E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ১৫ সংখ্যা / ২৫ নভেম্বর, ২০২২ / ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪২৯

ব্যর্থতাই শেষ কথা নয়

শান্তনু দে


আমি ভয় করব না ভয় করব না।
দু বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না।
তরীখানা বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে -
তাই ব’লে হাল ছেড়ে দিয়ে ধরব না, কান্নাকাটি ধরব না।
শক্ত যা তাই সাধতে হবে, মাথা তুলে রইব ভবে -
সহজ পথে চলব ভেবে পড়ব না, পাঁকের ’পরে পড়ব না।
ধর্ম আমার মাথায় রেখে চলব সিধে রাস্তা দেখে -
বিপদ যদি এসে পড়ে সরব না, ঘরের কোণে সরব না।


- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অক্টোবর বিপ্লবের পর প্রতিটি দিন গুণতেন লেনিন। আর বিপ্লবের ৭৩-দিনে, পরম আনন্দে পেত্রোগ্রাদে স্মোলনি ইনস্টিটিউটের নিজের দপ্তর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন একছুটে। শিশুর মতো নেচেছিলেন বরফে ঢাকা উঠোনে।

স্বাভাবিক। সোভিয়েতের অভিজ্ঞতা ছাপিয়ে গিয়েছে প্যারি কমিউনের ৭২ দিনকে। পাঁচদিন পরে তৃতীয় নিখিল রুশ কংগ্রেসে লেনিন বলেছিলেন, প্যারি কমিউনকে ছাপিয়ে যাওয়ার কারণ হলো ‘তুলনামূলকভাবে অনুকূল পরিস্থিতি’, যেখানে ‘রুশ ফৌজ, শ্রমিক ও কৃষকরা মিলে সোভিয়েত সরকার তৈরি করতে পেরেছে।’

১৭৮১, প্যারি কমিউন। প্যারির পতনে তুমুল উচ্ছ্বাসে তিঁয়ের ঘোষণা করেছিলেন, অসভ্য মজদুরদের ক্ষমতা দখলের খোয়াব চিরকালের জন্য ভেঙে দিলাম।

অবশ্য তার আগেই কমিউনের ‘অন্তিমক্ষণটি সমাসন্ন’ আশঙ্কা করে আন্তর্জাতিকের সাধারণ পরিষদে (২৩ মে, ১৮৭১) মার্কস বলেছিলেন, ‘তাঁর আশঙ্কা অন্তিমক্ষণটি সমাসন্ন। কিন্তু কমিউন যদি পরাস্ত হয়ও, সংগ্রাম তাহলে পিছিয়ে পড়বে মাত্র। কমিউনের নীতিগুলো চিরন্তন। সেগুলিকে চূর্ণ করা যাবে না। শ্রমজীবী শ্রেণিগুলি যতদিন মুক্ত না হচ্ছে ততদিন সেগুলি বারবার ফিরে ফিরে আসবে।’

‘কিন্তু’ থেকেই আসলে অনিবার্য সত্যের বজ্রনির্ঘোষ।

মার্কসের কথায়, প্রতিটি পরাজয়ই শ্রমিকশ্রেণির জন্য ভবিষ্যতের সংগ্রামকে শক্তিশালী করার একটা শিক্ষা। মার্কসের শিক্ষা, একটি পরাজয় মানে সংগ্রাম পিছিয়ে পড়ে মাত্র। কিন্তু তাতে সংগ্রাম শেষ হয় না।

যেমন প্যারি কমিউনেই শেষ হয়ে যায়নি ইতিহাস। বরং, প্যারি কমিউন এই গ্রহের শ্রমিকশ্রেণির কাছে তুলে দিয়েছে বিপ্লবের ব্লুপ্রিন্ট। ভ্লাদিমির লেনিনের বয়স তখন মাত্র এক বছর।

এবং ৪৬-বছর পরে অক্টোবর বিপ্লব। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তর। শোষণ-ভিত্তিক সমাজের অবসান। পুঁজি ও মুনাফার স্বার্থে নয়, শোষিত জনগণের স্বার্থে রাষ্ট্র - সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে তার প্রথম বাস্তব প্রতিফলন। পুঁজিবাদের একটি সুনির্দিষ্ট বিকল্প হিসাবে বিশ্ব ইতিহাসের অ্যাজেন্ডায় সমাজতন্ত্র।

১৮৭১, মার্কসের লেখা পুস্তিকা ‘ফ্রান্সে গৃহযুদ্ধ’ই ছিল রুশ বিপ্লবের প্রাকমুহূর্তে ১৯১৭’র গ্রীষ্মে লেনিনের লেখা ‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব’র মুখ্য অধ্যায়গুলির ভিত্তি।

এবং অক্টোবর বিপ্লব। এই গ্রহের প্রথম সর্বহারা রাষ্ট্র। এই প্রথম, পুঁজিবাদের একটি সুনির্দিষ্ট বিকল্প হিসাবে বিশ্ব ইতিহাসের অ্যাজেন্ডায় সমাজতন্ত্র।

১৯০৫, রুশদেশে ব্যর্থ বিপ্লবেই শেষ হয়ে যায়নি ইতিহাস। বারো বছর বাদে সফল অক্টোবর বিপ্লব।

‘আমি জানি না আবার যখন জোয়ার উঠবে, তা দেখার জন্যে আমি আর বেঁচে থাকব কিনা।’ আফশোস করে একদিন আদরের বড়দি আনার কাছে এই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন ভ্লাদিমির লেনিন। তিনি তখন প্যারিসে। বিপ্লবী আনাও সেখানে এসেছেন। ১৯১১’র বসন্ত। তখনও কি লেনিন জানতেন আর মাত্র কয়েকমাসের মধ্যেই উঠবে তুমুল ঝড়!

সে এক কঠিন সংকটের সময়। ১৯০৫ সালে বিপ্লবের পরবর্তী বছরগুলিতে বলশেভিক পার্টি তখন বস্তুত খুবই দুর্বল। প্রবল আক্রমণের মুখে। ১৯০৬ সালে মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ মস্কো ডিস্ট্রিক্টে পার্টি সদস্যের সংখ্যা যেখানে ছিল ৫,৩২০ সেখানে ১৯০৮ সালে মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ তা কমে দাঁড়ায় ২০৮-এ। বছর শেষে আরও কমে হয় ১৫০। আর ১৯১০ সালে জেলা সম্পাদক গোয়েন্দা পুলিসের হাতে ধরা পড়লে পার্টি প্রায় উঠে যাওয়ার মতো উপক্রম হয়।

১৯১১, লেনিন লিখছেনঃ ‘এই মুহূর্তে পার্টির প্রকৃত অবস্থা হলো, প্রায় সর্বত্রই ইনফরমাল। পার্টি কর্মীদের খুবই ছোটো ও অতি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী সভা করতে পারছে, তাও অনিয়মিত... তাঁদের একে-অপরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। কালেভদ্রে তাঁরা দেখতে পান পার্টির পত্র-পত্রিকা।’ পরে জিনোভিয়েভ লিখেছেন, ‘খুবই খারাপ সেই সময়ে গোটা পার্টিটাই একরকম গুটিয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল।’

সেই ক্ষত সারতে লেগেছিল অনেক সময়। তবে উন্নতির লক্ষণ দেখা যায় ১৯১১-১২-তে। যদিও বলশেভিকরা তখনও প্রকাশ্যে সংগঠন করতে পারছেন না। ১৯১২-র জুনের গোড়ায় লেনিন লিখছেনঃ ‘দ্য রেভেলিউশনারি আপসুইং’।

‘মহান মে দিবসে সর্বহারার ধর্মঘটের সঙ্গেই রাস্তায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, বিপ্লবী লিফলেট বিলি, শ্রমিকদের সভায় বিপ্লবী বক্তৃতা - স্পষ্ট দেখিয়ে দিচ্ছে রাশিয়া প্রবেশ করছে বিপ্লবী উত্থানের পর্বে।’ আর ‘এই উত্থান বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো আসেনি।’ বলছেন লেনিন। ‘রুশ জনজীবনের পরিস্থিতিই এই রাস্তা পাকা করেছে, লেনার গুলি চালানোর প্রতিবাদে গণ ধর্মঘট এবং মে দিবসের ধর্মঘট বড়োজোর এর প্রকৃত আগমন বার্তা শুনিয়েছে।’

হিসেব দিচ্ছেন লেনিন, ‘১৯০৫, বিপ্লবের আগে ১৮৯৫-১৯০৪, একদশকে বছরে গড়ে ধর্মঘটীর সংখ্যা ছিল ৪৩,০০০। ১৯০৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭,৫০,০০০। ১৯০৬, ১০ লক্ষ। ১৯০৭ সালে সাড়ে ৭ লক্ষ। বিপ্লবের তিনবছরে সর্বহারার এই ধর্মঘট বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের কাছে ছিল নজিরবিহীন। এরপরেই কমতে শুরু করে, যা শুরু হয় ১৯০৬-০৭ সালে। ১৯০৮, কমে দাঁড়ায় ১,৭৫,০০০।... তারপর কমতেই থাকে, ১৯০৯ সালে কমে হয় ৬০,০০০। ১৯১০, আরও কমে ৫০,০০০।’ কিন্তু, ‘লক্ষ্য করার মতো একটা পরিবর্তন দেখা যায় ১৯১০ সালে।’ ১৯১১-তে ধর্মঘটীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১,০০,০০০।

পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে ১৯১২’র জানুয়ারিতে প্রাগ শহরে ষষ্ঠ নিখিল-রুশ পার্টি কনফারেন্সে বলা হয়, ‘বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিসরের মধ্যে একটি রাজনৈতিক পুনরুজ্জীবন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত, সর্বহারাদের মধ্যে। ১৯১০-১১-তে, শ্রমিকদের ধর্মঘট, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সভা এবং সর্বহারাদের দেখা যাচ্ছে। শুরু হয়েছে বুর্জোয়া ডেমোক্র্যাটদের আন্দোলন, ছাত্রদের ধর্মঘট প্রভৃতি। এসবই জনসাধারণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিপ্লবী অনুভূতির লক্ষণ।’

ওই কনফারেন্স থেকেই লেনিন, স্তালিন, অর্জনিকিজদ সহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে নির্বাচিত হয় বলশেভিক কেন্দ্রীয় কমিটি। স্তালিন তখন নির্বাসনে। অনুপস্থিত থেকেও নির্বাচিত হন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। পরে প্রাগ কনফারেন্সের গুরুত্ব সম্পর্কে স্তালিন বলেন ‘আমাদের পার্টির ইতিহাসে এই কনফারেন্সের গুরুত্ব খুবই বেশি, কারণ এখানে বলশেভিক ও মেনশেভিকদের মধ্যে সীমারেখা টানা হয়। এবং সারা দেশে বলশেভিক সংগঠনগুলিকে একত্রে মিলিয়ে গঠিত হয় ঐক্যবদ্ধ বলশেভিক পার্টি।’

তখনও লেনা সোনার খনিতে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা ঘটেনি। ৪ এপ্রিল, ১৯১২। তাইগা জঙ্গলে সাইবেরিয়া রেলওয়ে থেকে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার গভীরে লেনা সোনার খনিতে ধর্মঘটের সময় জার-সরকারের এক উচ্চপদস্থ পুলিস কর্তার নির্দেশে ৫০০-র বেশি শ্রমিককে গুলি করে হত্যা ও জখম করা হয়। এই লেনা নদী থেকেই ভ্লাদিমির উলিয়ানভের লেনিন নাম।

লেনার ধর্মঘটী শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে সারা দেশে শ্রমিকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

প্রতিবাদ ধর্মঘটে শামিল হন ৩ লক্ষের বেশি শ্রমিক। মে দিনের ধর্মঘটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ লক্ষে। প্রতিদিন সংবাদপত্রে খবর, এমনকি উদারবাদী পত্রিকাতেও - কীভাবে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে ধর্মঘট।

এমনই সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছিল ১৯০৫ সালে। আবার ১৯১২ সালে।

মাত্র কয়েকমাসের মধ্যেই লেনিন দেখলেন, ঝড় উঠেছে। জনগণ নিজেই আন্দোলনে নেমেছেন। এবং তিনি দিব্যি বেঁচে আছেন। তাঁর সমগ্র অস্তিত্ব দিয়ে ঝড় উপলব্ধি করছেন।

লেনিন লিখলেন, ‘ঝড় ওঠে যখন জনগণ নিজেরাই আন্দোলনে নামে। প্রলেতারিয়েত হচ্ছে একমাত্র যথার্থ অবিচলিত বিপ্লবী শ্রেণি। এই প্রথম প্রলেতারিয়েত লক্ষ লক্ষ কৃষককে জাগিয়ে তুলছে প্রকাশ্য বৈপ্লবিক সংগ্রামের পক্ষে। এই ঝড় প্রথম উঠেছিল ১৯০৫ সালে। আর এই দ্বিতীয়বার আমাদের একেবারে চোখের সামনেই তা ফেটে পড়ছে।’

সেন্ট পিটার্সবুর্গের সংবাদপত্র ‘জভেজদাতে’ (তারা) স্তালিন লেখেনঃ ‘লেনাতে গুলি চালনার ফলে স্তব্ধতার বরফ ভেঙে গিয়েছে। আবার বইতে শুরু করেছে গণআন্দোলনের স্রোতধারা। বরফ ভেঙে গিয়েছে!... বর্তমান শাসনে যা কিছু মন্দ ও ক্ষতিকর, বহুদিন ধরে রুশ দেশ যতকিছু দুর্গতি, যতকিছু দুঃখ-কষ্ট সয়ে আসছে, তা একটি মাত্র ঘটনার মধ্যে, লেনার হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মূর্ত হয়ে উঠেছে। এজন্যই লেনার গুলি চালনা - ধর্মঘট ও মিছিলের সংকেত হিসেবে কাজ করল।’

আজ, একেবারেই ভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সম্পূর্ণ পৃথক আর্থিক সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। কিন্তু ১৯০৫-এ, প্রথম রুশ বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পর ‘স্টলিপিন প্রতিক্রিয়া’র অন্ধকারের দিনগুলিতে কী অসীম সাহস আর ধৈর্য নিয়ে বলশেভিকরা পরবর্তীকালে সফল বিপ্লব সংগঠিত করার শিক্ষা অর্জন করেছিলেন, আমরা নিতে পারি সেই অভিজ্ঞতা।

শেষে ১৯১৭। দুনিয়া কাঁপানো দশদিন।

প্যারি কমিউন। টিকে ছিল ৭২ দিন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ৭২ বছর।

১৯৩১, চীন। বড়ো ধাক্কা। জাপানিদের মাঞ্চুরিয়া দখল। মাওয়ের নিজের কথায় ‘শহরাঞ্চলের ১০০ শতাংশ, গ্রামের ৯০ শতাংশ শক্তি ক্ষয়।’ কিন্তু ইতিহাস ওখানেই থেমে থাকেনি। ১৯৩৫, নতুন শক্তি অর্জন। তারপর কমিউনিস্টদের অপ্রতিরোধ্য গতি। শেষে চীনের আকাশে লাল তারা।

২৬ জুলাই, ১৯৫৩। মনকাডা সেনা ছাউনি অভিযান। সেখানেই শেষ নয়। বরং শুরু। সেদিন অভিযান ব্যর্থ হলেও, সেদিনই আসলে কিউবা বিপ্লবের জন্ম। মনকাডা অভিযানের পর পাঁচবছর, পাঁচমাস, পাঁচদিন। ১ জানুয়ারি, ১৯৫৯। কিউবায় সফল বিপ্লব।

প্যারি কমিউন থেকে সমাজতান্ত্রিক কিউবা। এসবই বিপ্লবের ফসল। সে তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকার একটি বুর্জোয়া-জমিদার রাষ্ট্রে বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অসম বিকাশের প্রেক্ষাপটে একটি রাজ্যে আন্দোলন সংগ্রামের বিকাশের ফসল। এর সঙ্গে বিপ্লব, রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের কোনও সম্পর্ক নেই।

তবু, ইতিহাস জানে, দু’টো যুক্তফ্রন্ট থেকে শেষে বামফ্রন্ট। এক সকালে এই সাফল্য আসেনি। তার আগের আড়াই দশক বামপন্থীদের নিরবচ্ছিন্ন লড়াই। একের পর এক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এসেছে ছোটোখাটো সাফল্য। কখনও কারখানায়। কখনও ধর্মঘটে। কখনও বিধানসভায়। সেই লড়াইকে সংহত করেই প্রথম ও দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট। তেরো থেকে উনিশ মাস। শেষে ৩৪ বছর। প্রথম যুক্তফ্রন্টের পর কেউ কোনওদিন ভেবেছিলেন অচিরেই দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট। আর দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট থেকে একেবারে বামফ্রন্ট। মাঝে সিআইএ, সরকার ভাঙা। তবুও বামপন্থীদের অগ্রগতি অব্যাহত। বাহাত্তরে জালিয়াতি নির্বাচন। জরুরি অবস্থা। তবু আসে বামফ্রন্ট। অন্ধকারের পর প্রথম প্রভাতের আলো। সত্তর পারেনি। কালবেলা স্থায়ী হয়নি।

মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এবং শেষ পর্যন্ত মানুষ ঘুরে দাঁড়ান। হাজারো জয়-পরাজয়, চড়াই-উৎরাই ভেঙে শেষ লড়াইয়ে চূড়ান্ত জয়। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।