৫৮ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৬ মার্চ, ২০২১ / ১২ চৈত্র, ১৪২৭
বামফ্রন্টের নির্বাচনী ইস্তাহারে আহ্বান
গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষায় এবং রুটি-রুজির সংগ্রামকে জোরদার করতে সংযুক্ত মোর্চাকে জয়ী করুন
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পশ্চিমবঙ্গকে নৈরাজ্য ও অপশাসন থেকে মুক্ত করতে এবং রাজ্যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে হবে এবং জনগণের চরমতম শত্রু সাম্প্রদায়িক ও বিভেদকামী বিজেপি-কে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত ও পরাস্ত করতে হবে। বাম, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিকল্পকে জয়ী করতে হবে। বাম ও সহযোগী, কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের ঐক্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সংযুক্ত মোর্চাকে জয়যুক্ত করুন। এই আহ্বান জানিয়ে বামফ্রন্টের চূড়ান্ত ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছে। ২০ মার্চ বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এই ইস্তাহারটি প্রকাশ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর মতো মিথ্যাচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমরা চলি না। ৩৪ বছরের সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতের ভিত্তিতে রাজ্যকে নৈরাজ্যমুক্ত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মানুষের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত ইস্তাহার তৈরি করা হয়েছে। মানুষকে বিকল্প দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।
এই ইস্তাহারে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিমবাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের প্রধান কর্তব্য হলো গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জনগণের অস্তিত্ব ও রুটি-রুজির সংগ্রামকে জোরদার করতে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি-কে পরাস্ত করা। এই লক্ষ্যে আমরা সমস্ত গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সমবেত করেই অগ্রসর হতে চাই। তাই বামফ্রন্ট ও সহযোগী দল, জাতীয় কংগ্রেস ও ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষ ফ্রন্টের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ঐক্য গড়ে তুলে এই মুহূর্তে রাজ্যে জনগণের স্বার্থবাহী বিকল্প আমরা উপস্থিত করেছি। জনগণের ব্যাপক ঐক্য ও সক্রিয় ভূমিকাতেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি’কে পরাস্ত করে বিকল্প সরকার গড়ে উঠবে।
এদিন বিমান বসু জানিয়েছেন, মিডিয়াতে তৃণমূল বনাম বিজেপি’র লড়াইয়ের প্রচার রয়েছে ঠিকই, কিন্তু এলাকায় এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে যে, তৃণমূল বনাম বিজেপি’র মেরুকরণ পিছনে চলে যাচ্ছে। তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে সংযুক্ত মোর্চার লড়াই ক্রমশই ওপরের দিকে উঠে আসছে। আগামীদিনে তা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এদিন বামফ্রন্টের বৈঠক শেষে ইস্তাহার প্রকাশ উপলক্ষে সাংবাদিক বৈঠকে বিমান বসু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিআই’র রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হাফিজ আলম সইরানি, আরসিপিআই নেতা মিহির বাইন, বলশেভিক পার্টির নেতা প্রবীর ঘোষ, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বিশ্বনাথ সিনহা প্রমুখ।
এই ইস্তাহারে নির্বাচনের পটভূমি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ধর্মনিরপেক্ষতা, শিল্প, শ্রম, কৃষি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, গ্রন্থাগার, সমবায়, পঞ্চায়েত, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, পশ্চাৎপদ অংশ, মহিলা-শিশু-প্রবীণ, উত্তরবঙ্গসহ বিশেষ আঞ্চলিক উন্নয়ন, বিচারব্যবস্থা, নগরায়ণ, বস্তি উন্নয়ন, খাদ্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, পরিবেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, পর্যটন, রাজ্য প্রশাসন, পরিকল্পনা, চিটফান্ড, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাম-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্প ২৫টি পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হয়েছে।