৫৮ বর্ষ ৪৫ সংখ্যা / ২৫ জুন, ২০২১ / ১০ আষাঢ়, ১৪২৮
বেকারি ও মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ফলায় বিদ্ধ মানুষ
অর্ণব ভট্টাচার্য
করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন ব্যাপক কর্মহীনতা ও মূল্যবৃদ্ধি দেশের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশে গত জানুয়ারি মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত আড়াই কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সরকারের অবিবেচক মনোভাবের জন্যই এই বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকেই অর্থনীতির সংকোচন হয়েছে ১২শতাংশ। ইংরেজি ভি আকারের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন অর্থাৎ একবার অধোগতির পর আবার ঊর্ধ্বগতির যে গল্প শোনানো হচ্ছিল, তা এখন বাস্তবে সম্ভব নয়। আর এর মূল কারণ ব্যপক কর্মসংকোচন বলেই অভিমত প্রকাশ করেছে সমীক্ষক সংস্থা ইউবিএস সিকিউরিটি ইন্ডিয়া।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে যে, গত ছ'মাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল থাকা মানুষ। কাজ হারানো মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দৈনিক মজুরির উপরে নির্ভরশীল ছিলেন, যাদের সংখ্যা এক কোটি সত্তর লক্ষেরও বেশি। অন্যদিকে মাসিক বেতনভোগী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাও ব্যাপকভাবে কর্মহীন হয়েছেন। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সারা ভারতে বেকারত্বের হার ছিল ১৩.৬ শতাংশ। এই হিসেব করা হয়েছে মূলত যারা বর্তমানে কাজের বাজারে কাজ খুঁজছেন অথচ কাজ পাচ্ছেন না সেই সংখ্যাকে হিসেবের মধ্যে রেখে। কিন্তু অতিমারীর সময়ে একটা বড়ো অংশের মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে কাজ খোঁজাই ছেড়ে দেন। এই অংশের মানুষকে পরিসংখ্যান এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। এই দুই অংশকে যদি মিলিতভাবে হিসেব করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে ভারতে বেকারত্বের হার আরো অনেকটাই বেশি।
গত বছরের মে-জুন মাসের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এই সময়। এই মুহূর্তে যারা কর্মরত আছেন তারাও খুব ভাল অবস্থায় নেই। কাজের গুণমানের কথা বিবেচনা করতে গেলে দেখা যাবে যে তাদের অনেককেই নিম্নমানের কাজ করতে হচ্ছে। এছাড়া কাজের দীর্ঘ সময়, কম মজুরি এবং নিরাপত্তার অভাব বর্তমানে কর্মরত মানুষ কেউ অত্যন্ত দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেছে।
এই মুহূর্তে অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড়ো সমস্যা চাহিদার সমস্যা। কেননা আমাদের দেশের মানুষের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। কর্মহীনতার দরুন মানুষের হাতে অর্থের যে অভাব দেখা দিয়েছে তাকে যদি দূর না করা যায় তাহলে অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের কোনো আশা নেই।
তবে আমাদের দেশে করোনা অতিমারীর পরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটলেও অর্থনীতির অধোগতির যাবতীয় লক্ষণ অতিমারীর এক বছরেরও বেশি আগে থেকেই লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে মোদী সরকার দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে আমাদের দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক হয়ে যায় অর্থাৎ বিনিয়োগের সংকোচন শুরু হয়। ২০২০সালের মার্চ মাসে লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই দেশের দশটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ছিল ঋণাত্মক। পরবর্তীকালে করোনা অতিমারীর প্রভাবে যখন একধাক্কায় অর্থনীতির ২৩ শতাংশেরও বেশি সংকোচন ঘটে, তখন একমাত্র কৃষি ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বৃদ্ধি ঘটে ছিল(৩.৪ শতাংশ)। একদিকে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন, অন্যদিকে একটা বিপুল অংশের শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল কৃষি ক্ষেত্র। যদিও সে সময়ও কৃষকের ফসলের দাম না পাওয়া এবং অভাবী বিক্রির ঘটনা ঘটেছিল সরকারি উদাসীনতার সুবাদে। এই সময়েই আবার তিনটি জনবিরোধী কৃষি বিল এনে কৃষিক্ষেত্রকে কর্পোরেট হাঙরদের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে মোদী সরকার যার বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিরোধ এখনো চলছে।
করোনা অতিমারীর প্রথম ঢেউয়ে ভারতে ১২ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। দেশের নাগরিকদের সঞ্চয় নিঃশেষিত হয়ে যায় এবং গার্হস্থ্য চাহিদা কমে যায়। আর যাদের আয় কমেনি তারাও সতর্ক হয়ে যান এবং ব্যয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আনেন। এভাবে দেশের অর্থনীতিতে চাহিদার যে অভাব গতবছর ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছিল, তাকে মোকাবিলা করবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সরকার আদৌ গ্রহণ করেনি। গতবছর মোদী সরকার আর্থিক প্যাকেজের নামে কার্যত জনগণের সাথে নিষ্ঠুর রসিকতা করেছিল। জনগণকে অতিমারীর ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সরকারি কোষাগার থেকে জিডিপি’র মাত্র ১.৩ শতাংশ খরচ করে কেন্দ্রের সরকার। এহেন নীতির ফলে আনলকের পরে কাজ শুরু হলেও নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাস থেকে বেকারত্বের হার ক্রমশ বাড়তে থাকে যা কিনা বর্তমানে এসে চরম আকার ধারণ করেছে।
গত বছরের মতো এ বছরেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্মাণ ক্ষেত্র, উৎপাদন ক্ষেত্র, খুচরো ব্যবসা, হোটেল ও যোগাযোগ ক্ষেত্র। নির্মাণ ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন ৮৮ লক্ষ এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন ৪২ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ। হোটেল ব্যবসার সাথে যুক্ত ৪০ লক্ষ মানুষের কাজ গিয়েছে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে যুক্ত ৩৬ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। একটি বিষয় এখানে অবশ্যই উল্লেখ্য সেটি হচ্ছে, এই যে উৎপাদন ক্ষেত্রে অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়েরর সময় বিভিন্ন রকম ছাড় দেওয়া হয়েছিল এবং ৫০ শতাংশ কর্মীকে নিয়ে কাজ করবার জন্য সরকার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও মালিকপক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বাকী ৫০ শতাংশ কর্মীকে কাজ থেকে ছাঁটাই করেছে। গতবছর সরকার অন্তত একটি সার্কুলার দিয়ে প্রথম কয়েক মাস কর্মী ছাঁটাই করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। কিন্তু এ বছরে সেইরকম কোনো সার্কুলার না থাকায় মালিকপক্ষ লাগামছাড়াভাবে ছাঁটাই এবং মাইনে কাটার কাজ করে গিয়েছে। আমাদের রাজ্যে বৃহৎ শিল্পপতি বিড়লা কেশোরাম রেয়ন কোম্পানি হঠাৎ বন্ধ করে দিয়ে প্রায় তিন হাজার পরিবারকে পথে বসিয়েছে।
গত বছরের মতো এ বছরেও কৃষিক্ষেত্রে রবি ও খরিফ চাষের জন্য কিছুটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে একথা ঠিক। কিন্তু এ বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে গ্রাম ভারত যা কিনা গতবছর অতিমারীর প্রথম ঢেউয়ের সময় দেখা যায়নি। গ্রামাঞ্চলে যেভাবে এই রোগ ছড়িয়েছে তাতে গ্রামের মানুষ চরম বিপন্ন হয়েছেন। এ বছরে কৃষিপণ্যের অভাবী বিক্রি বাড়ছে এবং কৃষি ক্ষেত্র গত বছরের মতো কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একই ভূমিকা গ্রহণ করতে পারবে এমন আশা কেউ করছেন না। এবছরে আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়েছে ১০০ দিনের কাজের পরিমাণ। গতবছর যেখানে মে-জুন মাসে ৩ কোটি ৭৩লক্ষ পরিবার কাজ পেয়েছিল, সেখানে সেই সংখ্যা এ বছরে ২৬ শতাংশ কমে গিয়ে হয়েছে ২ কোটি ৭৬ লক্ষ পরিবার। সারা দেশের মতো আমাদের রাজ্যেও ১০০দিনের কাজে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই যখন গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি, তখন বোঝাই যাচ্ছে যে আগামী দিনে আমাদের দেশে কর্মহীনতা কি ভয়ঙ্কর আকার নিতে চলেছে।
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠে আসে যে এই পরিস্থিতিতে সরকার কী ভাবছে। এই মুহূর্তে সরকারের উচিত মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা, সরকারি দপ্তরের শূন্য পদে নিয়োগ করা এবং ছাঁটাই রোধ করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অথচ কার্যত এর উল্টো ঘটনা ঘটছে যা কিনা আমরা আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। এ সময় মানুষের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দিয়ে মানুষকে আর্থিকভাবে সক্ষম করবার পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক অর্থনীতিবিদ। যদিও মানুষের হাতে এইভাবে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার প্রকল্প নিয়ে সরকার খুব একটা ভাবিত নয়। অবশ্য বামপন্থীরা ইতিমধ্যে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দাবি উত্থাপন করেছেন যে আয়কর দেন না এরকম সমস্ত পরিবারকে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে মাসে দিতে হবে। খাদ্য সুরক্ষার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে মাসে দশ কেজি খাদ্যশস্য দিতে হবে। বর্তমানে আমাদের দেশে চাহিদার যে সংকোচন দেখা দিয়েছে তা দূর করার ক্ষেত্রে এই সাড়ে সাত হাজার টাকার আর্থিক অনুদান উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে।
অবশ্য সরকারের চিন্তাভাবনা ঠিক এর উল্টো খাতে বইছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়া যা কিনা পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো মাইনিং কোম্পানি, যেখানে দু’লক্ষ বাহাত্তর হাজারের বেশি কর্মী কাজ করেন সেখানে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রতিবছর পাঁচ শতাংশ কর্মী সংকোচন করা হবে। আর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এমন সময়ে যখন অতিমারী সত্ত্বেও কোল ইন্ডিয়ার মুনাফা হয়েছে ৪৫৮৮.৯৬ কোটি টাকা। এই একটা উদাহরণই বুঝিয়ে দেয় সরকার কোন পথে হাঁটতে চাইছে। এই মুহূর্তে বিনামূল্যে সর্বজনীন ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ছিল।সেকাজেও সরকার গাফিলতি করেছে। আর সরকারের এই সামগ্রিক নেতিবাচক মনোভাবের জন্য দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টির ব্যপক অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। গত মে মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে যে কনজিউমার কনফিডেন্স সার্ভে করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, দেশের নাগরিকরা বর্তমানে অর্থনীতির হাল কিংবা ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা - দুই ক্ষেত্রেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না।
এসময় আমজনতার আয় কমলেও পোয়াবারো ধান্দাবাজ পুঁজিপতিদের। সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয় ধনকুবেরদের তিনগুণ সম্পদ বেড়েছে এই সময়কালে। অতিমারীর বছরে প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত কাছের কর্পোরেট সংস্থা আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ২০০ শতাংশ থেকে ১০০০ শতাংশ হারে বেড়েছে। এবছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর মূলধনী লেনদেন ছিল সাড়ে ন'লক্ষ কোটি টাকা! ফাটকাবাজারে আদানি গোষ্ঠীর এই বিপুল আয়ের পেছনে অনেকে কেলেঙ্কারির গন্ধ পাচ্ছেন। অতীত অভিজ্ঞতার বিচারে এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো এখন দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত করছে ভয়ঙ্কর মূল্যবৃদ্ধি। করোনা অতিমারীকালে মুদিখানার দোকানের জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। পেট্রোলের দাম মাঝেমধ্যেই সেঞ্চুরি করছে এবং ডিজেলের দাম ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই ভয়ঙ্কর মূল্যবৃদ্ধির দৌলতে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা স্ন্যাপ বিজের সমীক্ষা অনুযায়ী করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় বাজারে মুদিখানার দোকানে জিনিসপত্রের বিক্রিবাটা বেশি কমেছে। এই সময় নজিরবিহীনভাবে দাম বেড়েছে ভোজ্যতেলের। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে থাকায় মানুষের জীবনধারণ করা কার্যত অত্যন্ত কঠিন হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষাতেও মূল্যবৃদ্ধির এই ভয়াবহতাকে গোপন করা যায়নি। গত মে মাসে পাইকারি মূল্য সূচকের বৃদ্ধি ঘটেছে ১২.৯৪ শতাংশ হারে। সরকারি হিসেবেও গত ছয় মাসের খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
অর্থাৎ এই মুহূর্তে দেশের মানুষের হাতে অর্থ নেই অথচ বাজারে জিনিসপত্র অগ্নিমূল্য।
এমন অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে যখন দেশের মানুষ, তখন সরকার মানুষের দুর্দশা ঘোচানোর ক্ষেত্রে কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ নেই তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। অতিমারীর সময়কে সরকার কার্যত বেছে নিয়েছে বিনা বাধায় জনবিরোধী এবং কর্পোরেটমুখী নানা রকম নীতি প্রণয়নের জন্য। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির কাজ চলছে, শ্রমিক বিরোধী শ্রম কোড রূপায়ণের জন্য রাজ্যগুলির কাছে নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে। এমতাবস্থায় গণসংগ্রাম জোরদার করা ছাড়া এই সরকারের হুঁশ ফেরানোর অন্য কোনো পথ আছে বলে মনে হয় না।