৫৮ বর্ষ ৩য় সংখ্যা / ২৮ আগস্ট ২০২০ / ১১ ভাদ্র ১৪২৭
কমরেড হীরেন সাহার জীবনাবসান
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সিপিআই(এম) দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক কমরেড হীরেন সাহা বুধবার ২০ আগস্ট রাত ১টা ৫০ নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান বর্তমান। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র, পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা, রাজ্য সভাপতি নৃপেন চৌধুরি ও রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার, সর্বভারতীয় নেতা বিজু কৃষ্ণাণ সহ নেতৃবৃন্দ কমরেড হীরেন সাহার জীবনাবসানে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।
পার্টির জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস গভীর শোক জানিয়ে এদিন বলেন, কমরেড হীরেন সাহার মৃত্যুতে জেলা পার্টি ও কৃষক সভার বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। তাঁর অসীম সাহস, রাজনৈতিক দক্ষতা ও পরিশ্রম পার্টিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পার্টির কাজে কোনোদিন তাঁর আলস্য ছিল না। তাঁর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি জেলা পার্টির পক্ষ থেকে সমবেদনা জানাই।
লকডাউন সত্ত্বেও ২১ আগস্ট সকালে বালুরঘাটে পার্টির জেলা দপ্তর যামিনী মজুমদার ভবনে প্রয়াত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এখানে লাল পতাকায় ও পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পার্টির জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কল্যাণ দাস, অমিত সরকার, সর্বাণী নিয়োগী, মানবেশ চৌধুরি সহ জেলা কমিটির সদস্য এবং নেতাকর্মীরা। শেষশ্রদ্ধা জানান হরিরামপুরের সিপিআই (এম) বিধায়ক রফিকুল ইসলাম, কৃষক সভার রাজ্য নেতা প্রণব চৌধুরি, জেলা কৃষক সভার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সীতেশ গুহ, জেলা খেত মজুর ইউনিয়নের সম্পাদক নন্দলাল হাজরা, সিআইটিইউ জেলা সম্পাদক গৌতম গোস্বামী, আরএসপি নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস, অমর সরকার, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক সুব্রত দাস প্রমুখ। শ্রদ্ধা জানান এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, সিআইটিইউ, এবিপিটিএ, এবিটিএ সহ বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কমরেড হীরেন সাহা ১৯৮০ সালে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বামপন্থী রাজনীতিতে যুক্ত হন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি পার্টির সদস্যপদ অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে এসএফআই-র জেলা সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে এসএফআই রাজ্য সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। তিনি বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য ও কিশোর বাহিনীর রাজ্য নেতাও ছিলেন। বলিষ্ঠ চেহারা, নম্র ও বিনয়ী আচরণে বহু মানুষের প্রিয় ছিলেন তিনি। ছাত্র রাজনীতিতে থাকার সময়েই তিনি কৃষকদের লড়াই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে কৃষক সভার জেলা নেতৃত্বে উঠে আসেন। তিনি কৃষকসভার জেলা সম্পাদক ও রাজ্য কৃষক সভার সহসম্পাদক ছিলেন। পার্টিতেও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসাবে তিনি অনেক দায়িত্ব পালন করতেন।
এদিন প্রয়াত কমরেডের শবদেহ লাল পতাকায় মুড়ে পার্টির জেলা দপ্তর থেকে শোকমিছিল করে জেলা শ্রমিক-কৃষক ভবনে পৌঁছায়। সেখানে বহু মানুষ অপেক্ষা করছিলেন তাঁদের প্রিয় কমরেডকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য। এখান থেকে তাঁর পতিরামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পতিরামেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।