৫৮ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৬ মার্চ, ২০২১ / ১২ চৈত্র, ১৪২৭
নন্দীগ্রামে লালঝান্ডার প্রচার অবরুদ্ধ আবহকে সরিয়ে বসন্ত বাতাস নিয়ে আসছে
সন্দীপ দে
নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়ার শ্রীপুর বাজারে প্রচারে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষী মুখার্জি।
নন্দীগ্রামের মা-বোনেদের সমস্ত আবেগ-ভালোবাসা-শুভেচ্ছা বুঝি সঞ্চিত ছিল তাঁর জন্যই। এতো নির্বাচনী প্রচার নয়, মনে হবে যেন ঘরের মেয়ে ঘরে ফেরায় সবার মনে আনন্দ ঝরে পড়ছে। গাঁয়ে তাঁর আসার খবর শুনে ভর দুপুরে রান্নাবান্না ফেলে রেখে ঠাঠা রোদে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন মহিলারা। কোনো কোনো জায়গায় ফুল-মালায় তাঁকে বরণ করতেও দেখা যাচ্ছে। তরুণ-তরুণীরাও পাল্লা দিয়ে ভিড় জমাচ্ছে। প্রায় সর্বত্র এদের সঙ্গে সেলফি অথবা গ্রুপ ছবি তোলার আবদার মেটাতে হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় থাকছে চা বিস্কুট সরবত অথবা দুপুরের খাবারের জন্য বিশেষ অনুরোধ। একেকটা জায়গায় মহিলারা তাঁকে কাছে পেয়ে এতটাই আবেগের জোয়ারে ভাসছেন যে, সময়ের বাছবিচার থাকছে না। এতো গেল মা-বোনেদের কথা। আর বয়োজ্যেষ্ঠ প্রবীণদের যখন প্রণাম সারছেন, তখন তাঁকে প্রাণভরে আশীর্বাদ করছেন, ভরসা দিয়ে বলছেন, তুমি আরও আগে কেন এলে না...
অতীত ও বর্তমানের নানা ঘটনার অভিঘাতে শিরোনামে আসা নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী, রাজ্যের যুব আন্দোলনের নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জির প্রতিদিনের প্রচারের এটাই বাস্তব চিত্র। ভোট প্রচারে তৃণমূল-বিজেপি'র ক্ষমতা প্রদর্শনের বিকট উল্লাস, টাকা ছড়ানোর কুৎসিত খেলা, শালীনতা বিবর্জিত কদর্য বাক্যে তরজা এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর ভাঁওতার চাতুর্যে মানুষের মন ভোলানোর উদগ্র চেষ্টার বিপরীতে মীনাক্ষীর প্রচার অনেকটা যেন সুস্থির নির্মল আবহে আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে শান্ত-স্নিগ্ধ এক আত্মজনের প্রাণের আলাপন।সেখানে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে দৈনন্দিন সুখ-দুঃখের জীবনপ্রবাহ, রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদের কপট স্বার্থের রাজনীতির পরিণামে নানা সমস্যা-সঙ্কটের বারমাস্যা ও হিংসা হানাহানির মধ্য দিয়ে তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার আগ্রাসী বাসনা। এর পরিণতিতে গরিব শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের জীবন-সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যে প্রতিনিয়ত উপেক্ষিত ও অবহেলিত হচ্ছে, তাও মীনাক্ষীর কথায় সূত্র হিসেবে বেরিয়ে আসছে।
হিংসা-সন্ত্রাসের দীর্ঘ যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতাকে বয়ে নিয়ে চলেছে নন্দীগ্রাম।উগ্র বামফ্রন্ট বিরোধিতা ও রাজ্যের ক্ষমতা দখলের উন্মত্ত বাসনা নিয়ে আজকের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সেদিন সমস্ত বামবিরোধী প্রতিক্রিয়ার শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, খুন, সন্ত্রাস করে নন্দীগ্রামকে ক্ষতবিক্ষত করেছিল। নন্দীগ্রামের মানুষেরাই শুধু নন,গোটা রাজ্য এমনকি দেশও জানে সেদিন তৃণমূলের এই হিংস্র বর্বরতার অভিযানে প্রধানতম দোসর ছিল রামের নাম করে বিভেদের রাজনীতির অন্যতম প্রবক্তা উগ্র সাম্প্রদায়িক বিজেপি এবং নাশকতা চালানো হিংস্র মাওবাদী জঙ্গিরাও। এদের যৌথ আক্রমণে নন্দীগ্রাম-খেজুরি অঞ্চলে ৭০ জনেরও বেশি সিপিআই(এম) কর্মী-সংগঠককে খুন হতে হয়েছে।ওরা সোনাচূড়ায় সিপিআই(এম)’র পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর সামন্তকে যেভাবে হত্যা করেছিল তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। ওদের ওই হিংস্রতায় নন্দীগ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার বাড়ি ভস্মীভূত অথবা ভাঙচুর হয়েছে, কয়েক হাজার মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। রুটিরুজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। তখন নন্দীগ্রামবাসীকে বিপন্ন প্রাণটুকু রক্ষার জন্য ওই দুর্বৃত্তদের কোটি কোটি টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে। এরপর হলদি নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও নন্দীগ্রামবাসীর বুকের ক্ষত শুকোয়নি। রাজ্যে পালাবদলেরও দশ বছর অতিক্রান্ত। তবুও আঁধার ঘোচেনি নন্দীগ্রামের।
যে নন্দীগ্রামে সীমাহীন চক্রান্ত ও মিথ্যার জাল বুনে, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাস চালিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পথ তৈরি করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি, ক্ষমতায় এসে সেই নন্দীগ্রামকে তিনি তাঁর কপট রাজনীতির পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখানকার সহজসরল মানুষদের বিভ্রান্ত করতে উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রতির বন্যায় ভাসিয়েছেন। কিন্তু উন্নয়নের ন্যূনতম ছোঁয়া লাগেনি এখানে। তাঁর প্রতিশ্রুতি ছিল নন্দীগ্রামে রেল স্টেশন হবে, এজন্য যারা জমি দেবেন তাদের পরিবারে চাকরির ব্যবস্থা করবেন।এর বাস্তবায়ন কতটা হয়েছে, সকলেই দেখছেন। তিনি বলেছিলেন নন্দীগ্রামে ‘সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল’ গড়ে দেবেন। কিন্তু তার হাল কেমন তা সম্প্রতি জেনে গেছেন শুধু রাজ্য নয়, গোটা দেশের মানুষ। সেখানে আদৌ যদি উপযুক্ত চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকতো তবে মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে ‘আঘাত’ লাগার পর কেন তাঁকে ১৩১ কিলোমিটার উজিয়ে কলকাতায় ফিরতে হলো চিকিৎসার জন্য - এই প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। এছাড়াও প্রতিশ্রুতি ছিল নন্দীগ্রাম সংলগ্ন হাতিবেড়িয়ায় রেলের কোচ ফ্যাক্টরি, সোনাচূড়ায় আইটিআই কলেজ, নন্দীগ্রামে স্টেডিয়াম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ইত্যাদি কতকিছু! এগুলোর কোনোটিরই মুখ দেখেনি মানুষ। এখানে তিনি ঘটাকরে জেলিংহ্যামের পরিত্যক্ত কারখানায় জাহাজ তৈরির কারখানা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেটার ছিটেফোঁটা হওয়া তো দূরের কথা, উল্টে এই পুরনো কারখানার যন্ত্রপাতি যথেচ্ছভাবে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নিয়েছে মমতা ব্যানার্জির অনুগত ‘ভাইয়েরা’। নেত্রীর সাড়ম্বরে ঘোষণা ছিল, নন্দীগ্রামে উন্নয়নের প্রবাহে কেউ আর বেকার থাকবে না। কিন্তু বাস্তব যে অন্য কথা বলছে! এখানে কর্মহীন বেকারদের প্রাবল্য এতটাই যে, এখানকার দু’টি ব্লক থেকে ২৫ হাজারেরও বেশি যুবককে কাজের সন্ধানে পাড়ি দিতে হয়েছে ভিন রাজ্যে। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের বিপুল ঢক্কানিনাদ সত্ত্বেও যখন নন্দীগ্রামের এই হাল, তখন দলের ডাকসাইটে নেতা সেখ সুফিয়ান, সরোজ ভুইঞাঁ অথবা সদ্য দল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া দলের ব্লক সভাপতি মেঘনাদ পাল-দের প্রাসাদোপম অট্টালিকাগুলি যেন শাসকদলের কুৎসিত কেলেঙ্কারি আর লুটের কদর্যতা নিয়ে নন্দীগ্রামবাসীকে বিদ্রূপ করছে!
এবারের নির্বাচনে এখানে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি প্রার্থী হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন মমতারই একদা যাবতীয় হিংসা-নৈরাজ্যের ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের দুই গোষ্ঠীর হিংসায় পদে পদে দীর্ণ হচ্ছে নন্দীগ্রামের মাটি।
তৃণমূলের অত্যাচারক্লিষ্ট এই নন্দীগ্রাম অনেকযন্ত্রণা, ক্ষোভ আর হতাশার জন্ম দিয়েছে। তাই ক্ষোভের দহনে জর্জরিত মানুষ অনেকদিন ধরেই পরিত্রাণ খুঁজছিলেন। মীনাক্ষী মুখার্জি এই কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হওয়ায় দীর্ঘ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যেও তাঁরা যেন কিছুটা স্বস্তির আস্বাদ পেতে শুরু করেছেন। তার নিশ্চিত আভাস মিললো ভেকুটিয়া ১ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন অঞ্চল পরিক্রমার সময়ে। এখানে যুব ও মহিলা কর্মীদের নিয়ে শ্রীপুর বাজার পরিক্রমার সময়ে প্রতিটি দোকান, পথচলতি মানুষের সঙ্গে যখন পরিচয়পর্ব সারছিলেন, তখন অনেকেই জানালেন যুব আন্দোলনের নেত্রী হিসেবে মীনাক্ষীর পরিচয় অনেকেরই জানা। পরিবারের সদস্যদের মতোই রাস্তায় বয়স্ক মানুষদের দেখে পা ছুঁয়ে যখন প্রণাম করছিলেন মীনাক্ষী, তখন সেখানে তৈরি হচ্ছিল আবেগঘন পরিবেশ। সকলেই মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করলেন এবং প্রত্যাশা করলেন আগামীদিনেও যেন মীনাক্ষী এভাবেই জুড়ে থাকেন সবার অন্তরে। ষাটোর্ধ্ব ভরত প্রধান সাইকেল করে যাবার সময় মীনাক্ষীকে দেখে নামলেন। একরাশ ক্ষোভ আর অভিমান নিয়ে বলে উঠলেন, এতদিন পর আসার সময় হলো? কী অবস্থার মধ্যে আমরা দিন কাটিয়েছি! আমাদের কথা কেউ শোনার ছিলনা৷! তাঁর কথা ধৈর্যের সাথে শুনে মীনাক্ষী বললেন, আমরা হয়তো এখানে সেভাবে আসতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু আমরা তো মানুষের জন্য লড়াই আন্দোলনের মধ্যেই ছিলাম। আমাদের উপরও কম অত্যাচার-আক্রমণ হয়নি। কিন্তু আমরা লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যাইনি। এই নন্দীগ্রামের মানুষের উপর অনেক হামলা-নির্যাতন হয়েছে। আমরা চাই এসবের অবসান ঘটাতে। তাই আগামী দিনের লড়াইয়ের স্বার্থেই আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। মীনাক্ষীর কথাগুলো শুনে ভরত প্রধান সাইকেলের প্যাডেলে পা রেখে বললেন, এতদিন ভোট দিতে পারিনি। এবারে সুযোগ পেলে কি আর লাল ঝান্ডার বাইরে ভোট দিতে যাব! এই প্রবীণ মানুষটির কথাগুলো যেন অনেক মানুষের অব্যক্ত যন্ত্রণার অভিব্যক্তি হিসেবেই প্রতিধ্বনিত হলো।
শ্রীপুর বাজার পেরিয়ে একটু গেলেই হোমিওপ্যাথি ডাক্তার উদয় শঙ্কর গিরির চেম্বার। তিনি মীনাক্ষীকে কাছে পেয়ে মিনিট দশেক টানা তাঁর মনের কথাগুলো উগড়ে দিলেন। সম্প্রতি বিরুলিয়া বাজারে মমতা ব্যানার্জির ‘আঘাত’ পাওয়াকে কেন্দ্র করে যে নাটকীয় আখ্যান তৈরি হয়েছিল, তারই সূত্রে তিনি বললেন, মমতা-শুভেন্দু এখনে যত কম আসে ততোই মঙ্গল। ওরা এমনভাবে প্রচার করছে যেন এখানে সব জানোয়াররা বাস করে।এরা শুধু মন্দির-মসজিদ করছে আর ভোট ভোট করছে। অথচ সাধারণ মানুষের দিকে তাকাবার প্রয়োজন নেই ওদের। মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা, মিনিমাম চিকিৎসার ব্যবস্থা কোনোদিকে খেয়াল নেই ওদের। এসব কিছু না করে ওরা ভোটের রাজনীতি করছে। মমতা ব্যনার্জি গোটা দেশের কাছে আমাদের ছোটো করে দিয়েছেন। আজকে আমরা খুবই অপমানিত বোধ করছি। ডাক্তারবাবুর কথাগুলো শুনে মীনাক্ষী বললেন, যারা নন্দীগ্রামকে অপমান করেছে তাদের এই মাটিতে পরাজিত করতে হবে। তাই আপনাদের সবার সমর্থন চাই আমরা। ডাক্তারবাবুর পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস পেয়ে মীনাক্ষীরা রওনা হলেন পরবর্তী গন্তব্যে।
এভাবে প্রখর রৌদ্রের উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়ে মীনাক্ষীদের অভিযান চললো মনুচকে, ভীমকাটা গ্রামে। মনুচকে বৃদ্ধা ভারতী খাটুয়া মীনাক্ষীকে দাঁড় করিয়ে পর পর শুনিয়ে গেলেন তাঁর যন্ত্রণা ও নানা অভাব-অভিযোগের বৃত্তান্ত। মনে হলো যেন এসব বলে তিনি মনটাকে একটু হালকা করে নিলেন। তারপর বলে উঠলেন, তোমাদের কাছে পেয়ে অনেক কথা বললাম। কিন্তু বলোনা, বাপ বুড়ো হলে তাকে কি সম্মান দিবনি? পাশের ভীমকাটা গ্রামের শম্ভু মণ্ডল শোনালেন তৃণমূলের অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়ে তাঁর নিদারুণ জীবনযন্ত্রণার কথা। এখানে নিশিকান্ত মণ্ডলের বাড়ি গিয়ে শুনলেন কীভাবে তৃণমূলের দুর্বৃত্তরা তাঁকে মারধর করে বাড়িছাড়া করেছিল এবং প্রাণের ভয়ে পাঁচটি বছর তাঁকে অন্যত্র কাটাতে হয়েছে। গরিব খেতমজুর সেখ সিদ্দিকির কাছে জানা গেল, তাঁকে মেরেধরে আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা কেড়ে নিয়েছে স্থানীয় শাসকদলের পান্ডারা।
তখন সূর্য মাথার উপরে। মোড়ের মাথায় অপেক্ষা করে আছেন মা-বোনেদের দল। মীনাক্ষী কাছে যেতেই সকলে ঘিরে ধরলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন, টিভিতে নাকি আগেই দেখেছেন মীনাক্ষীকে। তাই তাঁকে কাছে পেয়ে আপ্লুত তাঁরা। অল্প বয়সী তরুণীরা মনের সুখে ছবি তুলে নিলেন। এতে যোগ দিলেন কয়েকজন যুব-ছাত্রও। এখানে মহিলাদের মধ্যে কেউ কেউ মীনাক্ষীর কাছে নানা কথা জানতে চাইছিলেন। সব শুনে মীনাক্ষী তাঁদের বললেন, আমার বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানে।
আমাদের পার্টি আমাকে এখানে প্রার্থী করেছে। তাই এবার থেকে আমার ঠিকানা নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মা বোনদের সম্মান, বেকার ভাইদের কাজ চাই আমরা। কোনো হিংসা বিবাদ নয়, সবার ভালো চাই আমরা। এখানে আমি সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হলেও আপনারাই হচ্ছেন আসল প্রার্থী। তাই এখান থেকে লাল আবীরে রাঙিয়ে আমাকে পাঠাতে হবে বিধান সভায়।
এই প্রাণের আবেদন নিয়েই যুবদল পরিবেষ্টিত মীনাক্ষীর দৃপ্ত পদচারণা চলছে নন্দীগ্রামের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। তাঁর এই আবেগমথিত অমোঘ রাজনৈতিক কথাগুলো স্পর্শ করছে প্রবীণ-প্রবীণা থেকে যুবক-যুবতী সবার হৃদয়ের অন্দরে। যা নন্দীগ্রামের অবরুদ্ধ আবহকে অপসৃত করে ক্রমশ যেন রঙিন বসন্তের সুবাতাস নিয়ে আসছে।