E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৯ বর্ষ ৪১ সংখ্যা / ২৭ মে, ২০২২ / ১২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯

রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনঃ বঞ্চিত এক গবেষকের কথা

তপন মিশ্র


রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন

পশ্চিমীদেশে মহিলাদের সমানাধিকার নিয়ে খুব বড়াই করা হয় তা আমরা শুনি। কিন্তু ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের উপেক্ষার ঘটনা এই সমানাধিকারের দাবিকে লজ্জা দেয়। ইয়োরোপ সহ সারা বিশ্বের বিজ্ঞান গবেষণায় রোজালিন্ড হয়ে যান বিস্মৃত এক বিজ্ঞানী। ২০০২ সালে যখন ‘মানব জিনোম’ গবেষণা সাফল্যের চরম স্তরে তখন গাবি হিন্সফ নামে গার্ডিয়ান পত্রিকার একজন লেখিকা লেখেনঃ “মানব ডিএনএ-র রহস্য উন্মোচন করার জন্য ডিএনএ গবেষণার বিস্মৃত এই নায়িকাকে মরণোত্তর সম্মানে ভূষিত করা হবে। বিজ্ঞান গবেষণায় লিঙ্গ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরকারি প্রয়াসের অংশ হিসাবে রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনকে একজন নারীবাদী সেলিব্রিটি হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এই শতাব্দী (বিংশ শতাব্দী)-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করতে এই প্রয়াস। বিজ্ঞান গবেষণায় নিবেদিতপ্রাণ বিজ্ঞানী রোজালিন্ড, তাঁর পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা স্বীকৃত হননি।” এই পুরুষ সহকর্মীদের মধ্যে ডিএনএ গঠনের আবিষ্কর্তা জেমস ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিকের নাম রয়েছে। একই গবেষণাগারে কাজ না করলেও ওয়াটসন এবং ক্রিক রোজালিন্ডের কিংস কলেজ গবেষণাগারের সহকর্মী মোরিস উইলকিন্সের সহযোগিতায় রোজালিন্ডের নিজস্ব গবেষণার নথি হাসিল করেন এবং তাঁকে বাদ দিয়ে সমস্ত কৃতিত্ব ছিনিয়ে নেয় ওয়াটসন, ক্রিক এবং উইলকিন্স।

সেই বছর ব্রিটিশ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সেক্রেটারি প্যাট্রিসিয়া হিউইট, মহিলা বিজ্ঞানীদের ব্যতিক্রমী উদ্ভাবনের জন্য ৩০,০০০ পাউন্ড বার্ষিক পুরস্কার সহ ‘ফ্রাঙ্কলিন পদক’ নামে একটি পুরস্কার ঘোষণা করেন। সঙ্গে গবেষণা ক্ষেত্রে মহিলা বিজ্ঞানীদের সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে একটি টিমও গঠন করেন। এটাই ছিল রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের একমাত্র পুরস্কার, যদিও তা মরণোত্তর।

রোজালিন্ডের গবেষণা এবং জে ডি বার্নাল

রোজালিন্ডের গবেষণার বিষয় ছিল ক্রিস্টালোগ্রাফি বা কেলাস সম্পর্কিত বিজ্ঞান। প্রথমে অজৈব কেলাস এবং পরে জৈব কেলাস নিয়ে ছিল তাঁর গবেষণা। গ্রেট ব্রিটেনের জৈব-অণুর এক্সরে-ক্রিস্টালোগ্রাফির জনক এবং একজন অগ্রগণ্য গবেষক জন ডেসমন্ড বার্নালের গবেষণাগারে রোজালিন্ড প্রায় ৫ বছর গবেষণার কাজ করেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের বির্কবেক কলেজের অধ্যাপক গবেষক বার্নাল ছিলেন একজন বামপন্থী। সম্ভবত এই দোষে দুষ্ট হওয়ার কারণে ক্রিস্টালোগ্রাফি গবেষণায় অনেক সাফল্য থাকা সত্ত্বেও তেমন কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান তিনি পাননি। কিন্তু তাঁর দুটি বই ‘সোশ্যাল ফাংশন অব সায়েন্স’ এবং ‘সায়েন্স ইন হিস্ট্রি’র জন্য তিনি বিশ্ববিখ্যাত হয়ে যান। রোজালিন্ডের মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কে জন ডেসমন্ড বার্নালের উক্তি হলোঃ “তাঁর গবেষণা ছিল অত্যন্ত সুন্দরভাবে সংগঠিত। গবেষণার একটি সিরিজে তিনি কার্বনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলি আবিষ্কার করেন। যেমন সাধারণ কার্বন এবং গ্রাফাইটের গঠনগত পার্থক্য যা তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি পরীক্ষার মধ্যদিয়ে তিনি দেখতে পান। এরপরই তিনি জৈব-পদার্থবিদ্যার আরও কঠিন পরীক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।”

তখন রোজালিন্ড অজৈব অণু সম্পর্কে কাজ বাদ দিয়ে জৈব অণু নিয়ে কাজ করছেন। বার্নালের গবেষণাগারেই এই কাজ তিনি করছেন। ডিএনএ-র গঠন আবিষ্কারের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক রোজালিন্ডের কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর যোগ্য সম্মান ওয়াটসন এবং ক্রিক পেলেও তাঁদের গবেষণায় ধরা পড়েনি এমন এক সত্য রোজালিন্ড আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। কিন্তু রোজালিন্ডের অজ্ঞাতে ওয়াটসন এবং ক্রিক তা ব্যবহার করে বিখ্যাত হয়ে যান। অথচ রোজালিন্ড থেকে যান অন্ধকারে।

বার্নাল আরও বলেনঃ “এক্স-রে বিশ্লেষণের সবচেয়ে উদ্ভাবনী পরীক্ষা এবং গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তিনি এই ডিএনএ অণুর দ্বি-সর্পিল (double-helix - ডবল হেলিক্স) কাঠামোর সম্পর্কে ক্রিক এবং ওয়াটসনের অনুমানকে ভুল প্রমাণিত করে আরও সুনির্দিষ্ট এবং সঠিক কাঠামো নির্ধারণ করতে সক্ষম হন। তিনি নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যে, নিউক্লিক অ্যাসিডের প্রধান একটি উপাদান পেন্টোজ সুগার ফসফেট চেইনটির বাইরে থাকে, ভিতরের দিকে নয়।”

বার্নালের গবেষণাগার সম্পর্কে রোজালিন্ডের একটি অভিযোগ ছিল। তা হলো, রোজালিন্ড বলতেন বার্নালের গবেষণাগার খুব ধীরগতিতে চলে। ১৯৫৩ সালে রোজালিন্ড বির্কবেক কলেজে বার্নালের নেতৃত্বে নিজের গবেষণাগার তৈরি করেন। এই গবেষণাগারে তিনি ভাইরাসের গঠন নিয়ে কাজ শুরু করেন। ১৯৫২ সালের গোড়ার দিকে কিংস কলেজে রোজালিন্ডের গবেষণায় কিছু অসুবিধার কারণে তিনি বার্নালকে একটি চিঠি লেখেন এবং অনুরোধ করেন যে বির্কবেকে তিনি গবেষণাগার গড়ে তুলতে চান এবং তাঁর দলে যোগ দিতে চান। বার্নাল রাজি হলে ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করে কাজ শুরু হয়ে যায়। কিংস কলেজে অসুবিধা যা ছিল, তাহলো, রোজালিন্ডের গবেষণালব্ধ তথ্য তাঁর অজ্ঞাতে হস্তান্তরিত হয়ে যাচ্ছিল। বার্নালের সঙ্গে তামাক ভাইরাসের যে কাজ তিনি করেন পরবর্তীকালে তা বিজ্ঞানীদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

‘ফটো-৫১’

ফটো-৫১ এবং কিংস কলেজের গবেষণা

রোজালিন্ড এবং তাঁর গবেষক ছাত্র রেমন্ড গসলিং ১৯৫২ সালে কিংস কলেজের জন রান্ডালের গবেষকদলে কাজ করছিলেন। তখন তাঁরা ডিএনএ তন্তুর এক্স-রে ছবি তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এত সূক্ষ্ম একটি তন্তুর কিছু রাসায়নিক গঠন জানা থাকলেও সেই রাসায়নিক পদার্থগুলি কীভাবে সাজানো থাকে তা একদমই অজানা ছিল। একইসময় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাভেন্ডিজ গবেষণাগারে ফ্রান্সিস ক্রিক এবং জেমস ওয়াটসনের জুটি রাসায়নিক অণুগুলি সম্পর্কে প্রায় সমস্ত তথ্য আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। কিন্তু অণুগুলির মধ্যে যোগাযোগের বন্ডগুলির মধ্যেকার কোণ এবং সজ্জা-রীতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এক্স-রে পদ্ধতি অবলম্বন করেও তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না।

অন্যদিকে কিংস কলেজে রোজালিন্ড এবং রেমন্ড গসলিং ত্রিমাত্রিক এক্স-রে ছবি তুলতে তুলতে ৫১ নম্বর ত্রিমাত্রিক ছবিটি এতোটাই স্পষ্ট হয় যে ডিএনএ-র দ্বিতন্তু গঠন ব্যাখ্যা করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ডিএনএ এবং আরএনএ-র মতো বড়ো অণু (বেশ কিছু অণুর সমন্বয়ে গঠিত পলিমার) এই ছবিটি ‘ফটো-৫১’ নামে পৃথিবী বিখ্যাত হয়ে যায়। এরই ব্যাখ্যা ১৯৫৩ সালের ২৫ সে এপ্রিল ‘নেচার’ পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়। ডিএনএ গঠনে তাঁদের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল - এই পলিমারে ফসফেট অণুর স্থান নির্ধারণ। কিন্তু এর সঙ্গে রাসায়নিক গঠনকে যুক্ত করে ডিএনএ-র সম্পূর্ণ গঠন তখনও প্রকাশিত হয়নি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আনা জিগলর নামে একজন নাট্যকার লন্ডন শহরে ‘ফটোগ্রাফ-৫১’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন। নাটকটিতে রোজালিন্ডের ডিএনএ অণুর গঠন আবিষ্কারের সমস্ত প্রয়াস এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁকে যে বঞ্চনার স্বীকার হতে হয়েছিল তা তুলে ধরা হয়।

বঞ্চনা

একটি ভুল ধারণা আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে। তা হলো, ওয়াটসন এবং ক্রিক হলেন ডিএনএ-র আবিষ্কর্তা। ১৮৬০ সালে সুইৎজারল্যান্ডের একজন রসায়ন বিজ্ঞানী ফ্রেড্রিক মেশর এই ধরনের অণুর অস্তিত্ব এবং তার কজের কথা প্রথম বলেন। তারপর অনেক গবেষণা হয়েছে। তাতে নিউক্লিক অ্যাসিডের (ডিএনএ এবং আরএনএ) অস্তিত্ব এবং তার নিজের প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতার কথাও (পৃথিবীতে অন্য কোনো অণুই এই কাজ করতে পারে না) জানা যায়।

অ্যানে সায়রের লেখা রোজালিন্ডের জীবনীতে উল্লেখিত হয় যে, যখন তিনি গবেষণাগারে অনুপস্থিত, সেই সুযোগে উইলকিন্স ‘ফটো-৫১’র সমস্ত তথ্য রোজালিন্ডের অনুমতি ব্যতিরেকে ওয়াটসনকে দেখিয়ে দেন। ঘটনাটি ঘটে ১৯৫১ সালে। অ্যানে সায়রে-কে রোজালিন্ড অনেকগুলি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিগুলিতে তাঁর গবেষণার সাফল্য এবং বাধা উভয় কথাই উল্লেখ করেন। তার দু'বছর পর অর্থাৎ ১৯৫৩ সালে নেচার পত্রিকায় রোজালিন্ডের অজ্ঞাতে ওয়াটসন এবং ক্রিকের নামে প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়ে যায়। কেবল সায়রে নন একইকথা আরও অনেকে, যেমন রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের অন্য জীবনীকার, গবেষক এবং তাঁর সতীর্থরাও উল্লেখ করেন। ফলে ডিএনএ-র একটি অজ্ঞাত অধ্যায় ওয়াটসন এবং ক্রিকের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায়। ২০০৩ সালে প্রকাশিত পোল্যান্ডের একজন গবেষক আন্দ্রেজ স্টাজিয়াকের লেখা বই ‘দ্য ফার্স্ট লেডি অব ডিএনএ’ ("The First Lady of DNA")-এ লেখা হয় যে, এই ঘটনা বিজ্ঞান গবেষণার জগতে এক অনৈতিক ঘটনা হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। সায়রে লেখেন, তখনকার ইংল্যান্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নারী বিদ্বেষ এতটাই ছিল যে, কিংস কলেজে রোজালিন্ডের মতো কতিপয় মহিলা গবেষকেরও পুরুষ গবেষকদের সঙ্গে একই ডাইনিং হলে খাওয়ার অনুমতি ছিল না।

১৯৬২ সালে ডিএনএ-র গঠন আবিষ্কারের জন্য নোবেল প্রাপ্তি হয় ওয়াটসন, ক্রিক এবং উইলকিন্সের। এই পুরস্কারে রোজালিন্ডের নাম যুক্ত হলো না কারণ তার প্রায় ৪ বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নোবেল পুরস্কার মৃত্যুর পরে দেওয়ার কোনো রীতি নেই। কিন্তু আপত্তিটা অন্য জায়গায়। যে প্রকাশনায় ডিএনএ-র পূর্ণ গঠন প্রকাশিত হয় (Watson, J. D., & Crick, F. H. C. A structure for deoxyribose nucleic acid. Nature 171, 737–738, 1953) সেখানেও রোজালিন্ডের নাম যুক্ত হয়নি। পরবর্তীকালে রোজালিন্ডের জীবদ্দশায় কোনো গবেষণার জন্যও তাঁর নাম নোবেলের জন্য সুপারিশ করা হয়নি।

১৯৬৮ সালে জেমস ওয়াটসন ‘ডবল হেলিক্স’ নামে ডিএনএ আবিষ্কার সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জনপ্রিয় বই লেখেন। বইটি ছোটো হলেও তৎকালীন ইংল্যান্ডের মুখ্য গবেষণাগারের কাজকর্ম সংক্রান্ত অনেক তথ্যই সেই বইতে আছে। বইটির সমালোচনা করে জে ডি বার্নালের একটি লেখা ‘লেবর মান্থলি’ (‘Labour Monthly’) পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধে ওয়াটসনকে বার্নাল সরাসরি প্রশ্ন করেন এবং দাবি করেন যে, ডিএনএ গঠন সংক্রান্ত গবেষণায় রোজালিন্ডের অবদান পরিষ্কার করে উল্লেখ করতে হবে। এই বইতে ওয়াটসন লিখছেন যে, একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কোনো একটি মানুষের স্বতন্ত্র প্রতিভার প্রতিফলন নয় বরং এটি একটি দলের সমন্বিত প্রয়াস। তিনি আরও লেখেন যে, রোজি খুব বুদ্ধিমতী এবং সাহসী মহিলা হিসাবে প্রশংসার দাবি রাখেন এবং তিনি (রোজি) ডিএনএ হেলিক্সে থাকা ফসফরাস পরমাণুগুলিকে চিনতে এবং স্থান নির্ধারণ করতে সক্ষম হন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, আমেরিকার বিজ্ঞানী লাইনস পাউলিং ১৯৫৪ সালে প্রোটিনের গঠন সম্পর্কিত তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য নোবেল পুরস্কার পান। এই গবেষণায় তিনিও এক্স-রে ডিফ্রাক্সন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি আন্দোলনের একজন নেতা হিসাবে ১৯৬২ সালে তিনি দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার পান। পাউলিংয়ের নিউক্লিক অ্যাসিড সংক্রান্ত কিছু তত্ত্ব রোজালিন্ড খারিজ করেন। অবশ্য ওয়াটসন তাঁর বইতে রোজালিন্ডকে এই কৃতিত্ব দিতে ভুল করেননি।

১৯৫৭ সালে তামাক গাছের ভাইরাস ‘টোবাকো মোজাইক ভাইরাস’ (Tobacco Mosaic Virus) সম্পর্কে রোজালিন্ড ও বার্নালের প্রকাশিত গবেষণাপত্র (The Structure of Turnip Yellow Mosaic Virus: X-Ray Diffraction Studies", Biochimica et Biophysica Acta) পরবর্তী সময়ে ভাইরাস গবেষণায় একটি মাইলস্টোন হয়ে আছে। ১৯৫৮ সালের এপ্রিল মাসে ওভারি ক্যান্সারের কারণে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে রোজালিন্ডের মৃত্যু হয়। বঞ্চনার এই ইতিহাস বিজ্ঞান গবেষণার জগতে এক কলঙ্ক হয়ে থাকবে।