৫৯ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৫ মার্চ, ২০২২ / ১০ চৈত্র, ১৪২৮
আনিস খুনের যথার্থ তদন্ত খুনিদের শাস্তির দাবিতে হাওড়ায় বামফ্রন্টের সমাবেশ
হাওড়ায় বামফ্রন্টের সমাবেশে বলছেন বিমান বসু।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ এ রাজ্যের স্বৈরাচারী সরকার অপরাধীদের পক্ষে। তাই আনিস খানের মতো ছাত্র নেতা খুন হন। তাই রামপুরহাটে গণহত্যা সংগঠিত হয়। আর তদন্তের নামে প্রহসন হয়। দোষীরা ঘুরে বেড়ায় প্রকাশ্যে। তাই অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন জারি রাখতে হবে। জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে, শ্রমিকের দাবি, কৃষকের দাবি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের ন্যায্য দাবি দাওয়ার লড়াই সংগ্রামের সঙ্গে মানুষমারা নীতির বিরুদ্ধে রাজ্যে শান্তিতে থাকার দাবিকে জুড়ে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনে শামিল হতে হবে আমাদের সবাইকে। ছাত্র-যুবরা যারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বলে পুলিশ মামলা করেছে, সেই সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। আদায় করতে হবে ইনসাফ। ২২ মার্চ হাওড়ার পাঁচলায় এক জনসভায় একথা বলেন রাজ্য বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ।
বামফ্রন্টের ডাকে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন হাওড়া জেলা বামফ্রন্ট কমিটির আহ্বায়ক এবং সিপিআই(এম) হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। আনিস খানের খুনিদের শাস্তি এবং হাওড়া জেলার গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অপসারণের দাবিতে ডাকা সভায় বক্তব্য রাখেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান, সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বিমান বসু, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চ্যাটার্জি, আরএসপি’র সর্বভারতীয় সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। সভা শেষে সভাস্থল থেকে রানিহাটির মোড় পর্যন্ত মিছিল হয় বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম সহ বাম নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে।
সভায় বিমান বসু বলেন, ছাত্রনেতা কমরেড আনিস খানের খুনিদের শাস্তির দাবিতে এবং খুনিদের চিহ্নিতকরণের কাজে প্রশাসনের অবহেলার প্রতিবাদে এই সভা। এখানে আজ গোটা রাস্তা জুড়ে মানুষের মাথা। কিন্তু বিধানসভায় বামফ্রন্টের কোনো প্রতিনিধি থাকলে সভার ভেতরেই কর্মসূচি নেওয়া যেত এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে আমি ছাত্র যুব সমাজকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাব তারা যেভাবে সারা রাজ্যে আনিস হত্যার প্রতিবাদে মুখরিত হয়েছে তার জন্য।
তিনি বলেন, কে এই আনিস খান? কমরেড আনিস আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত এক মেধাবী ছাত্র। যে প্রতিবাদ করেছে সিএএ, এনআরসি’র। সে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে ছাত্রদের লড়াই-সংগ্রামের শীর্ষে ছিল। তাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হলো। তার মৃত্যু রহস্যকে বিশেষ তদন্তকারী দল গড়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আনিস খানের বাবা মনে করেন সিটের তদন্তে কোনো লাভ হবে না। আমরা মনে করি, বিচারবিভাগীয় তত্ত্বাবধানে তদন্ত হোক। কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা বামফ্রন্টে আলোচনা করেছি আনিস খানের খুনিদের শাস্তির দাবি, দেউচা-পাচামি যেখানে মানুষের জল জঙ্গলের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তার প্রতিবাদ এবং রামপুরহাটে যে গণহত্যা হয়েছে তার দোষীদের শাস্তির দাবি - এইসব ক'টি বিষয়কে যুক্ত করে নিতে হবে আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চের সাধারণ ধর্মঘটের দাবিগুলির সঙ্গে। দাবি আদায়ের জন্য ধর্মঘটকে সবদিক থেকে সফল করতে হবে। তা সফল করার জন্য আপনাদের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, যে সরকার পশ্চিমবঙ্গে চলছে তা অরাজকতা সৃষ্টি করার সরকার। এরা এটাই ভালো পারে। যে গণহত্যা সংঘটিত হলো তা কার্যকারণ সম্পর্কহীন নয়। রামপুরহাটে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই এই ধরনের জঘন্য হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলো। এ কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব গণআন্দোলনকে বিকশিত করতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুসাধ্য করতে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিক কৃষক খেতমজুর ও সাধারণ গরিব মানুষের স্বার্থ দেখার জন্য আন্দোলনে শামিল হতে। সস্তায় বাজিমাত করার রাজনীতি বামপন্থীরা কখনো করে না, ভবিষ্যতেও কখনো করবে না। ন্যায্য দাবির ভিত্তিতে লড়াই সংগ্রাম গড়ে তোলার সেই কাজে আমাদের সকলকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আগামী দিন কুসুমাস্তীর্ণ নয়, কাঁটা বিছানো। লড়াই-সংগ্রাম আগামীদিনে আরও জোরদার করতে, মজবুত করতে অনুরোধ করবো আপনাদের। লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া এই স্বৈরাচারী সরকারের অপশাসন, তার নীতিকে পরাস্ত করা কখনোই সম্ভব না।
এদিনের সভা ঘিরে পুলিশের নেতিবাচক ভূমিকার সমালোচনা এলাকাজুড়েই শোনা গেছে। এ রাজ্যের পুলিশ তার কুকর্মের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদের লব্জ শুনতে চায় না। তাই রানিহাটি এলাকায় এই প্রস্তাবিত সভার আয়োজন শুরু থেকেই ভেস্তে দেবার চক্রান্ত করেছিল তারা। সে জন্যই সভার অনুমতি মেলে শেষ মুহূর্তে। তাই রাস্তার ধারের জনবহুল জায়গায় নয়, জয়নগর বাজার সংলগ্ন ডিএন মার্কেটের সামনে অপরিসর এলাকায় সভা করতে বাধ্য করে পুলিশ। উদ্দেশ্যটা খুব পরিষ্কার ছিল, মানুষের যাতায়াতের অসুবিধে তৈরি করে বামপন্থীদের সম্পর্কে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করা। কিন্তু ঘটলো তার ঠিক উল্টোটা। হাজার হাজার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত পুলিশি চক্রান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাখোলার মোড়ের পর থেকেই ভিড়ে ছয়লাপ করে সফল করে দিলেন বামফ্রন্টের জনসভাতে।
হাওড়ার সমাবেশে বলছেন মহম্মদ সেলিম। মঞ্চে বিমান বসু সহ নেতৃবৃন্দ।
এদিনের সভায় মহম্মদ সেলিম বলেন, আপনারা বুঝতে পারছেন আনিস খান খুন হলো, পুরসভার নির্বাচনের পর দেওয়ালে লিখে দেওয়া হলো মেয়েদের ইজ্জত নেওয়া হবে আর তার জেরে প্রাণ গেল তুহিনা খাতুনের। তারপর পানিহাটি ও ঝালদার ঘটনা ঘটলো। আর আজকে রামপুরহাট। মুখ্যমন্ত্রীর হাওয়াই চপ্পলের প্রত্যেকটা ছাপে রক্ত লেগে আছে। এই রক্তের মিছিল আনিস খানের বাড়িতে শেষ হয়নি। তুহিনার বাড়িতে শেষ হয়নি। পানিহাটিতে শেষ হয়নি। ঝালদায় শেষ হয়নি। রামপুরহাটে শেষ হবে না। আপনার আমার বাড়িতে তা পৌঁছবার আগেই এই মিছিলটাকে শেষ করে দিতে হবে। আমরা কি অন্ধকারকে স্বাগত জানাবো, আলোর জন্য লড়াই করব না?
রামপুরহাটের গণহত্যার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাড়িতে শেকল তুলে দিয়ে আমার ভাই বোন মাকে পুড়িয়ে মারবে এভাবে বাংলাকে শেষ হতে দেবো আমরা? রামপুরহাটে যারা মারা গিয়েছেন তারা তৃণমূল সমর্থক হতে পারেন কিন্তু তারা আমাদের ভাই। ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার’। ওরা আমার মায়ের সন্তান।
গুজরাট দাঙ্গার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলার পরিস্থিতির মিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০২ সালে যখন প্রাক্তন এমপি এহেসান জাফরির বাসস্থান গুলবর্গা সোসাইটিকে দাঙ্গাবাজরা ঘিরে ফেলেছিল তখন বারবার ফোন করে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ‘চারো তরাফ সে ঘের লিয়া হ্যায়’, কেউ আসেনি। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল তাঁদের। তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর নাম নরেন্দ্র মোদি। বরদাস্ত করলে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছায় আপনারা কি এবার বুঝতে পারছেন? পশ্চিমবাংলাকে নাকি বাঁচানোর জন্য নবান্ন এসেছেন এই মুখ্যমন্ত্রী! রং আর ঢং পাল্টে ওই কাজটাই এখানে করা হচ্ছে।
তিনি আনিস খুনের প্রতিবাদে ছাত্র যুবদের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, রাজ্যের বামপন্থী ছাত্র যুব সহ দেশ-বিদেশের ছাত্ররা সঙ্গে সবাই যারা নিজেদের শিরদাঁড়া বেচে দেয় নি, রাস্তায় নেমে আনিস খানের খুনিদের শাস্তির দাবিতে, ন্যায় চাইতে রাস্তায় নেমেছে। ইনসাফ চেয়েছে। প্রথম দিনই আমরা আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন এখানে এলে মিডিয়া বলতো মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছে। একথা আনিস খান মারা যাবার পরে আমি সালেম ভাইকে বলেছি, ওর ভাগ্নি মুসকানকে বলেছিলাম। এদিকে দিদিমণি বললেন, সবুর করো সিট করে দিয়েছি। আজকেও রামপুরহাটে এত জনকে পুড়িয়ে মারার পরে নবান্ন বলছে, সিট করে দিয়েছি। এই সিট মানে এসআইটি অর্থাৎ সাপ্রেশন অফ ইনফর্মেশন এন্ড ট্রুথ। তথ্যকে এবং সত্যকে ধামাচাপা দেবার জন্য।
তিনি বলেন, নবান্ন থেকে এখানে দালাল পাঠানো হয়েছিল আনিসের বাবার কাছে চাকরি দেওয়ার নাম করে। আমি আগে আনিস খানের বাড়ি যাইনি। আর আজ আমি তীর্থ করতে গিয়েছিলাম ওখানে। আনিসের বাবা সালেম খান সহ ওনাদের বাড়ির সবাই বলেছেন, বেইমানির টাকায় বেইমান কেনা যায়। সালেম খানকে কেনা যায় না। উনি বলেছেন আমি নবান্ন যাব না। যদি প্রয়োজন হয় নবান্ন আমার কাছে আসবে।
তিনি ২০১২ সালে মগরাহাটের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পর তদন্তের ব্যর্থতার উল্লেখ করে বলেন, হক আদায় করব। আর যারা মনে করছেন আনিসকে, তুহিনা-কে খুন করে রামপুরহাটে গণহত্যা করে বাংলাকে চালাবো তাদের টেনে নামাবো। এই বাংলায় তাদের কবর খুঁড়ব। এই হাওড়ার গ্রামীণ এসপি তৃণমূলের দালাল। ওর উর্দির নিচে অন্তর্বাস তৃণমূলের ঝাণ্ডা দিয়ে তৈরি। এর অপসারণ না হওয়া অবধি আমাদের আন্দোলন থামবে না। আমি আজ আনিসের কবরে ফুল ছড়িয়েছি ওর কবরের মাটি ছুঁয়ে কসম খেয়েছি ইনসাফ আমাদের পেতেই হবে।
ছাত্র খুনের প্রতিবাদে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতা-নেত্রীদের প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সিএএ-এনআরসি’র বিরুদ্ধে এই আনিসরা যেদিন কলকাতা জুড়ে পথে নেমেছিল সেদিন মোদি কলকাতায় এলেও সড়কপথে কোথাও যাবার সাহস দেখাননি। গিয়েছিলেন হেলিকপ্টারে চড়ে। আর মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেদিন আনিস স্লোগান তুলেছিল মোদির দালাল মমতা, জেনে গেছে জনতা, আর যারা খুন করল আনিসকে, তাদের না ধরে যারা প্রতিবাদ জানাতে গেল সেই মীনাক্ষী সহ অন্য ছাত্র-যুবদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হলো। এটা আমরা মেনে নেব না। তাই সবাইকে রাস্তায় নামতে হবে।
মোদি-মমতার কাজের মিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে যেসব খুন হচ্ছে তা কার কর্মসূচি, যা পালন করছে এই সরকার? প্রশাসন বলার আগে তৃণমূলের নেতারা বলছে সিট গঠন করে দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন। জেলায় জেলায় মিটিং করে তিনি ভাব দেখান অনেক কিছু তিনি জানতেন না। কিন্তু ওনার ইশারা ছাড়া কিচ্ছু নড়ে না। এই আমতা থানার পুলিশদের সাহস হতো যদি না তার উপরের কেউ বলতো আনিসকে খুন করার কথা। ‘ক্রোনোলজি’ বুঝতে হবে। এই খুনের প্রতিবাদে বামপন্থীরা রাস্তায়। কোথাও পথসভা ও মিছিল এবং রাস্তা অবরোধ হচ্ছে। যারা আমাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তাদের আমরা ঘুমাতে দেবো না।
তিনি বলেন, দক্ষিণপন্থীরা আমাদের জাতপাত ধর্মের নামে, মহিলা-পুরুষ, শহর-গ্রামের নামে, কৃষক খেতমজুর, বাংলাভাষী, উর্দুভাষী নামে তারপর শিয়া সুন্নির নামে ভাগ করে। তারপর যখন আমরা ভাগাভাগি হয়ে যাই তখন ওরা বলে আমাদের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এবার বিরোধীশূন্য করতে হবে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-পুরসভা-বিধানসভা বিরোধীশূন্য করতে চেয়েছে ওরা এভাবেই। আগে বামপন্থীরা আক্রান্ত হয়েছে এদের হাতে, তখন কেউ কেউ বলেছে এদের এরকম হওয়া উচিত। আর আজকে কেউই নিরাপদ নয়। এই সিলেবাস কার? এটা মোদি-অমিত শাহদের। ওরা বলেছেন পার্লামেন্ট বিরোধীশূন্য করতে হবে। এখানে তার সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়েছে তৃণমূল। যেমন অনুব্রত এখন বলছে টিভি ফেটে আগুন লেগেছে। আগে বলছিল নকুলদানা খাওয়াবে, তারপর চড়াম চড়াম ঢাক বাজাবে, তারপর বলেছিল ধানের গোলায় আগুন - লাগাবে এসবই ‘ক্রোনোলজি’।
তিনি বলেন, বামপন্থীদের ওরা চেনে, জানে আমরা দাঙ্গা বিভাজন রুখে দেব। বামপন্থীরা কোমর নোয়ায়নি, শিরদাঁড়া বিক্রি করে দেয়নি। তাই এখানে ধূলাগড়ে যখন দাঙ্গা হয়েছে তখন সীতারাম ইয়েচুরিকে নিয়ে এসেছিলাম, ঢুকতে দেয়নি ওরা। চাঁপদানিতে, বসিরহাটে, আসানসোলে ওরা আমাদের ঢুকতে দেয়নি। ওখানে আরএসএস-কে ঢুকতে দিয়েছে। বাংলা কোন্ পথে চলবে? এই বাবুল সুপ্রিয় আগে বলেছেন মুসলমানদের দেশের বাইরে বার করে দেবেন। ওরা কসাই। লুঙ্গি পড়লেই কসাই? আর এখন মাথায় টুপি পড়ে শবেবরাত করছেন। উনি তাদেরকে টুপি পড়াচ্ছেন, যাদেরকে মাথায় হিজাব পড়ে টুপি পরাচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি।
মহম্মদ সেলিম বালি খাদান এবং পাথরের নকল টোল আদায় প্রসঙ্গে অভিযোগ করে বলেন, অনুব্রত বলছে তৃণমূল বলছে রামপুরহাটে রাজনীতি নেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে, কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের মারপিট হচ্ছে। মরছে তৃণমূল, এখানে রাজনীতি নেই? আসলে এটা ভাগবাটোয়ারার সমস্যার ব্যাপার, লেনদেনের ব্যাপার। এটা মমতা ব্যানার্জি জানেন।
তিনি বলেন, আমরা গ্যাসের দাম জিনিসপত্রের দাম কেন বাড়লো এসব নিয়ে ভাববো না? প্রশ্ন তুলবো না? শিক্ষা স্বাস্থ্যের অধিকারের কথা, আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ-এর দাবিগুলোর সঙ্গে রামপুরহাটের এর গণহত্যার অপরাধীদের শাস্তির দাবি, আনিস খুনের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিও আমরা করছি একসাথে। কারণ, আনিস খানের হত্যাকারীদের শাস্তি না হলে তুহিনার হত্যাকারীরা শাস্তি পাবে না, তুহিনার হত্যাকারীরা শাস্তি না পেলে রামপুরহাটের অপরাধীরা শাস্তি পাবে না। তাই সব দাবি একত্র করে লড়াই করতে হবে, সফল করতে হবে ২৮-২৯ তারিখের ধর্মঘট। আমাদের দাবি,ছাত্র-যুবদের যারা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। মানুষ শান্তি চান। সাধারণ মানুষ যদি শান্তিতে না থাকেন তাহলে পঞ্চায়েত জেলা পরিষদ থেকে নবান্ন - যেখানে যে আছেন তাদেরও আমরা শান্তিতে থাকতে দেবো না।