৫৮ বর্ষ ৩২ সংখ্যা / ২৬ মার্চ, ২০২১ / ১২ চৈত্র, ১৪২৭
মোদীর আত্মনির্ভর স্লোগানের নতুন সংস্করণ
‘রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেচ দো’
সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত
‘সরকার কেন ব্যবসায়ে থাকবে?’ - প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক এই বক্তব্য নিয়ে অবাক হওয়ার কোনো অবকাশই নেই। ১৯৯১ সালে যখন আমাদের দেশে নয়া-উদার অর্থনীতি চালু হয়েছিল তখন বিজেপি সেই নীতিকে সমর্থনই করেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি তুলে দিয়ে বেসরকারিকরণ করা আসলে আরএসএস-র কর্মসূচি। আরএসএস পরিচালিত বর্তমান বিজেপি এবং তাদের পূর্বসূরী জনসঙ্ঘের মতাদর্শই ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা-নির্ভর অর্থনীতির বিরুদ্ধে। বাজেট আলোচনার জবাবি ভাষণে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তাঁদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিলেনঃ ‘‘অতীতে জনসঙ্ঘ এবং আজকের বিজেপি মতাদর্শের বিচারে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র নির্ভর অর্থনীতির বিরুদ্ধে।’’
মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে আরএসএস বরাবর সওয়াল করে এসেছে। এটা আজ তাদের মুখে নতুন শোনা যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। ৫২ বছর আগে ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ,কয়লা ও জ্বালানি শিল্প জাতীয়করণের সময়ও তারা এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল। বিজেপি’র পূর্বসূরি জনসঙ্ঘ তখন স্বতন্ত্র পার্টি ও সংগঠন কংগ্রেসের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরোধিতায় নেমেছিল। ২০১৪ সালে আরএসএস প্রচারক নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর কার্যভার গ্রহণ করার পর থেকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই ধাপে ধাপে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেসরকারিকরণের পথে এগিয়েছেন। উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যায় যে, উদার অর্থনীতি প্রবর্তনের পর ১৯৯১ থেকে মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত ২৪ বছরে বিলগ্নিকরণের পরিমাণ ছিল ১,৫২,৭৯০ কোটি টাকা, আর মোদীর শাসনকালে এপ্রিল ২০১৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ৭ বছরে বিলগ্নিকরণের পরিমাণ ৩,৯৬,৬৬৬ কোটি টাকা। আরএসএস-র মতাদর্শগত অবস্থান থেকেই ফেব্রুয়ারি মাসে বিনিয়োগ এবং সরকারি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরের ওয়েবিনারে নরেন্দ্র মোদী নির্লজ্জের মতো বলেছিলেনঃ “সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া হবে। স্ট্রাটেজিক ক্ষেত্রে কয়েকটি মাত্র সংস্থার অস্তিত্ব ছাড়া কোনো ব্যবসায়িক উদ্যোগেই সরকার অংশ নেবেনা।” এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রয়ের গালভরা নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাসেট মনিটাইজেশন’ বা সম্পদ থেকে অর্থ সংগ্রহ। করোনা মহামারীর মধ্যেও চলতি অর্থবর্ষে ৩ মার্চ পর্যন্ত বিলগ্নি করে সরকারের ঘরে এসেছে ২০,৬২৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২.১০ লক্ষ কোটি টাকা। আগামী অর্থবর্ষে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার। বাজেটে ২টি ব্যাঙ্ক এবং ১টি সাধারণ বিমা বিক্রির ঘোষণাও করেছে সরকার।
স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি গড়ে উঠেছিল সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। এই ধরনের বিশাল বিশাল রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র গড়ার সাধ্য ছিল না ব্যক্তিপুঁজির মালিকদের। বিমানবন্দর, তৈলক্ষেত্র, ইস্পাত, বিদ্যুৎকেন্দ্র, রেল, বিমান ও পরিবহণ, খনি ইত্যাদি রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি ছাড়া দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি সম্ভব ছিলনা। রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি সাহায্য করেছে নতুন নতুন কলকারখানা,সেতু,রাস্তা গড়তে ও খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনে। এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রতি বছর সরকারি তহবিলকে পুষ্ট করে থাকে। বিপুল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে থাকে এই সংস্থাগুলি।
●●●●
বেছে বেছে ১২টি লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণের তালিকা কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দিয়েছে নীতি আয়োগ। বহু কষ্টে গড়ে তোলা দেশের অর্থনীতিতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করা এই সংস্থাগুলি দেশি-বিদেশি শিল্পপতিদের কাছে বিক্রি করাকে আত্মনির্ভর ভারত নামে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে স্ট্র্যাটেজিক ও অ-স্ট্র্যাটেজিক সংস্থা হিসাবে ভাগ করেছে মোদী সরকার। পরমাণু বিদ্যুৎ,প্রতিরক্ষার যন্ত্রাংশ,যানবাহন ইত্যাদি সামান্য কয়েকটি ক্ষেত্রকে স্ট্র্যাটেজিক ক্ষেত্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখনই বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে রেল স্টেশন,রেলের যাত্রাপথ,বিএসএনএল,এমটিএমএল,অপটিক্যাল ফাইবার,৭ হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়ক,বিদ্যুৎ সংবহন, ১৩টি বিমানবন্দর,বন্দরের ৩০টি সরকারি পরিচালনাধীন বার্থ, গ্যাস, তেলের পাইপলাইন, নেহরু-ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম সহ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জমি-বাড়ি ইত্যাদি।
মোদী সরকারের পক্ষ থেকে সুকৌশলে কর্পোরেট পরিচালিত মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে প্রচার চলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র মানেই লোকসান। সুতরাং, মোদীর কর্পোরেট-বান্ধবদের কাছে সেইগুলি বিক্রি করে দেওয়াই নাকি যুক্তিসঙ্গত। নিচের সারণিতে দেওয়া ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তথ্যগুলি কিন্তু বিপরীত কথাই তুলে ধরেছে।
●●●●
একইভাবে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ব্যাঙ্ক ও জীবনবিমা বেসরকারিকরণ করার আত্মঘাতী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মোদী সরকার। বাজেট বক্তৃতায়ও ব্যাঙ্ক ও জীবনবিমা বেসরকারিকরণের কথা বলা হয়েছে। ১৯৬৯ সালে ১৪টি বেসরকারি ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের মধ্য দিয়ে ব্যাঙ্কের উপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ চালু হয়। তার আগে স্বাধীনতার পর থেকে ৬৫০টি বেসরকারি ব্যাঙ্ক ফেল হওয়াতে কোটি কোটি মানুষকে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছিল। জাতীয়করণের পরও অনেকগুলি বেসরকারি ব্যাঙ্ক ফেল করেছিল। সেই ব্যঙ্কগুলিকে কোনো না কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যঙ্কের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৫২ সালে ব্যাঙ্কগুলির মোট শাখা ছিল ৪,০৬১টি। জাতীয়করণের সময় ১৯৬৯ সালে সেই শাখার সংখ্যা দাঁড়ায় ৮,২৬২টি। জাতীয়করণের ৫০ বছরে ২০১৮ সালে ব্যাঙ্কগুলির মোট শাখার সংখ্যা ১,৪২,৬৪২টি। ১৯৬৯ সালে ব্যাঙ্কের আমানত ছিল ৫,০২৮ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৪৭.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ না হলে এই অগ্রগতি কখনই সম্ভব ছিলনা।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা ছিল ২৮টি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের ফলে বর্তমানে ব্যাঙ্কের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২টিতে। আসলে ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারিকরণের উদ্দেশেই যে সংযুক্তিকরণ - তা আজ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের জমা ১৪৭.২৬ লক্ষ কোটি টাকার দখলে মরিয়া কর্পোরেট মালিকরা। লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে তারা তাকিয়ে আছে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে এই টাকায় তাদের মুনাফার হার বাড়াতে। মোদী সরকার যে তাদের আপনজন - এই কথা সবাই জানেন। মোদী জমানায় ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৫২১ কোটি টাকা লোপাট করেছে জালিয়াতরা। এদের অনেককে নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠবৃত্তে সখ্যতা করতে দেখা গিয়েছে। মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ঋণখেলাপিদের জন্য ব্যাঙ্কের ৬ লক্ষ কোটি টাকা মকুব করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৯১ হাজার কোটি টাকা কর্পোরেটের আর ১ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্য ও পরিষেবা শিল্পের মালিকদের। অর্থাৎ ৯০ শতাংশের বেশি টাকাই মকুব হয়েছে কর্পোরেট মালিকদের জন্য। এর মধ্যে বিদেশে পলাতক ঋণখেলাপি মেহুল চোকসি ও বিজয় মালিয়াও আছেন। এই ঋণখেলাপিদের অনেকেই নিশ্চিন্তে দেশ ছেড়েছেন। অনেকে অন্য দেশের নাগরিকত্বও নিয়েছেন। ঋণখেলাপিদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মোদী সরকার নির্বিকার।
মোদী ক্ষমতায় আসার পর ইন্দ্রধনুষ স্কিম চালু করেন। এই স্কিম অনুসারে যে ঋণের টাকা আর ব্যাঙ্কে ফিরবেনা তা মোট লাভ থেকে ঋণখেলাপিদের জন্য ব্যালান্সশিটে সংস্থান হিসাবে দেখাতে হবে। এই পদ্ধতিতে ব্যাঙ্কগুলিকে লোকসান দেখিয়ে বিক্রি করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ব্যাঙ্কগুলি ব্যবসায়িক লাভ করেছিল ১,৭৪,৩৩৬ কোটি টাকা। ইন্দ্রধনুষ খাতে ব্যাঙ্কগুলিকে ২,০০,৩৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হওয়ায় লোকসান দাঁড়ায় ২৬,০১৬ কোটি টাকা। এটাই ব্যাঙ্ক বিক্রি করার মোদী ম্যাজিক।
●●●●
মোদী সরকারের নির্দেশে আরবিআই এখন থেকে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে সরকারি লেনদেনের দায়িত্ব দেবে। এবার থেকে করের টাকা নেওয়া,পেনশন ও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের লেনদেনের কাজ করতে পারবে তারা। বেসরকারি ব্যাঙ্ক মানেই গ্রাহক সন্তুষ্টি এই ভাষ্য বারবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে এসেছে। গ্রামাঞ্চলে শাখা খোলা বা গরিবদের অ্যাকাউন্ট খোলায় উৎসাহী নয় বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি। তাদের কাছে সেভিংস অ্যাকাউন্টে যে টাকা ব্যালান্স রাখতে হয় তা আমাদের দেশের অধিকাংশ গরিব মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তা ছাড়া ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা শুরুই হয়েছিল আমেরিকার বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে। আমাদের দেশে মন্দার প্রকোপ আছড়ে পড়তে পারেনি ব্যাঙ্কগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে থাকার জন্য। এর পূর্ণ কৃতিত্ব বামপন্থীদের ও ব্যাঙ্ককর্মীদের প্রাপ্য। বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে এই পর্যন্ত ব্যাঙ্ককর্মীরা ৩৫ বার ধর্মঘটে গিয়েছেন। আমাদের মতো বিশাল দেশে প্রত্যন্ত প্রান্তে মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি এক ঐতিহাসিক ভুমিকা পালন করে এসেছে। বেসরকারি ব্যাঙ্ক ডুবে গেলে তার দায়িত্বও নিতে হয়েছে সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে।
১৯৯৪ সালে গ্লোবাল ট্রাস্ট ব্যাঙ্ক উদ্বোধনের সময় ডঃ মনমোহন সিং বলেছিলেন, আগামীদিনে এই ব্যাঙ্ক মডেল হবে। ২০০৪ সালে ওই মডেল ব্যাঙ্কটি দেউলিয়া হলে ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্সকে ব্যাঙ্কটির অধিগ্রহণ করতে হয়েছিল। ওই বছরেই ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা হয়। লন্ডন ব্যাঙ্ক অফ ইয়ার্স, দাও জোন্স ও মুডিজ-এর শিরোপা পাওয়া এই ব্যাঙ্কটি এখন দ্রুত পতনের দিকে এগিয়ে চলেছে। নয়া-উদার অর্থনীতিতে বেসরকারি ব্যাঙ্কের অবস্থা বোঝার জন্য এই দুটি উদাহরণই যথেষ্ট।
১৯৫৬ সালে ২৪৫টি বেসরকারি দেশি বিদেশি বিমা কোম্পানিকে জাতীয়করণ করে মাত্র ৫ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে এলআইসি-র যাত্রা শুরু হয়। জীবনবিমার মোট সম্পদের পরিমাণ ৩২ লক্ষ কোটি টাকা এবং বর্তমানে বিমাকারীর সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। ভারত ও চীনকে বাদ দিলে আর কোনো দেশের লোকসংখ্যা এতটা নয়। জীবনবিমার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বেসরকারি বিমা কোম্পানির প্রথম প্রবেশ ঘটে ২০০০ সালে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত এলআইসি সহ মোট ২৪টি বিমা কোম্পানি আছে। তা সত্ত্বেও মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তি থাকাতে ৭১ শতাংশ বাজার এলআইসি’র দখলে। বিমাকারী প্রায় ১০০ শতাংশ টাকা ফেরত দেওয়ার নিরিখে বিশ্বে এক অনন্য নজির গড়েছে এলআইসি। ব্যাঙ্কের মতো আমাদের দেশের মেরুদণ্ড জীবনবিমাকে বেসরকারিকরণ করার পথে চলেছে মোদী সরকার।
ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক ও জীবন বিমার সর্বস্তরের কর্মী ও অফিসারদের ভারতব্যাপী সর্বাত্মক ধর্মঘটে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে সারা দেশের আর্থিক লেনদেন। আগামীদিনে কৃষকদের মতো দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনের পথে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্ক ও জীবনবিমা কর্মীদের সংগঠনগুলি। ব্যাঙ্ক ও বিমাকর্মীদের এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশের বেশিরভাগ ট্রেড ইউনিয়ন ও বামপন্থী দলগুলি। দেশব্যাপী যৌথ আন্দোলনই বাধ্য করতে সক্ষম হবে স্বৈরাচারী মোদী সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলিকে বিক্রি করার আত্মঘাতী দেশবিরোধী নীতি প্রত্যাহার করতে।
বিবরণ | ২০১৭-১৮ কোটি টাকায় | ২০১৮-১৯ কোটি টাকায় | বৃদ্ধি শতাংশ |
মোট লগ্নি | ১৪,৩১,০০৮ | ১৬,৪০,৬২৮ | ১৪.৬৫ |
মোট সম্পদ | ২৩,৫৭,৯১৩ | ২৬,৩৩,৯৫৬ | ১১.৭০ |
মোট রাজস্ব | ২১,৫৪,৭৭৪ | ২৫,৪৩,৩৭০ | ১৮.০৩ |
১৭৮টি লাভজনক সংস্থার মোট লাভ | ১,৫৫,৯৩১ | ১,৭৪,৫৮৭ | ১১.৯৬ |
৭০টি সংস্থার মোট লোকসান | ৩২,১৮০ | ৩১,৬৩৫ | ১.৬৯ |
সবগুলি মিলিয়ে মোট লাভ | ১,২৩,৭৫১ | ১,৪২,৯৫১ | ১৫.৫২ |
জিএসটি সহ শুল্ক বাবদ কেন্দ্রকে জমা | ৩,৫২,৩৬১ | ৩,৬৮,৮০৩ | ৪.৬৭ |
৭৯ সংস্থার বিদেশি মুদ্রা আয় | ৯৮,৭১৪ | ১,৪৩,৩৭৭ | ৪৫.২৪ |
● লোকসান কমেছে। সূত্রঃ স্কোপ স্ট্যান্ডিং কনফারেন্স অফ পাবলিক এন্টারপ্রাইস (An Apex Body of PSE’S)।