E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ৩য় সংখ্যা / ২৮ আগস্ট ২০২০ / ১১ ভাদ্র ১৪২৭

সংখ্যাগুরু আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে গুপকা ঘোষণা একটি মাইলফলক

গৌতম রায়


আরএসএস-এর রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি দ্বিতীয় দফায় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরে আসার অব্যবহিত পরেই ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা অবলুপ্ত করে। আরএসএস-বিজেপি’র বহুকালের এই রাজনৈতিক কর্মসূচির বাস্তবায়নের ভিতর দিয়ে এটা পরিষ্কার হয়ে উঠছিল যে, হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা এবং মৌলবাদ আগামী ভারতকে সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদে পরিণত করতে চলেছে।

এই কার্যক্রমের পর এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন থেকে শুরু করে কোভিড ১৯ অতিমারীজনিত ঘটনাক্রম, সবের ভিতরেই সংখ্যালঘুর সার্বিক অধিকার কার্যত নস্যাৎ করে, দেশকে এক ভয়াবহ সংখ্যাগুরু আধিপত্যবাদের দিকে প্রবাহিত করবার প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠতে দেখি আমরা। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ হয়েও কাশ্মীরকে, কাশ্মীরের মানুষকে গত একবছর ধরে কার্যত সমস্ত রকমের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। সেখানকার স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রায় এক বছর ধরে গৃহবন্দি ছিলেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এখনো গৃহবন্দি রয়েছেন।

এই অবস্থায় ভারতের সংবিধানের মূল পরিকাঠামোর সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ, ব্রিটিশের সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের চুক্তির সঙ্গে পরিপূর্ণ সাযুজ্যপূর্ণ, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারার অবলুপ্তিকে চূড়ান্তভাবে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে ৩৭০ ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যে জাতীয় সন্মেলনে ডাঃ ফারুক আবদুল্লা থেকে সিপিআই(এম)-এর ইউসুফ তারিগামি যে সন্মিলিত আহ্বান জানিয়েছেন, ভারতীয় রাজনীতিতে যা ইতিমধ্যেই ‘গুপকার ঘোষণা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে, সেটি সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম মূল পরিকাঠামো ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে ধরে রাখবার প্রশ্নে, রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রাঙ্গণে একটি মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

ভারতের সংবিধানের মূল পরিকাঠামো অপরিবর্তনশীল।মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী মামলাতে তাদের ফুল বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে এই কথা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেছেন (All India Reporters 1973, Suprime Court, 1461)। প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ দুর্গাদাস বসু এই প্রেক্ষিতেই বলেছিলেন, ভারতের সংবিধানের সবথেকে উল্লেখযোগ্য মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, সংশোধনী আনার ক্ষমতা প্রয়োগ করে মূল পরিকাঠামোর অদলবদল করা যায় না। এই অদলবদল না করার বিষয়টি ভারতের সংবিধানেরই ৩৬৮ নং ধারাতে খুব পরিষ্কার করে বলা আছে। সংবিধান সংশোধনী আইন এনে যদি সংবিধানের মূল পরিকাঠামোটিকেই বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আদালতের অধিকার আছে, সেই সংশোধনীকে ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত’ বলে সম্পূর্ণ বাতিল করবার। কারণ, ৩৬৮ নং ধারাতে কাকে সংশোধন বলা হবে, তারও স্পষ্ট সংজ্ঞা আছে। সেখানে সংবিধানের মূল পরিকাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখার বিষয়টিকেই কেবলমাত্র ‘সংশোধনে’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই মূল পরিকাঠামোটি বদলাতে, তা নতুন সংবিধান রচনারই সমতুল হবে (Introduction to the Constitution of India - Durgadas Basu, Page-151)।

ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে রাজনারায়ণের মামলার ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসএম সিক্রি খুব পরিষ্কারভাবেই বলেছিলেন, ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র, আইনব্যবস্থা নির্বাহ ও বিচারব্যবস্থার ক্ষমতার পৃথকীকরণ, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো - এগুলি ভারতের সংবিধানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য। এগুলির কোনোভাবেই অদলবদল করা যায় না (AIR 1975, SC ,2299)। ইন্দিরা গান্ধী ভারতের সংবিধানের ৪২তম সংশোধনী আনলে মিনার্ভা মিলস বনাম ভারত সরকার মামলাতে সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বিচারের সুযোগে ভারতের সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্যকে বাতিল করা যায় না বলে স্পষ্ট অভিমত ব্যক্ত করেছে। সেই রায়ে বলা হয়েছেঃ সংবিধান সংশোধনীর কোনো পর্যায়কে যদি আদালত মনে করে, সংবিধানের মূল পরিকাঠামোর পরিপন্থী, তাহলে সেই সংশোধনীকে পর্যন্ত এক্তিয়ার বহির্ভূত বলে ঘোষণা করতে পারে আদালত (AIR, 1980, SC, 1789)।

বিজেপি’র ৩৭০, ৩৫এ ধারার অবলুপ্তির পিছনে ওদের হিন্দু সাম্প্রদায়িক অভিপ্সার সাথে সাথেই ফ্যাসিবাদী প্রবণতার একটা ভয়ঙ্কর প্রকাশ গত একবছরে কাশ্মীরের ঘটনাপ্রবাহের ভিতর দিয়ে আমরা দেখেছি। ভারতের একটি অঙ্গ রাজ্য কাশ্মীর কেবলমাত্র দেশের শাসক বিজেপি এবং তাদের মূল মস্তিষ্ক আরএসএস-এর ইচ্ছের কারণে গত একবছর ধরে একদম অবরুদ্ধ। সেখানকার অ-বিজেপি রাজনৈতিক নেতারা গৃহবন্দি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ফারুক আবদুল্লাকে সংসদের অধিবেশনে পর্যন্ত অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছিল না। নেতৃত্বের যখন এই অবস্থা, তখন সাধারণ কর্মী, সমর্থকেরা কেমন আছেন, তা সহজেই অনুমান করতে পারা যায়।যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।তরুণ প্রজন্মের যাবতীয় সম্ভাবনাকে রাষ্ট্র সেখানে রুদ্ধ করে রেখেছে। সন্তান সম্ভবা নারীর হাসপাতালে যাওয়ার অধিকার পর্যন্ত সঙ্কুচিত। ইন্টারনেট পরিষেবা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।কাশ্মীরের অর্থনীতি পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। অবরুদ্ধ কাশ্মীরে পর্যটক নেইই। ফলে অর্থনীতির বিপর্যস্ততা সাধারণ মানুষকে প্রায় নিরন্ন করে তুলেছে। পাকিস্তান এই পরিস্থিতির পরিপূর্ণ সুযোগ নিতে চাইলেও বিদেশের যেকোনো প্ররোচনাকে কাশ্মীরের মানুষ, হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সর্বান্তকরণে প্রতিহত করেছে।

কাশ্মীরের জনবিন্যাসের চিত্র বদলে দিয়ে, সেখানকার অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে বিজেপি নিজেদের পছন্দমতো আদানি, আম্বানিদের প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর। কাশ্মীরের মানুষদের ভূমিচ্যুত করে, আরএসএসীয় হিন্দু জনগোষ্ঠীর দ্বারা কাশ্মীরের সব জমি দখল করে, খোদ কাশ্মীরেই কাশ্মীরের ভূমিপুত্রদের স্বদেশে পরবাসী করতে চায় রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী শক্তি আরএসএস, বিজেপি। কাশ্মীরের মানুষদের উপর ক্রমবর্ধমান অমানবিকতা যাতে প্রতিবেশি পাকিস্তানে, সেখানকার ইসলামীয় মৌলবাদীদের উৎসাহিত করে, যার সুযোগ নিয়ে ভারতের মুসলমানদের উপর আরও বীভৎস অত্যাচার করতে পারা যায়, সেজন্যে আরএসএস-বিজেপি নিত্যনতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

এই অবস্থায় ‘গুপকার ঘোষণা’ থেকে খুব পরিষ্কার একটি বিষয় উঠে আসছে যে, ভারতে হিন্দু- মুসলমানের ভিতরে একটা মেকি সংঘাত বাঁধিয়ে রাজনৈতিক হিন্দুরা নিজেদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করলেও, বিনা প্রতিরোধে তাদের একপাও আর এগোতে দেওয়া হবে না। দেশের মানুষকে ধর্ম, বর্ণ, জাতপাত, লিঙ্গ, ভাষার বিচারে বিভক্ত করে, ব্রিটিশের কায়দায় নিজেদের স্বার্থপূরণ করতে চায় আরএসএস-বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই তারা কাশ্মীরে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে বিধ্বস্ত করেছে। কাশ্মীরের মানুষদের নাগরিক অধিকার কেড়েছে। কাশ্মীরিওয়াতকে ধ্বংসের প্রচেষ্টার ভিতর দিয়ে গোটা ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর একটা ভয়ঙ্কর আর্থ-সামাজিক-মানসিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চাপ তৈরি করেছে। এইভাবেই সহনাগরিক মুসলমানদের নাগরিকত্বহরণের প্রয়াসে বিজেপি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন করেছে। এই ধরনের ব্যবস্থার ভিতর দিয়ে কেবল ভারতেই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী শক্তির ভিতরে একটা বোঝাপড়ার পরিবেশ তৈরি করতে চায় আরএসএস-বিজেপি।

কাশ্মীরে ৩৭০,৩৫এ ধারার অবলুপ্তির ভিতর দিয়ে কেবলমাত্র কাশ্মীরের মানুষদের উপর আর্থ-সামাজিক অবরোধ তৈরি করতে চাইছে না কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। এই কাজের পিছনে তাদের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হলো, সীমান্তপারে উত্তেজনা তৈরি করা। এই সীমান্তপারের উত্তেজনার ভিতর দিয়ে পাকিস্তানে, সেখানকার ইসলামীয় মৌলবাদীদের শক্তি জোগাতে পারবে ভারতের হিন্দু মৌলবাদীরা। আর পাকিস্তানের ভারত বিদ্বেষ, সীমান্ত উত্তেজনা, সেখানকার ইসলামীয় সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদীদের আস্ফালনের সুযোগ নিয়ে, ভারতের হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী সঙ্ঘ-বিজেপি, অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাবে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর। তাদের এই সুযোগে প্রাণে মারবে বিজেপি, রাষ্ট্রশক্তিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।

বিজেপি ভারতীয় মুসলমানদের অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব করবে প্রশাসনিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে।তার পাশাপাশি সীমান্ত উত্তেজনা দুই পারের দুই দেশের মৌলবাদী শাসকেরাই বজায় রাখবে। সেই উত্তেজনার জেরে, দুই পারের সাম্প্রদায়িক শাসকই তাদের নিজেদের দেশের সাধারণ মানুষদের মৌলিক চাহিদাগুলিকে অস্বীকার করবে। সমস্ত দৃষ্টিকে এই সুযোগে তারা ঘুরিয়ে দেবে সীমান্ত উত্তেজনার দিকে, যুদ্ধের দিকে।মানুষ খাবার চাইলে দোহাই দেবে যুদ্ধের। মানুষ শিক্ষা চাইলে, দেখিয়ে দেবে সীমান্তের উত্তেজনাকে। মানুষ স্বাস্থ্যের কথা বললে, দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেবে যুদ্ধের দামামার বীভৎসতার দিকে।

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার কোনো নির্ভরযোগ্য, স্থায়ী সমাধান বিজেপি চায় না। এই না চাওয়ার কারণটিও সঙ্ঘ-বিজেপি’র রাজনৈতিক অভিপ্সার ভিতরে লুকিয়ে আছে। সীমান্ত উত্তেজনাই হলো বিজেপি’র ভোটে জেতার অন্যতম বড়ো কৌশল। সীমান্ত উত্তেজনার ভিতর দিয়ে, সীমান্তের অন্যপারে, পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু মানুষ, যাঁরা ধর্মে মুসলমান, তাঁদের মূল টার্গেট করতে চায় সঙ্ঘ-বিজেপি। পাকিস্তানের রাজনীতিক আর সেই দেশের সাধারণ মানুষ, উভয়ের ধর্মগত পরিচয়টাকেই এইভাবে গুলিয়ে দিতে চায় ভারতের হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি। এই গুলিয়ে দেওয়ার আসল উদ্দেশ্য হলো, পাকিস্তানের রাজনীতিক থেকে সাধারণ মানুষ, তাঁদের ধর্মীয় পরিচয় মুসলমান, সেই পরিচয়কেই সঙ্ঘ-বিজেপি গুলিয়ে দিতে চায় ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের সঙ্গে। এইভাবেই পাকিস্তানের রাজনীতিকদের, তাদের সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থবোধক ভারতবিদ্বেষকে, ভারতে আরএসএস-বিজেপি ব্যবহার করতে চায় নিজেদের নগ্ন রাজনৈতিক স্বার্থে, ভারতের মুসলমান সহ নাগরিকদের উদ্দেশে।

কাশ্মীরে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অবলুপ্তি প্রসঙ্গে আরএসএস’র দীর্ঘকালের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যর এটাই হলো অন্যতম প্রধান কারণ। কাশ্মীরে সমস্ত রকমের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখে, কেন্দ্রের শাসনের আড়ালে, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি’র শাসনকেই এইভাবে ঘুরপথে ৩৭০, ৩৫এ ধারা অবলুপ্তির ভিতর দিয়ে কায়েম করা হয়েছে। এই অবলুপ্তির সুযোগ নিয়েই, টাকার জোরে কাশ্মীরের ভালো ভালো জমিগুলির মালিক হয়ে বসবে আরএসএস-বিজেপি’র ঘনিষ্ঠ আদানি-আম্বানিরা। সেখানকার পর্যটন শিল্প, ছোটো ছোটো কুটির শিল্প, হোটেল ব্যবসা, আপেল বাগিচা ইত্যাদি সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ হারাবে কাশ্মীরের ভূমিপুত্রেরা। সেগুলির মালিক হবে বিজেপি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। এইভাবে হিন্দু ব্যবসায়ীদের আধিপত্যের ভিতর দিয়ে, অর্থনৈতিকভাবে কাশ্মীরের ভূমিসন্তানদের অবরুদ্ধ করে দেওয়াই হলো হিন্দু সাম্প্রদায়িক আরএসএস-বিজেপি’র মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য।

গুপকা ঘোষণার প্রতি সহমর্মিতাজ্ঞাপন হলো ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোর প্রতি আস্থা প্রকাশ। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ, প্রতিবেশি দেশের বহু প্ররোচনাকে হেলায় তুচ্ছ করে ভারতের অখণ্ডতার জন্যে জীবনপাত করেছে। কাশ্মীরিওয়াত ভারতের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির একটি অঙ্গ। সমন্বয়ী চেতনার ভারত, কাশ্মীরিওয়াতেরই একটি উজ্জ্বল অঙ্গ। কলহনের রাজতরঙ্গিনীর কাল থেকে আবহমান ভারতাত্মার সঙ্গে সংযোগ কাশ্মীরের। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রবহমান ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতা তৈরির চেষ্টার ত্রুটি কখনো করেনি। তবু কাশ্মীরের মানুষ আর সর্বস্তরের ভারতবাসী, তাঁদের মানসিক নৈকট্য দিয়ে সেই অপচেষ্টাকে সমূলে প্রতিহত করেছে। গুপকা ঘোষণাও সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদীদের সেই অপচেষ্টা রোধেরই একটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য এবং কার্যকর পর্যায়ক্রম।