৫৯ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৫ মার্চ, ২০২২ / ১০ চৈত্র, ১৪২৮
এনাফ ইজ নট এনাফ?
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
“আন্ধারে কি কব রোজ রৌশনে আন্ধার। হিপ হপ দুপ দাপ হুঙ্কার হাঁকার।।” অথবা “হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন;”। রায় গুণাকর ভারতচন্দ্র অথবা মাইকেল মধুসূদন দত্ত– কোনটা ঠিকঠাক প্রযোজ্য কে জানে! এখনও পর্যন্ত ভেবে ভেবেও কূল কিনারার সন্ধান নেই। খুঁজতে হবে। খুঁজতে হবে আরও। তবে তো মিলবে ঈপ্সিত! যদিও এই বাংলাতেই চারপাশে এত এত মণিমাণিক্যের সন্ধান গত কয়েকদিনে আবিষ্কৃত হয়েছে রাশিয়া, ইউক্রেন, ন্যাটো, পুতিন, বিডেন, জেলেনস্কিও হয়তো সেখানে শিশু। রবীন্দ্রনাথ তো কবেই বলে গেছেনঃ “বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি।” অতএব সত্যজিতের ভাষায় ‘‘জানার কোনো শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই’’ - বলে ঘাপটি মেরে বসে থাকা যেতেই পারে। যদিও সেই তিন বাঁদরছানার মতো চোখ কান মুখ ঢেকে কতদিন তথাকথিত অ্যাপলিটিকালরা লুকিয়ে থাকেন সেটাই দেখার। মানুষ বিচক্ষণ! মানুষ বুদ্ধিমান! সুতরাং ‘গৌরচন্দ্রিকা’র আলাদা করে ভাবসম্প্রসারণের প্রয়োজন বোধহয় নেই। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে এঁদের কেউ বলেছেন, “মার্জনা করবেন, কোনো মত দেব না”। আবার কেউ বলেছেন, “আমি তো বাইরে, ঘটনাটা জানি না”। আবার কেউ বলেছেন, ‘‘কবিতা উৎসবে আছি, বিষয়টা জানি না”। কেউ বা বলেছেন, “এই মুহূর্তে শটের মাঝে রয়েছি”। ভাড়াটে বাহিনীর কবিতা, গান, উৎসবে ব্যস্ত থাকার মাঝেই পুড়ে মরেছেন দশ, নাকি বারো অথবা তার চেয়েও বেশি কিছু মানুষ।
রজ্জুতে সর্পভ্রম নাকি সর্পতে রজ্জুভ্রম কে জানে। নাকি রজ্জুতেই প্রাণসঞ্চার হয়ে সাপ হয়ে ছোবল মারতে উদ্যত! যতদূর মনে পড়ে পঁচাত্তর পঁচিশের ভাগাভাগির কথা প্রথম বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী দোলা সেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে পুরুলিয়ায় দলীয় এক কর্মীসভায় তিনি খুব স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তোলা তোলবার পর কতটা নিজের কাছে রাখতে হবে আর কতটা দলকে দিতে হবে। তাঁর বয়ানে, “আজ অবধি কত তুলেছেন, ব্যাঙ্কে কত রেখেছেন, বাড়ি কত নিয়ে গেছেন সব হিসেব করে চার আনা আপনাদের কাছে রেখে বারো আনা পার্টি ফান্ডে দিয়ে দেবেন।” অর্থাৎ তৃণমূলে তোলাবাজির প্রকাশ্য স্বীকৃতি তাঁর মুখ থেকেই। আর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ২০১৯-এ তারকেশ্বর হুগলীর প্রশাসনিক সভায় বলেছিলেন, “আই ক্যানট গিভ দ্য কাটমানি অফ দ্য কমিশন ভাগ করে খাওয়ার চেষ্টা করো। একা সব খাবো হয় না।” নিজেদের অভ্যেস মতো কিছু বাম নেতা কর্মী বিষয়টা নিয়ে আমাদের সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। আমরা গায়ে মাখিনি। সবকিছু অত ধরলে হয় নাকি! তাই আমাদের স্বভাবমতো আমরা তা নিয়ে হাসি মস্করা করেছি, মিম বানিয়েছি, ফেসবুকের দেওয়ালে দু’চার খান বিবৃতি দিয়েছি, কেউ কেউ হয়তো কবিতাও লিখেছেন। তারপর যথানিয়মে ভুলে গেছি। ব্যস্ত হয়ে পড়েছি বেড়াতে যাওয়ার অথবা পিকনিকে খাওয়ার ছবি দিতে। সেদিন আদৌ গুরুত্ব দিইনি, গুরুত্ব দিয়ে ভাবিনি পঁচাত্তর পঁচিশের ভাগাভাগির তত্ত্বের অন্তর্নিহিত অর্থ। আদৌ বুঝিনি সমাজের কোন্ তৃণমূলস্তর পর্যন্ত তৃণমূল সুকৌশলে পৌঁছে দিয়েছে এই খাবলা খাবলিকে। হয়তো বগটুই কাণ্ড না হলে আবার এইসব পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটার কোনো প্রয়োজন হত না। বিষবৃক্ষে ফল ধরিয়াছে কী?
বীরভূমের রামপুরহাটের কাছে বগটুই নামের একটা যে গ্রাম আছে, সেখানে বড়শাল বলে একটা পঞ্চায়েত আছে, সেখানে ভাদু শেখ বলে দোর্দণ্ডপ্রতাপ এক তৃণমূল নেতা আছে তা আমরা অনেকেই জানতাম না গত সোমবার রাত পর্যন্ত। আমি তো সত্যিই জানতাম না। জেনেছি মঙ্গলবার দুপুরে। তার আগেই অবশ্য ভাদু শেখ নিহত এবং সেই হত্যার প্রতিক্রিয়ার একটা গোটা গ্রাম জুড়ে বারবিকিউ উৎসব উদ্যাপনের পর। তখনই জেনেছি, পুলিশ থানার সামান্য এক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালক কীভাবে রাতারাতি ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে গেছেন। এলাকাকে বিরোধীশূন্য করে দিয়েছেন। ২০১৩ আর ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির উপপ্রধান হয়েছেন। সিসি টিভিতে মোড়া প্রাসাদোপম বাড়ি, একাধিক গাড়ি, রাশি রাশি টাকার মালিক হয়েছেন। এলাকার একচ্ছত্রাধিপতি হয়েছেন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার বয়ান অনুসারে, ‘‘তিনি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত ছিলেন’’। আর নিন্দুকদের বিবরণ অনুসারে, ভাদুর উত্তরণ ঈর্ষণীয়। সামান্য ট্রাক্টর ড্রাইভার। সেখান থেকে ছোটো গাড়ির ব্যবসা। গাড়ি ব্যবসার সূত্রেই পুলিশের সঙ্গে দহরম মহরম। ‘‘পুলিশ অফিসাররা যে গাড়িতে চড়েন সবই তো দিতো ভাদু। গাড়ি একটু পুরনো হতেই অফিসারদের বলতে দেরি হতো, তার আগেই ভাদু পৌঁছে দিত নতুন গাড়ি। যাতে পুলিশ দপ্তরের গাড়ি ভাড়া খাটানোর কারবারে কেউ ঢুকতে না পারে।” স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ডাম্পারের ব্যবসা, পাথর খাদানের রাস্তার টোল আদায়, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজে লুটের রাজত্ব, ইলেক্ট্রিকের দোকান, হার্ডওয়্যারের ব্যবসা, কাচা টাকার লেনেদেনে মাত্র কয়েক বছরেই ফুলে ফেঁপে উঠেছিল এই তৃণমূল নেতা। একাধিক রাস্তার টোল আদায় থেকে খুব অল্পসময়ে কোটি কোটি টাকার মুনাফা করেছিল নিহত তৃণমূল নেতা। আর ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি খুন হয়ে গেছিলেন ভাদু শেখের দাদা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বাবর শেখ। সেবার মোটরবাইক আটকে মাথায় গুলি করে খুন করা হয় বাবর শেখকে। আর একবছর দু’মাস পরে বোমা মেরে, গুলি চালিয়ে খুন করা হল ভাদু শেখকে।
‘‘আমার স্বামী একাই খেতো না সবাইকে খাওয়াতো, তাও উয়ারা সহ্য করতে পারল না’’ এই বয়ান নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের স্ত্রীর। এর পাশাপাশি আছে বয়ান, পাল্টা বয়ান। এক গ্রামবাসী যেমন জানিয়েছেন, ভাদুর সকলকে নিয়ে চলার কথা। একা না খাবার কথা, সবাইকে ভাগ দিয়ে খাবার কথা। আবার ভাদুর বিরোধী গোষ্ঠীর বক্তব্য, তাঁদের দলবল নিয়েই ভাদু সব করেছে। এখন হাতে ক্ষমতা পেয়েই নিজের দাপট দেখাচ্ছিল। তাই আমরা ভাদুর দিক থেকে সরে গেছিলাম। অর্থাৎ লড়াইটা যে তৃণমূল বনাম তৃণমূলে, যার পেছনে খাওয়াখাওয়ি, ভাগ বাঁটোয়ারার একটা অদৃশ্য অথবা দৃশ্য গল্প যে ভাদু শেখের মৃত্যুর সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে, তা বোঝার জন্য ফেলুদা বা ব্যোমকেশের দরকার নেই। দরকার পড়বে না শার্লক হোমসেরও। এটুকু বুঝে নেবার জন্য তোপসে, অজিত বা ওয়াটসনরাই যথেষ্ট।
২১ এপ্রিল, সোমবার সন্ধ্যায় ভাদু শেখের হত্যাক্রিয়া এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার কথা এতক্ষণে আমরা সবাই জেনে গেছি। কীভাবে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ‘তোলাপাড়িয়ে উঠল পাড়া’, জ্বালিয়ে দেওয়া হলো বাড়ির পর বাড়ি তার বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে। অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, দুষ্কৃতীদের নৃশংসতার হাত থেকে নিস্তার পায়নি শিশুরাও। আত্মীয়দের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রথমে কুপিয়ে খুন করা হয়। তারপর তাদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুই শিশুকেও একইভাবে কুপিয়ে খুন করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। হতদের আত্মীয়রাও বিভিন্ন রকম দাবি করেছেন। যদিও কোনটা স্বীকৃত আর কোনটা অস্বীকৃত তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনোরকম তদন্তের আগেই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘টিভি বা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছিল’’। অন্যদিকে এক মৃতের আত্মীয় মিহিলাল শেখের দাবি ভাদু শেখের ঘনিষ্ঠ অনুগামী স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনই এই বহ্ন্যুৎসবের মূল হোতা। মৃতদের পরিবারের দাবি ঘটনার দিন প্রথমে ৮ জনকে খুন করা হয়। এরপর ডিজেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। মৃতদের মধ্যে আছে একাধিক মহিলা ও শিশু। পেশায় রাজমিস্ত্রি ভাসান শেখ পাশেই পশ্চিম পাড়ায় পিসির বাড়িতে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ওই বাড়িতে ঢোকার আগে দুষ্কৃতীরা বোমা মারে। তারপর তাঁর মাকে প্রথমে কুড়ুল দিয়ে ঘাড়ে, মাথায়, পেটে কোপ মারে। তাতেও না থেমে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি নিজের চোখে দেখেছে তাঁর ভাইপো ও ভাগ্নীও। সেই বোমার শব্দে তাঁরা ঘর থেকে পালিয়ে বাথরুমের পাশে ঝোপের আড়ালে অন্ধকারে লুকিয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করে।
একই দাবি করে বড়শাল পঞ্চায়েতের কামাখ্যা গ্রামের তৃণমূল সদস্য নিউটন শেখ অভিযোগ করেন, সবাইকে কুড়ুল দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে পেট্রোল ঢেলে পোড়ানো হয়েছে। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পশ্চিমপাড়ার আপাং শেখ, নূর মহাম্মদ ও লালন। মূল পান্ডা এই লালনই। তিনি বলেন, ‘‘লালন শেখ এখন উত্তর ২৪ পরগনায় এক পীর সাহেবের বাড়িতে রয়েছে। সেখান থেকেই খুনের হুমকি দিচ্ছে।’’ আর এই ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়ার উত্তরে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘ইনসিডেন্ট ইজ আনফরচুনেট’’। কেমন লাগে পোড়া মানুষের গন্ধ?
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেনঃ ‘‘নৃশংস ভয়াবহ গণহত্যার পর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ‘কয়েকটি মৃত্যু’! এটা রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীর বিষয় নয়। রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তার বিষয়। কেন রাজ্যপালকে চিঠি লিখছেন মমতা বানার্জি? যা জানানোর রাজ্যের মানুষকে সরাসরি জানাচ্ছেন না কেন?’’ মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, এই যে এখন এতো পুলিশ দেখছেন, সোমবার সন্ধ্যায় যখন অসহায় মানুষদের গুন্ডারা পোড়াচ্ছিল, তখন এরা আসেননি। গুন্ডারা বন্দুক-বোমা-রিভলবার নিয়ে তাণ্ডব করছিল। চারটে গাড়ি নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল এই পুলিশগুলো। এদের বড়ো কর্তারা এই অবৈধ বালি খাদানের টাকা খায়, তাদের টাকাতে গাড়ি চড়ে, বৌয়ের গয়না গড়িয়ে দেয়। তাই গুন্ডাদের কেউ কিছু বলে না। আমাদের অফিসাররা অপদার্থ। আর এই পুলিশগুলো অসহায়। এইজন্য এরাও মারা যায়।
এই প্রসঙ্গে একটা কথা বোধহয় উল্লেখ করা যেতেই পারে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনের সময় নন্দীগ্রামের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পুলিশের ড্রেস পরে সেদিন গুলি চালিয়েছিল শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারীর ভাড়াটে দুষ্কৃতকারীরা। বাপ-ব্যাটার পারমিশন ছাড়া সেদিন পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি। আমিও একটা গরমেন্ট চালাই। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে গুলি চালনার বিষয়টা সবই জানতেন। ক্ষমতায় না থেকেও। আর বগটুইতে পুলিশের পোশাক পরে, হাওয়াই চটি পরে কেউ আসেনি। তাহলে এবার কাদের অঙ্গুলিহেলনে বগটুই গণহত্যা? কারা এসেছিল সেদিন রাতের অন্ধকারে? কারা খুন করল, জ্বালিয়ে দিয়ে গেল নিরীহ কিছু শিশু মহিলাকে, পুলিশ মন্ত্রীর তো তা জানার কথা। নন্দীগ্রামের ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যাদের দিকে এখন অভিযোগের আঙুল তুলছেন তাঁরাও তো সেই সময় তৃণমূলেই ছিলেন। ভবিষ্যতে কী এরকমই কোনো স্বীকারোক্তি আবার আমরা শুনতে পাবো?
পোড়া মাংসের একটা আঁশটানি গন্ধ আছে বলে শুনেছি। ঘ্রাণশক্তি প্রবল না হলে হয়তো সে গন্ধ অনুভূত হয় না। আবার অতি প্রবল ঘ্রাণশক্তিসম্পন্নরা ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ হন বলে, কবিতা উৎসবে বা শ্যুটিং-এ ব্যস্ত থাকেন বলে সে গন্ধ খুব সহজে হজম করে ফেলেন। আর ‘মাস’ - এরা মাসের পর মাস অপেক্ষা করেন সঠিক সময়ের জন্য। শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টা করেন আশপাশের খড়কুটো ধরে। যদিও ঘটনাক্রম তাতে থেমে থাকে না। ঘটতেই থাকে, ঘটতেই থাকে। লিস্ট বাড়ে। তালিকায় নাম যোগ হয়ে যায় একের পর এক। সব নাম ধীরে ধীরে শবের তালিকায় ঢোকে। একসময় মলিন হয়ে যায়। থেকে যায় শুধু ক্ষতচিহ্ন। হারিয়ে যায় কিছু পরিবার। তবু প্রশ্ন জাগে, এই অনাচার আরও কতদিন?