রা। এই পরিস্থিতিতে বামপন্থীরা সাধারণ মানুষের স্বার্থে আন্দোলনে পথে নেমেছেন।

কলকাতায় জেলা বামফ্রন্টের ডাকে অবস্থান বিক্ষোভ।

পেট্রোপণ্যের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়া ইত্যাদির পাশাপাশি জনজীবনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সামনে রেখে মোট ১৪ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন সংগঠিত করছে বামফ্রন্ট সেই দাবিগুলি হলো - কোভিড মোকাবিলায় বিনামূল্যে সর্বজনীন টিকাকরণ ও ওষুধ সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধ ও অক্সিজেন সরবরাহে কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে; কোভিড সংক্রান্ত সরঞ্জাম সহ অক্সিজেন ও ওষুধপত্রের ওপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করতে হবে; নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে হবে; পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি করা চলবে না; কোভিড বিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির স্বার্থে গণপরিবহণ ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করতে হবে; ইয়াস সাইক্লোন টর্নেডো এবং অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; দ্রুততার সঙ্গে সমুদ্র ও নদীর স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ তৈরির ব্যবস্থা করতে হবে; 'সেইল'-এর কলকাতা দপ্তর স্থানান্তর করা চলবে না, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থার বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; রাষ্ট্রায়ত্ত অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিকে কর্পোরেশনে রূপান্তরিত করে বেসরকারিকরণের কৌশল মানছি না, মানবো না; কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে ফেলার অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে রাজ্যগুলির ওপর চাপ সৃষ্টি করা চলবে না; পশ্চিমবঙ্গকে ভাগ করার আরএসএস চক্রান্ত ব্যর্থ করুন; কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে আয়কর আওতার বাইরে সমস্ত পরিবারকে ৬ মাস ব্যাপী প্রতিমাসে ৭৫০০ টাকা করে দিতে হবে এবং কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত খাদ্যশস্য দেওয়ার কর্মসূচির সম্প্রসারণ করতে হবে। দীপাবলি পর্যন্ত ৫ কেজির পরিবর্তে খাদ্যশস্য ১০ কেজি দিতে হবে। ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, মশলা, চা ইত্যাদির 'খাদ্য কিট' বিনামূল্যে দিতে হবে।