E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৩ সংখ্যা / ২৭ আগস্ট, ২০২১ / ১০ ভাদ্র, ১৪২৮

কিন্তু আমরা দেশ দেখি না অন্ধকারে

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


চারিদিকে মাছির ভনভনানি। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর ব্যর্থতায় নাকি অন্য কারও দোষে তা ভেবে লাভ নেই। সময় এখন গড্ডলিকায় গা ভাসানোর। সুযোগ পেলে ছাড়ে কোন ব্যাটা! কলসি ভরা ‘এখো গুড়’ সামনে ঝুলিয়ে রাখলে মাছির নোলা সকসকিয়ে ওঠায় কোনো দোষ নেই। বকসিগঞ্জের পদ্মাপারে খোলা হাট। পসরা সাজিয়েছে বংশীবদন আর ভাগ্নে মদন। সঙ্গে তাঁদের সাঙ্গোপাঙ্গ। ‘উচ্ছে, বেগুন, পটল, মুলো’ থেকে রেল, সেল, গেল, ভেল, তেল - লিস্টিখান বড়ো মনপসন্দ। বেচারিরা বহুদিনের বুভুক্ষুর দল। জিভে জল আসতে বাধ্য। ট্যাঁকে রেস্ত থাকলে আঙুল চেটে লুটেপুটে খাবার এই তো সময়। এখন দেশের ‘খঞ্জ নেতা গঞ্জনা দেয়, ‘চ’লতে নারে দেশ যে সাথে!’... ‘কি গানই গায়’, বলছে কালা, কানা কয় ‘কি নাচছে বালা!’ অতএব! সব সমস্যার সমাধান একটাই - ‘দে গোরুর গা ধুইয়ে!’

‘ক্রোনোলজি’ বিষয়টা ভারতবাসী কোনোদিনই ঠিকঠাক বোঝেনি। আজও বোঝেনা। জনসংখ্যা ১৩০ কোটি ধরে নিয়ে দেশে এখনও ২৫.৬৩ শতাংশ নিরক্ষর। সাক্ষর ৭৪.৩৭ শতাংশ। তথ্য বলছে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল - আগের বছরগুলোর তুলনায় এই ক’বছরে দেশে সাক্ষরতার হার কমেছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও যে দেশে প্রায় সাড়ে বত্রিশ কোটি নিরক্ষর মানুষ, তাঁরা যে এসব ক্রোনোলজির চক্করবাজিতে সাড়ে বত্রিশ ভাজা হবেন তা বলাই বাহুল্য। সকালে কারোর সঙ্গে দেখা হলে ‘রাম রাম’ সম্ভাষণ আর মাঠে ময়দানে ‘জয় শ্রী রাম’ হুঙ্কার যে এক নয় সেটা যেরকম অনেককেই বোঝানো মুশকিল। ঠিক যেমন ‘আচ্ছে দিন’-এর ঘোরে থাকা দেশের আম আদমি বুঝতে পারেনি ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ মানে একের পর এক দেশের সব সম্পত্তি বেচে দেশকে ‘সাফা’ করে দেওয়া। সিএএ, এনআরসি, এনপিআর-এর চক্করবাজি বোঝা তো অনেক পরের ব্যাপার। ‘রাম কে নাম’-এ এদেশে সবই করা সম্ভব! দেশের কৃষকরা ফসলের দাম না পেলেও একটা বড়ো অংশই আস্ত একটা ফাইভ স্টার ঝাঁ চকচকে রামমন্দির পেলেই খুশি। রামরাজ্যের প্রথম ধাপে তো পৌঁছানো গেল!

রামের প্রসঙ্গই যখন লেখায় এসে পড়লো তখন রামমন্দির নিয়ে সামান্য কিছু বললে খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক হবেনা বোধহয়। যদিও ‘ভাবাবেগ’ বিষয়টা খুবই সেনসিটিভ। ওই ইংরাজিতে যাকে ‘স্পর্শকাতর’ বলে। কারোর আবার সেখানে আঘাত টাঘাত লেগে গেলে চাপ আছে। কে যেন একটা ট্যুইট করেছিল ‘ভাবাবেগ ম্যাটারস’। যাক সেসব কথা। কথা হচ্ছিল বিক্রিবাটা নিয়ে। রামমন্দির নিয়ে। আপাতত জোরকদমে মন্দির নির্মাণ চলছে। এই ‘ঝাঁকি’ ২০২২ নাকি ২০২৪ - উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা অথবা লোকসভা নির্বাচনের আগে - ভোট জেতার লক্ষ্যে ঠিক কবে উপহার দেওয়া হবে তা মোহন-নাড্ডার অঙ্ক। তবে রামমন্দির নিয়ে জমি কেনাবেচা চলছে। লাখের জমি কোটিতে বিক্রি হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসে লাখ টাকায় জমি কিনে মে মাসে কোটি টাকায় বিক্রিরও নজির আছে। আর সেই অভিযোগ এসেছে খোদ রাম জন্মভূমি আন্দোলনের এক পরিচিত মুখের কাছ থেকে।

সম্প্রতি অযোধ্যার হনুমানগড়ি মন্দিরের সাধু মহন্ত ধরম দাস, রাম মন্দির ট্রাস্টের সচিব চম্পত রাই, সমস্ত ট্রাস্টি, বিজেপি বিধায়ক দীপ নারায়ণ উপাধ্যায়, অযোধ্যার মেয়রের ভাইপো হৃষিকেশ উপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মন্দির ট্রাস্টের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা এবং রাম মন্দির নির্মাণের জন্য দান করা অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগ করেছেন ধরম দাস। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সাব-রেজিস্ট্রারের দপ্তর অবগত ছিল না যে ‘নাজুল’ জমি দুবার বিক্রি হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ লক্ষ টাকায় মহন্ত দেবেন্দ্র প্রসাদাচার্য ৬৭৬ বর্গ মিটারের এই প্লট অযোধ্যার মেয়র হৃষিকেশ উপাধ্যায়ের ভাইপো দীপ নারায়ণের কাছে বিক্রি করেছিলেন। দীপ নারায়ণ মে মাসে এই জমি ট্রাস্টের কাছে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি করেন। যেখানে ডিএম সার্কেল রেট অনুযায়ী এই জমির মূল্য প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা।’’ অভিযোগ, রামভক্তদের দানের টাকায় ২০ লাখের জমি রামের নামে মাত্র তিন মাসে আড়াই কোটি টাকা খরচ করে কিনেছে রাম মন্দির ট্রাস্ট। ‘টিপ অফ দ্য আইসবার্গ’ গোছের কী একটা কথা আছে বোধহয় বাঙলাতে!

দেশে বিগত কয়েক বছরে আর কিছু হোক না হোক গালভরা নাম দিয়ে বেশ কিছু প্রকল্প চালু হয়েছে। এরকমই এক প্রকল্প ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’। ভারতকে স্বচ্ছ করার নামে ২০১৪ সালে চালু হওয়া এই প্রকল্পে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুসারে খরচ হয়েছে ৬৭,০৫৮ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৯,৯৯৪ কোটি টাকা। এছাড়াও আরও ৫৮৯ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য। গত সাত বছরে শুধু ঝাঁটা মেরে ভারতকে কতটা স্বচ্ছ করে তোলা গেছে তা নিয়ে সরকারের দাবি এবং বাস্তবের ছবিতে না ঢোকাই শ্রেয়। তবে ঝাঁটা হাতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিটা বেশ ইঙ্গিতবাহী সন্দেহ নেই।

দিনকয়েক আগে এরকমই আরও এক রাঙামুলো সামনে এসেছে। বেচাবেচির সেই প্রকল্পের গালভরা নাম দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন। এমনিতেই প্রায় পাঁচ বছরের মাথাতেও এখনও ‘ডিমনিটাইজেশন’ শুনলেই দেশবাসীর হৃদকম্প হয়। এবার তাই হয়তো ‘ডি’ বাদ দিয়ে শুধু ‘মনিটাইজেশন’। খেলা দেশের মানুষকে নাচিয়েই। পার্থক্য একটাই। আগের বার দেশের মানুষের কাছে থাকা নোট বাতিল করে মানুষকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল সরকার। আর এবার দেশের মানুষের টাকায় তৈরি দেশের সম্পদ বেচে হয়তো হাতে থালা বাটি ধরিয়ে দেবে। অনেকেরই অবশ্য থালায় ভাত না থাকলেও ক্ষতি নেই, থালা বাটি বাজিয়ে নাচতে পারলেই শান্তি।

মাঝে মাঝে শের শায়রি আওড়ে নেওয়া বেশ ভালো অভ্যাস। তাতে নিজেকে সাংস্কৃতিকও প্রমাণ করা যায়। আবার একটু প্রতিবাদী শের হলে দেশ ও দশের জন্য আমি কতটা চিন্তিত সেটাও প্রমাণ করা যায়। যেমন এই কবিতাটা। ‘ও লুট রহে হ্যায় স্বপ্নকো, ম্যায় চ্যায়েন সে ক্যায়সে শো যাঁয়ু/ও বেচ রহে হ্যাঁয় ভারতকো, খামোশ ম্যায় ক্যায়সে হো যাঁয়ু/ হাঁ ম্যায়নে কসম উঠায়ি হ্যায়, ম্যায় দেশ নেহি বিকনে দুঙ্গা/ সৌগন্ধ মুঝে ইস মিট্টি কী, ম্যায় দেশ নেহি মিটনে দুঙ্গা’। এই কবিতা বছর আটেক আগে আওড়ে ছিলেন দেশের জন্য গভীরভাবে চিন্তিত গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। এখন অবশ্য এই কবিতার শব্দ টব্দ বেমালুম বদলে গেছে। তারপর থেকে নির্বাচনী প্রচার আর মন কী বাত ছাড়া উনি কথা বলেন না। শুধু বেচে দেবার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেন। যেমন গত ২৪ আগস্ট ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন বা এনএমপি-র তালিকা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এত কঠিন শব্দবন্ধ হয়তো বুঝতে অনেকেরই অসুবিধে হবে। সোজাসাপটা বলাই ভালো। এই এনএমপি-কে গোদা বাংলায় বলা যেতে পারে - দেশের লাভজনক সম্পত্তি বিক্রির তালিকা। আগামী চার বছরের মধ্যেই এই সম্পত্তি বিক্রি করে ৬ লক্ষ কোটি টাকা তোলা হবে।

তালিকায় কী কী আছে? তালিকায় আছে রাস্তা, বন্দর, রেল, স্টেডিয়াম, পেট্রো-পরিকাঠামো সবই। চেনা পিপিপি-সহ রকমারি মডেলের সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়া হবে। বিক্রির পোর্টাল খুলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার ওয়ানস্টপ শপ খুলেছে। এই ঘোষণার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবেই জানানো হয়েছে - জাতীয় সড়ক, রেলপথ, স্টেডিয়াম, ওয়্যারহাউস, পাওয়ারগ্রিড, টেলিকম প্রভৃতি সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি সংস্থাকে লিজে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ৬ লক্ষ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলবে। এর মধ্যে রেলের পরিকাঠামো বিক্রি করে তোলা হবে ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। ২৬,৭০০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক বেসরকারিকরণ করে তোলা হবে ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা। ৪২,৩০০ সার্কিট কিলোমিটার পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তালিকায় আছে ৬০০০ মেগাওয়াট হাইড্রো সোলার সম্পদ। আছে ৮০০০ কিলোমিটার গেল-এর পাইপলাইন, ৪০০০ কিলোমিটার পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন, ২.৮৬ লাখ কিলোমিটার ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ও টেলিকম টাওয়ার। ২০১০ লক্ষ মেট্রিক টন ফুড স্টোরেজ। আছে ১৬০ কয়লা খনি, ৭৬১টি মিনারেল ব্লক। ২৫টি বিমানবন্দর। ৪০০টি স্টেশন, ১৫০টি ট্রেন, রেলওয়ে ট্র্যাক, গুডস শেড বিক্রি করা হবে। ১৫টি রেল স্টেডিয়াম, রেলের ২৪৪ কিলোমিটার লাইন, কোঙ্কন রেলওয়ের ৭৪২ কিলোমিটার লাইন বিক্রি হবে। বিক্রির তালিকায় আছে সড়ক পরিকাঠামো, পেট্রোপণ্য, বিমানবন্দর, বিভিন্ন বন্দরও। এনএমপিতে বলা হয়েছে, চারটি পদ্ধতিতে সম্পদ বিক্রি হবে। প্রথমত, বাজারদর, দ্বিতীয়ত, পিপিপি পথে, তৃতীয়ত, খাতায় কলমে যে দাম রয়েছে, চতুর্থত, কত আয় হয় তার ভিত্তিতে। এরকমের বেচারাম সরকার ভারত গত ৭৫ বছরে দেখেনি একথা সত্যি।

একই দিনে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ঘোষণা করেছেন, সামরিক সরঞ্জাম নির্মাণে বেসরকারি সংস্থার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে ঢালাওভাবে। অর্থাৎ বেসরকারি সংস্থা এবার অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম নির্মাণ করলেও যাবতীয় সুযোগ সুবিধা সরকারি সংস্থা থেকেই নিতে পারবে। অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, চলতি আর্থিক বছরে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল ফার্টিলাইজার, মিশ্র ধাতু নিগম এবং রাষ্ট্রীয় কেমিক্যাল ও ফার্টিলাইজার বেচে দেওয়ার পর এলআইসি শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া পুরোদমে শুরু করে দেওয়া হবে। জানা গেছে, আইপিও থেকে এলআইসি শেয়ার দখলে নিতে মোট ১৮টি সংস্থার নজর রয়েছে। ১৩টি বিমানবন্দরের সঙ্গে দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ বিমানবন্দর সরকারি অংশের শেয়ারও বিক্রি করে দেওয়া হবে।

এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, গত ৭০ বছরে ভারত যা যা তৈরি করেছে, প্রধানমন্ত্রী সব বিক্রি করে দিচ্ছেন। কংগ্রেসের কয়েক দশকের শাসনে কিছুই হয়নি বলে বিজেপি প্রায়শই যে দাবি করে, এই তালিকা বিজেপির সেই দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যুবকদের বলতে চাই কী কী বিক্রি করা হচ্ছে এবং কাকে কাকে বিক্রি করা হচ্ছে। ২ থেকে ৩টি বেসরকারি সংস্থাকে এগুলো বিক্রি করা হবে। আমি করোনার বিষয়ে যখন বলেছিলাম তখন আপনারা সবাই হেসেছিলেন। তারপর আপনারা দেখলেন কী হলো। এখন আমি আবার বলছি দেশের ভবিষ্যতের ওপর এই মনিটাইজেশনের সিদ্ধান্ত ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।’’

এনএমপি-কে ‘দেশ বেচার তালিকা’ বলে উল্লেখ করে বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই মনিটাইজেশন পরিকল্পনার ফলে কেবলমাত্র ২-৩টি বেসরকারি সংস্থার লাভ হবে। হাতেগোনা কয়েকটি মাত্র ব্যবসা পড়ে থাকবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ ব্যাপক কমবে।

এই প্রসঙ্গে ‘অবিলম্বে ভারত বিক্রি বন্ধ করুন’ দাবি জানিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন - ‘এবার প্রকাশিত হলো ভারতের জাতীয় সম্পত্তি লুটের নীলনকশা। অর্থমন্ত্রীর ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনে রয়েছে দেশ ও জনগণের সম্পদ লুটের তালিকা। দেশের সম্পদ বিক্রির প্রতিবাদ করতে হবে সবাইকে, যাতে মোদী সরকার বিক্রি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়।’ পলিট ব্যুরো জানিয়েছে - ‘অর্থমন্ত্রী গতকাল যে ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন (এনএমপি) প্রকাশ করেছেন, তাতে আমাদের জাতীয় সম্পদ এবং পরিকাঠামোর লুটের বিবরণ রয়েছে। এই ঘটনা জনগণের সম্পদের সরাসরি লুন্ঠন। দৈনন্দিন খরচ মেটাতে পারিবারিক সম্পদ বিক্রি করা কোনো অর্থনৈতিক বিষয় বা উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নয়। যেসময় বাজারে মন্দা, সেই সময় এইধরনের বিক্রির ধুয়ো তোলা শুধুমাত্র ফাটকাবাজ পুঁজিপতিদের জন্য লাভজনক এবং এর ফলে ধান্দার ধনতন্ত্রের বিকাশ হবে।

চোখে ঠুলি বেঁধে লাগানো বিষবৃক্ষে ফল ধরে গেছে। এখন ভরা হাটের মাঝে বসে শব্দের জাল বুনে কতটা লাভ তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বলতে গেলে অনেক কথাই আসতে পারে, আসছে। আগামীতেও আসবেও। সেসব আপাতত না হয় বাদ থাকুক। শেষের সেদিন ভয়ঙ্কর তা এখন দিনের আলোর মত স্পষ্ট। এখন বোধহয় রাস্তা খোঁজার সময়। বিশ্বাসে ফেরার সময়। ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। তাই লড়াই এবার মুখোমুখি।