৫৮ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৫ জুন, ২০২১ / ১০ আষাঢ়, ১৪২৮
মার্কসবাদী চিন্তাবিদ ডঃ অরবিন্দ পোদ্দারের জীবনাবসান
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিশিষ্ট মার্কসবাদী প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ ডঃ অরবিন্দ পোদ্দারের জীবনাবসান হয়েছে। গত ৩ নভেম্বর তিনি শতবর্ষে পদার্পণ করেছিলেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি কিছুদিন আগে পূর্ব কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। ২০ জুন দুপুরে সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এদিন সন্ধ্যায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
অরবিন্দ পোদ্দারের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরি, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক রজত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। মার্কসবাদে আস্থাশীল প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ডঃ অরবিন্দ পোদ্দারের জীবনাবসানে রাজনৈতিক ও সামাজিক চিন্তার জগতে ক্ষতি হলো বলে তাঁরা মন্তব্য করেছেন।
১৯২০ সালের ৩ নভেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের শ্রীহট্ট জেলায় অরবিন্দ পোদ্দার জন্মগ্রহণ করেন। বিদ্যালয় জীবনে ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের আপসবিরোধী ধারার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কারণে তিনি কলেজ জীবনে কারারুদ্ধ হন। টানা প্রায় ছয় বছর পরে দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির অল্প আগে তিনি কারামুক্ত হন। মার্কসবাদী জীবন-দর্শনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হয়েছিলেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী অরবিন্দ পোদ্দার ইংরেজি সাহিত্যে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। দেশভাগের পরবর্তী কঠিন যন্ত্রণা নিয়ে কলকাতায় পৌঁছে আরএসপি’র সর্বক্ষণের কর্মী হন। ১৯৫২-৫৩ সালে দৈনিক 'গণবার্তা'র বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীকালে বঙ্কিম মানস রচনা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেন। কমিউনিস্ট পরিচিতির জন্য কোনো কলেজেই শিক্ষকতার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ডঃ নীহাররঞ্জন রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুবাদে বর্ধমানে একটি নতুন গড়ে ওঠা কলেজে পড়ানোর সুযোগ পান। পরে তিনি সিমলার ইনস্টিটিউটে প্রায় তিন বছর শিক্ষকতা করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগেও দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন তিনি। সাহিত্য এবং সমাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ে অগণিত মূল্যবান প্রবন্ধ তাঁর বিদগ্ধ জ্ঞানের পরিচয় বহন করে। তাঁর বহু রাজনৈতিক প্রবন্ধও প্রশংসিত। তাঁর পরিবারে একমাত্র পুত্র ও পুত্রবধূ রয়েছেন।