৫৯ বর্ষ ৩ সংখ্যা / ২৭ আগস্ট, ২০২১ / ১০ ভাদ্র, ১৪২৮
পূর্ব বর্ধমান জেলায় তীব্র হচ্ছে জমির আন্দোলন
লালঝান্ডা নিয়ে দিকে দিকে হারানো জমি উদ্ধার করছেন কৃষকরা
শঙ্কর ঘোষাল
গলসীর সাটিনন্দীগ্রামে হকের জমি লাল পতাকা নিয়ে পুনরুদ্ধার করে জমিতে ধানের চারা পুতঁলেন গরিবরা।
গরিবের হকের জমি কেড়ে নিয়েছিল শাসকদলের মদতে প্রাক্তন জোতদারদের লেঠেল বাহিনী। ১০ বছর পর সেই হারানো হকের জমি ফেরাতে আন্দোলনের পথে গ্রামের গরিবরা। গলসীর খানো ও সাটিনন্দী গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় একের পর এক হকের জমি পুনরুদ্ধার করেছেন সেই গরিবরাই। প্রথমে ২৩ বিঘা তারপর ১৩ বিঘা লুঠ হয়ে যাওয়া জমিতে লাল ঝান্ডা পুঁতেই পুনর্দখল নিয়েছেন ভূমিহীনরা। গলসীর দুই গ্রামে জমি পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলনে ছিল টান টান উত্তেজনা। শাসকদলের মদতে জমির মালিক লেঠেল নিয়ে জমিতে নামার চেষ্টা করলে গরিবরাও দলবেঁধে রুখে দাঁড়ায়। গরিবদের মেজাজ দেখে জমির মালিক প্রাক্তন জোতদাররা হুমকি দিয়েও পিছিয়ে যায়। গরিবরা হুঁশিয়ারি দেয়, ‘দীর্ঘদিন চাষ করছি আমরা, এ জমি তোমার কী করে হলো? এখান থেকে লেঠেল নিয়ে পালাও না হলে এই জমিতেই তোমাদের গেঁড়ে দেব’। গরিবদের এমন লড়াকু মেজাজ দেখে প্রাক্তন জমির মালিকরা ছুটে পালিয়ে যায়। পরে শাসকদলের সহযোগিতায় পুলিশ ডাকলেও গরিবদের এই জাগরণ দেখে মাঠে পুলিশ নামতে সাহস দেখায়নি। লাল পতাকা উড়িয়েই এদিন সাটিনন্দী গ্রামে আদিবাসী, তপশিলি, সাধারণ গরিবরা ১৩ বিঘা জমিতে ধানের চারা পুঁতেছেন। গরিবের এই লড়াইয়ে ফেরা এবং জয় থেকেই প্রেরণা পেয়েছেন অন্যান্য এলাকার গরিবরাও।
হারানো হকের জমি ফিরে পেতে পূর্ব বর্ধমান জেলার গ্রামে গ্রামে কোমরও বাঁধছেন গরিব ভূমিহীন সেই মানুষ। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ৩৪ বছরে ভূমিসংস্কারের ফসল হিসাবে যে গরিব কৃষক, খেতমজুর, বর্গাদার, পাট্টাদাররা জমি পেয়েছিলেন, সেই জমির অনেকটাই তৃণমূল ক্ষমতায় এসে গরিবদের কাছ থেকে কেড়ে জোতদারের হাতে তুলে দেয়। অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় ২০১৪ সালে গ্রামে গ্রামে খোঁজ খবর চালিয়ে যে তথ্য বর্ধমান জেলা কৃষক সভা সংগ্রহ করেছে তাতে গরিবের লুঠ হওয়া জমির যে পরিসংখ্যান তাতে স্পষ্ট হয়ে যায়, শাসকদল গরিবের নয় প্রাক্তন জোতদারদেরই দোসর। শুধুমাত্র ২০১১ সাল নয়, এরপর ২০১৬ ও ২০২১ সালেও গরিবের জমি লুঠ করেছে শাসকদলের মদতে প্রাক্তন জোতদাররা।
২০১১ সালের আগে প্রাক্তন জোতদারদের সংগঠন ভূমিজীবী সংঘ তাদের প্রতিবেদনে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিল, তাদের পয়লা নম্বর পছন্দের দল তৃণমূল তারপর বিজেপি। সেখানেই তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনার জন্য এই সংগঠন প্রকাশ্যে কাজ করবে বলে অঙ্গীকার করে। ক্ষমতায় এসে তৃণমূলও প্রাক্তন জোতদারদের অবদান ভোলেনি। তাই ২০১৪ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় ২০৯৭ বিঘা জমি তারা গরিবদের কাছ থেকে কেড়ে প্রাক্তন জোতদারদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। গরিবরাও চুপ করে বসে থাকেনি। জমি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে লাল ঝান্ডাকে সামনে নিয়েই তারা নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়েছে। অনেক জমি উদ্ধারও করেছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় মদতে লাগাতার জমি থেকে উচ্ছেদের কারণে এই সংখ্যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪হাজার বিঘার থেকেও অনেক বেশি। ২০১৪ সালের হিসাবে এর মধ্যে রায়তি জমি আছে, রয়েছে বর্গা জমি, পাট্টা জমি, দখলীকৃত জমিও। যদিও রায়তি জমির বেশির ভাগটাই পাট্টা জমি, বর্গা জমির অর্ধেকের বেশি ফের পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে গরিবরা লাল ঝান্ডা নিয়ে। সেই সময় যে পরিসংখ্যান হাতে এসেছে তাতে ১৮০০ বেশি গরিব মানুষকে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। জামালপুর, মেমারী, বর্ধমান সদর, রানিগঞ্জ, রায়না, গলসী, কালনা, কাটোয়া, ভাতাড়, কাঁকসা, লাউদোহা, পূর্বস্থলী, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, মন্তেশ্বর সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গরিবরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। শুধু জমি কেড়ে নেওয়া নয়, মিথ্যা সাজানো মামলাতে জেলে পাঠানো, ঘর বাড়ি ভাঙচুর, গ্রামছাড়া করা হয়েছিল। গত ১০ বছর ধরে গ্রামে গরিবের অর্জিত অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। মজুরির আন্দোলনে স্পষ্ট হয় শ্রেণি আন্দোলনে শাসকের মুখ ও মুখোশ। মুখে গরিবের বন্ধু বললেও দেখা গেছে গরিবের মজুরির আন্দোলন ভাঙতে তৃণমূল এবং বিজেপি একই মঞ্চে অবস্থান করেছে। বর্ধমান সদর-২ এলাকায় আর এস এস’র নেতা শাসকদলের পাশে থেকে মজুরির আন্দোলন ভাঙতে আপ্রাণ ষড়যন্ত্র করেছে। যদিও সেই লড়াইতে জিতেছে লাল ঝান্ডা নিয়ে গরিবরাই। গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতাই গরিবদের চিনিয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি গরিবের বন্ধু নয়, শত্রু।
কিন্তু খাস ও বর্গা জমি হারানোর ১০ বছর পর গলসী থানার খানো গ্রামপঞ্চায়েতের জামাড় গ্রামে তাঁদের হারানো হকের জমি ফের উদ্ধার করার খবরে গরিবদের মনোবল অনেকটাই বেড়েছে। দীর্ঘ ২৫ বছর যে ২৩ বিঘা খাস জমিতে চাষ করছিলেন ৫১ জন খেতমজুর, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেই জমির মালিকের পক্ষ নিয়ে ১২ জন সিপিআই(এম) সমর্থককে প্রথমে জমি থেকে উচ্ছেদ করে। বাকিদের বোঝানো হয় ওরা সিপিআই(এম) তাই জমি কেড়ে নেওয়া হলো। তারপর ২০১৬ সালে বাকি সব খেতমজুর ও বর্গাদারকে জমি থেকে উচ্ছেদ করে দেয় শাসকদলকে সঙ্গে নিয়ে জমির প্রাক্তন মালিক। সেই সময় যারা বিভ্রান্ত হয়ে তৃণমূলকে সমর্থন করছিলেন তাঁরা স্থানীয় শাসকদলের ব্লক নেতার কাছে দেখা করে বলেন, আমরা তো তৃণমূল করছিলাম তাহলে আমাদের জমি কেড়ে নেওয়া হলো কেন? শাসকদলের নেতা তাঁদের জানিয়ে দেয়, এতদিন তোরা চাষ করে ফসল তুলেছিস ঘরে, এবার ‘জমির মালিক’ ফসল কাটবে। শাসকদলের এই অবস্থানই গরিবদের চোখ খুলে দেয়। তাঁরা বুঝতে পারেন বন্ধু চিনতে ভুল করেছেন এতদিন। এই ঘটনায় গলসী থানার খানো গ্রামপঞ্চায়েতের জামাড় গ্রামে পুলিশ ও প্রশাসন এবং শাসকদল জমির মালিকের পক্ষ নেয়। অসহায় বর্গাদার, পাট্টাদাররা তৃণমূলের নেতার কাছে গেলেও তিনি জানিয়ে দেন এ জমি এখন প্রাক্তন জমির মালিক ফকির দাঁড়ি ও তারাপদ দাঁড়ির। ফলে অসহায় গরিব মানুষ দিন গুনছিলেন কবে তাঁদের সুদিন আসবে! এখানকার বর্গাদার গোপাল মাড্ডি বলেছেন, আমরা প্রথমে বন্ধু চিনতে ভুল করেছিলাম, পরে অভিজ্ঞতায় বুঝলাম লাল ঝান্ডা ছাড়া গরিবের বন্ধু আর কেউ নয়। তাই পুরনো ঝান্ডা নিয়েই আমরা জোতদারের কাছ থেকে লড়াই করে হারানো জমি উদ্ধার করেছি। গ্রামের প্রবীণ খেতমজুররা আক্ষেপ করে বলেছেন, অনেকতো তৃণমূল, বিজেপি'র খিচুড়ি খাওয়া হলো, এবার পুরনো বন্ধু লাল ঝান্ডার খিচুড়িই খাব আমরা। গরিবের প্রকৃত বন্ধু যে লাল পতাকা সেই অভিজ্ঞতাই স্পষ্ট করেছেন গলসীর গরিব মানুষ।
গরিবের হকের জমি ফিরে পাবার এই খবরে এতদিন যে গরিবরা জমি হারিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন, শাসকদলের প্ররোচনায় তারাও হারানো জমি ফিরে পাবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। খানো গ্রামপঞ্চায়েতের পর গলসীর সাটিনন্দী গ্রামপঞ্চায়েতের সাটিনন্দী গ্রামেও ১৩ বিঘা জমি গরিবরা জোটবদ্ধ হয়ে পুনরুদ্ধার করে। ১৯৮০ সাল থেকে অপারেশন বর্গায় রেকর্ড হয় গোপাল হেমব্রম ও রাম হেমব্রমের নামে। বর্তমানে জমিতে গোপাল হেমব্রমের ছেলে বলাই, বাদল, গণেশ হেমব্রমরা চাষ করছিলেন। অন্যদিকে রাম হেমব্রমের ছেলে শুকুল, কারণ হেমব্রমরা জমিতে চাষ করছিল। কিন্তু ২০২১ সালে তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসার পর প্রাক্তন জোতদারের পরিবার এই বর্গাদারদের উচ্ছেদ করে। তৃণমূলের মদতে গরিবদের জমি ছেড়ে দেবার হুমকি দেয় জমির মালিক। গলসীর খানো অঞ্চলের সামড়া গ্রামে ২৩ বিঘা জমিতেও একইভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছিল গরিবদের। সেই জমি দিনকুড়ি আগে পুনরুদ্ধার করার পর গরিবদের মধ্যে হারানো জমি ফিরে পাবার জন্য সাহস ও উদ্দীপনা তৈরি হয়। তারই লড়াইয়ের আঁচ এসে পড়ে সাটনন্দীগ্রামেও।
এদিন সকাল থেকেই গরিবদের মধ্যে ছিল সাজো সাজো রব। জমির অধিকার ফিরে পাবার এই আন্দোলনে যাঁরা শামিল হয়েছিলেন তাঁরা কেউ নিজে এই জমির ভাগ পাবেন এই মানসিকতা নিয়ে আসেননি। উদার অর্থনীতির এই সমাজে আত্মকেন্দ্রিকতা ঝেড়ে ফেলে নিজেদের অধিকার, জমি দখলে রেখে চাষ করার ১৯৬৭ সালের কৃষক আন্দোলনের প্রেরণাই যেন তাঁদের উদ্দীপ্ত করেছিল। সকাল ৮টায় মাঠে নেমে ১১টার মধ্যেই ১৩ বিঘা জমিতে ধান রুয়ে কাজ সারলেন তারা। মাঝে অবশ্য জমির মালিকদের লেঠেলের মোকাবিলাও করেছেন। পুরুষ, মহিলা, আবাল বৃদ্ধ-বণিতাদের এই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন দুই কৃষক নেতা সাইফুল হক ও নারু যশরাও। জমির আন্দোলনে গরিবদের মধ্যে এই শ্রেণিচেতনাবোধ তৈরি হয়েছে লাল ঝান্ডাকে সামনে রেখে, নতুন আলোয় নতুন পরিস্থিতিতে, নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছেন গরিবরা। ইতিমধ্যেই গলসীর আরও কয়েকটি অঞ্চলের গরিব মানুষ জমি ও অধিকার হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে জমির আন্দোলনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । ভাতাড়েও চণ্ডীপুর, কানপুর গ্রামে গরিবদের জমি দখল করে নেয় জমির মালিকরা তৃণমূলের মদতে। আড়া মৌজায় আমারুনে খাস জমি বেআইনি রেকর্ড করে পুলিশ নিয়ে দখল করতে গেলে এখানকার গরিব মানুষরা জোটবদ্ধ হয়ে তাদের হঠিয়ে দেয়। মাহাচান্দা গ্রামে আয়মা পাড়া এলাকায় জোতদার পুলিশ ও শাসকদলকে সাথে নিয়ে জমি দখল করতে গেলে আদিবাসীরা জোটবদ্ধভাবে তাদের তাড়া করে পালিয়ে আসতে বাধ্য করে। বামসোর গ্রামেও খাস জমিতে চাষ করেছিল জোতদাররা, গরিবরা তাদের হঠিয়ে ফের চাষ করেছে। তাই আজ একের পর এক ঘটনায় উজ্জীবিত গরিবরা।
মেমারী-২ ব্লকের বড়োপলাশন অঞ্চলের গোড়াপুর, কাঁটাবাড়ি, উদয়নল, বারারি এলাকার খাসজমি কমবেশি ১০ একর তৃণমূল গরিবদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও বড়োপলাশন, মির্জাপুর গ্রামে ৪ একর খাস জমি, জমির মালিকরা কেড়ে নিয়েছে। বড়োপলাশন-১ এলাকার বস্তেপোতা গ্রামে হাফিজ মল্লিকের ২ একর, জামির মল্লিকের ২০ শতক, হলধরপুর গ্রামের সুশান্ত কুণ্ডুর ৫০ শতক এবং মণ্ডলগ্রামের গরিবের দখলে থাকা খাস জমি কমবেশি ৮ একর জমি তৃণমূল জমির মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছে। মণ্ডল গ্রামের পথিক সামন্ত, ও বিনয় ঘোষদের বর্গা জমি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। গরিবরাও এককাট্টা হচ্ছেন গ্রামে গ্রামে। গরিবরা তাঁদের হকের জমি দখলে রাখতে আন্দোলনে ঝাঁপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন গ্রামে গ্রামে। এই আন্দোলনের পর গলসীর গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে গরিবের ঐক্য রক্ষা এই মুহূর্তে যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেই অমোঘ সত্য কথাটি। এই ঐক্যের বন্ধনে যেন কোনভাবেই প্রতিক্রিয়াশীলশক্তি ধর্ম, জাতের নামে বিভেদের বীজ বুনতে না পারে এই চেতনা গরিব, খেতমজুর, বর্গাদারদের মধ্যে প্রসারিত ধারা হিসাবে সেই স্রোতই যেন বইছে এখানকার গরিব পাড়ায়। ১৯৬৭ সালের কৃষক আন্দোলনের সেই স্লোগান এদিন খেতমজুরদের মুখে শোনা গেছে ‘খাস জমি দখল করো, দখল করে চাষ করো’। যদিও সেই সময় রাষ্ট্রপতি শাসনের পর জোতদার ও পুলিশ যৌথভাবে গরিবদের উপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছিল। ১৯৬৮ সালে ধান কাটার মরসুমে তা চরম আকার নেয় রাজ্যে। অনেক জমি আন্দোলনের কর্মী শহিদ হন। ২০১১ সালের পর বহু গরিব মানুষ শহিদ হয়েছেন, কিন্তু লাল পতাকার রং-আদর্শকে ফিকে হতে দেননি। আজ সেই রক্তে ভেজা লড়াইয়ের মাটিতেই জমি পুনরুদ্ধারের লড়াই যেন অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে গরিব মানুষদের মধ্যে। পুলিশ সরাসরি আক্রমণে না নামলেও প্রাক্তন জোতদার ও শাসকদলের তাঁবেদার হয়েই কাজ করছে। বর্তমানে শাসকশ্রেণির নির্মম আক্রমণের কথা গরিবরা ভোলেননি। পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষকসভার সম্পাদক সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, সব হারানো জমি আমরা ফেরত চাই। প্রকৃত যারা ভাগচাষি, পাট্টাদার, বর্গাদার, ভূমিহীন গরিব মানুষ তাঁরা জমি হারিয়েছেন। অবিলম্বে তাঁরা জমিতে নেমে হকের জমির দখল নিন, কৃষকসভা পাশে থাকবে। গরিব মানুষরা অনুভব করেছেন রাষ্ট্রশক্তি তৃণমূল সরকার গরিবের নয়, জোতদারের পাশে থেকেই জোঁকের মতো গরিবের রক্ত চুষে খাচ্ছে। তাই লাল ঝান্ডা নিয়েই জমি পুনরুদ্ধারের ডাক দিয়েছে কৃষকসভা। গলসীর খানোর সামড়া ও সাটিনন্দীগ্রামে তারই এক খণ্ড চিত্র সামনে এসেছে। বাদল, গণেশ, শুকুল হেমব্রমরা তাঁদের পেছনের লড়াই-আন্দোলনের স্মৃতিকে জীবন্ত রেখেই আজ শামিল হকের জমি রক্ষার লড়াই-আন্দোলনে লড়াইয়ে।